শুক্রবার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের মনসাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে গৌরীচন্না ইউনিয়নের পূর্ব লাকুরতলা থেকে রোডপাড়া বাজার সড়কের মনসাতলী অংশের ১.৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য এক কোটি ১৮ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যায় ধরে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২০১৯ সালের ১ মে এ কাজের কার্যাদেশ পায় মেসার্স মহিউদিন আহম্মেদ নামে পটুয়াখালী জেলার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার স্বত্বাধিকারী পটুয়াখালী জেলা শহরের মুসলিম পাড়া এলাকার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, কার্যাদেশের সময়সূচী অনুযায়ী ১৮০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও ঠিকাদারের গফিলতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তা এখনও অসমাপ্ত হয়ে পড়ে আছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক স্থানীয় এলাকাবাসী।
অন্যদিকে সড়কের কাজের ৪০ শতাংশ সম্পন্ন না করেই ইতোমধ্যে ওই ঠিকাদার ৬০ শতাংশ কাজ দেখিয়ে মোট বিলের অর্ধেক টাকা তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা জেলা শহর সংলগ্ন এ সড়ক হয়ে প্রতিদিন নারী ও শিশুসহ প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ মূল শহরের সাথে যাওয়া আসা করে।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এবিএম গোলাম হায়দার নিলু জানান, ১৮০ দিনে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৪৮০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও তার মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাকি ৬০ শতাংশ কাজ শেষ না হওয়ায় ওই সড়ক দিয়ে জনচলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় নিয়ে ওই সড়কের কাজের মাত্র ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অথচ ইতোমধ্যে ওই ঠিকাদার ৬০ শতাংশ কাজ দেখিয়ে মোট বিলের অর্ধেক ৫৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী আবুল বাসার মোল্লা জানান, নজিরবিহীন এ জনভোগান্তির কথা জানিয়ে স্থানীয় এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রকল্প পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।
তিনি বলেন, এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা, গাফিলতি, জনভোগান্তি ও সরকারি অর্থ অপব্যবহারের কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের আইন রয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর বহু অভিযোগের পরেও প্রভাবশালী ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই ঠিকাদার এবং এলজিইডি বরগুনার প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।