হামলা
ছাত্রদলের ইন্ধনেই বিচারপতি মানিকের ওপরে হামলা হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ছাত্রদলের ইন্ধনেই বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের ওপরে হামলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ছাত্রদলের চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে জাতীয় সংসদে জেলহত্যা দিবসের আলোচনায় বিএনপির অংশ না নেয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক একজন উদারমনের মানুষ, গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাস করেন এবং মুক্তমত চর্চা করেন। স্বাধীনতার স্বপক্ষের একজন বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর তিনি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সারাদেশে নাশকতার ছক এঁকেছে, সেটি সত্য। এই আন্দোলনের আড়ালে তারা দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করছে। সেটিরই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর হামলা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামাত জোট এই ধরনের আরও হামলা করার পরিকল্পনা করেছে।’
আরও পড়ুন: রুশ রাষ্ট্রদূত আশা করছেন শিগগিরই ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ হবে: তথ্যমন্ত্রী
দুই বাংলার হৃদয়বন্ধন কাঁটাতারের বেড়া মানে না: তথ্যমন্ত্রী
নওগাঁয় চোরাকারবারিদের হামলায় বিজিবি সদস্যসহ ২ জন গুরুতর আহত
নওগাঁর ধামইরহাটে গরু চোরাকারবারিদের ছুরিকাঘাতে বিজিবির বস্তাবর ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার মজিবর হোসেন ও বিজিবির সোর্স তারেক হোসেন গুরুতর জখম হয়েছেন। শুক্রবার ভোরাত ৩টার দিকে উপজেলার বস্তাবর সীমান্তে শাখাহাটি এলাকায় টহলরত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- বিজিবির বস্তাবর ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার মজিবর হোসেন এবং বিজিবির সোর্স বীরগ্রাম গ্রামের ময়েন উদ্দিনের ছেলে তারেক হোসেন (৩৫)।
বিজিবি জানায়, চোরাকারবারীদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় গুরুতর আহত মজিবর হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে নওগাঁর পত্নীতলা থেকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় স্থানান্তর করেছে বিজিবি ব্যাটালিয়ন। তাকে ঢাকায় বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার অবস্থা এখনো আশঙ্কামুক্ত নয়।
আরও পড়ুন: বন্য হাতির আক্রমণে বিজিবি সদস্যের মৃত্যু
বিজিবি আরও জানায়, এ সময় অপর জখম তারেক হোসেনকে প্রথমে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত।
বিজিবি আরও জানায়, ঘটনাস্থল থেকে জখমী বিজিবির সদস্যর সরকারি পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.আরিফুল ইসলাম, পত্নীতলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফতাব উদ্দিন, ধামইহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজীসহ থানা পুলিশসহ বিজিবির ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ধামইরহাট উপজেলার বস্তাবর বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জ নায়েক সুবেদার মজিবর হোসেন রাতে শাখাহাটি বাজার সীমান্ত এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন। রাত ৩টার দিকে চোরাকারবারিদের একটি দল বিজিবির নায়েক সুবেদার মজিবর হোসেন ও সোর্স তারেক হোসেনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ১৪ বিজিবি ব্যাটেলিয়ন গুরুতর জখম নায়েক সুবেদার মজিবর হোসেনকে শুক্রবার ভোর রাতে উদ্ধার করে প্রথমে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে বিজিবির হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় বিজিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হামিদ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আমরা সম্পূর্ণ ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে, এখন সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে ৯৮ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি
পঞ্চগড় সীমান্তে বিজিবির অস্ত্র ও গুলি জব্দ
বিচারপতি মানিকের ওপর হামলা: ছাত্রদলের ১১ নেতাকর্মী রিমান্ডে
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১১ ছাত্রদল নেতাকর্মীর দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার আসামিদের আদালতে হাজির করে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনজুরুল হাসান খান।
আরও পড়ুন: সাবেক বিচারপতি মানিকের ওপর হামলা: ৫০ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা
শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তাদের প্রত্যেকের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলার আসামিরা হলেন-ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান সুমিত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন খান এবং কলাবাগান শাখা ছাত্রদলের সদস্য মো. রবিন খান, মো. সাগর, মো. জসীম উদ্দীন ভূইয়া, মো. হারুন অর রশিদ, মতিউর রহমান, শামীম রহমান, জামাল হোসেন, আরিফুল ইসলাম ও আবু তাহের।
বুধবার (২ নভেম্বর) বিচারপতি মানিকের গাড়িতে হামলার ঘটনায় তার দেহরক্ষী মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় করেন।
মামলায় বিএনপির ৪০-৫০ অজ্ঞাত নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিচারপতি শামসুদ্দিনের ওপর হামলার নিন্দা সম্প্রীতি বাংলাদেশের
বিএনপির গণসমাবেশে লিফলেট বিতরণকালে হামলা, আহত ৫
সাবেক বিচারপতি মানিকের ওপর হামলা: ৫০ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির অজ্ঞাতনামা ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন মিয়া বলেন, বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিচারপতির বন্দুকধারী রক্ষী রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পল্টন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
ওসি বলেন, সাবেক বিচারপতি মানিক, তার গাড়ি চালক, বন্দুকধারী রক্ষীর ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে।
আরও পড়ুন: ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
মামলায় বলা হয়েছে, বুধবার বিকালে নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির মিছিল থেকে এ হামলা চালানো হয়।
টেলিভিশন টকশোতে যোগ দিতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি।
ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-মতিঝিল) এনামুল হক মিঠু বলেন, বিকাল সোয়া ৪টার দিকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পাশে নয়াপল্টন এলাকা পার হওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
নাগরিক ফোরাম সম্প্রীতি বাংলাদেশ বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে সাবেক বিচারপতির ওপর হামলার নিন্দা এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: ডেথরেফারেন্স ও আপিল শুনানির দিন ধার্য হতে পারে সোমবার
একুশে আগস্টের আলোচিত গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির দিন সোমবার ধার্য হতে পারে। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলা সম্পর্কিত ডেথ রেফারেন্স ও আপিলগুলো রবিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের কার্যতালিকায় ছিল।
কিন্তু এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলার বিষয়টি কার্যতালিকায় না থাকায় সোমবার তা তালিকার্ভূক্ত করতে বলেন আদালত।
রবিবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন এসব ডেথরেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হতে পারে।
তিনি বলেন, হত্যা মামলাটির ডেথ রেফান্স আদালতের লিস্টে ছিল। আদালত বিস্ফোরক আইনের মামলাটিও লিস্টে আনতে বলেছেন। সোমবার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলগুলোর শুনানির দিন করা হতে পারে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ওই ঘটনা ঘটে। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক , সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।
ঘটনার পরদিন এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলা দুটির বিচার শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। আর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় আরও ১১ আসামিকে। যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া এই ১৯ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ অনেকেই পলাতক।
পরে একই বছরের ২৮ অক্টোবর নিয়ম অনুযায়ী আসামির মৃত্যদণ্ড অনুমোদনের জন্য এ মামলার রায়ের কপিসহ ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার যাবতীয় নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়।
ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
গত বছরের ১৬ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক বিজি প্রেস থেকে তৈরির পর সুপ্রিম কোর্টে এসে পৌঁছায়। গত আগস্টে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল, জেল আপিল দ্রুত শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পরে এ মামলার শুনানির জন্য হাইকোর্টে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা
গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফ।
পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।
তাদের দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অন্য দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা
এছাড়া পুলিশের সাবেক দুই মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপির সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অন্য একটি ধারায় আসামি খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
মামলার ৪৯ আসামির মধ্যে রায় দেয়ার সময় ৩১ জন কারাগারে ছিলেন। পলাতক ছিলেন বাকি ১৮ জন। পলাকত আসামিরা হলেন- তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, এটিএম আমিন, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, খান সাঈদ হাসান, ওবায়দুর রহমান, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, রাতুল বাবু, মোহাম্মদ হানিফ, আবদুল মালেক, শওকত ওসমান, মাওলানা তাজউদ্দিন, ইকবাল হোসেন, মাওলানা আবু বকর, খলিলুর রহমান ও জাহাঙ্গীর আলম।
রামেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নেবে রাবি প্রশাসন
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার বিকালে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক পান্ডে বলেন যে রাবি শিক্ষার্থী এমজিএম শাহরিয়ারের মৃত্যুর কারণ তদন্তে কর্তৃপক্ষ একদিনের মধ্যে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলবে।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য তারা ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করবে।
আরও পড়ুন: রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে বিলম্বের অভিযোগ করেন রাবি শিক্ষার্থীরা। পরে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, ওয়ার্ড বয় ও আনসার সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হাতে রাবি শিক্ষার্থী লাঞ্ছিতের অভিযোগ
রাবির ছাত্রীকে ‘যৌন নিপীড়ন’ ঘটনায় মামলা
আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে হামলা: বিচারের দাবিতে ঢাবিতে মানববন্ধন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের কাছে মানববন্ধন করেছে স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার (এসএটি) সদস্যরা।
এসএটি সদস্যরা 'সাধারণ ছাত্রদের' ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। যেখানে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী যোগ দেয়।
এসএটি’র আহ্বায়ক সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, ‘আমরা হামলার বিচার ও ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি, যাদের কোনো অন্যায় করা ছাড়াই গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের একচোখা আচরণ আবারও প্রকাশ পেয়েছে, কারণ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলায় অন্য দলের সদস্যরা গুরুতর আহত হয়।’
আরও পড়ুন: ঢাবিতে আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১২
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এসএটি’র সদস্য ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ‘কারাগারে থাকায় পরীক্ষা দিতে পারেননি ছাত্র অধিকার পরিষদের তিন কর্মী।’
ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাবির উর্দু বিভাগের ছাত্র ও এসএটি’র সদস্য আহনাফ সাঈদ খান বলেন, ‘আবরার এমন একজন যিনি দেশকে ভালোবাসতেন এবং দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তার স্মৃতিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হামলার অর্থ সরাসরি দেশের প্রতি অসম্মান।’
৭ অক্টোবর নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণে ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত কর্মসূচিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মীরা।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আহত ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর আরেকবার হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়। তবে ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
হামলায় আহত ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ কর্মীকে পরবর্তীতে আদালতে হাজির করা হলে তাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: বুয়েটে চান্স পেয়েছেন আবরার ফাহাদের ছোটভাই
ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ সদস্য আদালতে হাজির
কয়েক মাসের মধ্যে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া
গুরুত্বপূর্ণ এক সেতুতে হামলার প্রতিশোধ নিতে গত কয়েক মাসের মধ্যে সোমবার রাশিয়া ইউক্রেনে বিধ্বংসী হামলা চালিয়েছে। প্রাণঘাতী এ হামলায় বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু গুড়িয়ে যায়, বিদ্যুৎ ও পানি বিচ্ছিন্ন হয়, ভবন ভেঙে যায় এবং অন্তত ১৪ জন নিহত হয়।
ইউক্রেনের ইমার্জেন্সি সার্ভিস জানিয়েছে, পশ্চিমে লভিভ থেকে পূর্বে খারকিভ পর্যন্ত বিস্তৃত অন্তত ১৪ অঞ্চলে রাশিয়া আকাশ, সমুদ্র ও স্থলপথে হামলা করে। সকালের ব্যস্তময় সময়ে এ ঘটনায় অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছে। এ হামলার বেশ কয়েকটি যুদ্ধের ফ্রন্ট লাইনের বেশ দূরে থেকে করা হয়।
যদিও রাশিয়া বলেছে যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সামরিক ও জ্বালানি সুবিধাকে লক্ষ্য করা হয়, তবে কিছু বেসামরিক এলাকায় এলাকাবাসীরা কাজে ও স্কুলে যাওয়ার সময় এর শিকার হন। এর একটি কিয়েভ শহরের কেন্দ্রস্থলে এক খেলার মাঠে এবং অন্যটি এক বিশ্ববিদ্যালয়ে আঘাত হানে।
এ ঘটনায় দেশের বেশিরভাগ এলাকায় ব্ল্যাকআউট দেখা দেয়। এতে সোমবার হাজারও মানুষ বিদ্যুৎ বঞ্চিত হয়ে পড়ে। এ সময় ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জনগণকে সংরক্ষণ করতে বলে এবং জানিয়ে দেয় যে মঙ্গলবার থেকে তারা ইউরোপে বিদ্যুৎ রপ্তানি বন্ধ করে দেবে। পাম্প ও অন্যান্য সরঞ্জাম চালানোর জন্য সিস্টেম বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে প্রায়ই বাসিন্দাদের পানি থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় স্কুলে হামলা: ১১ শিশুসহ নিহত ১৭
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জ্যৈষ্ঠ উপদেষ্টা আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, ‘হামলার কোনো ‘বাস্তব সামরিক অর্থ’ ছিল না এবং রাশিয়ার উদ্দেশ্যই ছিল একটি মানবিক বিপর্যয় ঘটানো।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, তার বাহিনী কিয়েভের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড বলে দাবি করার জন্য প্রতিশোধ হিসেবে ‘নিখুঁত অস্ত্র’ দিয়ে মূল শক্তি অবকাঠামো ও সামরিক কমান্ড সুবিধাগুলোকে লক্ষ্য করে। মস্কোর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ইউক্রেন শনিবার রাশিয়া ও ক্রিমিয়ান পেনিনসুলাকে যুক্ত করা এক গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে হামলা চালায়। পুতিন অভিযোগ করেন যে ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনী সেতুটিতে হামলার পরিকল্পনা করে।
আরও পড়ুন: ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণ: ইউক্রেনকে দায়ী করলেন পুতিন
ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
থাইল্যান্ডে দিবাযত্ন কেন্দ্রে হামলা, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬
থাইল্যান্ডের একটি দিবাযত্ন কেন্দ্রে সাবেক এক পুলিশ অফিসারের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির ইতিহাসে মারাত্মক তাণ্ডব চালানো এই ঘটনায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গুলি করে হত্যা করা হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে আরও অনেকেই নিহত হয়।
এ বছরের শুরুর দিকে হামলাকারীকে বরখাস্ত করা হয় এবং তিনি নিজ ঘরে সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যা করার পর আত্মহত্যা করেন।
থাই পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিসকে (থাই পিবিএস) এক শিক্ষক বলেন, হামলাকারী গাড়ি থেকে নেমে এসে বাইরে দুপুরের খাবার খাওয়া একজনকে গুলি করে। এরপর আরও গুলি চালায়। পুনরায় গুলি চালানোর জন্য যে বিরতি নিয়েছিল হামলাকারী, সে সময়ের মধ্যে শিক্ষক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
নাম না জানিয়ে রুদ্ধশ্বাস অবস্থায় এই নারী বলেন, ‘আমি দৌড়ে ফিরে যেয়ে দেখি শিশুরা ঘুমিয়ে আছে। শিশুদের বয়স দুই-তিন বছর হবে।’
অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দিবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মীরা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু বন্দুকধারী দরজায় গুলি চালাতে থাকে।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে বন্দুকধারীর গুলি, নিহত ৩০
নাম না জানানো এই প্রত্যক্ষদর্শী থাইল্যান্ডের কম চাদ লুয়েক টেলিভিশনকে বলেন, ‘যে শিক্ষিকা মারা গেছেন, তার কোলে একটি শিশু ছিল। আমি ভাবিনি যে সে শিশুদের হত্যা করবে! তবে সে দরজায় গুলি করে এবং ঠিক সেদিক থেকেই গুলি চালায়।’
পুলিশের মুখপাত্র আর্চায়ন ক্রাইথং বলেন, অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
দেশটির অন্যতম দরিদ্র অঞ্চল থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নংবুয়া লাম্পুর গ্রামীণ শহর উথাই সাওয়ানে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ হামলাকারীকে সাবেক পুলিশ অফিসার পানিয়া কামরাপ (৩৪) হিসেবে শনাক্ত করে। পুলিশের মেজর জেনারেল পাইসাল লুয়েসমবুন পিপিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মাদকের অভিযোগের কারণে তাকে এ বছরের শুরুতে বাহিনী (পুলিশ) থেকে বরখাস্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
এক ফেসবুক পোস্টে থাই পুলিশ প্রধান জেনারেল ডুমরংসাক কিত্তিপ্রপাস বলেন, পুলিশের সার্জেন্ট হিসেবে কর্তব্য পালন করা এই ব্যক্তির শুক্রবার আদালতে মেথামফেটামিন জড়িত মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। এবং অনুমান করা হচ্ছে, যেহেতু দিবাযত্ন কেন্দ্রটি তার বাড়ির কাছে তাই তিনি এটি বেছে নিয়েছেন।
এর আগে ডুমরংসাক সাংবাদিকদের বলেছেন যে ব্যবহৃত প্রধান অস্ত্রটি ছিল একটি ৯ এমএম পিস্তল এবং এটি সে নিজেই কিনেছিল। পয়সাল জানান, তার কাছে একটি শটগান ও একটি ছুরিও ছিল।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রয়ুথ চ্যান-ওচা সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সমস্যা ছিল বলে প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা আছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা ঘটা ঠিক হয়নি। আমি নিহত ও তাদের স্বজনদের প্রতি গভীর শোক বোধ করছি।’
পুলিশ নিহতের সংখ্যার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দেয়নি। তবে তারা বলেছে যে দিবাযত্ন কেন্দ্রে অন্তত ২২ শিশু ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক নিহত হয়েছে। অন্যত্র আরও অন্তত দুই শিশু নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোর দক্ষিণে সিটি হলে মাদক চক্রের হামলায় ২০ জন নিহত
থাই টিবিএস টেলিভিশন অনুসারে, হামলায় নিহতদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য রাত পর্যন্ত হামলার ঘটনাস্থলেই ছিলেন। মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের সাথেই বসে ছিলেন, তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
থাইল্যান্ডে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যুর হার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের তুলনায় বেশ কম। তবে জাপান ও সিঙ্গাপুরের তুলনায় বেশি, যেখানে কঠোর বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে। ২০১৯ সালে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত মৃত্যুর হার প্রতি এক লাখে প্রায় ৪টি ছিল, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি এক লাখে জনে প্রায় ১১টি এবং ব্রাজিলে প্রতি এক লাখে জনে প্রায় ২৩টি৷
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে মিউজিক পাবে আগুন, নিহত অন্তত ১৩
ভয়কে পেছনে ফেলে চট্টগ্রামে আদিবাসীর সাজে হাজির দুর্গা!
গত বছরের সাম্প্রদায়িক হামলার ক্ষত ও আতঙ্ককে জয় করে বন্দরনগরীর হিন্দু সম্প্রদায় এ বছর ধুমধাম ও সৃজনশীল থিমের মধ্যে তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করছে।
শহরজুড়ে ২৮২টি মণ্ডপের মধ্যে একটি মণ্ডপ সবচেয়ে বেশি ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে। আদিবাসী নারীর সাজে এখানে আবির্ভূত হয়েছেন দেবী দুর্গা।
দক্ষিণ নালাপাড়া পূজা উদযাপন পরিষদ তার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনে এই অনন্য থিম নিয়ে এসেছে। ‘পার্বণ’ (উৎসব) নামের মণ্ডপটি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জীবন ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরছে।
দুর্গা ও তার চার সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের পোশাকে দেশীয় সংস্কৃতির উদযাপন দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। পুরো মণ্ডপটি বাঁশ, বাঁশের কারুকাজ করা দেয়াল এবং আদিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন থেকে অনুপ্রাণিত অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এক মণ্ডপে ১৫১টি প্রতিমা: দুর্গার পরিবারে আমন্ত্রিত যারা
থিম পরিকল্পনাকারী রাজিব বিশ্বাস রাজা বলেন, এবার পূজার থিমের নাম হচ্ছে পার্বণ। আদিবাসীদের জীবনধারা ও কর্মযজ্ঞ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে এখানে। বাঁশ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো পূজা মণ্ডপকে। মণ্ডপে প্রায় ১৪ হাজার বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। ভাবনা ও সৃজনে রয়েছেন বিশ্বজিৎ আইচ। পাঁচ মাস আগে থেকে আমরা এই কাজ শুরু করেছিলাম। দিন-রাত কাজ চালিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করছি দর্শনার্থীদেরও কাছে আমাদের এই আয়োজন দৃষ্টিনন্দন হবে।
দুর্গা নিজেও মাথায় আদীবাসীদের মুকুট পরেছেন, বাঁশের তৈরি অলঙ্কার এবং তার শাড়ির মোটিফও দেশীয় ঐতিহ্য থেকে বেছে নেয়া হয়েছে। দেব-দেবী ছাড়াও অন্যান্য চরিত্র ছিল উপজাতীয় পুরুষ, মহিলা এবং শিশু। এদেরও উপজাতিদের পোশাক 'পিনন হাদি' পরানো হয়েছে। পূজা মন্ডপে বাদ্যযন্ত্রসহ নাচের মাধ্যমে উদযাপন করা হচ্ছে এ 'পার্বণ'।
দুর্গার নান্দনিক ও আদিম রূপের আভাস পেতে ইতিমধ্যেই দর্শনার্থীরা মণ্ডপে ভিড় করতে শুরু করেছেন।
এ বছর চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় মোট দুই হাজার ৬২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে চট্টগ্রাম পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন।