পরিস্থিতি
মিয়ানমার সীমান্তে আগের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার সীমান্তে আগের যে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তেমন পরিস্থিতি আর তৈরি হবে না বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, 'আমাদের দেশে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। প্রতি বছর ৩৫ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করে অর্থাৎ প্রতি বছর এই সংখ্যাটা বাড়ছে। আমাদের পক্ষে আর কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ কিংবা আশ্রয় দেওয়া সম্ভবপর নয়। মিয়ানমার সীমান্তে এর আগে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, আশা করব সেই ধরনের পরিস্থিতির আর হবে না।'
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবি শিরিষ তলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) আয়োজিত অমর একুশে বই মেলায় 'মহান একুশে চসিক স্মারক সম্মাননা পদক' প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ভারতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসানের সাক্ষাৎ
মিয়ানমারের জান্তা সরকার সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে তারা আবারও অভিযান চালাবে, অনেক রোহিঙ্গা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে, সরকার এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘আপনারা জানেন কয়েকদিন আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মিউনিখে সিকিউরিটি কনফারেন্সে গিয়েছিলেন। সেখানেও আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের যেই প্রতিনিধি দল আসছে, এটি আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার ক্ষেত্রে সহায়ক। সেখানে নিশ্চিতভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আমরা আলোচনা করব।’
তিনি বলেন, ‘রাখাইনে অভিযান পরিচালনা করাটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, কিন্তু সেটির কারণে আমাদের এখানে উত্তেজনা এর আগে তৈরি হয়েছে, এবং সেখানকার মর্টার শেল আমাদের দেশে এসে পড়েছে, দুইজন নিহতও হয়েছে। ৩৩০ জনের মতো তাদের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আমাদের দেশে এসেছিল, আবার তাদের ফেরত নিয়ে গেছে। মায়ানমারের রাষ্ট্রদুতকে ডেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেটির প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছি। সুতরাং আমরা আশা করব এর আগে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা আর হবে না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের এর আগে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাদের কীভাবে ফেরত পাঠানো যায় আমরা সে নিয়েই কাজ করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সমস্ত রাষ্ট্রসমূহের সহায়তা কামনা করেছি, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সরকারের ওপর যাতে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়, সেজন্য ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা আলাপ আলোচনা করেছি।’
বই মেলায় ড. হাছান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করার পর ছাত্রলীগ প্রথম যে ১০ দফা দেয়, তার অন্যতম ছিল- বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। সেই দশ দফার ভিত্তিতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তরুণ নেতা শেখ মুজিবসহ ছাত্র নেতারা জেলায় জেলায় সফর করেছিলেন। এই অনুম্মোচিত ইতিহাসগুলো আজকে ধীরে ধীরে উম্মোচিত হচ্ছে। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেছিলেন যে, পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে বাঙালি জাতির মুক্তি নিহিত নেই।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র: ভারপ্রাপ্ত উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্কট উরবম
বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে: নবনিযুক্ত বিজিবি মহাপরিচালক
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৬৪ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি বলেন, 'সীমান্ত পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রেখে যতটা সম্ভব মানবিক উপায়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলব
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এ কথা বলেন নবনিযুক্ত বিজিবি মহাপরিচালক।
নবনিযুক্ত বিজিবি মহাপরিচালক জানান, সোমবার রাত পর্যন্ত ১১৫ জন ও মঙ্গলবার সকালে আরও ১১৪ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী আত্মসমর্পণ করেছেন। দুপুরে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে মোট ২৬৪ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী আত্মসমর্পণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি, খাবারের ব্যবস্থা করেছি। এরমধ্যে ১৫ জন আহত ছিল। তাদের মধ্যে ৮ জন গুরুতর আহত ছিল, ৪ জনকে কক্সবাজার ও ৪ জনকে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে উত্তেজনা: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে যা বলল ঢাকা
মিয়ানমারে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান: আইনমন্ত্রী
মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সাম্প্রতিক বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও আধাসামরিক সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ধৈর্য ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অনুপস্থিতিতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: সাগর-রুনি হত্যার বিচার হারিয়ে যাবে না: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, আজ (সোমবার) মিয়ানমার বর্ডার পুলিশের প্রায় ৭৮ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এসব বিজিপি সদস্যকে সেখানকার একটি স্কুলে রাখা হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মিথ্যা মামলা দিয়ে ড. ইউনূসকে হয়রানি করছে না সরকার: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে তাদের ফেরত পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের ফেরত পাঠাতে না পারলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের বিষয়ে সরকার জানে এবং মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় স্কুল বন্ধ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কর্মকর্তাদের কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ আইনমন্ত্রীর
নির্বাচন পরিস্থিতি পরিদর্শনে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন এবং নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কমিশনের প্রতিনিধি দল রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কেরানিগঞ্জের জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়, আটি ভাওয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কোনাখোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কায়কোবাদ একাডেমি, রাজধানীর সুরিটোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও টিঅ্যান্ডটি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে ভোটকেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের নিরাপত্তা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভোটাধিকার প্রয়োগ, কেন্দ্রের সুযোগ-সুবিধা, নির্বাচনকালীন মানবাধিকার পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।
আরও পড়ুন: ভোট বর্জনকারীদের বর্জন করেছেন ভোটাররা: কাদের
এ সময় কমিশনের প্রতিনিধিদল ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং এজেন্টসহ সব শ্রেণি-পেশার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ-খবর নেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আজকে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনকালে পুরোপুরি সহিংসতামুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেখেছি৷ সংখ্যালঘু ও নারী ভোটাররাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন৷ এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, দিনব্যাপী নাগরিকরা যাতে সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে বিষয়ে কমিশন সজাগ রয়েছে। স্বাধীন ভোটদানের পরিবেশের মাধ্যমেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সহনশীলতা ও মানবাধিকার সংস্কৃতির বিকাশ সম্ভব।
আরও পড়ুন: শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে ভোটার উপস্থিতি বেশি: পররাষ্ট্র সচিব
বিজিবি-সেনাবাহিনী মাঠে নামলে পরিস্থিতি আরও শান্ত হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে নামবে বিজিবি। এরপর নামবে সেনাবাহিনী। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আরও শান্ত ও সুন্দর হবে।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সহিংসতার বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সবসময় মনিটর করছে। যাকে মনে করছে বদলাতে হবে, আমাদের কাছে লিস্ট পাঠাচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। এটা নির্বাচন কমিশন সবসময় করে, সেই অনুযায়ী করে দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপিতে যারা তারেকের নেতৃত্ব মানছেন না, নির্বাচনে আসতে তারা নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আগামী ২৯ ডিসেম্বর বিজিবি মাঠে চলে আসবে, বিজিবির পর সেনাবাহিনীও চলে আসবে। কাজেই যেসব বিষয়ে আপনারা আশঙ্কা করছেন, কিংবা যা দেখছেন, সেই পরিস্থিতি আরও শান্ত হয়ে যাবে। আরও সুন্দর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।’
এবার সেনাবাহিনী ১৩ দিন মাঠে থাকার ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এটার কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। নির্বাচন বানচাল করার জন্য একটি দল যে ধরনের সহিংসতা করছে। তারা নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এদেশের মানুষ সেগুলো বিশ্বাস করে না। আমাদের নির্বাচন কমিশনার তারপরও নির্বাচন আরও নিরাপদ করার জন্য এ ব্যবস্থাটা নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: নাশকতা কিংবা সন্ত্রাসের কারণে নির্বাচন বন্ধ থাকবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা চাচ্ছে। পুলিশ এটা চূড়ান্ত করলেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ বা কেন্দ্র আছে কি না- সেটি তারা জানতে চেয়েছেন। পুলিশ আজকের মধ্যেই করে ফেললে সেটি সন্ধ্যার মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসলে একটা উত্তেজনা, আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার যার প্রার্থীকে জয়ী করতেই হবে, এরকম একটা ভাব চলে আসে প্রার্থী ও সমর্থকদের। সেই সময় বাগবিতণ্ডাও হয়। এখন পর্যন্ত সবকিছু নজরদারিতে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ভবিষ্যতে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব। দু-একটি ঘটনা যে ঘটে গেছে, জড়িতদের চিহ্নিত করেছে এবং তাদের গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আরেক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আসলে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নেতা-কর্মীরা তাদের প্রার্থীকে পাস করানোর জন্য হয়তো অনেক কিছু করেন। প্রার্থীরা নিজেরাও হয়তো জানেন না, এমন ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে নতুন যারা আসছেন তাদের মধ্যে আচরণবিধি ভাঙার হার অনেক বেশি।’
আরও পড়ুন: বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনের নিন্দা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
মানবাধিকার দিবসে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমনের চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে।’
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী: তথ্যমন্ত্রী
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কোনো কোনো সন্ত্রাসীর পক্ষেও বিবৃতিজীবীরা কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নেই। পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে সমস্ত বিশ্ববেনিয়া মানবাধিকারের কথা বলে এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষসহ হাজার হাজার নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এ নিয়ে তাদের বা বড় বড় সংগঠনগুলোর কোনো কথা বা বিবৃতি নেই।’
তিনি বলেন, ‘অথচ তারা বরিশালে কোথায় একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল, কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল সেজন্যও বিবৃতি দিয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং এরপর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদের বিনা বিচারে হত্যা করা, নামের মিল আছে সেজন্যই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া, এমন কি ফাঁসি কার্যকর হবার পর ফাঁসির রায় হয়েছে এমন ঘটনাও আছে।’
তিনি বলেন, ‘তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করা হয়েছে। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘কিছু বিবৃতিজীবী আছে, বিবৃতি দেওয়াই তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু আছেন। কিন্তু সবসময় যারা এ ধরনের বিবৃতি দেন, দেশে এখন যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, তাদের বিবৃতি এখন দেখতে পাচ্ছি না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই বিবৃতিজীবীরা কই? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হলো কি না তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে একই হাসপাতালে একসঙ্গে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে হাসপাতালকে অকেজো করে দেওয়ার পর সেখানে আইসিইউতে থাকা সব মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। এই ধরনের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ববেনিয়ারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে। আবার ইসরাইলি বাহিনী যাতে ভালোমতো বোমা বর্ষণ করতে পারে সেজন্য সহায়তাও করছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি: তথ্যমন্ত্রী
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমি প্রথম থেকেই এটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি, থাকব। আমাদের সরকার ও প্রধানমন্ত্রীও সোচ্চার আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এটার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সমস্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বসে এই ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করার জন্য তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কেউ হরতাল-অবরোধের ডাক দিতে পারে, সরকার পতনের ডাক দিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু ঘরে বসে সেই ডাক দিয়ে গাড়ির মধ্যে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, সেটি তো কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। এগুলো একদিকে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরদিকে মানুষের অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। আমি আশা করব, সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন।’
‘শ্রমিক অধিকারের নামে বড়লোক এজেন্টদের মুখোশ উন্মোচন করুন’
শ্রমিক অধিকারের নামে বছরে ১২ বার বিদেশ সফরকারী দুই-একজন শ্রমিক নেতা কারো এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেখা গেল, আল্পনা-কল্পনা-জল্পনা আক্তাররা বছরে ১২ বার বিদেশ গেছে, ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা বিমান ভাড়া দিয়েছে। এদের কারো কারো আবার গাড়ি আছে, ঢাকা শহরে বড় বড় ফ্ল্যাট আছে।
তিনি বলেন, শ্রমিক সমাবেশে যাওয়ার সময় কিছু দূরে গাড়ি রেখে হেঁটে কিংবা রিকশায় যান, যদি শ্রমিকরা গাড়ি দেখে ফেলে। এরা কারো এজেন্ট হিসেবে যে কাজ করে সেটি আজ স্পষ্ট।
মন্ত্রী বলেন, এ সমস্ত এজেন্টের ব্যাপারেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমি সাংবাদিক সমাজের কাছে অনুরোধ জানাব তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রুবেল খান, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ‘আগুনসন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি তথ্যমন্ত্রীর আহ্বান
জেনেভায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সোমবার
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইউনিভার্সাল পিরিউডিক রিভিউ (ইউপিআর) বা সর্বজনীন পুনর্বীক্ষণ পদ্ধতির আওতায় সোমবার (১৩ নভেম্বর) চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এ পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধারাবাহিকভাবে চতুর্থবার ইউপিআর প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে যাচ্ছে।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ইউপিআর সভায় অংশ নিতে জেনেভায় রয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিগত চার বছরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরাসহ এ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন।
প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে প্রতি চার বছর পরপর ইউনিভার্সাল পিরিউডিক রিভিউ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বিগত চার বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়।পর্যালোচনায় বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র পর্যালোচনাধীন রাষ্ট্রকে মানবাধিকার সংক্রান্ত নানা বিষয়ে প্রশ্ন ও সুপারিশ করে।
এর আগে বাংলাদেশ ২০০৯ সালে প্রথমবার, ২০১৩ সালে দ্বিতীয়বার এবং ২০১৮ সালে তৃতীয়বার ইউপিআর-এ অংশ নিয়েছিল।
মূলত তিনটি প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে এ পর্যালোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
যথা-
(ক) সরকার দেওয়া জাতীয় প্রতিবেদন।
(খ) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন বা সংগঠনের জোটগুলোর দেওয়া প্রতিবেদন এবং
(গ) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয়ের প্রতিবেদন।
আরও পড়ুন: জেনেভা থেকে বিমান বাংলাদেশের নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী
৩ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের উদ্দেশে জেনেভা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা লোকজন নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সীমিত আকারে শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে। আজ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে। প্রবল বর্ষণে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রোয়াংছড়ি, রুমা এবং থানচি উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ এখনো স্থাপিত হয়নি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় উন্নতি হতে পারে: এফএফডব্লিউসি
জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন জানান, বন্যার্তদের জন্য ইতোমধ্যে ১৬৮ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার লিটার বোতলজাত পানি বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, বন্যা ও পাহাড় ধ্বসে এ পর্যন্ত ৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা শহরের মধ্যমপাড়ায় সাংগু নদীর তীরবর্তী এলাকায় একটি পাকা ভবন এবং চারটি কাঁচা বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর যুবকের লাশ উদ্ধার
মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন পূর্ণ মাত্রায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অনুকূল নয়: জাপান
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে শিগগিরই পূর্ণ মাত্রায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন,‘শিগগিরই পূর্ণ মাত্রায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করা খুবই কঠিন হবে। মিয়ানমারে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা আমাদের জন্য খুবই কঠিন হবে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপান মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং সেখানে সহিংসতা বন্ধ,বন্দীদের মুক্তি এবং সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে ঢাকা
তিনি বলেছিলেন যে তারা এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারে,তবে তা তাদের পূর্ণ মাত্রায় স্বদেশে প্রত্যাবাসন নয়।
বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং গত পাঁচ বছরে একজনও রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হয়নি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। এ পরিস্থিতি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। প্রত্যাবাসন অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবে।’
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তারা কাজ করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে মিয়ানমারের পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গাদের শিগগিরই প্রত্যাবাসন করা যাচ্ছে না।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
তিনি আরও বলেন, জাপান বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করেছে এবং তারা বাংলাদেশের প্রচেষ্টা ও উদারতার প্রশংসা করে।
সোমবার ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশের সহযোগিতায় এটি আয়োজন করে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার পরিচালনায় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য ইইউ’র ৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা ঘোষণা
কর্ম সপ্তাহের শুরুতে ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আরও খারাপ
তিন দিনের ছুটির পর কর্মসপ্তাহ শুরু হওয়ায় সোমবার ঢাকা মহানগরী এবং অন্যান্য স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী দুটি সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) -এর কর্মকর্তারা বলছেন, অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সকাল থেকে ঢাকা শহর ও আশেপাশের এলাকায় বাড়তি চাহিদা মোকাবিলায় তাদের আরও বেশি লোডশেডিং করতে হবে।
ফলস্বরূপ, ঢাকা এবং আশেপাশের এলাকায় প্রায় ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতির মুখোমুখি হতে হয়। এই এলাকাগুলোতে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার ৯০০ মেগাওয়াটের চাহিদা রয়েছে। সারা দিন ন্যূনতম পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা দীর্ঘ লোডশেডিং করতে হয়।
এছাড়া ছুটির দিনে নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী শিল্প এলাকাসহ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ৫০০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট ঘাটতি ছিল।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, আজ সকাল থেকে তার কোম্পানির আওতাধীন এলাকায় দিনের বেলায় ৬০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা মহানগরীতে আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা ১৭৫০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে ১১৫০ মেগাওয়াট পাচ্ছি। গরম আবহাওয়ায় মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে’।
সপ্তাহের শেষে এবং ছুটির দিনে লোডশেডিং ছিল প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট এবং ডিপিডিসি এলাকায় চাহিদা ছিল ১৪০০ মেগাওয়াট।
ডিপিডিসি’র প্রধান নির্বাহী স্বীকার করেছেন যে ডিপিডিসির পরিষেবা দেয়া কিছু এলাকায় গ্রাহকরা দিনে পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎহীন থাকছেন।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আন্তরিক দুঃখপ্রকাশ করা ছাড়া আমাদের কিছু করার নাই… আমরা যা পাই তা সরবরাহ করি।
ডিপিডিসি ঢাকা শহরের মধ্য, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ এবং নারায়ণগঞ্জের কিছু অংশে বিদ্যুৎ বিতরণ করে থাকে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন, সেনানিবাস এবং বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতালসহ বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ প্রধান স্থাপনা (কেপিআই) ডিপিডিসি এলাকায় অবস্থিত।
ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কাউসার আমীর আলী তার এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় একই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
ক্ষেত্র বিশেষে ডেসকো এলাকার গ্রাহকদের সারাদিনে পাঁচ ঘন্টার বেশি লোডশেডিং পোহাতে হয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ছুটির শেষ তিন দিনের তুলনায় আজ লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেশি।
ডেসকো ঢাকা শহরের উত্তর ও পূর্বাঞ্চল এবং টঙ্গী শিল্প কেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিতরণ করে।
কাউসার উল্লেখ করেন, ডেসকোর সরবরাহ অঞ্চলের দৈনিক ১০৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ২৯৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়। গরমের কারণে ঢাকা শহরে বিদ্যুত সরবরাহের চাহিদা আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ
বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আগামী মাসে আরও উন্নতি হবে: নসরুল হামিদ