মঙ্গলবার রাতে ভোলা থেকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরিফ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করার পর তার স্বীকারোক্তিতে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, স্ত্রীকে নিয়ে বাজে কথা বলায় ক্ষোভ থেকে মূলত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে আরিফ। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সে একাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে।
গত ২৩ আগস্ট সকালে ডিসি রোডের আবু কলোনীর পাশে আবুল কাশেমের বাড়ির দ্বিতীয় তলা ভবনের ওপরে পানির পরিত্যক্ত ট্যাঙ্কির ভেতর থেকে শাখাওয়াত হোসেন ফাহিমের গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ফাহিমের বাবা বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলা করে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভোলা জেলা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হয়।
আরিফ স্বীকার করেছে যে একসঙ্গে বাসায় বসে আড্ডা দিত ও ইয়াবা সেবন করতো দুই বন্ধু। এসময় তার স্ত্রীকে নিয়ে ফাহিম বাজে মন্তব্য করতো এবং কুপ্রস্তাব দিত। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে সে ফাহিমকে গলাকেটে হত্যা করেছে।
মেহেদী হাসান জানান, নিহত শাখাওয়াত হোসেন ফাহিম (২১) এবং খুনি মো. আরিফ (২২) দুজনেই প্রতিবেশী হিসেবে একই এলাকায় বসবাস করার পাশাপাশি একসঙ্গে ইয়াবা সেবন করত।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফ, চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ রাইসুল ইসলাম, চকবাজার থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে আরিফ পুলিশকে জানায়, গত ২০ আগস্ট সকাল ৮টার দিকে আরিফ বাসা থেকে একটি কাঁথা ও একটি ছুরি নিয়ে আবুল কাশেমের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় টিনশেডঘেরা পানির ট্যাঙ্কির কাছে যায়। ফাহিমকে নিয়ে পানির ট্যাঙ্কির ওখানে গিয়ে আড্ডা দেয়ার জন্য বসে। একপর্যায়ে ফাহিমের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে গলাকেটে ফেলে আরিফ। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ফাহিমের বুকে, পেটে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সেখান থেকে চলে যায় আরিফ।
ঘটনার পর আরিফ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তার মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে ভোলার আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে এবং বুধবার সকালে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে।
ফাহিমের পরিবার জানায়, ২০ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল ফাহিম। ২২ আগস্ট তার পরিবার চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করে।