লকডাউন
লকডাউন লঙ্ঘন: রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৬২১
লকডাউনের লঙ্ঘনের অভিযোগে ঢাকায় ৬২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। করোনা ভাইরাস রোধকল্পে সরকারের ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউনের’ তৃতীয় দিন শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইফতেখায়েরুল ইসলাম জানান, নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিনাকাজে ঘোরাফেরা করার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন লঙ্ঘন: ভোলায় ৪৩৮ জনকে জরিমানা
ইফতেখায়েরুল বলেন, সড়ক পরিবহন আইনের অধীনে বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে চলাচলকারী যানবাহনের কাছ থেকে জরিমানা হিসাবে ১৯ লাখ ২২ হাজার ৩৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
তবে, মোট কত সংখ্যক যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তা এই কর্মকর্তা জানাতে পারেননি।
এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত ৩৪৬ জনকে এক লাখ ৬ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করেছে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে বিয়ে: বর ও কনে পক্ষকে জরিমানা
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থান থাকা সত্ত্বেও লকডাউনের তৃতীয় দিনে রাস্তায় মানুষ এবং যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেশি দেখা গেছে।
উত্তরা জোনের ট্রাফিক পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেছেন, যানবাহনের সংখ্যা গত দু'দিনের চেয়ে বেশি ছিল। তবে আমরাও সক্রিয় রয়েছি এবং যাদের বৈধ কারণ রয়েছে কেবল তাদেরই বাইরে আসতে দিচ্ছি।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে বিয়ে করে জরিমানা গুনলেন বর
দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জন্য সরকার ১ জুলাই থেকে সাত দিনের লকডাউন দিয়েছে। এটি চলবে আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত।
লকডাউন লঙ্ঘন : ভোলায় ৪৩৮ জনকে জরিমানা
ভোলায় লকডাউন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৭৮ জনকে ৬০ হাজার ২’শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ নিয়ে গত তিনদিনে মোট ৪৩৮ জনকে জরিমানা করা হলো।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত জেলার সাত উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় তাদের জরিমানা করা হয়।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে বিয়ে : বর ও কনে পক্ষকে জরিমানা
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউছুফ হাসান সাংবাদিকদের জরিমানার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার দুপুর পর্যন্ত ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭৫টি মামলা করা হয়েছে।
জানা যায়, ভোলার প্রতিটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় জনসাধারণকে সচেতন করতে হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে প্রচারণা চালাতেও দেখা যায়।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে বিয়ে করে জরিমানা গুনলেন বর
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, লকডউন বাস্তবায়নে নৌ-বাহিনীর দুটি টিম, বিজিবির দুটি, র্যাবের একটি ও আনসারের দুটি টিম মাঠে কাজ করছে। একইসাথে ভেদুরিয়া ও ইলিশা ঘাটে অবৈধভাবে নৌপথে যাত্রী পারাপার বন্ধে কাজ করছে কোস্টগার্ডের দুটি দল। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই ১৯-২০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়ে আসছে বলে জানানো হয় ।
লকডাউনে প্রবাসীদের জন্য অভ্যন্তরীণ রুটে চলছে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট
লকডাউনের মধ্যেই বিধি নিষেধ মেনে সারাদেশে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ।
শুধুমাত্র বিদেশফেরত ও বিদেশগামী যাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্যই লকডাউন চলাকালীন সময়ে (আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত) ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও কক্সবাজার রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
আরও পড়ুনঃ কক্সবাজার রুটে ইউএস বাংলার ফ্লাইট শুরু ১ জুন
ব্যবসা নয়, সেবা দেয়ার জন্যই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রবাসীদের স্বার্থে লকডাউন চলাকালে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বলে জানানো হয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে।
আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্যই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সরকারের বিধিনিষেধসহ সকল ধরনের স্বাস্থ্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা পালন করে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বলেও জানিয়েছে এয়ারলাইন্সের অথরিটি।
লকডাউন চলাকালীন ইউএস-বাংলা ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিট, দুপুর ২টা ৫০ মিনিট ও বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে। আবার চট্টগ্রাম থেকে সকাল ১১টা ৫০মিনিট, বিকাল ৪টা ১০ মিনিট ও সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসছে।
আরও পড়ুনঃ ইউএস বাংলার ঢাকা দোহা ফ্লাইট পুনরায় শুরু হচ্ছে ৩১ আগস্ট
প্রবাসী যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে প্রতিদিন ঢাকা থেকে সিলেট, সৈয়দপুর ও কক্সবাজারে উদ্দেশ্যে দুপুর ১টায়, যশোরে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে যাচ্ছে। আবার সিলেট থেকে দুপুর ২টা ২০ মিনেটে, যশোর থেকে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে, সৈয়দপুর ও কক্সবাজার থেকে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসছে ইউএস-বাংলা ।
শুধুমাত্র বিদেশগামী ও বিদেশফেরত যাত্রীদের কাছে টিকেট থাকা সাপেক্ষে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলের সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছে ইউএস-বাংলা।
উল্লেখ্য, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে দোহা, মাস্কাট, সিঙ্গাপুর, দুবাই, গুয়াংজু রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান, খাবার গেল এতিমখানায়
দেশে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় মহা ধুমধামে সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান আয়োজন করেন এক ব্যক্তি। লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করায় অনুষ্ঠানের খাবার পাঠানো হয় এতিমখানায়, সাথে অর্থদণ্ড দেয়া হয় দোষী নুরুল আলমকে।
আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউনে জুমার নামাজ: রাজধানীর দুটি মসজিদে ভিন্ন চিত্র
শুক্রবার বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের গকুলদাসের বাগ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। লকডাউনের নিয়ম ভাঙায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার।
ইউএনও শুক্লা সরকার জানান, বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের গকুলদাসেরবাগ এলাকার নুরুল আলম শুক্রবার মহা ধুমধামে ছেলের সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রায় দেড় শতাধিক লোককে দাওয়াত করা হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য করোনাকালে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে লোক সমাগম না করার অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউপি সদস্যের কথা উপেক্ষা করেই নুরুল আলম বাড়ির উঠানে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করে ব্যাপক খাবার দাবারের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বিয়ে করে জরিমানা গুনলেন বর
আইন অমান্য করায় ওই বাড়িতে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বাড়ির মালিককে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অতিথিদের জন্য রান্না করা খাবার স্থানীয় এতিমখানায় দিয়ে দেয়া হয়।
সাভারে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে আগুন
সাভারের বাজার রোডে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। লকডাউন ও সরকারি ছুটির দিন ব্যাংক বন্ধ থাকায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। খবর পেয়ে সাভার ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।
আড়ও পড়ুন: সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
সাভার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার জহিরুল ইসলাম বলেন, আগুনের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। আমরা পৌঁছে কোন আগুন না পেয়ে শুধু ধোঁয়া বের করার যন্ত্র চালিয়ে ধোঁয়া বন্ধ করে দেই। আগুনের তীব্রতা কম থাকায় ভবনের রিজার্ভ করা ট্যাংকির পানি দিয়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আগুনে পুড়েছে ২৫ দোকান
ভবন মালিক জুয়েল জানান, সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। লকডাউনের কারণে এবং ছুটির দিন থাকায় ব্যাংকে কোন কর্মকর্তারা ছিল না। শুধু নিরাপত্তারক্ষী ছিল। তাই তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
রাঙামাটিতে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করতে দ্বিতীয় দিনে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনকে সহায়তা করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ মাঠে রয়েছে। এসময় তারা বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট বসিয়ে অকারণে যারা ঘোরাঘুরি করছে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
গতকালের মতো শুক্রবার সকাল থেকে কঠোর অবস্থানে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটরা। একাধিক মোবাইল টিম শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭৬ জনকে অর্থদণ্ড
জেলা প্রশাসনের সাথে শহরে সেনাবাহিনীর টহল ছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে বিজিবি ও পুলিশ। রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি মোবাইল টিম কাজ করতে দেখা গেছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে পুলিশ, আর্মড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন। তারা বিভিন্ন চেকপোস্টে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আর পৌর এলাকাজুড়ে করোনা সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে তথ্য অফিস।
এছাড়া শহরে ওষুধ ও হোটেল দোকান ছাড়া অন্যসব দোকান ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাটে লোকজনের উপস্থিতি আগের তুলনায় অনেক কম। সকল প্রকার যানবাহন ও নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনায় আরও ১১ মৃত্যু
রিকশাবিহীন রাঙামাটি শহরে অটোরিকশা বন্ধ থাকায় কার্যত সরকারের বিধিনিষেধ সফলভাবে পালিত হচ্ছে। তবে ব্যাংক, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রতিষ্ঠানের যানবাহনে অথবা পরিচয়পত্র নিয়ে বের হতে দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে বের হলেও মোবাইল টিমের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউন চলবে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত। এসময়ে জরুরি কারণ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
লকডাউনে সিলেটে ২২০ মামলা, ২ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা
কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে সিলেট নগরী ও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় ২২০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই সাথে ২ লাখ ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় লকডাউন কার্যকর করতে এসব অভিযান পরিচালনা করে সিলেটের প্রশাসন ও পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ করোনা: খুলনায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের তীব্র সংকট
জানা গেছে, সিলেট প্রশাসনের উদ্যোগে যথাযথভাবে লকডাউন পালন ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার সারাদিন ব্যাপী সিলেট মহানগর ও সকল উপজেলায় ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় ১৭২ টি মামলা ও ২ লাখ ৬শ’ টাকা জরিমানা করা হয়। কোর্ট পরিচালনা কাজে সার্বিক সহায়তা করে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, আনসার ও বিজিবি সদস্যরা।
এদিকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত এসএমপির বিভিন্ন স্থানে এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর উপস্থিতিতে সর্বমোট ২৫ জনকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা ও তা আদায় করা হয়।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন লঙ্ঘন: ঢাকায় গ্রেপ্তার ৫৫০ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযানে সিএনজি অটোরিকশা ৯ টি, মোটরসাইকেল ৩০টি, প্রাইভেট কার ২টি ও অন্যান্য ৭ টি মামলাসহ সর্বমোট ৪৮টি মামলা করা হয়। এবং সিএনজি অটোরিকশা ১৮ টি, মোটরসাইকেল ৫৯টি, প্রাইভেট কার ৩ টি, অন্যান্য ২৪টি সহ মোট ১০৪ টি গাড়ি জব্দ করে পুলিশ।
লকডাউন লঙ্ঘন: ঢাকায় গ্রেপ্তার ৫৫০
লকডাউনের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের জন্য রাজধানী থেকে ৫৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ‘কঠোর লকডাউন’ এর প্রথম দিন রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) অধ্যাদেশে মামলা করা হয়েছে বলে ডিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় একদিনেই সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যু
ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, রমনায় ৯৫ জন, লালবাগে ৬০ জন, মতিঝিলে ৮৫ জন, ওয়ারীতে ১১৭ জন, তেজগাঁওয়ে ১০০ জন, গুলশানে ৮৭ জন এবং উত্তরায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে এই সময়ের মধ্যে ২৭৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে এবং ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও, ভ্রাম্যমাণ আদালত ‘কঠোর লকডাউন’ এর প্রথম দিনেই আটজনকে সাজা এবং বহু ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।
এর আগে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ৩৭৩ জনকে আটক করেছে এবং ৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
দিনের শুরুতে, রাস্তাঘাটে টহল দলসহ মানুষকে ঘরে থাকতে রাজি করানোর জন্য বাংলাদেশ একটি কঠোর লকডাউনে প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলা: বাংলাদেশকে আরও ৯০ কোটি টাকা দেবে সুইজারল্যান্ড
সেনাবাহিনীকে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় শহরের রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে। যানবাহন ও লোকজনের চলাচল পর্যবেক্ষণ করতে পুলিশ শহরের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যারিকেড এবং চেকপোস্ট স্থাপন করেছিল।
রাজধানীর বেশিরভাগ রাস্তাগুলি প্রায়ই খালি ছিল। কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে।
লকডাউন ‘কেমন চলছে’ দেখতে বেরিয়ে চট্টগ্রামে আটক ২১
সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ঘোষিত দেশব্যাপী চলমান কঠোর ‘লকডাউন কেমন চলছে’ তা দেখতে বের হওয়ায় চট্টগ্রামে ২১ জনকে আটক করা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে এসব আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউনে স্বাভাবিক হিলি স্থলবন্দরের কার্যক্রম
লকডাউনের প্রথম দিন আগ্রাবাদ এলাকা পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সানা শামিমুর রহমান। এসময় উপকমিশনার (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারীশ, এসি ডবলমুরিং মাহমুদুল হাসান মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আজ সকাল থেকেই একটি চেকপোস্ট ও ৫টি টহল টিমের মাধ্যমে আমরা লকডাউন কার্যকরের চেষ্টা করছি। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকদের আমরা গন্তব্যে পৌঁছাতে সহযোগিতা করছি। পাশাপাশি অকারণে যারা বের হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনা বিভাগে রেকর্ড ৩৫ জনের মৃত্যু, ১২৪৫ শনাক্ত
তিনি বলেন, 'লকডাউন কেমন চলছে' দেখতে বের হয়ে ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। একই সময় ৫টি গাড়ি জব্দ ও ১০ টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। লকডাউন কার্যকরে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
লকডাউন: বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার
বেনাপোলে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত টহল দিচ্ছে। স্থলবন্দরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। তবে কাস্টমস ও বন্দর সংশ্লিষ্ট লোকজনদের যাতায়াত করতে দেখা গেছে।
লকডাউনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি চালু ছিল। বন্দর ও কাস্টমস হাউজে স্বাভাবিক নিয়মে কাজ হয়েছে। সকাল থেকে ১৮০ ট্রাক মালামাল আমদানি হয়েছে ও ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৭০ ট্রাক মালামাল।
আরও পড়ুন: ছুটির দিনেও খোলা ছিল বেনাপোল কাস্টম হাউস
৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম রেজা জানান, ভারতীয় কোন ট্রাক চালক যাতে বন্দরের বাইরে বের হতে না পারে সেজন্য বন্দর এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও জেলার অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট দীর্ঘ সময় নজরদারি করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে রেলযোগে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৬০ কন্টেইনার সোডিয়াম সালফেট আমদানি হয়েছে। কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কন্টেইনারগুলো নওয়াপাড়ায় যাবে বলে বেনাপোল রেলওয়ের মাস্টার মো. সাইদুজ্জামান নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে আন্তর্জাতিক কিডনি পাচারকারী চক্রের সদস্য আটক
বেনাপোল পুলিশ ইমিগ্রেশনের ওসি আহসান হাবিব জানান, লকডাউনের মধ্যে ভারত থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ৪০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছে এবং বাংলাদেশ থেকে তাদের প্রত্যেককে বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টেইনে রাখা হয়েছে।