যারা গ্রামে ঢুকছেন নেয়া হচ্ছে পরিচয়, জানতে চাওয়া হচ্ছে প্রবেশের কারণ। আগতদের জীবানুমুক্ত করতে সাবান দিয়ে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে শেরপুর সদরের লছমনপর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে।
গ্রামের মোকাদ্দেস হোসেন, আনিছুর রহমান, সোলাইমান কবির, শাহাদাত হোসেন শিপলু, সোহাগ সরকার ও মতিন সরকারসহ গ্রামের অন্যান্য তরণ গ্রাম সুরক্ষায় বিভিন্নভাবে সচেতনতামূলক এ কাজগুলো করে যাচ্ছেন।
কলেজ পড়ুয়া যুবক মোকাদ্দেস হোসেন জানান, দিনরাত ২৪ ঘন্টা পালাক্রমে নিজেদের সুরক্ষার জন্য এই দায়িত্ব পালন করছেন তারা। পাশাপাশি, গ্রামে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে সচেতনতামূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কেবল কৃষ্ণপুর গ্রাম নয়, শেরপুর জেলা শহর থেকে শুরু করে গ্রামে গ্রামে এখন রাস্তাগুলোতে নানারকম প্রতিবন্ধক ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে প্রবেশপথগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। যাতে বাইরের কেউ এলাকায় ঢুকতে না পারেন।
এর আগে, শেরপুরে দুই নারীর করোনা ভাইরাস সংক্রমন শনাক্ত হওয়ার পর সোমবার সকাল থেকে জেলাজুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সরকারিভাবে ওই নারী এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের বাড়ি-ঘর লকডাউন করা হলেও আতংকে অন্যান্য এলাকার লোকজন নিজ নিজ এলাকা নিজেরাই লকডাউন ঘোষণা করে লোক ও যান চলাচলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। স্থানীয়রা এটাকে বলছেন, ব্যতিক্রমী লকডাউন।
শহরের নবীনগর, গৃর্দানারায়নপুর, চকবাজার, ঝিনাইগাতীর টেংরাখালী মোড়, ঝিনাইগাতীর কালীবাড়ি স্কুলের সামনে, নকলার কয়েকটি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের স্বেচ্ছায় লকডাউন করতে দেখা গেছে।
বিভিন্ন এলাকার তরুন স্বেচ্ছাসেবকরা এলাকাবাসীর সম্মতিতে বন্ধ করে দিতে থাকে নিজ নিজ এলাকায় ঢোকার প্রবেশ পথ। স্বেচ্ছায় লকডাউনের ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই সাধুবাদ জানান এবং নিজ নিজ এলাকায় এ ধরণের উদ্যোগ নিতে থাকেন।
এদিকে, ঝিনাইগাতী-মধুটিলা ইকোর্পাক সড়কের হলদীগ্রাম, শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী সড়কের বটতলা, ঝিনাইগাতী-শ্রীবরদী সড়কের বালিজুড়ি এলাকায় বাঁশের অস্থায়ী ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার পাঁচটি স্থানে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে করা ব্যারিকেডগুলোতে পুলিশ ও গ্রামপুলিশের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। অতি জরুরি যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ বা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।
এছাড়া উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ওষুধ ও কাঁচামাল ছাড়া সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সড়কে অল্প কিছু মোটরসাইকেল ছাড়া আর কোনো গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।