বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় লন্ডন থেকে বিমানযোগে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। সেখান থেকে হেলিকপ্টারযোগে সরাসরি যান নিজ গ্রামে। এসময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
স্থানীয় শিক্ষার্থীরা রৌওশনারাকে ফুল দিয়ে বরণ করে এবং দেশীয় ফল দিয়ে আপ্যায়ন করে। পরে তালেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবেশ চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান হান্নান, সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুর রহমানসহ অন্যান্যরা। মেয়র রৌওশনারা তার বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এলাকার যে কোনো উন্নয়নে সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
তালেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পর ১৯৭৮ সালে ১৩ বছর বয়সে বাবা প্রকৌশলী রজ্জব আলীর সাথে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন রৌওশনারা।
বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে এবং সুচিন্তিত নাগরিক ফোরাম নামে একটি সংগঠন রৌওশনারাকে তৃতীয় সংবর্ধনা দেবে বলে জানিয়েছে তার ভাতিজা জহিরুল ইসলাম মিটুল।
প্রবাসে জীবনযাপন করলেও প্রায় প্রতিবছরই রৌওশনারা ছুটে আসেন নিজ জন্মস্থানে। যুক্তরাজ্যেও মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। সেখানে ব্যারিস্টার ডিগ্রি লাভ করেন এবং স্বামী রেজাউর রহমানের সাথে যুক্ত হন হোটেল ব্যবসায়। এরপর আসেন রাজনীতির ময়দানে। রৌওশনারার শ্বশুরবাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায়।
তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে রৌওশনারা সবার বড়। গত বছরের মার্চ মাসে রৌওশনারার বাবা রজ্জব আলী খান মারা গেছেন। তিনি ছিলেন বুয়েটের প্রথম ব্যাচের ছাত্র। এলাকায় দানবীর হিসেবে তার খ্যাতি ছিল। তিনি নিজের জমিতে এলাকাবাসীর জন্য মসজিদ, রাস্তা এবং বেশকিছু ঘরবাড়ি নির্মাণ করেন। বাবার মতোই রৌওশনারাও এলাকায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
উল্লেখ্য, রৌওশনারা রামসগেট শহরে ‘তন্দরি’ নামে একটি রেস্টুরেন্টের মালিক। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। সামান্য ভোটে সেসময় পরাজিত হন। এর আগে লেবার পার্টি থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ গত বছরের ১৪ মে নির্বাচনে বিপুল ভোটে যুক্তরাজ্যের রামসগেটের মেয়র নির্বাচিত হন রৌওশনারা।