সোমবার সকাল ৭টার দিকে জেলার কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়ের চর নিতাইল পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহননের পথ বেছে নেয়া সোনিয়া খাতুন (১৬) শালঘর মধুয়া হাজী আছিয়া খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং নিতাইল পাড়ার সুফিয়া খাতুনের মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, একই এলাকায় জহুরুল হাজীর কলেজ পড়ুয়া জীবনের (২০) সাথে সোনিয়ার প্রায় এক বছর যাবৎ প্রেম চলছিল। এর মাঝে তারা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে সোনিয়া দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ের জন্য জীবনকে চাপ দেয়। এরপর গত শনিবার জীবনের সাথে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাখে সোনিয়া।
কিন্তু পালাতে রাজী না হওয়ায় রবিবার সন্ধ্যায় জীবনের বাড়িতে ছুটে যায় সে। বাড়িতে গেলে জীবনের মা-বাবা ও বোন মিলে সোনিয়াকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর সোনিয়া বাঁশগ্রাম পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে লিখিত অভিযোগ করে। পুলিশ বিষয়টি দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করে সোনিয়াকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। অপমান আর ক্ষোভে সোমবার সকাল ৭টার দিকে সুইসাইড নোট লিখে নিজ ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
সোনিয়ার মা সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘জীবনের সাথে গোপনে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একদিন আগেই সোনিয়ার কাছ থেকে জানতে পারলাম তাদের শারীরিক সম্পর্ক ছিল এবং সোনিয়া দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে মেডিকেল টেস্ট করানো হয়নি।’
‘আমার মেয়ে বাবা হারা। অনেক কষ্টে বড় করেছি। ওর সাথে যারা খারাপ কিছু করেছে, তাদের কঠোর বিচার চাই,’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন সুফিয়া।
এ বিষয়ে বাঁশগ্রাম পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘মেয়েটি ক্যাম্পে এসে তার এক ছেলের সাথে প্রেমের কথা জানিয়ে বলে আমি বাড়ি গেলে পরিবারের লোকজন মারবে। এমন কথা শুনে আমরা বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি।’ তবে লিখিত অভিযোগের কথা তিনি অস্বীকার করেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, সুইসাইড নোট লিখে মেয়েটি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তদন্তের স্বার্থে সুইসাইড নোটসহ একটি ডায়েরি জব্দ করা হয়েছে এবং সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।