জেলা প্রশাসন
ভয়াবহ দূষণের মুখে পর্যটন শহর কক্সবাজার
কক্সবাজারের পর্যটন এলাকায় পাঁচ শতাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে। কিন্তু স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) রয়েছে মাত্র চারটি হোটেলে। যার কারণে ভয়াবহ দূষণের মধ্যে পড়েছে পর্যটন এলাকা।
জেলা প্রশাসনের র্যটন সেলেপর দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, কক্সবাজারে এসটিপি রয়েছে তিনটি পাঁচ তারকা ও একটি তিন তারকা হোটেলে। এছাড়া এসটিপিবিহীন তারকা মানের আরও আটটি হোটেল রয়েছে।
কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় মাঝারি, ছোট, বড় আবাসিক হোটেল রয়েছে পাঁচ শতাধিক। এর মধ্যে শুধু পর্যটন শহরে রয়েছে সাড়ে তিন শতাধিক হোটেল।
তিনি জানান, তারকা মানের হোটেলকে নিজস্ব এসটিপি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে অন্যান্য সব হোটেলের জন্য সেন্ট্রাল এসটিপি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ আইন না মেনে কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় গড়ে উঠেছে শত শত আবাসিক হোটেল, বহুতল ভবন, স্টুডিও এপার্টমেন্ট। কক্সবাজার শহরের সাড়ে তিন শতাধিক আবাসিক হোটেলকে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান (এসটিপি) স্থাপনের নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ হোটেলে এসটিপি করার জায়গা নেই। তাই জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে সেন্ট্রাল এসটিপি করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার সৈকতে বিশাল ‘প্লাস্টিকের দৈত্য’
তিনি আরও বলেন, এসটিপি না থাকায় ভয়াবহ পবিবেশ দূষণের কবলের পড়েছে পর্যটন জোন। পয়ঃনিষ্কাশনের ময়লাপানি আসে নালায়। যার কারণে পর্যটন এলাকায় থাকা নালা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
সেভ দ্য ন্যাচার এর চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসাইন জানান, দেশবিদেশের পর্যটকরা নির্মল পরিবেশে ভ্রমণ করতে কক্সবাজারে আসেন। কিন্তু নানা কারণে এখানকার পরিবেশ দূষিত হওয়ায় পর্যটকদের মাঝে কক্সবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। হোটেলে এসটিপি স্থাপন না করায় পর্যটন শহরের পরিবেশ দূষিত হয়েছে। পর্যটকদের নাকে মুখে হাত দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ভয়াবহ দূষণে পড়েছে পর্যটন জোন। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি দুর্গন্ধের শহরে পরিণত হবে।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুনাইদ জানান- এসটিপি স্থাপন তো দূরের কথা, এখনও পরিবেশ আইন না মেনে যেভাবে স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। এতে বসবাস অনুপযোগী হয়ে উঠছে পুরো শহরটি। তাই বর্তমান পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে দেয়া প্রয়োজন। আর যারা আগে নির্মাণ করেছে তাদের স্থাপনা পরিবেশবান্ধব করতে পুনঃসংস্কার করা জরুরি। সেইসঙ্গে এসটিপি বাধ্যতামূলক করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করে। তাদের মলমূত্র এসটিপি ছাড়াই সাধারণ টয়লেট রিং এ জমা হয়। সেখান থেকে সরাসরি যায় নালায়। আর নালা থেকে সরাসরি যাচ্ছে স্থানীয় বাঁকখালী নদীতে। আর বাকঁখালী নদী হয়ে যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে। এসটিপি না থাকার কারণে পর্যটন, এলাকা, নদী ও বঙ্গোপসাগর দূষিত হচ্ছে। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়া প্রয়োজন। তা না হলে পর্যটকরা যেমন বিমুখ হবে, তেমনি স্থানীয়দের জন্য বসবাস অনুপোযোগী হয়ে পড়বে এই কক্সবাজার শহর।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রঘুরে দেখলেন ৩৮ ভারতীয় ট্যুরিস্ট
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দ্রুত সময়ে সেন্ট্রাল এসটিপি করা হবে। তা না হলে দূষণের মুখে পড়বে পর্যটন শহর কক্সবাজার শহর। তবে বর্তমানে যে সব নালা নর্দমা রয়েছে তা নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার জানান, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তিনস্তর বিশিষ্ট তার উর্ধ্ব হোটেলে নিজস্ব এসটিপি স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ‘সাধারণ আবাসিক হোটেল, মোটেল, কটেজ, গেস্ট হাউসের জন্য সেন্টাল এসটিপি করতে বলা হয়েছে। এসটিপি স্থাপন করা না হলে সংশ্লিষ্ট হোটেলের বিরুদ্ধে জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, কক্সবাজার শহরে আগে থেকে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এখন থেকে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী স্থাপনা হবে। এছাড়া পর্যটন শহরকে দূষণমুক্ত করতে এসটিপি স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
কক্সবাজারে ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন বলেছেন, কক্সবাজারে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। তারকা মানের অসংখ্য হোটেল হয়েছে। এখন এসটিপি না থাকায় পরিবেশ প্রতিবেশ দূষণের মুখে পড়েছে। এতে পর্যটকরা বিমুখ হতে পারে। তাই কক্সবাজারে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সেন্ট্রাল এসটিপি স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ২৯ টি প্রকল্পের উদ্বোধন, ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ফরিদপুরে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা শুরু
ফরিদপুরে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
শহরের অম্বিকা ময়দানে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা।
আরও বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ আখতারুজ্জামান, পৌর প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান শামীম প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তাসলিমা আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিপুল কুমার দাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী, সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: সোনারগাঁও হোটেলে ভারতীয় খাবারের মেলা
২৩ লাখ টাকাসহ আটক সার্ভেয়ার কারাগারে
ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৩ লাখ টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
শনিবার বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দীন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে জেলা প্রশাসনের অভিযোগে তাকে ৫৪ ধারায় কারাগারে পাঠানো হয়। সরকারি কর্মচারী বিধিমতে সেটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ভোলায় শিশু নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, দাদি কারাগারে
পুলিশ কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন আরও বলেন, ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ সার্ভেয়ার আতিককে সদর থানায় সোপর্দ করে জেলা প্রশাসন। সরকারি কর্মচারী বিধিমতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজের একটি অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। নিয়ম মতে, দুদকই সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের ঘটনায় মামলা করবে।
অন্যদিকে, আতিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, থানায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে তা শুরু হয়েছে। তিনি কীভাবে, কোথা থেকে এত টাকা পেলেন এবং তা ঢাকায় কেন নিয়ে গেছেন এসব বিষয় উদঘাটন করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাগভর্তি ২০ লাখ ‘ঘুষের টাকা’ নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান আটক হন। পরে বিমানবন্দর থেকেই তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠালে শুক্রবার রাতে কক্সবাজার মডেল থানায় তাকে সোপর্দ করে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ধর্ষণ মামলায় পিবিআই পরিদর্শক মাসুদ কারাগারে
কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আতিকুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। তার ব্যাগ স্ক্যান করলে ব্যাগের ভেতর বিপুল পরিমাণ টাকার স্তূপ দেখা যায়। তাকে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যরা ব্যাগসহ আটক করে বিশেষ কক্ষে বসিয়ে রাখেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর রহস্যজনকভাবে সকাল পৌনে ১০টার বেসরকারি একটি বিমানের ফ্লাইটে চেপে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন তিনি। ঘণ্টাখানেক পর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে তল্লাশিতে ব্যাগে টাকা পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন।
পরে আতিকুর রহমানের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকাল সাড়ে চারটার আরেকটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়। বিমানবন্দর থেকে আতিকুর রহমানকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গতঃ কক্সবাজারে সরকারের তিন লাখ কোটি টাকার ৭২টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রচুর পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। অধিগ্রহণ কাজে সহযোগিতা করা সার্ভেয়ারদের মাঝে এর আগেও বেশ কয়েকজন নগদ কোটি টাকাসহ দুদকের হাতে গ্রেপ্তার হন।
কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা
এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম লেক কাপ্তাই হ্রদে কার্প ও অন্যান্য দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে রবিবার (১ মে) মধ্যরাত থেকে তিন মাসের জন্য রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদের সকল প্রকার মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী ১মে থেকে কাপ্তাই হ্রদের সকল প্রকার মাছ শিকার ও আহরণ, বাজারজাতকরণ, পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা বন্ধকালীন সময় এই তিন মাস নৌ পুলিশ কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন এলাকায় পাহারা ও অভিযান পরিচালনা করবে।
এ ছাড়া কাপ্তাই হ্রদের অবৈধভাবে জাক ব্যবহার করে মাছ আহরণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিএফডিসিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিনে জেলের জালে ১৪০ কেজির বোল মাছ!
অন্যদিকে মাছ ধরা বন্ধকালীন সময়ে কাপ্তাই হ্রদের সঙ্গে জড়িত জেলেদের সরকারিভাবে ভিজিএফ চাল বিতরণ করার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে কাপ্তাই হ্রদে প্রাকৃতিকভাবে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি ও উৎপাদনের লক্ষ্যে হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখার বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরা: লক্ষ্মীপুরে জেলে-নৌপুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১
কুমিল্লায় কুরআন অবমাননা: ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে প্রতিমার পায়ে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা রক্ষার্থে ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের চাহিদার প্রেক্ষিতে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিভিন্ন জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
ফয়জুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কুমিল্লা, ঢাকা বিভাগের নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জসহ ২২টি জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চাহিদা থাকলে রাজধানী ঢাকাতেও বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
পড়ুন: কোরআন অবমাননা: ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্তের চেষ্টা চলছে
এর আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বুধবার রাত থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের যে সব উপজেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে সেগুলো হলো-হাটহাজারী ও বাঁশখালীতে ২ প্লাটুন করে, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি ও চন্দনাইশে ১ প্লাটুন করে মোট ৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
এদিকে কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর নানুয়ার দীঘিরপাড় পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ডিআইজি বলেন, এই কাজটির সাথে যারা যুক্ত তাদেরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশেপাশে থাকা সকল সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যেন অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
পড়ুন: এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির, সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন
কুমিল্লার ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে: ওবায়দুল কাদের
রাঙামাটিতে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করতে দ্বিতীয় দিনে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ মাঠে রয়েছে। এসময় তারা বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট বসিয়ে অকারণে যারা ঘোরাঘুরি করছে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
গতকালের মতো শুক্রবার সকাল থেকে কঠোর অবস্থানে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটরা। একাধিক মোবাইল টিম শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭৬ জনকে অর্থদণ্ড
জেলা প্রশাসনের সাথে শহরে সেনাবাহিনীর টহল ছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে বিজিবি ও পুলিশ। রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি মোবাইল টিম কাজ করতে দেখা গেছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে পুলিশ, আর্মড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। তারা বিভিন্ন চেকপোস্টে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আর পৌর এলাকাজুড়ে করোনা সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে তথ্য অফিস।
এছাড়া শহরে ওষুধ ও হোটেল দোকান ছাড়া অন্যসব দোকান ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাটে লোকজনের উপস্থিতি আগের তুলনায় অনেক কম। সকল প্রকার যানবাহন ও নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনায় আরও ১১ মৃত্যু
রিকশাবিহীন রাঙামাটি শহরে অটোরিকশা বন্ধ থাকায় কার্যত সরকারের বিধিনিষেধ সফলভাবে পালিত হচ্ছে। তবে ব্যাংক, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রতিষ্ঠানের যানবাহনে অথবা পরিচয়পত্র নিয়ে বের হতে দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে বের হলেও মোবাইল টিমের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন চলবে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত। এসময়ে জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
নাটোরের ৮ পৌরসভায় ২৯ জুন পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউন
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় নাটোরে লকডাউনের সময় আরও সাত দিন বাড়িয়ে ৮ পৌরসভায় সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন: শেরপুরের সাথে ৭ জেলার বাস চলচল বন্ধ
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পর রাতে মন্ত্রীপরিষদ সচিবের সাথে বৈঠকের পর বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় তৃতীয় দফায় লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ল
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সকাল ৬ টা থেকে ২৯ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নাটোর জেলার ৮টি পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ বলবৎ করা হবে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এর আগে ৯ জুন থেকে দু দফায় নাটোর সদর ও সিংড়া পৌর এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: লকডাউন: খুলনায় কঠোর বিধিনিষেধ চলছে
নড়াইলে ৭ দিনের লকডাউন
নড়াইলে জেলার তিন পৌর এলাকাসহ করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া ইউনিয়নগুলোতে ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: মোংলা পোর্ট পৌরসভায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ
সভায় জানানো হয়, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে নড়াইল পৌর, লোহাগড়া পৌর ও কালিয়া পৌর এলাকায় আগামী ৭ দিন এ লকডাউন চলবে। এছাড়া সদর উপজেলার কলোড়া, শিংগাশোলপুর ও বিছালি ইউনিয়নেরও লকডাউন কঠোরভাবে চলবে।
স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্য এবং বিট পুলিশিং এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা লকডাউনে দায়িত্ব পালন করবেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী ১০ গ্রামে লকডাউন শুরু
এছাড়া লোহাগড়া উপজেলা প্রশাসন ও কালিয়া উপজেলা প্রশাসন করোনার সংক্রমন বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালা লকডাউন, করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
করোনা প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতভাগ মাস্ক নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাসহ পুলিশের পক্ষ থেকেও কঠোর অবস্থান নেয়া হবে বলে সভা সূত্রে জানা গেছে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন সাছিমা আকতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা তথ্য অফিসার ইব্রাহিম আল-মামুন, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা. মশিউর রহমান বাবু, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শওকত কবির, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামূল কবীর টুকু, সমাজ সেবক গোলাম মর্তুজা স্বপন, জেলা বাস ও মিনিবাস মালিত সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহিরুল হক জহির প্রমুখ।
নদীর তীরে থাকা আছিয়ার পাশে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক
মেঘনা নদীর পাড়ের বাসিন্দা অসহায় বৃদ্বা আছিয়া বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন।
সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আছিয়া বেগমকে(৬০) ৬ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা এবং একইসাথে তার ঘর মেরামতের জন্য ২ বান্ডেল টিন প্রদান করেন মানবিক জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনায় বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের নারী শ্রমিকদের মানবেতর জীবন
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার পূর্বচরকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আছিয়া বেগম। স্বামী মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। থাকা খাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নদীর পাড়ে ছোট জরাজীর্ণ ঘরে খুব কষ্টে বাস করেন তিনি। একমাত্র নাতিনকে নিয়ে কোনমতে দিনযাপন করেন। তার দু:খ কষ্ট জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের নজরে এলে তিনি এ সহায়তা প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান
অসহায় বৃদ্ধা আছিয়া বেগম বলেন, আল্লাহ ছাড়া সাহায্য করার কেউ ছিল না। অনেক কষ্টে দিন পার করছি।ডিসি আপা আমাকে যে সাহায্য করেছে, আমি অনেক খুশি হইছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের মানবেতর জীবন: বিচারের জন্য নিরলস লড়াই
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ইউএনবি কে বলেন, ঘটনাটি জানতে পারার সাথে সাথে আছিয়া বেগমকে সহায়তা করেছি। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে। আমাদের সরকারি নিয়মানুসারে আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। এটা মুজিব বর্ষের উপহার।
নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ৭ দিনের লকডাউন
নওগাঁয় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পৌরসভা এলাকায় সাত দিনের সর্বাত্মক বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। একইসাথে জেলার নিয়ামতপুর উপজেলাতেও সর্বাত্মক বিশেষ লকডাউন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পরবর্তী সাতদিন এই বিশেষ লকডাউন বলবৎ থাকবে। এই প্রেক্ষিতে ১৫টি বিধি নিষেধ আরোপ করে একটি গণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার দুপুর ২ টার দিকে নওগাঁর জেলা প্রশাসক (ডিসি) হারুণ-অর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
হারুণ অর রশিদ জানান, সম্প্রতি নওগাঁর নিয়ামতপুর ও সদর উপজেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমন রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা সুপারিশের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে সদর উপজেলার পৌরসভা এলাকা সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসাথে নিয়ামতপুর উপজেলাতেও সর্বাত্মক লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি।
আরও পড়ুন: স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন দিতে পারবে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
চলমান লকডাউনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন করোনা শনাক্ত ১৯৬
তিনি জানান, লকডাউন ঘোষিত এলাকায় সকল ধরনের জরুরি পরিসেবা ও পণ্যবাহী পরিবহন চালু থাকবে।
এসময় নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া, সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।