সরকার
আ. লীগের ভয় দেখানোর কৌশল আর চলবে না, জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের ভয়ভীতি কৌশল আর কাজ করবে না, তা না হলে দেশের জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জোর করে আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেবে।
তিনি বলেন, ‘বন্দুক দিয়ে, হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে আর কাজ হবে না। অনেক অপরাধ করেছেন, জুডেশিয়াল কিলিং করেছেন, ১ লাখ ২৪ হাজার মামলা দিয়ে ৪০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করেছেন। কেউ ক্ষমতায় চিরস্থায়ী থাকতে পারেনি। আপনিও (শেখ হাসিনা) পারবেন না। ক্ষমতার এ মসনদ কারো জন্য পার্মান্টেট নয় মানে মানে সরে পড়েন।’
রবিবার (১৬ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের মেহনতী শ্রমিক জনতার মহাসমাবেশে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম একটি ঐতিহাসিক স্থান এখান থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করে জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। এইখানে তিনি জীবনের শেষ সময় অতিবাহিত করেছেন, প্রীতিলতার এই চট্টগ্রামের মানুষ অবৈধ লুটেরা সরকারকে কি বার্তা দিতে চায় তা সারাবিশ্বে পৌঁছে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয়: ইইউ প্রতিনিধি দলকে বিএনপি
বিএনপির কেন্দ্রিয় ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার, নির্দলীয় সরকার থাকলে আওয়ামী লীগের ভাত নেই। সবাইকে বোকা বানিয়ে বিচার ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে, খায়রুল হকের ওপর জোর দিয়ে পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধান বাতিল করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে একটি বক ধার্মিক দল। বক যেমন পুকুর জলাশয়ের ধারে এক পায়ে বসে থাকে মাছ ধরার জন্য, তারাও (আওয়ামী লীগ) সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।তারা এখন বলে বেড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের অধিনে নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সবাই যেন নির্বাচনে অংশ নেয়। এ যেন ‘ভূতের মুখে রাম রাম’।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আসলে আওয়ামী লীগের চরিত্রই ভালো না। আর নির্বাচন কমিশন হচ্ছে একটা ‘ঠুটো জগন্নাথ’, তাদের কোন ক্ষমতা নেই। আওয়ামী লীগ যা বলে তা বাস্তবায়ন করে।’’
তিনি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তারা বলে, নির্বাচন আমাদের অধীনে হবে। আমরাই ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ করবো। আমরাই ভোট দেওয়াবো, আমাদের মতো করে সবাইকে ভোট দিতে হবে। নইলে চলে যেতে হবে।”
ফখরুল বলেন, ‘‘এমনকি আমাদের ভোটারদের এখনও বলে তারা ভোট কাকে দেবে। ‘যদি বিএনপিকে ভোট দিতে চাও তাহলে তোমার ভোট হয়ে গেছে।’ ভোটকেন্দ্রে যেতেই দেয় না।’’
আরও পড়ুন: 'সময় শেষ, পদত্যাগ করুন': সরকারের প্রতি ফখরুল
শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বলে তাদের অধীনে নাকি ভোট দিতে হবে। ২০২১ সালে শেখ হাসিনা আমাদের ডেকে বলেন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, সবাই ভোট করতে পারবেন। সবাইকে বলেন ভোট করতে, আমি কোনও বাধা দেবো না। আমরা ভাবলাম, বোধহয় শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। আগের রাতে ভোট হয়ে গেলো। এখন আবার বলছে আমরা সুন্দর ভোট করবো। আমাদের অধীনেই ভোট হবে। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে। তাদের কী আবদার!আগের বার তারা ইলেকশনের আগে জনগণকে বলেছিল নির্বচিত হলে ঘরে ঘরে চাকুরি দেবে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে চাকুরিতো কেউ পায়নি বরং ঘরে ঘরে বেকার বেড়েছে, চালের কেজি ৯০ টাকা হয়েছে। এ সরকার যতদিন থাকবে মানুষের দুর্ভোগ তত বাড়বে।তাই ভালো ভালোই পদত্যাগ করে মানুষকে মুক্তি দিন, না হয় জনগণ তাদের হারানো ভোটাধিকার আদায় করে নিতে বাধ্য হবে।’
আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আর কোনও সময় নেই, তাদের সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি। আবারও বলছি, ভালো ভালোয় পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আট বছর কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন সংগ্রাম করেছেন। রাষ্ট্র মেরামতের জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফা দিয়ে আমাদের একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।’
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মীর নাসির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান এবং বান্দরবান বিএনপির নেতা ম্যামাচিং।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে: রিজভী
আ. লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয়: ইইউ প্রতিনিধি দলকে বিএনপি
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে সফররত নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি জানিয়েছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাদের দলের অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।
শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা তাদের বলেছি এই সরকারের আমলে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না, এটা সম্ভব নয়। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।
ইইউ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বসেব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাড়াবাড়ি না করতে বিএনপির প্রতি খাদ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ার
তিনি জানান, তারা ইইউ প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেছেন যে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোট দিতে পারবে না এবং তাদের প্রতিনিধিও নির্বাচন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো দিবালোকের মত পরিষ্কার। এগুলো সবাই জানে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে সারাবিশ্বের নজর রয়েছে, কারণ তারা জানে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য নয়। ‘তাই তারা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’
খসরু বলেন, ‘ইইউ টিমকে কেন বাংলাদেশে এসে নির্বাচন নিয়ে মতামত নিতে হচ্ছে? এ জন্য দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে তাদের যেতে হয়না। এমনকি, এই উদ্দেশ্যে বিশ্বের খুব কম দেশেই তাদের যেতে হয়। তাহলে তাদের বাংলাদেশে আসতে হলো কেন? অন্য সবার মতো, তাদেরও এই সরকারের আমলে নির্বাচন নিয়ে একই প্রশ্ন থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আগামী নির্বাচনে তাদের ভোট দিতে পারবে কি না তা জানতে চেয়েছে ইইউ টিম।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, সরকার অতীতেও ভোট চুরি করেছে, এখনো করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। তারা এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করে এবং জনগণকে ভোটদানের বাইরে রেখে আবার ক্ষমতায় যাবে। স্বাভাবিকভাবেই এসব নিয়ে (বৈঠকে) আলোচনা হয়েছে।
সফররত ইইউ নির্বাচন অনুসন্ধানী মিশন সকাল ৯টায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আসেন এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট বৈঠক করেন।
বৈঠকে উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি দলের সঙ্গেও শনিবার (১৫ জুলাই) ইইউ টিমের বৈঠকের কথা রয়েছে।
ইইউ নির্বাচনী অনুসন্ধানী মিশন ৯ জুলাই দুই সপ্তাহের সফরে বাংলাদেশে এসেছে এবং এটি ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছে।
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন বাংলাদেশে পাঠানো উচিত কিনা তারা ইতোমধ্যেই তা নিয়ে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছে।
আরও পড়ুন: ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
আ.লীগ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ নেই: কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
'সময় শেষ, পদত্যাগ করুন': সরকারের প্রতি ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের পদত্যাগ দাবি করে বলেছেন, তাদের ক্ষমতায় থাকার সময় শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন আর সময় নেই। তাদের সময় শেষ। আমি আগেও এটা পরিষ্কার করে বলেছি এবং আবারও বলছি।‘
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নোয়াখালীর শহীদ বুলু স্টেডিয়ামে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ' ভালো ছেলের মতো পদত্যাগ করুন । সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন তদারকির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন।’
সরকার তা না মানলে রাজপথে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রশ্ন করেছেন, সিদ্ধান্ত কোথায় নেওয়া হবে?
এ সময় সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা চিৎকার করে বলেন, 'রাস্তায়।'
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পতনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে: রিজভী
এ সময় মির্জা ফখরুল সরকার পরিবর্তনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
দুর্নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা খাত ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে এবং এটিকে অবৈধ উপার্জনের স্বর্গে পরিণত করেছে। লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো জনগণের সম্পদ কেড়ে নিয়েছে, কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তা ছাড়া, তারা আড়াই শতাংশ প্রণোদনার প্রস্তাব দিয়ে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য পরিকল্পনা করেছে।
মির্জা ফখরুল আরোও বলেন, এটা হাস্যকর যে তারা আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে চোরদের পুরস্কৃত করছে এবং আমাদের পকেট থেকে কেটে নিচ্ছে। এ বিষয় শুধু বিএনপি, খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের সমস্যা নয়, এটি পুরো জাতিকে প্রভাবিত করে। আমরা ভোটাধিকারের সংকট, স্বাধীনতা বিপন্ন এবং ভেঙে পড়া অর্থনীতির মুখোমুখি হয়েছি।
খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য অবিচল সংগ্রাম করেও তাকে অন্যায়ভাবে আট বছর কারারুদ্ধ করা হয়েছে। নির্বাচিত হলে দেশ পুনর্গঠনের জন্য আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমাদের নেতা তারেক রহমান এই ৩১ দফার মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন বাংলাদেশের রূপকল্প উপস্থাপন করেছেন।
বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল, তাঁতী দল ও জাসাসের যৌথ উদ্যোগে শোভাযাত্রাটি দুপুর আড়াইটায় শুরু হয়। দেশের ছয়টি জেলা শহরে এই পাঁচ সংগঠনের পরিকল্পিত কর্মসূচির মধ্যে এই শোভাযাত্রাটি প্রথম।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ নেই: কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা
আ.লীগ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সুযোগ নেই: কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’ করার কোনো সুযোগ নেই বলে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসকে জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার কানাডার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানান।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, তারা কানাডার হাইকমিশনারকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছেন। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র, সবার জন্য সমান সুযোগ, মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই।
আরও পড়ুন: সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
বিএনপি নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো কানাডাও বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
খসরু বলেন, ‘মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ভোটাধিকারের প্রতি তাদের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে এবং তাদের নৈতিক ভিত্তি উচ্চতর।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও নির্বাচন নিয়ে কানাডার ‘উদ্বেগ’ রয়েছে। ‘অন্যান্য পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো, এখানে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কি না তা নিয়ে কানাডারও ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের সংসদ ও সরকার নির্বাচন করতে পারবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত কানাডাও।’
তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি। তারা আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জানতে চান। তারা সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও জানতে চেয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: সরকার পতনে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা ফখরুলের
দুপুর ১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুরু হওয়া বৈঠক চলে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে।
বৈঠকে আমির খসরু ছাড়াও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও কানাডিয়ান হাইকমিশনের কর্মকর্তা ব্র্যাডলি কোটস উপস্থিত ছিলেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কানাডিয়ান হাইকমিশন জানিয়েছে, লিলি নিকোলস ও বিএনপি নেতারা ‘বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের গুরুত্ব’সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
হাইকমিশনার বলেন, ‘ কোন দল সরকার গঠন করবে তা নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবেন নাগরিকরা। এটি নির্ধারণের জন্য সুযোগ দরকার। আমরা আশা করি আসন্ন নির্বাচনে মত প্রকাশ, আলোচনা ও সংলাপের বিস্তৃত পরিসর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এভাবে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের ভবিষ্যৎ বেছে নিতে পারবে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্র পুনর্গঠনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার ‘দৃঢ় অঙ্গীকার’ করেছে: আজরা জেয়া
বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া বলেছেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্য মন্ত্রীদের কাছ থেকে ‘দৃঢ় প্রতিশ্রুতি’ পেয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আজরা জেয়া বলেন, ‘একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্ভর করে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচনে বাংলাদেশিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং তাদের দেশের শাসনব্যবস্থার উপর।’
আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, যেখানে সব নাগরিক উন্নতি করতে পারে- এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাবে জরুরি সেবার আহ্বান জানিয়েছে এমএসএফ
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় বাংলাদেশের।
আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈশ্বিক মানবাধিকার নীতির অংশ হিসেবে ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনকে সমর্থন করে। তারা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে সেটি বাস্তবায়নে সহায়তা করতে তাদের ভূমিকা পালন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গঠনমূলক, ফলপ্রসূ ও কার্যকর আলোচনা হয়েছে। আমি বলব গতকাল আমরা বড় বড় রাজনৈতিক সমাবেশ দেখেছি। সেগুলো সহিংসতামুক্ত ছিল।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: আজরা জেয়া
তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা, প্রতিশোধ বা ভয়ভীতি ছাড়াই সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার ক্ষমতা, মানব পাচার প্রতিরোধে সহযোগিতা, মত প্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান বৃদ্ধিতে সুশীল সমাজ যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সিনিয়র এই মার্কিন কূটনীতিক আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্বের গুরুত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং উন্মুক্ত ইন্দো প্যাসিফিকে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থনে এই অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার জন্য তিনি এসেছেন। এটি আরও সহনশীল, সংযুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ।
মিয়ানমারের উপর চাপ বজায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চলমান সংকটের সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর চাপ অব্যাহত রেখেছে তারা। একই সঙ্গে স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি করতে বলা হয়েছে।আর সেটিই হবে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, সুসংগঠিত ও টেকসই পদ্ধতি।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের পাশাপাশি এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা মানবিক সহায়তা থেকে জেন্ডার সমতা ইস্যুতে সমন্বয়সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী এবং ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।
তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্মিত একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস মনে করে, সংগঠনের স্বাধীনতা এবং শ্রম অধিকারসহ মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রসারে সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠকের পর আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া টুইটে লেখেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করি এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করি।’
আন্ডার সেক্রেটারি এবং প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশের উদার আতিথেয়তা এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থনের অব্যাহত প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও আলোচনা করেন।
তিনি আরও লেখেন, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশের ওই অঞ্চলের জনগণকে সহায়তা করতে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি দিতে পেরে গর্বিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্ডার সেক্রেটারি আরও লিখেছেন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশে চলমান সংকট মোকাবিলায় ৭৪ মিলিয়নেরও বেশি সহায়তা দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এবং স্থানীয়দের সহায়তার জন্য ৬১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে। একই সঙ্গে অন্য দাতা ও সম্ভাব্য দাতাদের অব্যাহত সমর্থনের আহ্বান জানান তিনি।
দাতাদের সহায়তা হ্রাস এবং শিবিরের নিরাপত্তাহীনতার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জীবিকার সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য জোরালোভাবে উৎসাহিত করেছে।
পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি।
আরও পড়ুন: শ্রমিক নেতা শহিদুল হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত চায় মার্কিন প্রতিনিধি দল: আইনমন্ত্রী
সরকার পতনে ‘এক দফা’ দাবি ঘোষণা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে এক দফা আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।
এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের পদযাত্রা ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে ফখরুল এ ঘোষণা দেন।
আগামী ১৮ জুলাই এক দফা দাবি আদায়ে সারাদেশের সকল মহানগর ও জেলায় পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে এবং একইদিন ঢাকায় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত একই কর্মসূচি পালিত হবে।
আগামী ১৯ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
বিএনপি ছাড়াও আরও ৩৬টি সমমনা রাজনৈতিক দল নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
সমাবেশে যোগ দিতে বুধবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দলের ডাকে সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় পুলিশের সামনে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী ভিড় করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়াপল্টন এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সমাবেশ স্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢল
সরকার নির্বাচনকে ‘ফ্যাসিজম’ প্রতিষ্ঠার অস্ত্র হিসেবে নিয়েছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার বলেছেন, সরকার নির্বাচনকে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার অস্ত্র হিসেবে নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের একমাত্র লক্ষ্য গণতন্ত্র ও বিরোধী দলগুলোকে ধ্বংস করে একদলীয় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করা। তারা অতীতে এটি করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেই সময়ে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে সফল হতে পারেনি… নির্বাচনকে অস্ত্র হিসেবে নিয়ে এবার তারা ভিন্ন স্টাইলে এই লক্ষ্য অর্জন করছে।’
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও রফিকুল ইসলাম মিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সরকার ‘পেগাসাস’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের স্মার্টফোন হ্যাক করছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দিচ্ছে না বলে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন চাই। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন চাই। কিন্তু আপনারা (সরকার) নিজের স্টাইলে নির্বাচন করছেন এবং ফলাফল আপনাদের পক্ষে নিচ্ছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন যে তারা এখনো রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চান এবং আশা করেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজনের জনগণের দাবি মেনে নিয়ে দেশকে বাঁচাতে সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। তারা মনে করেন এবং দেশের জনগণ বিশ্বাস করে যে নির্বাচনের মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান হবে।
তিনি বলেন যে তাদের দল ও জোটের শরিকরা তাদের বর্তমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে। যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল দল আগামী ১২ জুলাই (বুধবার) নিজ নিজ অবস্থান থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নতুন যাত্রা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: শিগগিরই ৩৬টি দল একসঙ্গে সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে: বুলু
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন যে বর্তমান 'অবৈধ' সরকার অত্যন্ত সচেতনভাবে দমনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, ‘মোশাররফ, রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভীসহ দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা এখন অসুস্থ। কিন্তু আমরা কাজ করছি, আন্দোলন করছি এবং মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য এই অসুস্থ অবস্থাকে নিরাময় করা এবং জাতিকে অসুস্থতা থেকে মুক্ত করা।’
আরও পড়ুন: বিএনপির বুধবারের সমাবেশ থেকে বড় প্রত্যাশা ফখরুলের
শিগগিরই ৩৬টি দল একসঙ্গে সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে: বুলু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, শিগগিরই ৩৬টি রাজনৈতিক দল একসঙ্গে সরকার পতনের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে হটাতে হলে সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে। এখন বাংলাদেশের মানুষের একটাই দাবি যে শেখ হাসিনা কখন গদি ছাড়বে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে তো সংলাপে ডাকা হয়নি: তথ্যমন্ত্রী
শনিবার (৮ জুলাই) বিকালে চট্টগ্রামের নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের মাঠে আগামী ১৬ জুলাই কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের মহাসমাবেশ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের প্রস্তূতিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকে বিদেশি গণতান্ত্রিক দেশগুলো একটি কথাই বলছে, বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক সরকার নেই। বাংলাদেশে অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। একে সরাতে হবে। চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে সকল মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তাই সে ঘোষণা আসার পর আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনাকে বিদায় করবো। এছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
এছাড়াও বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহ শ্রমিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: গোপনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি: সালমান এফ রহমান
নাটোর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ
সরকার ‘পেগাসাস’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের স্মার্টফোন হ্যাক করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার বিরোধীদের দমন করতে ‘পেগাসাস’ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের স্মার্টফোন হ্যাক করছে।
শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে এবং বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়াই পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণরূপে বিরাজনীতিকরণের চেষ্টার অভিযোগও করেন।
বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনার পকেটে থাকা টেলিফোন (সেলফোন) এখন আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু।’
তিনি অভিযোগ করেন যে সরকার পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করেছে, কারণ এই প্রযুক্তি সরকারকে সেলফোনের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির টেলিফোনিক কথোপকথন, এসএমএস এবং অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করতে সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলনের সফলতা নিয়ে আশাবাদী ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘তারা এখন বিরোধী দলকে দমন করতে এবং ভিন্নমত দূর করতে বিরোধী দলের নেতাদের টেলিফোন হ্যাক করছে। এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে ঘটতে পারে না...আমার গোপনীয়তা, রাজনীতি ও গণতন্ত্র আমার অধিকার। গণতন্ত্র অনুযায়ী সরকার চাইলেই আমার সব অধিকার কেড়ে নিতে পারে না।’
ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার বিরোধী দলকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে অতীতের মতো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে তাদের নানা চক্রান্ত বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
প্লটের অংশ হিসেবে বিএনপি নেতা বলেন, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৩ সাল থেকে দায়ের করা রাজনৈতিক মামলাগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে এবং দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বিচারকদের চিঠি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দেশকে সম্পূর্ণরূপে বিরাজনীতিকরণ এবং বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়াই একটি একতরফা নির্বাচন করার লক্ষ্য প্রকাশিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনে গিয়ে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে না।’
আরও পড়ুন: ভোটচোরের নেতৃত্বে বাংলাদেশে আর কোনো ভোট হবে না: শিমুল বিশ্বাস
বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দলের কাছে দেশকে ইজারা দেয়নি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতার কোনো মানে নেই, কারণ এটা আবারও জনগণকে বোকা বানাবে। ‘গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী কিছু আলোচনা হতে পারে, কিন্তু সরকার গণতন্ত্র ও অন্যের অধিকারে বিশ্বাস করে না বলে আমরা কার সঙ্গে আলোচনা করব।’
ফখরুল বলেন, তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে বিশ্বাস করে ২০১৮ সালে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, কিন্তু জনগণের সামনে তাদের বোকা বানানো হয়েছে। ‘সুতরাং, এটা নিয়ে কোনো প্রশ্নই আসে না (আ.লীগের সঙ্গে আলোচনা)।’
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মেনে ক্ষমতা ছাড়ার আগ পর্যন্ত সংলাপ নয়: ফখরুল
তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দিতে এবং বিরোধী দলের নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য করে ফেলার চেষ্টা করছে। ‘তবে জনগণ এবার জেগে উঠেছে এবং তারা সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে আসছে।’
তিনি বলেন, অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এখন এক বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ যে আগামী নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে এবং বর্তমান সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। ‘এই শাসন ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে অবৈধ এবং এর অধীনে আরেকটি নির্বাচন করে জনগণের আশা, আকাঙ্খা ও স্বপ্ন ধ্বংস করার কোনো অধিকার নেই।’
রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন।
সরকার বছরে ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীপ্রতি ৫.৩৪ লাখ টাকা খরচ করে: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বৃহস্পতিবার বলেছেন, সরকার প্রতিবছর ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীপ্রতি ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয় করে।
সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে ক্যাডেট কলেজগুলোর জন্য সরকারি বরাদ্দ ছিল ১৯৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বর্তমানে, ৩ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করে। সে অনুযায়ী ক্যাডেট কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু বার্ষিক সরকারি ব্যয় ৫ লাখ ৩৪ হাজার ০৪৩ টাকা।
মন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয়ের বরাদ্দ সমন্বিতভাবে করা হয়, তাই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাব্যয় আলাদাভাবে দেখানো হয় না।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬-১২ শ্রেণিতে ভর্তি বেড়েছে ৫২.৫%: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীপ্রতি সরকারের বার্ষিক ব্যয় ৫০ হাজার ৫১২ টাকা।
২০২১-২২ অর্থবছরে, এই পর্যায়ের ৩৩ লাখ ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ১৬ কোটি ১৬৭ লাখ টাকা।
মাধ্যমিক-পরবর্তী স্তরের ৩ লাখ ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে সরকারি বরাদ্দ ৭০৭ কোটি টাকা। প্রতি শিক্ষার্থীর বার্ষিক খরচ ২০ হাজার ৪৮৯ টাকা।
তৃতীয় পর্যায়ে, ৩৮ লাখ ১২ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে বরাদ্দ ছিল ৭ কোটি ৮০৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে শিক্ষার্থীপ্রতি সরকারের বার্ষিক ব্যয় ২০ হাজার ৪৭৮ টাকা।
মন্ত্রী বলেন, বাজেট ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও গতিশীলতা এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় সুশাসন, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির কারণে সরকারি, বেসরকারি ও ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মাথাপিছু আয়ের ব্যবধান ক্রমশ কমছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার মূল কারিগর: শিক্ষামন্ত্রী
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রধান হাতিয়ার শিক্ষা: মন্ত্রী