পাকিস্তান
বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশি, ভারতীয়, নেপালি ও পাকিস্তানিদের গড় আয়ু ৫ বছর কমবে: একিউএলআই
বস্তুকণাযুক্ত বায়ুদূষণ মানব স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় বাহ্যিক ঝুঁকি। তবে বৈশ্বিক হিসেবে এর বেশিরভাগ প্রভাব পড়বে ছয়টি দেশে, বাংলাদেশ এই দেশগুলোর একটি। অর্থাৎ, দেশটি বিশ্বের অন্যতম দূষিত বায়ুর দেশ।
এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স (একিউএলআই) থেকে পাওয়া নতুন তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে বৈশ্বিক দূষণ যেমন ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তেমনি মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাবও বেড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য যদি বিশ্ব স্থায়ীভাবে সূক্ষ্ম কণা দূষণ (পিএম২.৫) কমাতে পারে, তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তির গড় আয়ু ২ বছর ৩ মাস বাড়বে। অর্থাৎ, বিশ্বব্যাপী সম্মিলিত আয়ুষ্কাল ১৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন জীবন-বছর বাড়বে।
এসব তথ্যে জানা যায়, বস্তুকণা দূষণ মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাহ্যিক ঝুঁকি। ধূমপানের তুলনায় আয়ুষ্কালের উপর এর প্রভাব বেশি, অ্যালকোহল ব্যবহার এবং অনিরাপদ পানির চেয়েও এর প্রভাব তিন গুণেরও বেশি এবং গাড়ি দুর্ঘটনার মতো পরিবহনে আঘাতের চেয়ে এর ক্ষতির পরিমাণ ৫ গুণেরও বেশি।
তবে বিশ্বের সব দেশে দূষণের চ্যালেঞ্জ সমান নয়।
দক্ষিণ এশিয়ায় পৃথিবীর অন্য সব স্থানের চেয়ে দূষণের প্রভাব মারাত্মক বেশি। এই অঞ্চলে বিশ্বের চারটি সবচেয়ে দূষিত দেশ এবং বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ বাস করে।
একিউএলআই এর তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানে বর্তমানে যে উচ্চ মাত্রার দূষণ চলছে তা অব্যাহত থাকলে বাসিন্দাদের গড় আয়ু প্রায় ৫ বছর কমে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা শীর্ষে
অর্থনীতিবিদ মিল্টন ফ্রিডম্যান বিশিষ্ট পরিষেবা অধ্যাপক এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট (ইপিআইসি) এর সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে একিউএলআই এর স্রষ্টা মাইকেল গ্রিনস্টোন বলেছেন, ‘বৈশ্বিক আয়ুষ্কালের ওপর বায়ু দূষণের তিন-চতুর্থাংশ প্রভাব মাত্র ছয়টি দেশের ওপর পড়ছে। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নাইজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। যেখানকার বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার কারণে মানুষ তাদের তাদের জীবন থেকে এক থেকে ছয় বছরেরও বেশি সময় হারায়।’
একিউএলআই গত পাঁচ বছর ধরে এই দেশগুলোর বায়ুর গুণমান ও এর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিগুলোর তথ্য স্থানীয় মিডিয়া এবং রাজনৈতিক কভারেজ থেকে সংগ্রহ করেছে।
প্রকৃতপক্ষে, অনেক দূষিত দেশে বায়ু দূষণের মৌলিক অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা এর দুটি সবচেয়ে মর্মান্তিক উদাহরণ। দূষণের কারণে মোট মৃত্যুর ৯২ দশমিক ৭ শতাংশই এই অঞ্চলে হয়।
এরপরও এশিয়া ও আফ্রিকার মাত্র ৬ দশমিক ৮ এবং ৩ দশমিক ৭ শতাংশ সরকার তাদের নাগরিকদের সম্পূর্ণ উন্মুক্ত বায়ু মানের তথ্য সরবরাহ করে।
এশিয়া ও আফ্রিকার মাত্র ৩৫ দমমিক ৬ ও ৪ দশমিক ৯ শতাংশ দেশের বায়ুর মানের স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে।
বায়ু দূষণ মানুষের জীবনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করলেও বিশ্বব্যাপী বায়ু মানের পরিকাঠামোতে সে অনুপাতে বিনিয়োগ করতে দেখা যায়না দেশগুলোর সরকারকে।
যদিও এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা রোগের জন্য একটি বৃহৎ বৈশ্বিক তহবিল রয়েছে। এর বার্ষিক সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করে, সেখানে বায়ু দূষণের বিষয়টিকে এতটা গুরুত্ব দিতে দেখা যায়না।
প্রকৃতপক্ষে, সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশ বায়ু দূষণের জন্য জনহিতকর তহবিলে তিন লাখ মার্কিন ডলারের নিচে বরাদ্দ পায় (অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একক পরিবারের ব্যবহৃত বাড়ির বর্তমান গড় মূল্য)।
ক্লিন এয়ার ফান্ড এর তথ্য অনুসারে, চীন ও ভারতের বাইরে এশিয়ায় মাত্র ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ পৌঁছায়। যেখানে ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পায়।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট
একিউএলআই এবং বায়ু মানের প্রোগ্রাম ইপিআইস- এর পরিচালক ক্রিস্টা হাসেনকপফ বলেছেন, ‘সুশীল সমাজ ও সরকারের নির্মল বায়ু প্রচেষ্টার প্রধান অগ্রাধিকার হতে পারে সময়োপযোগী, নির্ভরযোগ্য, বায়ুর মানের উন্মুক্ত তথ্য। জনগণ ও সরকারের কাছে যে তথ্যের অভাব রয়েছে তা সরবরাহ করা এবং এটি আরও সচেতন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও কাজে লাগে।
তিনি আরও বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত, আমরা আজ অনুপস্থিত এই অবকাঠামো গড়ে তোলার জন্য তহবিল বাড়ানোর মাধ্যমে পরিবর্তন আনার একটি বিশাল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।’
চীন
যদিও বিশ্বজুড়ে বায়ু দূষণ কমানোর চ্যালেঞ্জ কঠিন, তবে চীন এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে।
২০১৩ সাল থেকে দূষণ ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ কমিয়েছে দেশটি। দেশটি ২০১৪ সালে থেকে ‘দূষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করে।
যদি পরিবর্তনগুলো বজায় থাকে তবে চীনারা গড়ে ২ দশমিক ২ বছর বেশি বাঁচার আশা করতে পারে।
যদিও চীনে দূষণ এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা থেকে ছয় গুণ বেশি। যার ফলে জনগণের গড় আয়ু আড়াই বছর কমেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
দক্ষিণ এশিয়ার মতো, প্রায় সমস্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় (৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ) এখন দূষণের অনিরাপদ মাত্রা বিরাজ করছে বলে মনে করা হয়। কিছু অঞ্চলে এক বছরে দূষণ ২৫ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পায়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে দূষিত অংশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের গড় আয়ু ২ থেকে ৩ বছর কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ু দূষণ: হাইকোর্টের আরও ৩ দফা নির্দেশনা
মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা
যদিও এশিয়ান দেশগুলো চরম মাত্রার বায়ু দূষণ সম্পর্কে সর্বাধিক আলোচিত; তবে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের আফ্রিকান দেশগুলো বিশ্বের দশটি সবচেয়ে দূষিত দেশের মধ্যে রয়েছে।
এই অঞ্চলের সবচেয়ে দূষিত এলাকায় দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা থেকে ১২ গুণ বেশি এবং জনগণের গড় আয়ু ৫ দশমিক ৪ বছর কমেছে।
এই অঞ্চলে এইচআইভি/এইডস ও ম্যালেরিয়ার মতো বায়ু দূষণও সুপরিচিত ঘাতক হিসেবে স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।
ল্যাটিন আমেরিকা
গড় বায়ুর গুণমান সমগ্র বিশ্বজুড়েই অনিরাপদ অবস্থায় থাকলেও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে দূষণের হার যথেষ্ট কম।
তবে গুয়াতেমালা, বলিভিয়া ও পেরুর মতো দেশগুলো এ অঞ্চলের সবচেয়ে দূষিত দেশ। এগুলোর দূষণের মাত্রা ভারতের পুনে এবং চীনের হারবিনের মতো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুর গুণমান নির্দেশিকা মেনে চললে এসব দেশের বাসিন্দাদের গড় আয়ু ৩ থেকে ৪ দশমিক ৪ বছর বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্র
১৯৭০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্লিন এয়ার অ্যাক্ট পাস হওয়ার আগের সময়ের তুলনায় আমেরিকানরা ৬৪ দশমিক ৯ শতাংশ কম বস্তূকণা দূষণের সংস্পর্শে আসছেন। এ কারণে তাদের গড় আয়ু ১ দশমিক ৪ বছর বেড়েছে।
ইউরোপ
১৯৯৮ সালে এয়ার কোয়ালিটি ফ্রেমওয়ার্ক নির্দেশিকা শুরু হওয়ার পরে আগের তুলনায় ইউরোপের বাসিন্দারা বর্তমানে প্রায় ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ কম দূষণের সংস্পর্শে এসেছে। এর কারণে তাদের গড় আয়ু ৪ দশমিক ৫ বছর বেড়েছে।
এশিয়া কাপে সুপার ফোরে খেলার লক্ষ্য বাংলাদেশের
শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য এসিসি এশিয়া কাপে অংশ নিতে আগামীকাল রবিবার (২৭ আগস্ট) শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
শ্রীলঙ্কা রওনা হওয়ার আগে বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেন, তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ইভেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য যোগ্যতা অর্জন করা।
বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়া কাপে অংশ নিচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও নেপাল।
৩১ আগস্ট শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ গ্রুপ বি-তে রয়েছে এবং আফগানিস্তান গ্রুপের তৃতীয় দল। শ্রীলঙ্কায় শ্রীলংকার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ৩ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে পাকিস্তানে যেতে হবে তাদের।
মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশ দুটি দেশে গিয়ে ৫০ ওভারের দু’টি ম্যাচ খেলবে। কোচ চন্ডিকা এই ব্যস্ত সময়সূচি নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। কারণ আমরা সাধারণত একাধিক দেশে ভ্রমণ টুর্নামেন্ট খেলি না। তবে, দুই দলের ক্ষেত্রেই বিষয়টি একই কথা। তাই আমরা চ্যালেঞ্জটির অপেক্ষা করছি।’
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপ-২০২৩: এবাদতের বদলি খেলবেন তানজিম সাকিব
শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান উভয় দেশই গত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এবার আবারও ৫০ ওভারের ফরম্যাটে টাইগারদের পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত তারা।
এর আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে চন্ডিকা বলেন, ‘এই দুই দল একে অপরের বিপক্ষে সত্যিই ভালো ম্যাচ খেলেছে, বিশেষ করে আগের এশিয়া কাপে। তাই আমি মনে করি, দুই দলই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে একই সময়ে আমি মনে করি সাম্প্রতিক অতীতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কিছু সাফল্য পেয়েছি।’
শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসেসমেন্ট ও ফিটনেস পরীক্ষাসহ প্রস্তুতি ক্যাম্পের মধ্য দিয়ে গেছে। এশিয়া কাপের জন্য দলের প্রস্তুতি নিয়ে 'খুব খুশি' চন্ডিকা।
৭ নম্বরে কে ব্যাট করবেন- এই প্রশ্নটি বাংলাদেশের ক্রিকেট মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চন্ডিকা স্পষ্ট করেন, তিনি এই স্থানের জন্য কাউকে নির্বাচন করছেন না; বরং সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে পরিস্থিতি ও প্রতিপক্ষের ওপর।
আরও পড়ুন: ব্যাটিং অনুশীলন শুরু করেছেন তামিম ইকবাল
কোচ বোলারদের ব্যাটিং উন্নতিরও প্রশংসা করেন। তাদের, মাঝেমধ্যেই শেষ কয়েক ওভারে ব্যাটিং করতে দেখা যায়। তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমানের অগ্রগতিকে ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য সুপার ফোরের জন্য যোগ্যতা অর্জন করা। আমরা শ্রীলঙ্কায় তাদের বিপক্ষে খেলছি। শ্রীলঙ্কা এমন একটি দল যারা ঘরের মাঠে ভালো পারফর্ম করে। এ ছাড়া আমরা পাকিস্তানে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হব। তারা সম্প্রতি এখানে একটি সিরিজ জিতেছে। সুতরাং, বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে আমরা তাদের জন্য প্রস্তুত।’
দ্রুততম পেসার এবাদত হোসেনের অনুপস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে বাংলাদেশকে। কোচ এবাদতের অনুপস্থিতিকে ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সরাসরি তার সমকক্ষ কাউকে খুঁজে বের করা কঠিন কাজ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের সময় পায়ে চোট পান এবাদত। প্রাথমিকভাবে স্কোয়াডের অংশ করা হলেও দলের ফিজিওথেরাপিস্ট জানান, চোট থেকে সেরে উঠতে তার আরও সময় প্রয়োজন। ফলে, তার বদলি হিসেবে জায়গা পেয়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর
পাকিস্তানে পিকআপে বাসের ধাক্কা, আগুন ধরে নিহত ২০
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের পিন্ডি ভাট্টিয়ানের কাছে থেমে থাকা একটি ভ্যানকে যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেওয়ায় আগুন লেগে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে।
রবিবার (২০ আগস্ট) ভোরে পুলিশ ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার ফাহাদ আহমেদ জানিয়েছেন, ইসলামাবাদগামী বাসটি লাহোর-ইসলামাবাদ মোটরওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যানকে ধাক্কা দেওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আহমেদ বলেন, ভ্যানটি জ্বালানির ড্রাম বহন করছিল, ফলে অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং পরে বাসেও আগুন লেগে যায়।
আহমেদ জানান, বাসটিতে ৪০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল।
যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর দগ্ধ। অন্যান্য যাত্রীরা জানালা দিয়ে পালানোর সময় দগ্ধ হয়ে সামান্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, উভয় গাড়ির চালক মারা গেছেন।
নিকটবর্তী ফয়সালাবাদ জেলার একটি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ জাভেদ বলেছেন, গুরুতরভাবে দগ্ধ আহতদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছেছে এবং ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে গির্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২৯
মোটরওয়ে পুলিশের মুখপাত্র এহসান জাফর বলেন, আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, শুধুমাত্র স্টিলের ফ্রেমটি অবশিষ্ট রয়েছে।
তিনি বলেন, অগ্নিনির্বাপক দল কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ততক্ষণে দুটি গাড়িই আগুনে পুড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বাস চালকের গাফিলতির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বাসটি পেছন থেকে রাস্তার পাশে থেমে থাকা ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়।
বাসে থাকা ইমদাদ আলী জানান, দুর্ঘটনার সময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন।
আলী বলেন, ‘দুর্ঘটনার ধাক্কায় সবাই জেগে উঠলেও আগুনের ফলে যাত্রীরা পালানোর সময় পায়নি। দ্রুত বাসটিতে আগুন লেগে যায় এবং সেসময় সমস্ত নারী, শিশু ও পুরুষ চিৎকার করছিল।’
তিনি আরও জানান, তিনি একটি জানালা ভাঙতে সফল হয়েছেন, তবে ধারালো ভাঙা কাঁচের মধ্য দিয়ে উঠতে দ্বিধাবোধ করছিলেন।
ইমদাদ আলী বলেন, ‘হঠাৎ কেউ আমাকে ধাক্কা দিল এবং আমি বাইরে পড়ে গেলাম। আল্লাহকে ধন্যবাদ এবং সেই মানুষটিকে ধন্যবাদ। সে যেই হোক তার কারণে আমি বেঁচে আছি।’
পাকিস্তানের মহাসড়কগুলোতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে প্রায়ই নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানা হয়না এবং ট্র্যাফিক নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়।
ক্লান্ত চালকেরা দীর্ঘ যাত্রা সময় গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জায় হামলা
পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
পাকিস্তানে গির্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২৯
পাকিস্তানে কথিত কোরআন অবমাননার অভিযোগে ক্ষুব্ধ জনতা কয়েকটি গির্জা এবং সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের বেশকিছু বাড়িতে হামলা চালানের ঘটনায় ১২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পবিত্র গ্রন্থ কোরআন অবমাননা করার অভিযোগে পুলিশ দুই খ্রিস্টান পুরুষকেও গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কোরআন অবমাননার অভিযোগে গত বুধবার(১৬ আগস্ট) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের জরানওয়ালা জেলায় তাণ্ডব শুরু করেছিল উত্তেজিত জনতা। যার ফলে খ্রিস্টানরা নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। কারণ জনতা খ্রিস্টানদের উপর দেশের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু করেছিল।
নগরীর পুলিশ প্রধান, বিলাল মেহমুদ বলেছেন, অফিসাররা রাজা আমির এবং তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় মুসলমানরা যাদেরকে কুরআনের একটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলা ও অন্য পৃষ্ঠাগুলোতে অবমাননাকর মন্তব্য লিখে এবং গ্রন্থটি মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল।
আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান রিজওয়ান খান বলেছেন, সন্দেহভাজন দাঙ্গাবাজ হিসাবে ১২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সৈন্যদের মোতায়েন করে এবং খ্রিস্টান বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার ধ্বংস দেখতে ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরে আসে।
শাজিয়া আমজাদ তার পোড়া বাড়ির বাইরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা বাড়িতে বসা থাকতে হঠাৎ শুনতে পেলাম যে জনতার একটি দল আসছে এবং তারা বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং গীর্জায় হামলা করছে।’
তিনি বলেছিলেন, জনতা ঘরের জিনিসপত্র এবং আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তার কিছু জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। সে তার পরিবারের সঙ্গে নিরাপদ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
অন্যান্য খ্রিস্টানরাও অনুরূপ কঠিন পরিস্থিতির বর্ণনা করেছিল এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছিল।
আজিম মসিহ তার বাড়ির বাইরে বসে বসে কাঁদছিলেন। যেটি তার রাস্তায় পুড়ে ফেলা কয়েকটি ভবনের মধ্যে একটি ছিল। তিনি বলেন, কিছু দাঙ্গাকারী আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়ার পর খ্রিস্টানদের গৃহস্থালির জিনিসপত্র নিতে গাড়ি নিয়ে আসে।
তিনি বলেন,‘কেন তারা আমাদের সঙ্গে এটা করল? আমরা কোনো অন্যায় করিনি।’
স্থানীয় পুরোহিত খালিদ মুখতার বলেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, জরানওয়ালার ১৭টি গির্জার বেশিরভাগেই আক্রমণ করা হয়েছে এবং তার নিজের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত গীর্জা এবং বাড়িগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে মেরামত করা হবে এবং যারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
সারাদেশে সহিংসতাটির নিন্দা জানানো হয়েছে। দাঙ্গাবাজদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল-উল-হক কাকার।
আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান বলেছেন, জনতা দ্রুত জড়ো হয়ে গীর্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলা শুরু করে। দাঙ্গাকারীরা শহরের প্রশাসকের অফিসেও হামলা চালায়, কিন্তু পুলিশ হস্তক্ষেপ করে, ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং মুসলিম আলেম ও মুরব্বিদের সহায়তায় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও এবং ফটোতে দেখা যাচ্ছে ক্ষুব্ধ জনতা একটি গির্জার ওপর উঠেছে, ইটের টুকরো দিয়ে ঢিল ছুঁড়ছে এবং আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় আরও চারটি গির্জায় হামলা করা হয়, আক্রমণকারীরা জানালা ভেঙে আসবাবের টুকরো বাইরে ফেলে এবং আগুন ধরিয়ে দেন।
অন্য একটি ভিডিওতে, একজন ব্যক্তিকে একটি গির্জার ছাদে উঠে হাতুড়ি দিয়ে বার বার আঘাত করে একটি স্টিলের ক্রস সরাতে দেখা যায়, আর তাকে বাহবা দিচ্ছে জড়ো হওয়া লোকজন।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ওই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইনের অধীনে, যে কেউ ইসলাম বা ইসলামিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের অবমাননার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। যদিও কর্তৃপক্ষ এখনও ব্লাসফেমির জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারেনি। প্রায়শই শুধুমাত্র একটি অভিযোগ জনতাকে সহিংসতা, বিচারহীনতা এবং হত্যার জন্য উস্কে দিতে পারে।
অধিকার গ্রুপগুলো বলছে, ব্লাসফেমির অভিযোগগুলো ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল পাকিস্তানকে পূর্ণ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ওয়াশিংটনে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রত্যেকের জন্য ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জায় হামলা
পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
পাকিস্তানের প্রাক্তন সিনেটর আনোয়ার-উল-হক কাকার সোমবার (১৪ আগস্ট) দেশটির জাতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
পাকিস্তান যখন অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এমন এক সময় এ দায়িত্ব গ্রহণ করলেন কাকার।
রাজনীতিতে কাকার তুলনামূলকভাবে নতুন এবং শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনি ২০১৮ সাল থেকে সিনেটে বেলুচিস্তান প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। দেশটির রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি অনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্সি নামে পরিচিত সাদা মার্বেল প্রাসাদে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবর্ধনা সভার আয়োজন
রবিবার বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির প্রধানের পদ এবং সিনেটর পদ থেকে পদত্যাগ করেন কাকার। ভোটের তত্ত্বাবধান এবং নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সরকারের দৈনন্দিন কার্যাবলী পরিচালনা করবেন তিনি। নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসন নিয়োগ করা পাকিস্তানে স্বাভাবিক রীতি।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা।
পাকিস্তানের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় শপথ গ্রহণ করলেন। ১৯৪৭ সালে বিদায়ী ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে উপমহাদেশকে বিভক্ত করলে পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে।
সোমবার দিনের শুরুতে রাজধানী ইসলামাবাদ এবং চারটি প্রাদেশিক রাজধানীতে তোপধ্বনির মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। স্বাধীনত দিবস উপলক্ষে রাজধানী ইসলামাবাদে দেশটির রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় পাকিস্তানের কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আব্দুল মোমেনকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
পাকিস্তানের আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন আনোয়ার-উল-হক কাকার। শনিবার (১২ আগস্ট) দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের কোনো সিনেটর জাতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দেবেন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর কাকারকে নির্বাচন করা হয়।
রিয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তিনিই কাকারের নাম প্রস্তাব করেছিলেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি সই করার পর কাকারের মনোনয়ন কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দেন।
সাধারণত, সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যেই দেশের সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে হয়।
কাকার পাকিস্তানের রাজনীতিতে তুলনামূলকভাবে নতুন মুখ। তিনি ২০১৮ সাল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিনেটে বেলুচিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বর্তমানে বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির সদস্য।
বেলুচিস্তান পাকিস্তানের চারটির মধ্যে সর্বনিম্ন জনবহুল ও স্বল্পোন্নত প্রদেশ। কিন্তু আয়তনের দিক থেকে এটি দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার
পাকিস্তানে সমাবেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত, আহত প্রায় ২০০
পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) -এর চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সোমবার জাতিসংঘ প্রধান এই আহ্বান জানান।
গুতেরেসের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ‘ইসলামাবাদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পরে যে চলমান বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছে তার প্রতি মহাসচিব নজর রাখছেন এবং তিনি সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
হক নিয়মিত একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তিনি (গুতেরেস) শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।’ ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উন্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসনকে মেনে চলার জন্য মহাসচিব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।’
শনিবার (৫ আগস্ট) স্থানীয় আদালত তাকে আর্থিক সম্পদ লুকানোর জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।
আরও পড়ুন: কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
কারাগারে থেকেও কলকাঠি নাড়তে পারেন ইমরান
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বর্তমানে পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতা। সম্প্রতি দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের পর এখন উচ্চ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কারাগারে বন্দী আছেন তিনি।
২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটে তিনি পদচ্যুত হন। এরপর থেকে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ইরমানের রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ের মধ্যে এখনও পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে নাটকীয় মোড়।
ইমরানের দল সরকারের সমালোচনা করে এই মামলাকে সাজানো বলে মন্তব্য করেছে। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করবে বলেও জানিয়েছে। তারা আরও বলেছে, এই মামলার লক্ষ্য হলো আসন্ন শরৎকালে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনের আগে প্রাক্তন ক্রিকেট তারকাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। সরকার ইমরানের প্রতি রাজনৈতিক নীপিড়নকে অস্বীকার করে তার দোষী সাব্যস্ত হওয়াকে বৈধ বলছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে ৭০ বছর বয়সী ইমরান সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। পাশাপাশি ১৯৯০ সালে তার প্রতিষ্ঠা করা তেহরিক-ই- ইনসাফের (পিটিআই) নেতৃত্ব থেকেও আইনানুযায়ী সরে যেতে হবে তাকে। এদিকে জরিপগুলো পিটিআই-এর জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয় এবং খানের কারাদণ্ড তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।
তার বিরুদ্ধে কী মামলা ছিল
ইমরান ক্ষমতায় থাকাকালীন বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার থেকে আয়ের প্রতিবেদন জমা দেননি বলে ইসলামাবাদের একটি আদালত শনিবার রায় দিয়েছে। পাকিস্তানে সরকারি পদ ছাড়ার পর নেতাদের এই ধরনের উপহার রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সেসব উপহারের মূল্যের একটি অংশ প্রদান করা হয়।
আদালত বলেছে, ইমরান সেই উপহারগুলোর মধ্যে কিছু বিক্রি করেছেন এবং গত বছর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি প্রতিবেদনে সেই উপার্জনগুলো উল্লেখ করেননি। এজন্য আদালত খানকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে, তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং তাকে ১ লাখ রুপি বা সাড়ে ৩০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করে।
রায়ের পরপরই, খানকে পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয় এবং রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে অ্যাটক শহরে একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইমরানের বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলাগুলো
ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আদালত অবমাননা থেকে শুরু করে সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা তার বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি মামলা দায়ের করেছে।
সমালোচকরা বলছেন, আইনি লড়াইয়ের এই ঝাঁকুনি খানকে সরিয়ে দিতে শাসক জোটের একটি প্রচেষ্টার অংশ। কারণ তিনি বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো করতে সক্ষম হয়েছেন।
খানকে একজন দুর্নীতিবাজ প্রতারক হিসেবে চিত্রিত করতে তাকে কারাগারের বাইরে রাখার পরিববর্তে ভেতরে রাখতে আইনি কৌশল প্রয়োগ করেছে সরকার। পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীতে সরকারের সমর্থক রয়েছে, যারা তার ৭৫ বছরের ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় ধরে দেশটিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
এই গ্রেপ্তার ভিন্ন কীভাবে?
ইমরান খানকে অ্যাটক কারাগারে রাখা হয়েছে। এটি এমনটি একটি কারাগার, দণ্ডিত জঙ্গি ও সহিংস অপরাধীদের জন্য এর কুখ্যাতি রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেছেন, সেখানকার অবস্থার সঙ্গে পরিচিত কর্মকর্তারা বলেছেন, তার জন্য একটি ফ্যান এবং আলাদা গোসলের সুবিধাসহ তার নিজস্ব সেল রয়েছে। যা কারাগারের সাধারণ কয়েদিদের মতো কঠিন অবস্থার থেকে এক ধাপ উন্নত।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করায় পিটিআই’র বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন চলছে: ইমরান খান
মে মাসে ইমরানকে আটক করার ঘটনার চেয়ে এবারের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। এবার দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অভিযোগে আদালতের শুনানি পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেবার সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত হস্তক্ষেপ করে সেই আটককে বেআইনি ঘোষণা করেছিল। ইমরানকে পুলিশ কম্পাউন্ডে একটি গেস্ট হাউসে থাকার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। সেসময় তার আটকের বিষয়ে আইনি যুক্তি শেষ হওয়ার সময় দর্শকরা সাক্ষাৎ করতে পেরেছিল। খান অবশেষে লাহোরে ফিরেও এসেছিলেন। সমর্থকরা গাড়িতে গোলাপের পাঁপড়ি ছিটিয়ে তাকে বরণ করেছিলেন।
এরপর কী হবে
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বিশ্বাস করেন, সুপ্রিম কোর্ট খানের দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং আপিলের সাজা বাতিল করতে পারে।
ইসলামাবাদ-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রধান গুল বলেছেন, ‘ইমরান খানের বিরুদ্ধে একেবারেই কোনো শক্ত মামলা ছিল না। তবে তাকে একটি প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে এই দোষী সাব্যস্ত হতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ইমরান খানের নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে: পাকিস্তানের গণমাধ্যম
তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, খানের প্রতি সমর্থন কমে যাচ্ছে।
‘তিনি কিছু নিষ্পাপ, নির্বোধ সমর্থকদের প্রতারণা করতে পারেন, কিন্তু সাধারণ জনগণ এখন তার আসল চরিত্র চিনতে পেরেছে।’
তিনি লিখেছেন, ‘মুখোশ খুলে তার আসল চেহারা তুলে ধরা হয়েছে। তুচ্ছ লাভের জন্য রাষ্ট্রীয় উপহার কুক্ষিগত করেছেন।’
যদি ইমরান দোষী সাব্যস্ত হন তবে তিনি নির্বাচনে দলের নেতৃত্বও দিতে পারবেন না। কারণ অপরাধী দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কারাগারে থেকেও তিনি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ইমরান খান আদালতে দোষী সাব্যস্ত, নিষিদ্ধ হতে পারেন রাজনীতিতে
মে মাসে তাকে আটক করার পর তার সমর্থকরা বিক্ষোভ করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করেছিল। খানের অনুগত কয়েক হাজার মানুষ শহরে তাণ্ডব চালায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সামরিক ও সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করে। সরকার ক্র্যাক ডাউন করেছে, ৭ হাজারেরও বেশি আটক করেছে। কিছু মামলার বিচার এখনও চলছে।
সরকারের আরও কঠোর পদক্ষেপের আশঙ্কায় আগেরবারের তুলনায় এবার ইমরানের গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি নীরব ছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য এবার তার আহ্বান বিপুল সংখ্যক সমর্থক জড়ো করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রাজনৈতিক পতন কী?
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আগামী সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দিতে পারেন। সম্ভবত নভেম্বরের মাঝামাঝি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেবেন। সাম্প্রতিক আদমশুমারির ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিলে সরকার কয়েক মাস ভোট পিছিয়ে দিতে পারে।
খানের কারাবরণ তাকে এবং তার দলের বৃহত্তর নির্বাচনী সমর্থন আদায় করতে পারে। ক্ষমতা হারানোর পর তিনি যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছিলেন। এটি আরও যোগ করবে যে পাকিস্তানের সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য নির্ভীক কর্মী তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আজিম চৌধুরী বলেছেন, ‘ইমরান খানের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াই পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে জেল থেকেও তার প্রার্থীদের জন্য কার্যকরভাবে প্রচারণা চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার
পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের নবাবশাহ শহরের কাছে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে কমপক্ষে ৩০ যাত্রী নিহত এবং ৬০ জন আহত হয়েছে। রবিবার (৬ আগস্ট) স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনা এলাকায় দায়িত্বে থাকা রেলের সিনিয়র অফিসার মাহমুদুর রহমান লাখো বলেন, করাচি থেকে রাওয়ালপিন্ডি যাওয়ার পথে নবাবশাহ থেকে সরহারি রেলস্টেশনের কাছে ‘হাজারা এক্সপ্রেস’ এর ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়।
লাখো বলেন, উদ্ধারকারীরা আহত যাত্রীদের নবাবশাহের কাছের পিপলস হাসপাতালে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর
রেলের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মহসিন সায়াল জানান, ঘটনাস্থলে মেরামতকারী ট্রেন পাঠানোর কারণে মূল রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সায়াল বলেন, ট্রেনের যাত্রীদের জন্য বিকল্প যাতায়াত এবং চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হবে।
পাকিস্তানে রেলপথে প্রায়ই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। ঔপনিবেশিক যুগের এই যোগাযোগ ব্যবস্থা বহুদিন আধুনিকায়ন করা হয়নি এবং এর নিরাপত্তার মানও দুর্বল।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার
ইমরান খান আদালতে দোষী সাব্যস্ত, নিষিদ্ধ হতে পারেন রাজনীতিতে
পাকিস্তানে সমাবেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত, আহত প্রায় ২০০
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাজুর জেলায় রবিবার (৩০ জুলাই) একজন কট্টরপন্থী ধর্মগুরু ও রাজনৈতিক নেতার সমর্থকদের সমাবেশে শক্তিশালী বোমা হামলা করা হয়েছে।
দেশটির পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছে।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার নাজির খান বলেন, বাজুর জেলার রাজধানী খারের উপকণ্ঠে মাওলানা ফজলুর রহমানের জমিয়ত উলেমা ইসলাম (জেইউআই) পার্টির কর্মী সম্মেলনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এপি’র ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আহত ব্যক্তিদের ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সমাবেশে আসা ৪৫ বছর বয়সী আদম খান পায়ে ও দুই হাতে স্প্লিন্টারে আঘাত পান।
তিনি বলেন, বিকাল ৪টায় বোমা হামলা হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান।
তিনি বলেন, ‘চারপাশে আমি শুধু ধুলো ও ধোঁয়া দেখতে পাই।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকযুদ্ধে ৩ সেনাসদস্য ও ২ বিদ্রোহী নিহত
কেউ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠী আফগানিস্তানে সীমান্তের বাইরেও হামলা করা শুরু করছে।
খান বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
একটি বাজারের কাছে একটি হলের মধ্যে জেইউআই কর্মী সম্মেলন আয়োজন করা হয়। তবে, সমর্থক সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাইরে তাঁবু করা হয়। এসময় দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা অনুষ্ঠানস্থলটি পাহারা দিচ্ছিল।
খাইবার পাখতুনখোয়া পুলিশ প্রধান আখতার হায়াত গন্ডাপুর বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে দলীয় স্বেচ্ছাসেবকদের নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়ে।
তিনি বলেন, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা আলামত সংরক্ষণের জন্য ঘটনাস্থলে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছেন।
জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল খান জানান, বিস্ফোরণে নিহত ৪৪ জনের লাশ এবং প্রায় ২০০জন আহত ব্যক্তি খারের প্রধান হাসপাতালে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর এবং তাদের পেশোয়ার এবং পার্শ্ববর্তী জেলা দিরের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি এবং অন্যান্য নেতারা এই হামলার নিন্দা করেছেন। তারা আহত ও শোকাহত পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণে নিহত ২৫, আহত ১৪৫
নিহতদের মধ্যে রেহমানের দলের স্থানীয় প্রধান মাওলানা জিয়াউল্লাহও রয়েছেন।
সিনেটর আবদুর রশিদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা জামালউদ্দিনও মঞ্চে ছিলেন; তবে তিনি অক্ষত রয়েছেন।
রেহমান সমাবেশে ছিলেন না বলে দলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দলের আঞ্চলিক প্রধান রাশেদ বলেছেন, হামলাটি নভেম্বরে সংসদ নির্বাচনের আগে জেইউআইকে মাঠ থেকে সরানোর চেষ্টা।
তিনি বলেন, এ ধরনের কৌশল কাজ করবে না।
রেহমানকে তালেবানপন্থী ধর্মগুরু বলে মনে করা হয় এবং তার রাজনৈতিক দল ইসলামাবাদের জোট সরকারের অংশ। আসন্ন নির্বাচনের জন্য সমর্থকদের একত্র করতে সারাদেশে সভা-সমাবেশ করছে দলটি।
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের অনেক সহকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। আমি ফেডারেল ও প্রাদেশিক প্রশাসনকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা সুবিধা দিতে বলব।’
মোহাম্মদ ওয়ালি বলেন, তিনি একজন বক্তার বক্তব্য শুনছিলেন, তখন বিকট বিস্ফোরণে সাময়িকভাবে বধির হয়ে যান।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কয়লা খনি নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৫
তিনি বলেন, ‘আমি এক গ্লাস পানি আনতে ওয়াটার ডিসপেনসারের কাছে গিয়েছিলাম, আকস্মিক বোমা বিস্ফোরণের ধাক্কায় আমি মাটিতে পড়ে যাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা হাসিমুখে সমাবেশে এসেছিলাম। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কান্নারত আহত মানুষ এবং তাদের প্রিয়জনের লাশ নিয়ে স্বজনদের কাঁদতে দেখেছি।’
বাজুর একটা সময় একটি উপজাতীয় অঞ্চল ছিল, কিন্তু এখন একটি জেলা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী উপজাতীয় অঞ্চল থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করার জন্য ব্যাপক অভিযান চালানোর আগ পর্যন্ত ইসলামিক জঙ্গিদের একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল এটি। জঙ্গিরা এখনও প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের ওপর হামলা চালায়।