কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নৌ-ঘাট থেকে ১ হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের জাহাজে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়।
আরও পড়ুন: 'আলহামদুলিল্লাহ, ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধায় সন্তুষ্ট’: এক রোহিঙ্গার অনুভূতি
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামছু-দ্দৌজা বলেন, ‘পতেঙ্গা নৌ-ঘাট থেকে ১ হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নৌবাহিনীর জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। শনিবার আরও প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা ভাসানচর যাবেন।’
এর আগে, বৃহস্পতিবার এসব রোহিঙ্গাকে শিবির হতে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। পরে সেখানে তাদের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করে বাসযোগে চট্টগ্রাম নগরীর বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে উদ্বেগের কিছু নেই, জাতিসংঘকে জানাল বাংলাদেশ
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের জন্য সেখানে নির্মিত অস্থায়ী শিবিরগুলোতে নানা সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসনচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। এ জন্য নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সর্বাধিক নিরাপদ ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন অস্থায়ী আশ্রয় শিবির নির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা স্থানান্তরকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা না করতে ঢাকার আহ্বান
ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গাদের অনেক বোঝাতে হয়েছিল। পরে সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৪২ এবং ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৮০৪ জনকে দ্বীপটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় যাওয়া এসব রোহিঙ্গা ভাসানচরে আধুনিক ও নিরাপদ বাসস্থান পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ এবং সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানায়। তাদের দেখানো পথ ধরে উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত আরও রোহিঙ্গার মধ্যে দ্বীপে যাওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের সাথে ১০ কোটি ডলারের অনুদান চুক্তি
রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার নিজস্ব অর্থায়নে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি। দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।
আরও পড়ুন: ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় গাড়ি বহর চট্টগ্রামে