ডিএনসিসি
খালের আধুনিকায়নে ডিএনসিসির সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন খালগুলোর আধুনিকায়ন ও টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও ডিএনসিসি যৌথভাবে কাজ করবে।
রবিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে নগর ভবনে ডিএনসিসি মেয়রের কার্যালয়ে মো. আতিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সৌজন্য সাক্ষাত ও বৈঠকে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির মশকনিধন অভিযান: ১৩ মামলায় ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা
বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন খালগুলোর আধুনিকায়নে ও টেকসই উন্নয়নে ডিএনসিসি এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে উভয়ে একমত পোষণ করেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ঢাকা শহরকে বাঁচাতে হলে খালগুলোকে রক্ষা করতে হবে। ওয়াসা থেকে বুঝে পাওয়ার পরে আমরা খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে খাল খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খালগুলো অপরিহার্য। খালে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করলে যানজট নিরসনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে ডিএনসিসির সঙ্গে বাংলাদেশ নৌবাহিনী যৌথভাবে কাজ করলে খালগুলোর আধুনিকায়ন করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধানকে খালের আধুনিকায়ন ও খালের পাড়ে পরিকল্পিত সবুজায়নের জন্য কারিগরি সহায়তার আহ্বান জানালে নৌবাহিনী প্রধান একমত পোষণ করেন এবং খালগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করে একটি বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে তিনি ডিএনসিসির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঢাকা নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল খন্দকার মিজবাহ-উল-আজিম, ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসি মেয়রের সঙ্গে জাপানি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
রাস্তা বাড়াতে জায়গা ছাড়ার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
ডিএনসিসি মেয়রের সঙ্গে জাপানি প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সঙ্গে জাপানি প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় রাজধানীর গুলশান- ২ এর নগরভবনের ষষ্ঠ তলার সেমিনার কক্ষে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা (অ.দা) পিয়াল হাসানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাস্তা বাড়াতে জায়গা ছাড়ার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাক্ষাতকালে তারা জলাবদ্ধতা, বায়ু দূষণ, শব্দদূষণ, মশক নিধন, স্বাস্থ্যখাত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং সার্বিক বিষয়ের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এতে বলা হয়েছে, ডিএনসিসি মেয়র তার অফিসে এসে সাক্ষাতের জন্য প্রতিনিধি দলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আরও জানানো হয়েছে, সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ৭৭ জন শিল্পীর আঁকা প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন এবং উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসি মেয়র জাতিসংঘের স্থানীয়-আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা মনোনীত
মশার লার্ভা ধ্বংসে সিঙ্গাপুর থেকে কীটনাশক আনছে ডিএনসিসি: মেয়র আতিক
দ্রুত কাজ শেষ করে রাস্তা-ঘাট খুলে দেওয়ার নির্দেশ মেয়র আতিকের
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে নতুন সংযুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়ন কার্যক্রম যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে রাস্তা-ঘাট জনসাধারণের জন্য খুলে করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) ৪৪-৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে উত্তরখানের বালুর মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।
এসময় মেয়র বলেন, দীর্ঘদিন ঢাকার এই ওয়ার্ডগুলো অবহেলিত ছিল। বর্তমান সরকার এগুলোকে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডের মর্যাদা দিয়েছে। আমরা বসে নেই, কাজ শুরু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই এই এলাকাগুলোতে পানি উঠে যায়। দ্রুত কাজ শেষ করতে না পারলে জনভোগান্তি বাড়বে। সবাই যার যার মতো ডোবা-নালা, নিচু জমি, জলাশয় ভরাট করে বিল্ডিং করেছে। পানি বের হবার উপায় নেই। ফলে ভোগান্তি চলছেই।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে ডাকটিকিট প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
আতিকুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার মূল রাস্তার প্রশস্ত হবে ৭২ ফিট এবং গলির রাস্তার প্রশস্ত হবে কমপক্ষে ২০ ফিট। ফলে রাস্তার ধারে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে হবে। জনগণের জায়গা জনগণকে ফেরত দিতে হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়োগে ২৪ ব্রিগেড ইঞ্জিনিয়ারিং কোর দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে উল্লেখ করে মেয়র জানান, ইতোমধ্যে তারা বেশ কিছু রাস্তা করে ফেলেছে। ড্রেনেজের জন্য ভূগর্ভে ৬ফিট ডায়ার রিং বসানো হচ্ছে। জলাবদ্ধতা আর থাকবে না।
গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এই এলাকায় জীবনমানের সার্বিক উন্নয়ন ঘটবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
এসময় রাস্তায় কারো ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা থাকলে জনস্বার্থে তা দান করতে আহ্বান জানান মেয়র আতিক।
পরে তিনি যারা রাস্তার জন্য স্বেচ্ছায় জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছতা-জবাবদিহি বজায় রেখে দোকান বরাদ্দ দিচ্ছে ডিএসসিসি: তাপস
আগামী নির্বাচনে আ. লীগ ক্ষমতায় এলে ঢামেক হাসপাতালকে অত্যাধুনিক করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে ঢাকায় জলাবদ্ধতার ভয়ংকর রূপ
প্রতি বছর জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় রাজধানীবাসীকে। মাত্র ১/২ ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট।
এমন চিত্র দেখা যায় গত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ও শুক্রবার (৬ অক্টোবর)। এই দুদিনে রাজধানীতে কখনো মুষলধারে, কখনো মাঝারি, কখনো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
একটানা এক ঘণ্টা বৃষ্টিতে বিশেষ করে মতিঝিল, বাড্ডা, মালিবাগ, রামপুরা, শান্তিনগর, মৌচাক, বেইলি রোড, কাকরাইল, গুলিস্তান, শাহবাগ, বাংলামোটর, ধানমন্ডি, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ভাটারা, বসুন্ধরা, খিলক্ষেতসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়।
পানিতে তলিয়ে থাকা ঢাকার বিভিন্ন সড়কে মধ্যরাতেও আটকে ছিল শত শত গাড়ি। এ ছাড়া এর আগে মিরপুরে বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের পথগুলো আবর্জনায় ভরে থাকায় দ্রুত পানি নামতে পারেনি। যার ফলে ভয়াবহ ওই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
কারণ হিসেবে রাজধানীর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থায় সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, ঢাকার খাল ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও সেবা সংস্থাগুলোর মনোযোগ কম।
জানা যায়, বৃষ্টি হলে রাজধানীর পানি তিনটি মাধ্যমে চারপাশের নদ-নদীতে চলে যায়। এর একটি পাম্পস্টেশন, বাকি দুটি স্লুইসগেট ও খাল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনীতি সংস্কারে ভূমিকা রাখবে আইএমএফের ঋণ
ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন স্লুইসগেটগুলোরও বেশির ভাগ অকেজো। আর খালগুলো পানিপ্রবাহের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত নয়। এসব কারণেই নগরবাসীকে প্রতি বছর জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
রাজধানীর কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পাম্পস্টেশন দিয়ে মিনিটে ৮ লাখ ৫৫ হাজার লিটার পানি নিষ্কাশন করা যায়। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ার পরও স্টেশনটি কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
কারণ, স্টেশনটিতে পানি যাওয়ার জন্য যেসব নালা-নর্দমা ও বক্স কালভার্ট রয়েছে, সেগুলো পুরোপুরি সচল নয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান ইউএনবিকে বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে এ পর্যন্ত প্রায় ২২৫ কোটি টাকাখরচ করেছে। খালসংস্কার, ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতা দুর্ভোগ থেকে এখনও নগরবাসীকে পুরোপুরি মুক্ত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, এর মূল কারণ ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থার সক্ষমতার অভাব। আবর্জনায় বন্ধ হয়ে গেছে ড্রেনের মুখগুলো। এ ছাড়া প্রধান প্রধান সড়কের পাশে ড্রেন ও নালা থাকলেও, তা আবর্জনায় ঢাকা পড়ে গেছে। তাই ভারী বৃষ্টিপাতে সড়কের পানি দ্রুত নামতে পারে না, ফলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান ইউএনবিকে আরও বলেন, ঢাকার মাত্র ৩০ ভাগ এলাকা পরিকল্পিত। বাকি ৭০ ভাগ এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সরকারের রাস্তাঘাট উন্নয়ন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার মধ্যেও বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এতে জনক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব নালা-নর্দমা হয়ে পানি পাম্পস্টেশনে যাবে, সেগুলোর যথেষ্ট পানিপ্রবাহ নেই। ড্রেনেজ ব্যবস্থায় সিটি করপোরেশন ও অন্যান্য সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। তাই পরিকল্পিতভাবে স্থায়ী সমাধানে দুই সিটিকে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে যথাযথভাবে হয়নি ড্রেনেজ, খাল ও বক্সকালভার্ট পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। সিটি করপোরেশন ও সরকারের অন্য সংস্থার মধ্যে নেই কোনো সমন্বয়। ফলে জলাবদ্ধতার জন্য একে অন্যকে দায়ী করেই বছর পার করছে সংস্থাগুলো। বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রতিটি কাজের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। শুধু অর্থ খরচ করলেই হবে না। জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পতি কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ সড়কে আবর্জনা পড়ে পানি নিষ্কাশনে ড্রেনের মুখগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এসব আবর্জনার মধ্যে পলিথিনের ব্যাগ, প্লাস্টিকের বোতল, বিভিন্ন খাবারের উচ্ছিষ্ট, গ্লাস ভাঙা, ময়লা কাপড় ও কাগজের ছেঁড়া অংশ ড্রেনের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: দেশের এভিয়েশন সেক্টরে রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন শনিবার
এ বিষয়ে ঢাকার বাসিন্দা আসিফ ইউএনবিকে বলেন, এসব ড্রেনের মুখগুলো সিটি করপোরেশনের কর্মীদের নিয়মিত পরিষ্কার করার কথা থাকলেও, ৬ মাসেও তা পরিষ্কার হচ্ছে না। শুধু লোক দেখানো রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া হলেই চলবে না, সময়মতো প্রতিটি ড্রেনেজ পরিষ্কার রাখতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির নয়াপল্টন, সেগুনবাগিচা, কাকরাইল, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর, মতিঝিল ও কমলাপুরের পানি এসব এলাকার নালা–নর্দমা ও কালভার্ট হয়ে টিটিপাড়া পাম্পস্টেশনে গিয়ে জমা হয়। কিন্তু এগুলো পুরোপুরি সচল নয়।
আর ধোলাইখালের পাম্পস্টেশন হয়ে পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, ওয়ারীসহ কয়েকটি এলাকার পানি বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়ে। এই স্টেশনে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি পাম্প দিয়ে ঘণ্টায় ৮ কোটি ১০ লাখ লিটার পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব। এ স্টেশনেও ঠিকমতো পানি জমা হয় না।
দুই সিটি করপোরেশনের তথ্যে জানা যায়, রাজধানীতে ঢাকা ওয়াসা রক্ষণাবেক্ষণ করে ৩৮৫ কিলোমিটার গভীর ড্রেন ও ৪টি পাম্প স্টেশন এবং ১০ কিলোমিটার বক্স কালভার্ট।
পানি উন্নয়ন বোর্ড রক্ষণাবেক্ষণ করে ৫২টি স্লুইস গেট এবং একটি পাম্প স্টেশন, রাজউক রক্ষণাবেক্ষণ করে ২৫ কিলোমিটার লেক ও ৩০০ কিলোমিটার জলাশয়।
ডিএনসিসির ১ হাজার ২৫০ কিলোমিটার ড্রেনেজলাইন রয়েছে এবং ডিএসসিসির রয়েছে ৯৬১ কিলোমিটার ড্রেনেজ লাইন। এছাড়া বর্তমানে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের আওতায় দেওয়া হয়েছে ২৬টি খাল।
তবে সব খাল ও ড্রেনেজ রক্ষাণবেক্ষণের অভাবে ভরাট হয়ে যায়। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ইউএনবকে বলেন, সেদিন একটানা কয়েক ঘণ্টায় ১১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, তাই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। খালগুলোকে আমরা ভরাট করে ফেলছি, দখল করছি। এ ছাড়া যেখানে-সেখানে পলিথিন, বোতল ও আবর্জনা ফেলছি। সেগুলো গিয়ে ড্রেনে পরে পানি নামায় বাধা দিচ্ছে। ফলে পানিপ্রবাহ নষ্ট হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং পানি নেমে যেতেও সময় লাগছে। পরে পানি নামছে, তবে সময় লাগছে।
মেয়র বলেন, এক সময় শেওড়াপাড়া, মধুবাগ, খেজুরবাগান, সংসদ ভবনের পাশের রাস্তা, নেভির সামনের রাস্তা ডুবে যেত। এখন কিন্তু সেই পরিস্থিতি নেই। জলাবদ্ধতা হয়, আবার পানি নেমেও যায়। ঢাকা শহরের অলিগলি ২০ ফুটের কম হলে আমরা রাস্তার জন্য বরাদ্দ দেব না। এটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ ২০ ফুটের কম রাস্তা হলে সেখানে ড্রেন করার জায়গা থাকে না। এখনও অনেক রাস্তা আছে যেগুলো ২০ ফুটের কম রাস্তা। সেগুলোতেই মূলত জলাবদ্ধতার সমস্যা বেশি দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় বোতল, পলিথিন, নানা আবর্জনা আমরা ইচ্ছেমতো যেখানে সেখানে ফেলছি। সেগুলো গিয়ে ড্রেনের মধ্যে ঢুকছে, সেগুলোই পানি নামতে সমস্যা করছে। তাই জলবদ্ধতা কমে যেতে বা পানি সরে যেতে কিছুটা সময় লাগছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১০টি র্যাপিড অ্যাকশন টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে এবং এই জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। আমরা কিন্তু বসে নেই। আমরা কাউন্সিলররাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, খালগুলোকে আমরা ভরাট করে ফেলছি, দখল করছি। ড্রেনে বিভিন্ন জিনিস ফেলে, পানি নামতে বাধা সৃষ্টি করছি। সব মিলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের এখন চ্যালেঞ্জ হল রাস্তাগুলো ২০ ফুট করতে হবে। আর অলিগলিতে যেসব যেসব ড্রেন আছে, সেগুলোকে আমরা বড় করার কাজ শুরু করেছি। যাতে করে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারে। দক্ষিণখান ও আজমপুরে আমরা এই কাজগুলো ইতোমধ্যে শুরু করেছি।
তিনি বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে শেওড়াপাড়ার দিকে যে রাস্তা এটাতে আগে জলাবদ্ধতা হলে দুই তিন দিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকত। আমরা কিছু কাজ করার ফলে এখন কিন্তু সেখানে ওইরকম জলাবদ্ধ থাকে না। সব ড্রেনের ডায়মিটার কিন্তু এক না, অলিগলিতে একটু ছোট লাইন, সেখান থেকে পানি আসবে বড় লাইনে, এরপর সেখান থেকে পানি খালে নামবে। সেহেতু পানি সরে যেতে কিছুটা সময় দিতে হবে।
জলাবদ্ধতা বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। গত তিন বছরে জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজস্ব অর্থায়নে ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নে কাজ হয়েছে। আমরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে জলাবদ্ধতা কমে আসবে।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম আগামী তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার আশাবাদ জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, এটি অত্যন্ত দুরূহ ও বিশাল কর্মযজ্ঞ। প্রকল্প প্রণয়ন করা, প্রকল্প থেকে অর্থসংস্থান পাওয়া, তারপরে দরপত্র করে কাজ শুরু করা, এগুলো অনেক দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে পড়ে যায় এবং দীর্ঘসময় লাগে। এ জন্য আমাদের যেসব কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে সেসব কাজ এগিয়ে নিতে আমরা তা নিজস্ব অর্থায়নেই করে চলেছি। হাতিরঝিলের মতো দীর্ঘ দশ বছর সময় যেন না লাগে সেজন্যই আমাদের এই কর্মকৌশল।
শেখ তাপস বলেন, গত বছর আমরা যখন (বর্জ্য অপসারণ, দখলদার উচ্ছেদ ও সীমানা নির্ধারণ) শুরু করি তখন কিন্তু এটার নদীর অববাহিকা ছিল না। আমরা সেই কাজটি করতে পেরেছি। এখন পানি প্রবাহ হচ্ছে। পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছে। সুতরাং প্রাথমিক কাজটা আমরা সম্পন্ন করেছি।
তিনি বলেন, আমরা যদি প্রকল্পের জন্য অপেক্ষা করতাম তাহলে এই কাজটায় এতদিনে কিছুই হতো না। আমরা আশা করছি, প্রকল্প পাশ করে কাজ সম্পন্ন করতে হয়তোবা তিন বছর সময় লেগে যেতে পারে। এর মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগের আমরা কাজগুলো চালিয়ে যাব।
আরও পড়ুন: ঘুর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড ফরিদপুরের কয়েকটি গ্রাম
রাস্তা বাড়াতে জায়গা ছাড়ার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকায় অন্তত ২০ ফিট চওড়া রাস্তা নির্মাণের জন্য জনগণকে জায়গা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বুধবার (০৪ অক্টোবর) সকালে ডিএনসিসি মেয়র ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন মিরপুর, শেওড়াপাড়া এলাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় মেয়র নাগরবাসীর সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যার কথা সরাসরি শোনেন এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, শুধু প্রধান সড়ক প্রশস্ত হলে হবে না। প্রধান সড়কের পাশাপাশি টারশিয়ারি রোড প্রশস্ত করা হলে যানজট কমে যাবে। তবে ন্যূনতম ২০ ফিট রাস্তা নির্মাণের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। জনগণ জায়গা ছাড়লে আমরা রাস্তা নির্মাণ করে দেব। রাস্তা চওড়া হলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, এম্বুলেন্স সহজে দ্রুত সময়ে যাওয়া আসা করতে পারবে।
আরও পড়ুন: ভবন নির্মাণে কোড অমান্য হলে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে: ডিএনসিসি মেয়র
জনগণ সম্পৃক্ত হলে সব কাজ বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যায় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, রাস্তা চওড়া করার জন্য আমি কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে উচ্ছেদ করলে অনেকে অসন্তুষ্ট হন। কিন্তু রাস্তা চওড়া হলে এই সুবিধা মেয়র ও কাউন্সিলররা পাবে না। বরং সর্বস্তরের জনগণ এই সুবিধা ভোগ করবে। অতএব জনগণের স্বার্থে আমরা আমাদের কাজ করে যাব।
আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরের উন্নয়নে জনগণের সহযোগিতার বিকল্প নেই। জনগণ ঠিকমতো নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করলে উন্নয়ন কাজ করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ট্যাক্স পরিশোধ করতে এখন আর সিটি করপোরেশনে যেতে হয় না। অনলাইনে ঘরে বসে ট্যাক্স দিন। দ্রুত অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্সও দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের কাজ চলছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ড্রেন বা নর্দমার পানিতে কিন্তু এডিস মশার জন্ম হয় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতেই এডিসের লার্ভা জন্মায়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
আতিকুল ইসলাম বলেন, বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ ড্রেনে বা খালে দেয়া যাবে না। নিজেদের বাসা বাড়িতে নিজস্ব ব্যবস্থায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। খালগুলোকে বাঁচাতে হবে। জলাশয়গুলোকে বাঁচাতে হবে। সবাইকে অনুরোধ করছি দয়া করে কেউ খালে ময়লা ফেলবেন না।
এসময় স্থানীয় জনগণ মেয়রের কাছে তাদের বিভিন্ন দাবিগুলো তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা মাঠের দাবি জানালে মেয়র বলেন, এই এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জমি নেই খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য। আমরা বিভিন্ন সংস্থার কাছে জমি চেয়েছি। তারা যদি হস্তান্তর করে তাহলে আমরা খেলার মাঠ নির্মাণ করে দিব। বিভিন্ন এলাকায় খাস জমি রয়েছে। অনেক খাস জমি বেদখল হয়ে গেছে। এগুলো খুঁজে বের করে খেলার মাঠ নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসি মেয়রের সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
খাল পাড়ের অবৈধ স্থাপনা সরাতে হুঁশিয়ারি দিল ডিএনসিসি মেয়র
ডিএনসিসি মেয়র জাতিসংঘের স্থানীয়-আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা মনোনীত
জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার(২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সেই করা এক চিঠিতে জাতিসংঘের স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে মেয়র আতিকুল ইসলামের মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: জননিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কোনো প্রকল্প চলতে দেয়া হবে না: আতিকুল
পরে সম্মতি প্রদান করলে ডিএনসিসি মেয়রকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে চূড়ান্তভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, 'আন্তঃসরকার ও জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের সম্পৃক্ততা জোরদার করার ক্ষেত্রে এই উপদেষ্টা পরিষদের সময়োপোযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে এবং আধুনিক শহর গড়তে স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে এই উপদেষ্টা পরিষদ করণীয় বিষয় নির্দিষ্ট করতে ভূমিকা রাখবে।'
আরও পড়ুন: ১০ দিনের মধ্যে সব ভবনের মালিককে কাগজপত্র দিতে হবে: মেয়র আতিকুল
চিঠিতে আরও বলা হয়, 'উপদেষ্টা পরিষদ স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারের সংশ্লিষ্টতা ও কর্মকাণ্ডসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দেবে, সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য আমাদের বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জনের প্রয়োজনীয় বিষয় সংশোধনে ভূমিকা রাখবে।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা জাতীয় পর্যায়ে যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, জাতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্থানীয় ও আঞ্চলিক সরকারগুলোর ধারাবাহিকভাবে ভূমিকা পালন এবং বৈশ্বিক পদক্ষেপেও অবদান রাখবে।
উল্লেখ, ১৫ সদস্যের এই উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে দুইজন সদস্য মনোনিত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের মেয়র অ্যাবি বিনায়। অন্যান্য সদস্যগুলো হলো ইউরোপ থেকে তিন জন, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে তিনজন, উত্তর আমেরিকা থেকে দুইজন, ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয় অঞ্চল থেকে তিনজন, মধ্য প্রাচ্য ও মধ্য আফ্রিকা (এমইএনএ) থেকে দুইজন।
আরও পড়ুন: ‘সুস্থ, সচল, আধুনিক’ ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি আতিকুলের
জরিমানা করায় মানুষ সচেতন হয়েছে: মেয়র আতিক
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার পর জরিমানা করায় মানুষ সচেতন হয়েছে।
তিনি বলেন, 'গত ৮ জুলাই জাপান গার্ডেন সিটিতে অভিযান চালিয়ে ভবনের বেজমেন্টে প্রচুর লার্ভা পেয়েছি। এরপর পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। প্রতিটি বেইসমেন্টে লার্ভা ছিল। কিন্তু আজ এসে দেখলাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। এখন জাপান গার্ডেন সিটি হয়েছে রোজ গার্ডেন সিটি। এতে প্রমাণ হলো যে জনগণ যদি সম্পৃক্ত হয় মশার উপদ্রব কমানো সম্ভব। জরিমানা করায় মানুষ সচেতন হয়েছে। আসলে জরিমানা করলে মানুষের টনক নড়ে।'
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জাপান গার্ডেন সিটির ভবন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মশার লার্ভা ধ্বংসে বিটিআই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে: মেয়র আতিক
তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম। মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালের বেশিরভাগ রোগীই ঢাকার বাইরের। অর্থাৎ, মানুষ সচেতন হয়েছে কারণ তারা জরিমানা দিয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা সচেতনতা বাড়াতে একটি প্রচারও চালাচ্ছি। গত দেড় মাসে যেখানে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে আবারও রিভার্স ড্রাইভ চালানো হবে। দেড় মাসে প্রায় দেড় কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সবটাই রাজস্ব বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা যদি সিটি করপোরেশন পেত, তাহলে এই অর্থ মশক নিধন ও জনসচেতনতায় ব্যয় করা যেত।
বিটিআই কীটনাশক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, 'বিটিআই আমদানির বিষয়ে আমরা উদ্ভিদ সুরক্ষা উইংকে চিঠি দিয়েছি। তারা বলেছে, আমরা বিটিআই আমদানি করতে পারি। ফলে পিপিআর অনুযায়ী টেন্ডারে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদপুরে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ডিএনসিসি নগর ভবনে বিটআই টেস্ট করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার।
তিনি বলেন, 'এখন যে পরীক্ষা করা হয়েছে তার ফলাফল ছয় ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া যাবে। এর আগে জাহাঙ্গীরনগরের ল্যাব পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকর ফলাফল পাওয়া গেছে।’
আরও পড়ুন: মশার লার্ভা ধ্বংসে সিঙ্গাপুর থেকে কীটনাশক আনছে ডিএনসিসি: মেয়র আতিক
মশার লার্ভা ধ্বংসে বিটিআই কার্যকরী ভূমিকা রাখবে: মেয়র আতিক
চলমান মশা নিধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বিটিআই কীটনাশক প্রয়োগ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে ডিএনসিসির অঞ্চল ৩-এর আওতাধীন গুলশান-২ এর ৪৭ নম্বর সড়ক এলাকায় প্রথমবারের মতো এই কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'আজ আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। গত ৪০ বছর ধরে আমরা টেমিফস্ট (কীটনাশক) ব্যবহার করতাম মশা নিধনে। কিন্তু, আমরা দেখেছি অন্যান্য উন্নত বিশ্বে ব্যবহার হচ্ছে বিটিআই কীটনাশক।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের বিভিন্ন শহরে এটি ব্যবহার করছে, সিঙ্গাপুরে ব্যবহার করছে, মায়ামি সিটিসহ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে এই বিটিআই ব্যবহার করছে। বিভিন্ন দেশে দেখার পরে আমরা বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করে এটা নিয়ে এসেছি।’
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি অনেকগুলো প্রটোকল মেইনটেইন করে একটি কীটনাশক আনতে হয়। আমরা সব প্রটোকল মেইনটেইন করে সিঙ্গাপুর থেকে লার্ভা ধ্বংসে কার্যকরী বিটিআই এনেছি। আশা করি এটি ব্যবহারে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।'
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'বিটিআই পরিবেশ রক্ষা করে। অর্থাৎ, এটি যখন আমরা ব্যবহার করছি, এখানে মাছের কোনো ক্ষতি হবে না, জলজ প্রাণীর ক্ষতি হবে না। এতে লাভটা কী হচ্ছে? লেকে যে মাছগুলো আছে, এগুলোর কোনো ক্ষতি হবে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে ক্ষতিকর লার্ভা ধ্বংস করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে ড্রেনে গাপ্পি মাছ ছাড়তাম। কিন্তু, এই মাছগুলোকে আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারতাম না। এখন লার্ভাটা মরবে, গাপ্পি মাছগুলা থাকবে। এ ছাড়া গাপ্পি মাছগুলো আবার লার্ভা খেয়ে ফেলবে। এর ফলে, বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট করতে সুবিধা হবে।'
মেয়র জানান, ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের পুরো টিমকে আগামী পাঁচ দিন ট্রেনিং করে কীভাবে এটি প্রয়োগ করতে হয়, সেটি শেখানো হবে।
আরও পড়ুন: মশার লার্ভা ধ্বংসে সিঙ্গাপুর থেকে কীটনাশক আনছে ডিএনসিসি: মেয়র আতিক
আতিকুল ইসলাম বলেন, 'এই বিটিআই ব্যবহারের একটি বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এটি একটি এলাকায় একবার প্রয়োগ করলে ১০ দিনের মধ্যে সেখানে আর স্প্রে করতে হবে না। এতে আমাদের যে জনবল আছে, আমি আরও অনেক বেশি এরিয়া কাভার করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘আগে সপ্তাহে দু’বার টেমিফস্ট ব্যবহার করা হতো। অতএব বিটিআই ব্যবহার করে অনেক জায়গা কাভার করতে পারব। তবে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আবার সাত দিন পরপর করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রতিটি অঞ্চলের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ওয়ার্ডগুলোর মশা নিধন কর্মীদের প্রশিক্ষণের পরে এটি প্রয়োগ করবেন। আজ ৩, ৯, ১০ এই তিনটি অঞ্চলের কর্মীরা প্রশিক্ষণ নেবেন। পাঁচ দিনের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব অঞ্চলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।'
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'পুরো প্রয়োগ প্রক্রিয়াটি আমরা কঠোর মনিটরিং এর মধ্যে রাখব। সঠিক পরিমাণে বিটিআই মিশ্রণ হয়েছে কি না, সঠিক পরিমাণ জায়গায় প্রয়োগ করা হয়েছে কি না এগুলো মনিটরিং করা হবে।'
আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, 'আমরা প্রথম ধাপে পাঁচ টন বিটিআই এনেছি। এতে তিন মাস চলবে। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ভবনের বেজমেন্টে প্রায় ৪৩ শতাংশ লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। তাই বেজমেন্টেও বিটিআই প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছি। তবে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ওষুধ কোম্পানিগুলো বাণিজ্যিকভাবে যদি এটি বাজারজাত করে ওভার দ্য কাউন্টারে বিক্রির ব্যবস্থা করে, তাহলে সবাই নিজেদের বাড়িতে ব্যবহার করতে পারবে।'
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম শফিকুর রহমান, উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক, সিঙ্গাপুর থেকে আগত বিটিআই কীটনাশক বিশেষজ্ঞ লি শিয়াং, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান, অঞ্চল-০৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুলকার নায়ন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ৩ মাসের মধ্যে ডিএনসিসির আওতাধীন নতুন এলাকার সড়ক নির্মাণকাজ শেষ: আতিক
৮ ঘন্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হবে: মেয়র আতিক
ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযান: ১৬ দিনে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা জরিমানা
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত চলমান মশক নিধন অভিযানে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) পর্যন্ত ১৬ দিনে মোট ১৮১ মামলায় ১ কোটি ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৭টি মামলায় মোট ২ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বির আহমেদ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযান: ২৩ প্রতিষ্ঠানকে ৩.৬৬ লাখ টাকা জরিমানা
অভিযানে দুইটি ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করা হয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন তেজগাঁও শিল্প এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযান পরিচালনাকালে বাসাবাড়ি, বাণিজ্যিক ভবন ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লটে মশক বিরোধী অভিযানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৪টি ভবনের মালিককে ৪ মামলায় মোট ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া অঞ্চল-০৪ এর আওতাধীন ১০নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত লালকুঠি ও ৩য় কলোনি এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবেদ আলী অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে প্রায় ৬৫টি বাসাবাড়ি, ভবন, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাট পরিদর্শন করা হয়েছে।
একটি দোকানে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। লার্ভা ধংস করা হয়েছে।
অঞ্চল-২ এর আওতাধীন মিরপুর সেকশন ৭ এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে একটি নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পাওয়ায় ১টি মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান।
এছাড়াও ডিএনসিসি'র সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে লিফলেট বিতরণ করে এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতন করেন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরাও ডিএনসিসির কর্মীদের সাথে যুক্ত হয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযান তদারকির জন্য সকল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ১০টি টিম গঠন করা হয়েছে।
১০টি টিম প্রতিদিন চলমান অভিযান তদারকি করছে।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির মশকনিধন অভিযান: ১৩ মামলায় ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা
ডিএনসিসির নিজস্ব স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা
ডিএনসিসির মশকনিধন অভিযান: ১৩ মামলায় ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মাসব্যাপী বিশেষ মশকনিধন অভিযানের ৯ম দিনে সোমবার (১৭ জুলাই) ১৩টি মামলায় মোট ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গত ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযানে সোমবার (১৭ জুলাই) পর্যন্ত ৯ দিনে ১৩৩টি মামলায় মোট ৯৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার ডিএনসিসির অঞ্চল-৬ এর আওতাধীন উত্তরা ১১নং সেক্টর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
অভিযান পরিচালনাকালে একটি বেসরকারি হাসপাতালের বেজমেন্টে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১টি মামলায় ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন রায়ের বাজার আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বির আহমেদ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির মশকবিরোধী অভিযান: দ্বিতীয় দিনে ৬ লাখ টাকার বেশি জরিমানা আদায়
অভিযানে ৪টি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৪টি মামলায় মোট ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করা হয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
ফার্মগেটে অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান।
অঞ্চল ১ ও ৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন উত্তরা ৭নং সেক্টর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়৷
ভবিষ্যতে লার্ভা উৎপন্ন হতে পরে এমন স্থানসমূহে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে ডেঙ্গুর বিষয়ে সকলকে সতর্ক ও সচেতন করা হয়েছে।
এছাড়া অঞ্চল-০৪ এর আওতাধীন ৬০ফিট ও পশ্চিম মনিপুর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবেদ আলী এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে প্রায় ৯০টি ভবন, স্থাপনা, জলাশয়, রেষ্টুরেন্ট ও দোকানপাট পরিদর্শন করা হয়েছে। ৬টি নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পাওয়ায় ৬টি মামলায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। লার্ভা ধংস করা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইসমাইল মোল্লা, উপ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার ও সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা আলী।
অঞ্চল-৯ এর আওতাধীন পশ্চিম নূরের চালা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে ভবন, স্থাপনা, জলাশয়, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাটসহ মোট ৩১০টি স্পট পরিদর্শন করা হয়। একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে লিফলেট বিতরণ করে এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতন করেন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরাও ডিএনসিসির কর্মীদের সাথে যুক্ত হয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির নিজস্ব স্থাপনায় এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা
ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযান: ২৩ প্রতিষ্ঠানকে ৩.৬৬ লাখ টাকা জরিমানা