লকডাউন
লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
চলমান লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
বিবৃতিতে তারা বলেন, লকডাউনে বাস ছাড়া সবই চলছে। বাস চালু না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিকল্পভাবে সিএনজি চালিত অটোরিকশা, টেম্পু, থ্রি-হুইলার, মাইক্রোবাস, স্টাফ বাস এমনকি অ্যাম্বুলেন্সেও গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বরং স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়ছে। লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে সিটের অর্ধেক যাত্রী অর্থাৎ দুই সিটে একজন যাত্রী নিয়ে বাস চালু থাকলে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
তারা আরও বলেন, বাস চালুর ব্যাপারে সারা দেশের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে সাংঘাতিকভাবে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বাস চালুর দাবিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক-মহাসড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ চলতেছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্যসামগ্রী পেল কর্মহীন ১২০০ পরিবহন শ্রমিক
তারা আরও বলেন, সামনে ঈদ। লাখ লাখ শ্রমিক কর্মহীন অবস্থায় পড়ে আছে। বহু গরিব মালিক ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছে। এসব দিক বিবেচনা করে কর্মহীন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সহযোগিতা প্রদানসহ বাস চালু করতে সারা দেশের মালিকদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
সকল পণ্যে ওয়ারেন্টির মেয়াদ বাড়াল স্যামসাং
ক্রেতাদের সুবিধা বিবেচনায় স্যামসাং পণ্যে ওয়ারেন্টি সেবার সময়সীমা বাড়াচ্ছে স্যামসাং বাংলাদেশ।
গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে যেসব স্যামসাং পণ্যের মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং শেষ হবে, সেসকল পণ্যের ওয়ারেন্টির মেয়াদ বাড়িয়েছে প্রযুক্তি পণ্যের বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানটি।
স্যামসাং এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, লকডাউন শেষ হবার দিন থেকে অতিরিক্ত ১৪ দিন পর্যন্ত ওয়ারেন্টি সেবার সময় বাড়বে।
আরও পড়ুন: মাত্র ৫,৯৯৯ টাকায় স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন!
করোনার সংক্রমণ এবং ভাইরাসের কারণে মৃত্যু কমাতে সরকার দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করে। লকডাউন চলাকালে চলাফেরায় বিধি-নিষেধের কারণে ক্রেতারা ওয়ারেন্টি সেবা গ্রহণ করতে পারছেন না। তাই, ক্রেতাদের এ সমস্যা লাঘবে এবং তাদের জীবনযাত্রাকে আরও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ করতে ওয়ারেন্টি সেবার সময় বাড়িয়েছে স্যামসাং।
আরও পড়ুন: স্যামসাং বাজারে নিয়ে এলো বাজেটবান্ধব গ্যালাক্সি এম০২এস
এ নিয়ে স্যামসাং বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোয়ানসাং উ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও দেশের নাগরিকরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ দেশব্যাপী বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায়, মানুষ এমনিতেই নানা বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন, এ সময়ে আমরা চাই না ক্রেতারা ওয়ারেন্টির সময় শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তা করুক। এজন্য, কিছুটা হলেও তাদের দুশ্চিন্তা কমাতে এবং তাদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলতে আমরা ওয়ারেন্টির সময় বাড়াতে পেরে আনন্দিত। আমাদের বিশ্বাস, ক্রেতারা এর থেকে উপকৃত হবেন। এ প্রতিকূল অবস্থায়, আমরা সবাইকে বাসায় থেকে নিরাপদ ও সুস্থ থাকার অনুরোধ জানাই।’
আরও পড়ুন: বছর শেষে অফার নিয়ে এসেছে স্যামসাং বাংলাদেশ
গত বছর সাধারণ ছুটি চলাকালেও স্যামসাং এর সকল পণ্যে ওয়ারেন্টি সেবার সময় বাড়িয়েছিল।
সিলেটে হেফাজত নেতা মুফতি মাসউদ গ্রেপ্তার
সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি মাওলানা মাসউদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তিনি জকিগঞ্জ উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শাহবাগ জামিয়া মাদানিয়া ক্বাসিমুল উলুম মাদ্রাসার নায়েবে মুহতমিম (ভাইস প্রিন্সিপাল) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও গ্রেপ্তার ১১
শুক্রবার ভোররাত ৩ টায় জকিগঞ্জস্থ বারহাল কচুয়ায় তার নিজ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কাসেম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২০ এপ্রিল জকিগঞ্জ থানায় দায়ের করা পুলিশের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই মামলায় এর আগে আরও ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন গ্রেপ্তার
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় জকিগঞ্জের বারহাল ইউনিয়নের মাইজগ্রাম জামে মসজিদ থেকে হেফাজতে ইসলামের গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে একটি মিছিল বের হয়। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লকডাউন চলা অবস্থায় বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করায় তখন ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনসহ গ্রেপ্তার ৩১০
এ ঘটনায় পরদিন ২০ এপ্রিল জকিগঞ্জ থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ বিএনপি, জামায়াত, শিবির ও হেফাজতে ইসলামের প্রায় ৩০-৩৫ জন অজ্ঞাত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এই মামলায় মাওলানা মুফতি মাসউদকেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
লকডাউন ৫ মে পর্যন্ত বাড়ল
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চলমান লকডাউন ৫ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে বুধবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউন ও জনসমাগমের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সরকার ছয়টি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দোকান ও শপিংমলগুলো স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য সংস্থা ও বাজার পরিচালনা কমিটি এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও কঠোর লকডাউন আসতে পারে: কাদের
এই নির্দেশনা অনুসারে, পণ্যবাহী যানবাহন ব্যতীত কাউকে ভারত থেকে বিমান, স্থল ও নদী পথের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
এছাড়াও যে সকল বাংলাদেশি এখন ভারতে রয়েছেন এবং তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, কেবল তারাই ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের কাছ থেকে রিলিজ/ সার্টিফিকেট গ্রহণের পর দেশে প্রবেশ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: লকডাউনেই খুলেছে বিপণীবিতানের দরজা, সড়কে চাপ
মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং চীন থেকে যারা করোনা নেগেটিভ সনদপত্র এবং ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদপত্র নিয়ে দেশে আসবেন তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের আগমন এবং কোয়ারেন্টাইন পালনের সময়কাল সম্পর্কে তাদের স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে হবে।
তবে উক্ত দেশগুলো থেকে আগত যাদের শুধু করোনা নেগেটিভ সনদপত্র রয়েছে কিন্তু ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদপত্র নেই তাদেরকে সরকারি সুবিধাযুক্ত প্রতিষ্ঠানে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ৩-৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসকরা তাদেরকে পরীক্ষা করার পর বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিলে, তারা তাদের বাড়িতে যাবে এবং নিজ বাড়িতে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকবে।
আরও পড়ুন: লকডাউন: ২৫ এপ্রিল থেকে খুলবে দোকান-শপিংমল
অন্যান্য দেশ থেকে আগতদের ১৪ দিনের জন্য সরকারি সুবিধাযুক্ত প্রতিষ্ঠানে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঈদ-উল-ফিতরের জামাত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
এর আগে ২৬ এপ্রিল জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কোনও উন্নতি না হওয়ায় সরকার বর্তমান লকডাউনটি ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী কোভিড পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে ২০ এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল যেখানে চলমান কঠোর লকডাউন ২২ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছিল।
মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকায়, এর বিস্তার রোধের পদক্ষেপের অংশ হিসাবে সরকার ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশব্যাপী একটি ঢিলেঢালা লকডাউন দিয়েছিল। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিলের পর্যন্ত 'কঠোর' লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
২৩ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল যেখানে বলা হয়েছে, যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রাখার শর্তে ২৫ এপ্রিল থেকে (সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা) দোকান ও শপিংমলগুলো খোলা থাকবে।
বাংলাদেশের কোভিড পরিস্থিতি
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৭৭ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৩০৫ জনে দাঁড়াল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯৫৫ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৬১৪ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে মঙ্গলবার অধিদপ্তর জানায়, এক দিনে মহামারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৭৮ জন মারা গেছেন এবং ৩ হাজার ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজার ২০৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১০.৪৮ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৩৯২ জন। মোট সুস্থ ৬ লাখ ৭২ হাজার ৩১৯ জন। সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫০ শতাংশ।
লকডাউন বাড়ছে: প্রতিমন্ত্রী
সরকার আগামী ৫ মে পর্যন্ত আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও কঠোর লকডাউন আসতে পারে: কাদের
এই বিষয়ে মঙ্গলবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
এর আগে গত ১৪ এপ্রিল লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ওই লকডাউনের মেয়াদ শেষ হয় ২১ এপ্রিল। পরে ২২ এপ্রিল থেকে ফের সপ্তহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
এদিকে চলমান লকডাউনের মধ্যেই গত ২৩ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ এক প্রজ্ঞাপনে শপিংমল ও দোকান খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। যা রবিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৩১ লাখ ছাড়াল
কোভিড-১৯ মহামারির থাবায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে শনাক্ত ও প্রাণহানির ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার সকালে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার ৭৮২ জনে।
এছাড়া, ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩১ লাখ ৬ হাজার ৩৮৪ জনে।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার ৭৬ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৭২ হাজার ২০০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্তে তৃতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী ১ কোটি ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৭৯৭ জনের।
আরও পড়ুন: জুনের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না: বিশেষজ্ঞ মতামত
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৩১১ জন।
মেক্সিকো মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মারা গেছেন ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৭ জন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আবারও বেড়েছে বলে রবিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এক দিনে মহামারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০১ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯২২ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
এর আগে শনিবার অধিদপ্তর জানায়, একদিনে ৮৩ জন মারা গেছে এবং ২ হাজার ৬৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৯২২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১৩.৩৩ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩০১ জন। মোট সুস্থ ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন। সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৪৮ শতাংশ।
শীঘ্রই দেশে ‘করোনাভাইরাস ধ্বংসকারী’ নাকের স্প্রে বাজার আসছে
মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যখন একটি প্রতিযোগিতা চলছে তখনই এই ভাইরাসকে ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এমন একটি নাকের স্প্রে তৈরি করার দাবি করছে বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিকেল মেজারমেন্টস-বিআরআইসিএম।
এটির নাম রাখা হয়েছে ‘বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে’।
আরও পড়ুন: করোনাকালে অনলাইনে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরামর্শ ‘সহজ হেলথে’
বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক ড. মালা খান ইউএনবিকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস ধ্বংস করার সক্ষমতা আছে এমন একটি নাকের স্প্রে তৈরি করার কাজ করছি আমরা।’
তিনি বলেন, এই স্প্রে তৈরি করার বিষয়ে আমরা এখন বিস্তারিত জানাতে চাই না। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে চাচ্ছি।
মালা খান বলেন, নাকের এই স্প্রে গত ২৪ মার্চে বিএমআরসি থেকে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি পেয়েছি আমরা। এখন ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। খুব শিগগিরই ক্লিনিকাল ট্রায়ালের কাজ শেষ করব আমরা।
নাকের এই স্প্রে কবে নাগাদ বাজারে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা একদম প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে চাই। এখন বিস্তারিত বলতে চাই না। কবে বাজারে আসবে সেই তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। তবে খুব শিগগিরই বাজারে আসবে।’
মহাপরিচালক বলেন, করোনাকালীন সময়ে মানুষের কথা চিন্তা করে করোনা রোধে কি করা যায় তা আমরা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে আসছি। আমরা আশা করছি, এই স্প্রেটি মানুষের অনেক কাজে আসবে।
আরও পড়ুন: করোনার ১ম ডোজের টিকাদান সোমবার থেকে স্থগিত
স্প্রেটির মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি তৈরি করতে বা উৎপাদন খরচ কত টাকা হয় তা বুঝে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। তবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই থাকবে।
‘বঙ্গোসেইফ ওরো নেইজল স্প্রে বাজারজাতকরণে কোন মুনাফা করার উদ্দেশ্য আমাদের নেই। মানুষের উপকারে আসবে চিন্তা করেই এটি তৈরি করা হচ্ছে,’ বলেন মহাপরিচালক।
কি পরিমাণ স্প্রে উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আমরা প্রোডাকশন করতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
বিআরআইসিএম থেকে জানা যায়, করোনাভাইরাস নাক, কান, গহ্বর ও শ্বাসনালীতে অবস্থান করে। যদি এই স্প্রেটি নাক, কান ও গহ্বরে দেয়া হয় তাহলে করোনাভাইরাস ধ্বংস করার সক্ষমতা রয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এই স্প্রে ব্যবহার করে সুফল পাবেন।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আবারও বেড়েছে বলে রবিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এক দিনে মহামারি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০১ জন মারা গেছেন। এনিয়ে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ৫৩ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: করোনায় একদিনে আবারও শতাধিক মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২৯২২
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯২২ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জনে পৌঁছেছে।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
বাংলাদেশ বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি অবনতির দিকেই যাচ্ছে। আগামী জুন মাসের আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দল বাংলাদেশ কমো মডেলিং গ্রুপ।
বাংলাদেশ ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত দলটি গাণিতিক মডেলিং ব্যবহার করে করোনার পূর্বাভাস জানার চেষ্টা করেন। গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ করোনা পরিস্থিতি বর্তমান অবস্থাতেই থাকবে। তবে জুন মাস থেকে পরিস্থিতি উন্নতি হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি : ফের চালু হল ‘সিএমপি বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতাল’
তবে স্থানীয় কিছু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। তাদের মতে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার লকডাউন কার্যকর করার আগেই অনেক মানুষ রাজধানী ছেড়ে নিজ জেলায় চলে যায়। এর ফলে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতেও এখন দ্রুত করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।
স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও কঠোর লকডাউন আসতে পারে: কাদের
আবারও সারাদেশে কঠোর লকডাউন দেয়া হতে পারে বলে জনগণকে সতর্ক করলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণপরিবহনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানা হলে পরিস্থিতি বিবেচনায় পুনরায় লকডাউন দেয়ার কথা জানান মন্ত্রী।
রবিবার নিজ বাসভবনে নিয়মিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: লকডাউনেই খুলেছে বিপণীবিতানের দরজা, সড়কে চাপ
মন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউনের পর যখন গণপরিবহন চালু করা হবে, তখন দেশের সকল নাগরিককেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।’
এর আগে শনিবার (২৪ এপ্রিল) লকডাউন শেষে গণপরিবহন চালু করার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: লকডাউন: ঢাকার রাস্তায় প্রাইভেট কারের চলাচল বৃদ্ধি
সামনে ঈদ ও জনগণের চাহিদা বিবেচনায় সরকার লকডাউন শেষ হওয়ার পর পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহন পুনরায় চালু করার কথা চিন্তা করছে।
লকডাউন শেষ হওয়ার পরও জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবং মাস্ক ব্যবহার করার জন্য সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: ২৮ এপ্রিলের পর লকডাউন শিথিল করতে পারে সরকার
এদিকে গত ৩১ মার্চ থেকে গণপরিবহন, এমনকি আন্তজেলার বাসের ভাড়াও ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে সরকার। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে ভাড়া বৃদ্ধি করে সরকার।
লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জরুরি অবস্থা ঘোষণা ছাড়া লকডাউন দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের যৌথ হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া জনগণের চলাফেরার অধিকার, আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারসহ যে কোন মৌলিক অধিকার সরকার স্থগিত রাখতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘লকডাউন দিয়ে সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৫ ও ৩৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত মৌলিক অধিকারসমূহ খর্ব করা হচ্ছে। এটা সংবিধান পরিপন্থি। এ কারণে রিট দায়ের করেছি। রিটে চলমান লকডাউন স্থগিত চেয়েছি এবং ফের লকডাউন না দেয়ার নির্দেশনা চেয়েছি বলেও জানান তিনি।’
রিট আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটিকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা এবং তা পরবর্তীতে বৃদ্ধি করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউনেই খুলেছে বিপণীবিতানের দরজা, সড়কে চাপ
এছাড়া পুনরায় লকডাউন না দেয়ার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েও রুল জারির আর্জি জানানো হয়। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চলমান লকডাউন স্থগিত রাখতে এবং পুনরায় লকডাউন না দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
২৮ এপ্রিলের পর লকডাউন শিথিল করতে পারে সরকার
মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতরের দুই সপ্তাহ আগে ২৮ এপ্রিল থেকে লকডাউনে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হবে।
তবে, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়নি এবং এই বিধি-নিষেধগুলো কী পরিমাণে শিথিল হবে তা এখনই পরিষ্কার নয়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, 'এই সিদ্ধান্ত ২৮ এপ্রিল নেয়া হবে।'
তিনি বলেন, 'এমনকি যদি বিধি-নিষেধগুলো শিথিল করা হয়, তবে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে এবং সরকার ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতিটির কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করবে।'
আরও পড়ুন: লকডাউন: ২৫ এপ্রিল থেকে খুলবে দোকান শপিংমল
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ বলেন, ২৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমলগুলো পুনরায় চালু হওয়ার পর স্বাস্থ্য নির্দেশিকা নিশ্চিত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে দুরুত্ব বজায় রাখি তাহলে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধি-নিষেধ মানলে অনেকটা উপকৃত ফলাফল পাবো আমরা। সে জন্য স্বাস্থ্যবিধির ওপর জোর দেয়া হবে।
গণপরিবহনের নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি
শিথিল লকডাউন কেমন হবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ জানান, এখানে অনেক বাধা থাকবে না। 'বিদ্যমান বিধি-নিষেধ সীমিত থাকবে। প্রতিদিনের জন্য কিছু গাইডলাইন থাকবে।'
অফিস পরিচালনার বিষয়ে ২৮ এপ্রিলের মধ্যেই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
ফরহাদ জানান, তারা গণপরিবহনের চলাচল নিয়ে আলোচনা করছেন। 'এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, একবার পুনরায় চালু হলে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করা আমরা নিশ্চিত করব।'
গণপরিবহনে মাস্ক পরা এবং যথাযথ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন: ঢাকার রাস্তায় প্রাইভেট কারের চলাচল বৃদ্ধি
যদিও লকডাউন চলাকালীন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল, তবুও সরকার প্রথম ধাপের লকডাউনের তৃতীয় দিন ৭ এপ্রিল সিটি করপোরেশন অঞ্চলে এর কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি দেয়।
২৫ এপ্রিল থেকে পুনরায় খুলছে দোকানপাট
কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে দোকান ও শপিংমলগুলো বন্ধ ছিল।
তবে, দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা আবার ব্যবসা চালু করার দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করেন। তাদের যুক্তি দেখায়, গত বছর লকডাউনের সময় তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঈদ-উল-ফিতর সাধারণত ব্যবসায়ের ব্যস্ততম সময়। কিন্তু, কোভিডের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গত বছরের ঈদ উদযাপিত হয়। এতে ব্যবসায়ে বড় ক্ষতি হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি গত বছরের অবস্থার পুনরাবৃত্তি তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই, সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়ে এপ্রিল ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি, প্রজ্ঞাপন জারি
শুক্রবার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একটি নোটিশ জারি করেছে যেখানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার শর্তে ২৫ এপ্রিল (সকাল ১০টা থেকে ৫টা) শপিংমলগুলো খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়।
সবচেয়ে মারাত্মক মাস
করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং মৃত্যু আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সরকার প্রথমে ১৮-দফা নির্দেশনা জারি করে। এই পরিস্থিতি এপ্রিলের শুরু থেকে এক সপ্তাহব্যাপী লকডাউন আরোপ করতে সরকারকে বাধ্য করে। তবে এই লকডাউন প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার ১১ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ আরোপ করেছে এবং ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
শুধু এপ্রিলেই করোনাতে আক্রান্ত হন ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৩৫ জন এবং মারা যান ১ হাজার ৮২৩ জন। এপ্রিলের এই প্রথম ২৩ দিনের মৃত্যুর সংখ্যাই গত তিন মাস জানুয়ারি (৫৬৮), ফেব্রুয়ারি (২৮১) এবং মার্চের (৬৩৮) মোট মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: ঈদে শিথিল হতে পারে লকডাউন: কাদের
১৬ এপ্রিল থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশে করোনায় প্রতিদিন ১০০ জন মারা গেছেন। পরবর্তী তিন দিনে মৃতের সংখ্যা ৯০-এরও বেশি ছিল।
এই মাসে করোনাভাইরাসে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন আগামী জুন নাগাদ দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।