বৃহস্পতিবার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। বিকাল সাড়ে ৩টায় জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেন।
আবদুল কাদের সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অনুগত হিসেবে মাদরাসার হোস্টেলে থাকতেন তিনি।
হাফেজ আবদুল কাদের আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি হত্যাকারীদের নিরাপত্তায় মাদরাসার গেট পাহারায় ছিলেন এবং পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম। নিজের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন আবদুল কাদের। তার রুমেই হয়েছে হত্যার পরিকল্পনা।
এর আগে বুধবার ঢাকার হোসনী দালান এলাকা থেকে আবদুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সোনাগাজী আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠান বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। আবদুল কাদের গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার পরদিন মালামাল নিয়ে হোস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে যান।
৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের আগের দেয়া এজাহার পরিবর্তন করে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়।
নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আটজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, যোবায়ের হোসেন, জাবেদ হোসেন, হাফেজ আবদুল কাদের ও শিক্ষক আবছার উদ্দিন।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।