বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল বলেন, নুসরাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি জেলহাজত থেকে নুসরাতকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
জেলে থাকা অবস্থায় নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে নুসরাতকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়ার জন্য বলেন অধ্যক্ষ সিরাজ। রাজী না হলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতেও নির্দেশ দেন তিনি।
গত ১০ এপ্রিল বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত অধ্যক্ষ সিরাজের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সিরাজ উদ দৌলাসহ ৯ জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দি দেয়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ।
গত ২৭ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা।
পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান।
এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।