সেনাবাহিনী
ভারতের মণিপুরে ভূমিধসে নিহত বেড়ে ৪৭
উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর রাজ্যে ব্যাপক ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার গভীর রাতে রাজ্যের ননি জেলার একটি টেরিটোরিয়াল আর্মি ক্যাম্পের কাছে একটি নির্মাণাধীন মেট্রো রেলওয়ে সাইটে এ ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, নিহতদের মধ্যে ২৭ জন সেনা জওয়ান এবং স্থানীয় ও নির্মাণ শ্রমিকসহ ২০ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। টেরিটোরিয়াল আর্মি হলো ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংরক্ষিত বাহিনী।
আরও পড়ুন: ভারতে বাস খাদে পড়ে নিহত ১৬
এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছেন যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। মুখপাত্র বলেছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং জাতীয় দুর্যোগ ত্রাণ বাহিনী ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা করেছেন।
জুন থেকে সেপ্টেম্বরের বর্ষাকালে ভূমিধস এবং বন্যা উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে একটি সাধারণ বিষয়। ভারী মৌসুমী বৃষ্টি ভারতের কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সূত্রপাত হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাস খাদে পড়ে নিহত ১৯
হোলি আর্টিজান হামলার ৬ বছর
রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর জঙ্গি হামলার ছয় বছর পূর্ণ হলো আজ। সেই হামলায় প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করেছিল।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের ওই বেকারিতে পাঁচজন সশস্ত্র জঙ্গি হামলা চালায়। তারা নিরীহ মানুষদের হত্যার আগে জিম্মি করে। নিহতদের মধ্যে ইতালির ৯জন, জাপানের সাত,ভারতের এক, একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং দুজন বাংলাদেশি ছিল। এছাড়া হামলায় বাংলাদেশের দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন।
পরের দিন ২ জুলাই ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন অভিযান চালিয়ে তিনজন বিদেশিসহ ১৩ জনকে উদ্ধার করে। এসময় ২০ জনের লাশ পাওয়া যায়। অভিযানে পাঁচ জঙ্গি এবং বেকারির এক কর্মচারী নিহত হন এবং সন্দেহভাজন এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: হোলি আর্টিজানে হামলার ৫ বছর: ফিরে এলো সেই ভয়ংকর রাত
হামলার ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলা ডিবিতে স্থানান্তর হয়। ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। একই বছরের ৩ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী রিপন কুমার দাসের ট্রাইব্যুনালের সামনে জবানবন্দি দেয়ার মাধ্যমে এ চাঞ্চল্যকর মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়।
এই জঙ্গি হামলা মামলায় আদালত ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধি, মাহমুদুল হাসান মিজান, সোহেল মাহফুজ, রাশিদুল ইসলাম ওরফে রায়াশ, হাদিছুর রহমান সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ। এদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
হামলার পেছনে ২১ জন জড়িত বলে জানা যায়। যাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১৩ জন নিহত হন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
দিনাজপুরে সেনাবাহিনীর গাড়ির সঙ্গে ধাক্কায় নিহত ১
দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের হাইওয়ে থানার সামনে সেনাবাহিনীর গাড়ির সঙ্গে ধাক্কায় আহত মোটরসাইকেল চালক রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জাবেদ আলী (২৪) চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর মাস্টারপাড়ার এহসানুল হকের ছেলে।
১০ মাইল হাইওয়ে থানার ইনচার্জ এ. এন. এম. মাসুদ জানান, দিনাজপুর রংপুর মহাসড়কের চিরিরবন্দরের ফতেজংপুরে ১০ মাইল হাইওয়ে থানার সামনে মহসড়কে সেনাবাহিনীর গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে চালক জাবেদ আলী আহত হয়েছে। এসময় সেনা সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে রমেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আম ব্যবসায়ীর মৃত্যু
ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ২১ ঢাবি শিক্ষার্থীসহ উদ্ধার প্রায় ১০০
টাঙ্গুয়ার হাওরে গিয়ে বন্যায় আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০০ জনকে সুমনগঞ্জের ছাতক উপজেলা থেকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী।
রবিবার সকালে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।উদ্ধারকৃতদের সিলেটে আনা হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে একটি ট্রলার রেস্তোরাঁ থেকে তাদের উদ্ধার করলেও ছাতকে তা আটকা পড়ে।
আরও পড়ুন: ভ্রমণে গিয়ে সুনামগঞ্জে বন্যায় আটকা পড়েছেন ঢাবির ২১ শিক্ষার্থী
তিন দিন আগে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার জেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন পানসি রেস্টুরেন্টে আশ্রয় নেয়।
আটকে পড়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শোয়েব আহমেদ এক বার্তায় জানিয়েছেন, ‘আমাদের খাদ্য ও পানীয় জলের ভীষণ প্রয়োজন এবং এখানে কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। এখানে, আমাদের বেশিরভাগ ফোনের ব্যাটারি শেষ। এবং দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে সেটা সঠিকভাবে কাজ করছে না।’
আরও পড়ুন: ভয়াবহ বন্যায় বন্দি সিলেটবাসী
বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ
সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তিনদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিমানবন্দরটিতে আজ (শুক্রবার) থেকে তিনদিন কোন ধরণের ফ্লাইট ওঠা-নামা করবে না।
হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি বন্যার পানি চলে এসেছে। এছাড়া সিলেটজুড়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় তিনদিনের জন্য বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিদিনের মতোই আমাদের ফ্লাইটগুলো বিমানবন্দরে অবতরণ ও বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছে। কিন্তু রানওয়ের কাছাকাছি বন্যার পানি চলে আসায় এখন থেকে আর কোনো ফ্লাইটের অবতরণ কিংবা উড্ডয়ন সম্ভব হচ্ছে না।
পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
এদিকে, সিলেটের কুমারগাওয়ের বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের সাব স্টেশনে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ।
শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুর থেকে কুমারগাও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের চারপাশে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাকার মেশিন দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি শুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে কুমারগাও সাব স্টেশন তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এটি তলিয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে। এতে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই আমরা এই কেন্দ্রটি চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। যাতে অন্তত নগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগ একসাথে মিলে এই কেন্দ্র সচল রাখার চেষ্টা করছি।
বিদ্যুৎ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির শুক্রবার দুপুরে বলেন, গত বুধবার রাতেই কুমারগাও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়েছে। আর চার ইঞ্চি পানি বাড়লেই এই কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। ইতোধ্যে সুনামগঞ্জ, ছাতক, কোম্পানীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কুমারগাও উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে যাবে।
পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত
সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে সেনাবাহিনী
সিলেটের কুমারগাওয়ের বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের সাব স্টেশনে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এতে পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ।
শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুর থেকে কুমারগাও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের চারপাশে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাকার মেশিন দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি শুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে কুমারগাও সাব স্টেশন তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এটি তলিয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে। এতে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই আমরা এই কেন্দ্রটি চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। যাতে অন্তত নগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগ একসাথে মিলে এই কেন্দ্র সচল রাখার চেষ্টা করছি।
পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা
বিদ্যুৎ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির শুক্রবার দুপুরে বলেন, গত বুধবার রাতেই কুমারগাও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়েছে। আর চার ইঞ্চি পানি বাড়লেই এই কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। ইতোধ্যে সুনামগঞ্জ, ছাতক, কোম্পানীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কুমারগাও উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি এই কেন্দ্রটি সচল রাখার। বালির বস্তা দিয়ে কেন্দ্রের চারপাশে বাঁধ দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি সেচে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী ও সিটি করপোরেশন আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে।
শুক্রবার দুপুরে কুমারগাও সাব স্টেশন পরিদর্শনে যান সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
তিনি বলেন, বন্যায় সিলেটের সবগুলো উপজেলাই পানি প্রবেশ করেছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সিলেট নগরে যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে আমরা সেই চেষ্টা করছি।
পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতিতে শাবিপ্রবি বন্ধ ঘোষণা
সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার বিস্ফোরণে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়
সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারা।ঘটনার এক সপ্তাহ পর পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপশি স্থানীয় বাসিন্দাদের শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। আগুন লাগার পর অন্তত ৬৫ ঘণ্টা লাগে নিয়ন্ত্রণে আনতে। আর পুরোপুরি নেভাতে লেগেছে ৯৫ ঘণ্টার বেশি। তারপরও কালো ধোঁয়ার নির্গমন বন্ধ হয়নি।এতে চোখের যন্ত্রণার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।এমনিতে আগুন ও বিস্ফোরণের পরপরই আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে গেছেন অনেকে। তারা যেমন বসতবাড়িতে ফেরেননি, তেমনি বাকি যারা বাড়িতে ছিলেন তারাও গ্রাম ছাড়ছেন অসুস্থতার ভয়ে।ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কন্টেইনার ডিপোটিতে ‘হাইড্রোজেন পারক্সাইড’ নামের বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক ছিল। হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি যদি উত্তপ্ত করা হয়, তাহলে তাপীয় বিয়োজনে হাইড্রোজেন পারক্সাইড বিস্ফোরকের আচরণ করে। আগুন লাগার পর কন্টেইনারগুলোয় বিস্ফোরণ ঘটে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: বিএম কন্টেইনার ডিপো থেকে দেহাবশেষ উদ্ধার
গত ৪ জুন শনিবার রাতের বিকট বিস্ফোরণের পর কন্টেইনারে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক মিশে গেছে বাতাসে। আবার পানির সঙ্গে মিশে চলে গেছে বিভিন্ন খাল হয়ে বঙ্গোপসাগরে। বিস্ফোরণের পর থেকেই সীতাকুণ্ডের ওই এলাকায় ঝাঁজালো গন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই চোখে ঝাপসা দেখছেন; কারও কারও চামড়া বিবর্ণ বা লাল হয়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বমিসহ দেখা দিচ্ছে নিত্যনতুন নানা উপসর্গ।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও পরিবেশবিদরা বলছেন, সীতাকুণ্ডের এই এলাকায় প্রকৃতি বা পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়তে পারে। সেটা স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। এ অবস্থায় ভারী বৃষ্টিপাত হলে বায়ুদূষণ কমে পরিবেশ কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তবে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি খালগুলোতে গিয়ে দূষণ সৃষ্টি হতে পারে। সব মিলিয়ে জনস্বাস্থ্যের ওপর নিঃসন্দেহে বিরূপ প্রভাব পড়বে। তারা আরও বলছেন, সীতাকুণ্ডের বাতাসে কী পরিমাণ রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, সেটা পরিমাপ করে দেখতে পারে পরিবেশ অধিদপ্তর। ওই এলাকার বাতাসে পিপিএমের (পার্টস পার মিলিয়ন) মাত্রা বেশি হলে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব পড়বে।সরেজমিন দেখা গেছে, ডিপোর প্রবেশপথে দক্ষিণ পাশে গভীর ও চওড়া একটি নালা। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মিশ্রিত পানি যাতে খাল-বিলে গিয়ে দূষণ ঘটাতে না পারে সেজন্য নালার মাঝ বরাবর বালির বস্তা ফেলে বাঁধ নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা। ঘটনার পরদিন তৈরি করা ওই বাঁধ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় আগুন, উত্তাপ ও ধোঁয়া প্রত্যক্ষভাবে ছড়িয়েছে আড়াই বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে। আর এর দূরবর্তী প্রভাব পড়েছে ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায়। বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় রাসায়নিকের বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে।
বিএম ডিপোর পাশ্ববর্তি মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান হোসেন জানান, ভয়াবহ আগুনে আশপাশের এলাকাগুলোয় রাসায়নিকের পোড়া গন্ধে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তার পাঁচ বছরের সন্তান ধোঁয়ায় অসুস্থবোধ করলে আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে পরিবারকে রেখে এসেছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিসের আরও এক কর্মীর মৃত্যু
৬০ ঘণ্টা পর কন্টেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে: সেনাবাহিনী
সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোর আগুন ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় পর মঙ্গলবার সকালে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
ডিপোর বাইরে সকাল ৯টার দিকে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮তম ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি এবং এলাকাটি এখন বিপদমুক্ত।
তিনি বলেন, ডিপোতে এখন মূলত কাপড় ভর্তি কনটেইনার থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আগুন নেভাতে ব্যবহৃত পানির কারণে এ ধোঁয়া বের হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখানে এসেছে। এখানে বিপজ্জনক আর কিছু আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখছেন। তাদের কাছ থেকে আমরা একটা ফাইনাল রিপোর্ট পাবো। সেখানে আমরা দেখবো আর কোনো বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। এটুকু আমরা বলতে পারি প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: আরও দুজনের লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার
এদিকে আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, দুপুর ১২টার দিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়। এগুলো দুইজনের লাশ বলে ধারণা করছি। তবে আমরা এখনও নতুন লাশ হিসেবে মনে করছি না। কারণ এগুলো আগে উদ্ধার হওয়া লাশের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হতে পারে। তবে আমরা এ ব্যাপারে যাচাই বাছাই করে বলবো।
তিনি বলেন,আমরা এখনও সতর্কতার সঙ্গে আগুন পুরোপুরি নেভানোর চেষ্টা করছি। কারণ অনেক কন্টেইনার এখনও জ্বলছে এবং আমরা নিশ্চিত নই যে কোনটিতে বিপজ্জনক রাসায়নিক রয়েছে।
সোমবার জেলা প্রশাসন সীতাকুণ্ড কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা সংশোধিত করে পূর্বের নিশ্চিত হওয়া সংখ্যা ৫০ থেকে কমিয়ে ৪১ করেছে।
ব্রিগেডিয়ার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক জেনারেল শামীম আহসান বলেন, আমরা ৪১টি লাশ পেয়েছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রবিবার ১৮ জনের ময়নাতদন্ত করেছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ৪১: প্রশাসন
সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মিয়ানমারে সহিংসতায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সংস্থা বলছে, সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মিয়ানমারে প্রথমবারের মতো বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।
সংস্থাটির মতে, গত বছর সেনা দখলের পর অর্ধেকেরও বেশি মিয়ানমার নাগরিক তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ওসিএইচএ) একটি প্রতিবেদনে বলছে, সামরিক সরকার এবং বিরোধীদের মধ্যে চলমান লড়াই, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্য এবং বর্ষা মৌসুমের কারণে ইতোমধ্যেই দেশটির জটিল পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করেছে। এছাড়াও দেশটিতে ত্রাণ তৎপরতা মারাত্মকভাবে অপর্যাপ্ত।
এই প্রতিবেদনে ২৬ মে পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, আসিয়ানকে সামরিক জান্তার ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান
ওসিএইচএ বলছে, মিয়ানমারে সম্প্রতি যুদ্ধ বেড়েছে। ঘনঘন নির্বিচারে হামলা, ল্যান্ডমাইন এবং যুদ্ধের বিস্ফোরকের অবশিষ্টাংশসহ বিস্ফোরণ জড়িত ঘটনার কারণে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, সেনাবাহিনীর দখল নেয়ার পর থেকে মিয়ানমারে ছয় লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার বেশিরভাগই জাতিগত সংখ্যালঘু।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দখল নেয়ার পর থেকে প্রায় ৪০ হাজার ২০০ মানুষ প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে এবং ১২ হাজার ৭০০ টিরও বেশি ‘বেসামরিক সম্পত্তি’ (বাড়ি, গীর্জা, মঠ, স্কুল) ধ্বংস হয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে।
এই বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষ পর্যন্ত, মিয়ানমারের দুই দশমিক ছয় মিলিয়ন মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
নেপালের পাহাড়ে বিমান বিধ্বস্ত: মিলেছে ২২ যাত্রীর খোঁজ
নেপালে ২২ যাত্রী বহনকারী বিমানের ধ্বংসাবশেষ সোমবার একটি পাহাড়ে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে তাদের মধ্যে কেউ জীবিত আছে কিনা এই বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি তারা।
কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) পূর্বে পোখরা থেকে যাত্রা করা তারা এয়ারলাইন্সের বিমানটি ২০ মিনিটের নির্ধারিত ফ্লাইটে জোমসোমের পাহাড়ি শহরে যাওয়ার কথা ছিল। টার্বোপ্রপ টুইন অটার বিমানটি গভীর গিরিখাত এবং পাহাড়ের চূড়ার একটি এলাকায় পৌঁছার পর বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: নেপালে ২২ যাত্রী নিয়ে বিমান নিখোঁজ
সেনাবাহিনী বলেছে, পোখরা শহর থেকে উড্ডয়নের পর জোমসোমের পাহাড়ি শহর মোস্তাং জেলার সানোসওয়ারে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
টুইটারে সেনাবাহিনীর পোস্ট করা দুর্ঘটনাস্থলের একটি ছবিতে দেখা গেছে, পাহাড়ের চারপাশে বিমানের অংশগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে প্রবল বর্ষণে ৩৭ মৃত্যু
নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, একটি সেনা হেলিকপ্টার ও ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার অনুসন্ধানে অংশ নিয়েছে।
এর চেয়ে বেশি কিছু তথ্য তারা আর দিতে পারেনি।