ধুলশুরা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে কয়েকটি গ্রামের আরও কয়েকশ বাড়িঘর, গাছপালা, ফসলী জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
ধুলশুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ খান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহের ভাঙনে দুই শতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই পর্যন্ত ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে স্কুল-মাদরাসা, মসজিদ ও হাটবাজার নদী গর্ভে চলে যাবে।’
ধুলশুরা ইউনিয়নের সৈয়দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনটি গত তিন দিনে অর্ধেক ভেঙে নদীতে পড়ে গেছে। বাকী অংশটুকুও যে কোনো মুহূর্তে নদীতে বিলীন হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াসাদ আলী বলেন, বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের কবলে পড়ার আগেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছিল। ভাঙনের তীব্রতায় স্কুল ভবনটির এক পাশ যখন নদীতে পড়ে যাচ্ছিল তখন ক্লাস নেয়া বন্ধ করা হয়।
গত এক সপ্তাহ আগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশের কমলাপুর গ্রামের ইউসুফিয়া ফোরকানিয়া মাদরাসায় সাময়িকভাবে পাঠদান করাচ্ছেন। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমে গেছে।
এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিলুফা রহমান বলেন, এবারের বন্যার আগে থেকেই জেলার বেশ কিছু বিদ্যালয় পদ্মা ও যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়। এবছর নদী ভাঙনে জেলায় ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়েছে। এরমধ্যে ৭টি দোতলা বিল্ডিং ও চারটি টিনশেড ঘর রয়েছে। ওই ১১টি বিদ্যালয়ের ক্লাস পার্শ্ববর্তী বাড়ি কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠানে করানো হচ্ছে।
এছাড়া সম্প্রতি হরিরামপুর উপজেলার সৈয়দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। এরই মধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মওলা মো. মেহেদী হাসান বলেন, নতুন করে ভাঙন রোধে কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে তাৎক্ষণিক ভাঙনে সৈয়দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই টাকায় ১১০ মিটার এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হবে।