সোমবার দুপুরে উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফখরুল ইসলাম এ অভিযান চালান।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা 'মুক্তি কক্সবাজার'র অর্থায়নে দেশীয় অস্ত্র হিসেবে রোহিঙ্গাদের সরবরাহ দিতে এসব লোহার যন্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল বলে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
পরে প্রশাসন ওই কামারের দোকানে অভিযান চালিয়ে এসব দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার এবং কামারকে আটক করে।
উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলাম জানান, বিশেষ সূত্রে খবর আসে উপজেলার কোটবাজার ভালুকিয়া সড়কের অধীর দাশ নামে এক কামারের দোকানে বিশেষ ধরনের বিপুল পরিমাণ লোহার যন্ত্র তৈরি হচ্ছে। মুক্তি নামে একটি এনজিও’র অর্থায়নে তৈরি এসব যন্ত্র রোহিঙ্গাদের দেয়া হবে বলেও প্রচার পায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সোমবার দুপুরে অভিযান চালানো হয়। দোকান থেকে নিড়ানি সদৃশ্য বেশ কিছু লোহার বাটযুক্ত যন্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে, অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে কৌতুহলী লোকজন দোকানের চারপাশে জড়ো হয়। মোবাইলে ছবি নিয়ে এসব দেশীয় অস্ত্র রোহিঙ্গাদের সরবরাহ দিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা 'মুক্তি কক্সবাজার' তৈরি করছে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হলে চারপাশে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে।
গত ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন ভেস্তে যাওয়া এবং হ্নীলায় যুবলীগ সভাপতিকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার পর থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলমান উদ্বিগ্নতায় এ দেশীয় অস্ত্রের তথ্য যেন ঘি ঢেলেছে।
আটক কামার অধীর দাশ জানায়, ভালুকিয়া এলাকার সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি গত কোরবানির আগে ২ হাজার ৬শ' পিস নিড়ানি তৈরির অর্ডার দেয়। প্রতি পিস ৪৫ টাকা দরে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকায় ১৬ আগস্ট মালামাল ডেলিভারির চুক্তি হয়। ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম দেয়া হলেও মালামাল বেশি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি দেয়া সম্ভব হয়নি। সে কারণে তাড়াহুড়া করেই কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছিল।
কিন্তু এসব লোহার যন্ত্র তৈরির বিষয়ে কোনো তথ্যই জানেন না বলে দাবি করেছেন মুক্তি কক্সবাজারের পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সর্বশেষ ২২ আগস্ট সম্পন্ন হওয়া নির্বাহী কমিটির বৈঠকেও এসব বিষয়ে মৌখিকভাবেও জানানো হয়নি। তাই টেন্ডার বিষয়েও কিছু জানি না।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী রবিন জানান, উদ্ধার করা যন্ত্রগুলো কৃষিকাজে ব্যবহার যোগ্য নিড়ানি সদৃশ্য। যেহেতু যন্ত্রগুলো নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে তাই টেন্ডারের কাগজপত্র নিয়ে এনজিও সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে উপজেলা কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে তা ফেতর দেয়া হবে। তা নাহলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন ইউএনও।