চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ছয়জন। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে পাঁচজনকে। বাকি ৩৩ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
শুধুমাত্র সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ জন।
জেলায় প্রথমবারের মতো হঠাৎ করেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জনমনে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন।
এদিকে হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যাপ্ত কিট ও রিএজেন্ট সুবিধা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা জানায়, জ্বর নিয়ে হাসপাতালে এসে ডেঙ্গু কিনা তা শনাক্তের পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিট ও রিএজেন্ট না থাকায় হাসপাতালের বাইরে গিয়ে প্রাইভেট প্যাথলজি সেন্টার থেকে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।
জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল আওয়াল বলেন, আগে থেকে হাসপাতালে সরকারিভাবে ডেঙ্গু পরীক্ষার কোনো প্যাথলজিক্যাল কিট ও রিএজেন্ট ছিল না। ডেঙ্গু রোগী আসা শুরু করলে প্রথম পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের বিশেষ অনুদানে কিছু কিট ও রিএজেন্ট কেনা হয়। গত এক সপ্তাহের পরীক্ষায় সেগুলো শেষ হয়ে গেছে।
চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখনো প্রয়োজনীয় কিট ও রিএজেন্ট আসেনি। তবে খুব শিগগিরই পাওয়া যাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে।
জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. লুৎফর রহমান বলেন, গত ৯ দিনে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকী ৩৩ জন মানিকঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদের চিকিৎসায় সার্বক্ষণিক চারজন ডাক্তার নিয়োজিত রয়েছেন। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা দুইটি ওয়ার্ড খোলা হয়েছে।
মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান (ল্যাব) আবদুল কুদ্দুস মাসুদ বলেন, এ পর্যন্ত ৩২ জন রোগীর পরীক্ষা করানো হয়। এর মধ্যে সাতজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষায় ৩০০ টাকা করে ফি নেয়া হচ্ছিল। পরে পরিপত্র জারির পর থেকে বিনামূল্যে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। আগে যাদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা ফি নেয়া হয়েছিল তাদের টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে শুধু রাষ্ট্রের করণীয় ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবেও সকলকেই সচেতন হতে হবে। এই লক্ষ্যে নিয়মিত মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও জনসমাবেশসহ নানা সচেতনতামূলক কাজ করা হচ্ছে।