সরকার
নির্বাচনে কারচুপি করতে সরকার এজেন্সিগুলো ব্যবহার করে কিংস পার্টি গঠন করছে: রিজভী
বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকার বিভিন্ন এজেন্সি ব্যবহার করে বিভিন্ন ভিত্তিহীন ও তথাকথিত কিংস পার্টি গঠন করছে এবং আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের নামে প্রহসন করার জন্য বিভিন্ন দলের লোক নিয়োগ করছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, কিছু লোক সামান্য অর্থ ও বিভিন্ন সুবিধার লোভে প্রহসনমূলক নির্বাচনে অংশ নিতে আত্মা বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ মাফিয়া গোষ্ঠীর এই নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখ্যান করায় ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা এখন তথাকথিত কিংস পার্টি তৈরি করে নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।’
সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা তার বিভিন্ন সংস্থাকে মাঠে নামিয়েছেন তথাকথিত কিংস পার্টি গঠনের জন্য। বিভিন্ন দলের নেতাদের ভাড়া করতে গরুর হাটের মতো দর কষাকষি চলছে। অনেক দেশপ্রেমিক নেতাকে আওয়ামী লীগের কিংস পার্টিতে যোগদানের জন্য চাপ ও ভয় দেখানো হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, লুটপাটের টাকার ভাগ পাওয়ার অঙ্গীকারে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছেড়ে কিছু মানুষ তথাকথিত কিংস পার্টিতে যোগ দিয়ে বঙ্গভবন ও গণভবনে যাচ্ছে।
কোনো দল বা ব্যক্তির নাম সরাসরি উল্লেখ না করে রিজভী বলেন, বিশ্বাসঘাতকদের ইতিহাসের ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হবে। ‘এই রঙ পরিবর্তনকারী পরজীবী রাজনীতিবিদরা জনগণের সংকেত টের পাচ্ছেন না।’
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে তল্লাশি চালিয়েছে, গ্রেপ্তার করছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা হেলমেট পরা আন্দোলনে সক্রিয় থাকা নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী আরও বলেন, সরকারের নির্দেশে বিচার বিভাগ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘মিথ্যা ও কাল্পনিক’ মামলায় সাজা দিচ্ছে।
বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির অন্তত ৫১৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
নির্বাচনে আসার জন্য সরকার কাউকে চাপ সৃষ্টি করছে না: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, নির্বাচনে আসার জন্য সরকার কাউকে চাপ সৃষ্টি করছে না।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা আজ আরেকটি জোট করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখানে আরও অনেক বিএনপির সাবেক নেতাকে আমরা দেখছি, বিভিন্ন দলে তারা আসছেন।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘সাংবাদিকতার অ আ ক খ’- বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে বসে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশে মামলা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে চাপ সৃষ্টি করে তাদের নির্বাচনে আনা হচ্ছে, নাকি তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চাপ সৃষ্টি করলে তো বিএনপির আরও অনেক নেতা চলে আসতেন। আমরা কাউকে চাপ সৃষ্টি করছি না। বিএনপির এ অপরাজনীতির সঙ্গে তারা দ্বিমত পোষণ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতির সহযাত্রী হতে চান না বিধায় বা এ জ্বালাও-পোড়াওয়ের বদনামটা তাদের ঘাড়ে যাতে না পড়ে, সেজন্য এবং দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্যই তারা বেরিয়ে এসে নতুন জোট করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বলে আমি মনে করি।’
গতকাল একটি ব্রিফিংয়ে এসেছে, গাড়িতে যারা আগুন দিচ্ছে তাদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে এবং এই ফুটেজ তাদের নেতা-নেত্রীদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে।
এই অর্থায়ন কারা করছে এবং কারা এই নেতা নেত্রী- জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের ধরা হয়েছে এবং যারা এই জবানবন্দি দিয়েছে প্রত্যেকেই বিএনপির নেতা। একজন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতিও আছেন সেখানে।’
তিনি বলেন, ‘এটি কী জঘন্য, ন্যাক্কারজনক, ঘৃণ্য যে- গাড়িতে আগুন দিলে, যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিলে ১০ হাজার টাকা পেমেন্ট দেওয়া হয়। সেটা নিশ্চিত করার জন্য ভিডিও ধারণ করে সেটি আবার লন্ডনে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে, তারপর এখানে ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছে পাঠাতে হয়।’
এটি কি কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ? এমন প্রশ্ন রেখে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো তো জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের কাজ। জঙ্গি সংগঠনও তো এরকম কাজ করে না। তাদের রাজনৈতিক দল বলা হয় বাংলাদেশে। তাদের সঙ্গে আলোচনার কথাও কেউ কেউ বলে। এখন অবশ্য বলে না আর। এই অপরাজনীতি যারা করে তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী আমেজে ঢাকা পড়ে গেছে বিএনপির বর্জনের ডাক: তথ্যমন্ত্রী
যাত্রাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাসের হেলপার নিহত
শ্রম অধিকার রক্ষায় সরকার ও শ্রমিকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে যুক্ত তা তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী: মুখপাত্র মিলার
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবে। যাতে তারা ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করতে বাংলাদেশিদের সুবিধার্থে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাতে পারে।
ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ২০ নভেম্বর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট কোনো দলের পক্ষে অবস্থান নেই না। আমরা তাই চাই যা বাংলাদেশের জনগণ চায়, আর তা হলো- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবারও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন এবং পুনরায় বলেন- তিনি তা থেকে বিরত থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বারবার আমাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টার প্রশংসা করি, তবে আমি তা করা থেকে বিরত থাকব এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে বলছি- বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য আমাদের লক্ষ্য সর্বদা যা ছিল তাই থাকবে, আর তা হলো: অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ আয়োজন।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র
মিলার আরও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকার রক্ষা ও প্রচারের জন্য বিশ্বজুড়ে সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে কীভাবে জড়িত তার রূপরেখা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে এটি চালিয়ে যাব।’
মিলার বলেন, ‘ন্যূনতম মজুরির প্রতিবাদে বাংলাদেশে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সহিংসতার পাশাপাশি বৈধ শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রমকে অপরাধীকরণের নিন্দা জানাই।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, বাংলাদেশ কর্মকর্তা ও স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে: মুখপাত্র
তিনি বলেন, শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ওপর চলমান দমন-পীড়ন নিয়েও তারা 'উদ্বিগ্ন'।
মিলার বলেন, ‘আমাদের নীতি, যেমনটি আমরা আগেই বলেছি, সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে শ্রমিকরা সহিংসতা, প্রতিশোধ বা ভীতি প্রদর্শনের ভয় ছাড়াই সংগঠন এবং সম্মিলিত দরকষাকষির স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে তাদের কাজের মাধ্যমে তারা মৌলিক মানবাধিকারগুলো কে এগিয়ে নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কোনো সহিংসতা 'অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে' নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র প্যাটেল
ভোটের মধ্যে দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল সবসময় ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পক্ষে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই জনগণের ভোটাধিকার অব্যাহত থাকুক। আর ভোটের মধ্যে দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে।’
শনিবার রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য যারা অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে দেশের মানুষকে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি।’
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
যেসব রাজনৈতিক দল ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘যেসব রাজনৈতিক দলের জনগণের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস নেই এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে সুসংগঠিত নয়, তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, নির্বাচন বানচাল একটি দেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তিনি প্রশ্ন করেন, ‘২০১৩ এবং ২০১৪ সালে আমরা অগ্নিসন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করেছি, যার ফলে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
শেখ হাসিনা অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে যারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে তাদের সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য তিনি জনগণের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জনগণকে নির্যাতন করে আনন্দ পায়।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা সংশ্লিষ্টদের জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না।
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রাখে, তাহলে এর ফলাফল তাদের কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। নির্বাচনে তাদের কাঙ্খিত প্রার্থীকে ভোট দেওয়া ও নির্বাচন করা জনগণের অধিকার।’
আরও পড়ুন: আজ আ. লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের জনগণ তাদের শাস্তি দেবে, উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাব যে, বেশ সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করা গণতান্ত্রিক মূল্যকে কেউ যেন থামাতে না পারে।’
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, যারা মনোনয়ন ফরম নিচ্ছেন তারা সবাই যোগ্য, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের কাজ হচ্ছে আগামী নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই করা। প্রার্থী বাছাইয়ের আগে আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকেও মতামত নেব।’
এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রির বুথ পরিদর্শন করেন।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রির জন্য ৮টি বিভাগের জন্য ১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা শনিবার (১৮ নভেম্বর) থেকে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রশাসনিক বিভাগ অনুযায়ী নির্দিষ্ট বুথ থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। এদিকে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: অনলাইনে পাওয়া যাবে আ. লীগের মনোনয়ন ফরম
সরকার নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না, রুটিন কাজ করবে: আইনমন্ত্রী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বর্তমান সরকার রুটিন কাজ চালিয়ে যাবে, কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
আইনমন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু গতকাল তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী কাজ-কর্ম নির্বাচন কমিশন দায়িত্বশীলভাবে করবে। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী কাজে যেসব সরকারি বিভাগ, সংস্থা বা অফিস তাদের প্রয়োজন হবে এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে না সেই সব কাজ করবে বর্তমান সরকার। এ সরকার রুটিন কাজগুলো করে যাবে। এটাই গণতন্ত্রের মূল বক্তব্য যখন নির্বাচন আসে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এখন থেকে রুটিন কাজ করে যাবে। পলিসি ডিসিশন (নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত) নেওয়া হবে না, কারণ একটা নির্বাচন আছে। জনগণের কাছে আমাদের ম্যান্ডেট দেব। পলিসি ডিসিশন হবে না নির্বাচন পর্যন্ত রুটিন কাজ করে যাবেন।'
আরও পড়ুন: যা কিছু হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যেই হতে হবে: আইনমন্ত্রী
সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে গণতন্ত্রকে সঠিকভাবে চালিত করার জন্য নির্বাচনকালীন যে সরকার থাকে তারা পলিসি ডিসিশন নেয় না, যাতে একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে। তারা এমন কিছু করে না, যেটাতে সরকারকে জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য, আকৃষ্ট করার জন্য কিছু করছে, এরকম একটা ব্যাপার হয়।'
আইনমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ঠিক গণতান্ত্রিক উপায়ে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে শিডিউল ঘোষণার পর যেভাবে সরকার চালিত হবে, ঠিক সেভাবেই হবে'
এই মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা থাকবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেই সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর।'
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আইন তো হবেই না, কারণ সংসদ বসবে না। কিন্তু এমন কথা আমি বলতে পারি না... এটা একটা স্বাধীন দেশ। যদি প্রয়োজন হয় অর্থাৎ অধ্যাদেশ দিয়ে আইন জারি করতে হবে কোনো বিশেষ প্রয়োজনে, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো পরিস্থিতিতে। আইন হবে না এমন কথা তো আমি বলতে পারি না।'
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন,'রুটিন কাজ হচ্ছে গতানুগতিক অফিস চলার জন্য যে কাজ সেগুলো। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বেতন পাওয়ার বিষয়, দৈনন্দিন কার্যক্রম- এসব কাজ বর্তমান সরকার করবে। উন্নয়ন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলবে। নতুন করে কোনো উন্নয়ন কাজ শুরু হবে না। নতুন করে কোনো প্রজেক্টও নেওয়া হবে না।'
কর্মকর্তাদের বদলি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'সেটা নির্বাচন কমিশন নেবে কি না সেটাও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। সেটা আমি বলে দিতে পারব না।'
আনিসুল হক বলেন, 'পুলিশের ব্যাপারে যদি নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য থাকে। সেটা নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবে। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, সেটা যদি যৌক্তিক হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটার ব্যবস্থা নেবে।'
পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে ইসির এখতিয়ার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, 'আইনের আওতায় বলতে হবে সবকিছুই।'
আরও পড়ুন: বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক, বেআইনি: জাতিসংঘকে আইনমন্ত্রী
পিটার হাসকে হুমকির বিষয়ে সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে: মার্কিন দূতাবাস
কূটনৈতিক কর্মীদের ওপর সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি অগ্রহণযোগ্য এবং গভীর উদ্বেগজনক বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানায়।
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন আইবেলি বলেন, 'রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে উদ্দেশ্য করে হুমকিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’
আরও পড়ুন: ৩ প্রধান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একসঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ পিটার হাসের
দূতাবাসের মুখপাত্র আরও বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় মার্কিন কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: পিটার হাসকে হত্যার হুমকি: ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানিয়েছেন, বিরোধী দল বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনি’।
বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর)-এ অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী ২৮-২৯ অক্টোবর বিএনপির সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরেন।
একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা ছাড়াও তারা প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা চালায় এবং পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বিচারে কোনো গ্রেপ্তার করা হয়নি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেশের আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় (বাংলাদেশ সময়) শুরু হওয়া পর্যালোচনা বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার দ্রুত গতিতে করা হবে: আইনমন্ত্রী
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমানসহ অন্যরা অংশ নিচ্ছেন।
ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, মোট ১১১টি দেশ বৈঠকে যোগ দিয়েছে এবং ৯০ শতাংশ দেশ মানবাধিকার ফ্রন্টে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে।
তিনি বলেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশগুলোও বাংলাদেশের সমালোচনা করেনি, বরং তারা কিছু গঠনমূলক সুপারিশ নিয়ে এসেছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ মানবাধিকার সংক্রান্ত সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো দেশ রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়টি তুলেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংলাপের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
আইনমন্ত্রী বলেন, পরশু জানতে পারবেন বাংলাদেশ কতগুলো সুপারিশ পেয়েছে।
বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানাবে যে তারা কোন কোন সুপারিশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া ব্রিফিংয়ে যোগ দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা ইউপিআরের আগে সব অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা আজ এটি দেখেছেন ও শুনেছেন। এবং আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে ইউপিআর একটি সুন্দর প্রক্রিয়া, যা প্রতিটি দেশকে একই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে নিয়ে আসে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকালের তুলনায় আগামীকাল বাংলাদেশকে আরও ভালো অবস্থানে দেখাই তাদের লক্ষ্য। ‘এটাই স্পিরিট। আমরা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছি।’
পর্যালোচনা সভায় আইনমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, সরকার যে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি বজায় রেখেছে এবং বিরোধী দলগুলোকে রাজনৈতিক স্থান দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।
তিনি রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একা মিয়ানমারের চাপিয়ে দেওয়া সংকট সমাধান করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ইসির তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের ধারাবাহিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে নির্বাচনী এলাকা সীমাবদ্ধকরণ আইন-২০২১, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ আইন-২০২২ এবং সংসদ নির্বাচন (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) বিধিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছিল এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধি-২০১৮ সাল থেকে সংশোধন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)ও নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নিয়োগ আইন ২০২২ একটি নিরপেক্ষ ও সক্ষম ইসি নিশ্চিত করে এবং এটি দেশের পাশাপাশি উপমহাদেশে এই ধরনের প্রথম আইন।
বাংলাদেশের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউপিআরগুলো হয়েছিল যথাক্রমে ফেব্রুয়ারি ২০০৯, এপ্রিল ২০১৩ ও মে ২০১৮ সালে।
তার পেশ করা জাতীয় প্রতিবেদনে, বাংলাদেশ বলেছে এটি মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য তার প্রতিষ্ঠান এবং পদক্ষেপগুলোকে শক্তিশালী করতে থাকবে।
ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপে মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৭টি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে। তবে, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিটি দেশ পর্যালোচনায় অংশ নিতে পারে।
যে নথিগুলোর উপর ভিত্তি করে পর্যালোচনাগুলো করা হয় তা হলো:
১) জাতীয় প্রতিবেদন - পর্যালোচনাধীন রাষ্ট্র প্রদত্ত তথ্য
২) স্বাধীন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ এবং গোষ্ঠীর প্রতিবেদনে থাকা তথ্য, বিশেষ প্রক্রিয়া, মানবাধিকার চুক্তি সংস্থা ও জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা হিসেবে পরিচিত
৩) জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল অনুসারে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা, আঞ্চলিক সংস্থা এবং সুশীল সমাজের গোষ্ঠীগুলোসহ অন্যান্য অংশীজনদের দ্বারা প্রদত্ত তথ্য।
ইউপিআর হলো ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রের মানবাধিকার রেকর্ডের সমকক্ষ পর্যালোচনা।
২০০৮ সালের এপ্রিলে এর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সবকটিকে নিয়ে তিনবার পর্যালোচনা করা হয়েছে।
ইউপিআর মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি অনন্য প্রক্রিয়া। যা জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রকে প্রতি সাড়ে ৪ বছরে তার মানবাধিকার রেকর্ডগুলো সমকক্ষ পর্যালোচনা করার আহ্বান জানায়।
২০০৬ সালের মার্চ মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬০/২৫১ রেজোলিউশনে প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) প্রতিটি দেশে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাকে সমুন্নত, সমর্থন ও প্রসারিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দেয়নি মার্কিন প্রতিনিধিদল, শুধু জানতে চেয়েছে: আইনমন্ত্রী
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক, বেআইনি: জাতিসংঘকে আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে জানিয়েছেন, বিরোধী দল বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি ‘সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনি’।
বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর)-এ অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী ২৮-২৯ অক্টোবর বিএনপির সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরেন।
একজন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা ছাড়াও তারা প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলা চালায় এবং পুলিশ ফাঁড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বিচারে কোনো গ্রেপ্তার করা হয়নি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেশের আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় (বাংলাদেশ সময়) শুরু হওয়া পর্যালোচনা বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইনমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমানসহ অন্যরা অংশ নিচ্ছেন।
আইনমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, সরকার যেকোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি বজায় রেখেছে এবং বিরোধী দলগুলোকে দেওয়া রাজনৈতিক স্থান তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ সদস্য হত্যার বিচার দ্রুত গতিতে করা হবে: আইনমন্ত্রী
তিনি রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একা মিয়ানমারের চাপিয়ে দেওয়া সংকট সমাধান করতে পারবে না।
আইনমন্ত্রী বাংলাদেশের ধারাবাহিক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে নির্বাচনী এলাকা সীমাবদ্ধকরণ আইন-২০২১, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ আইন-২০২২ এবং সংসদ নির্বাচন (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) বিধিমালা-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছিল এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণ বিধিমালা-২০০৮ এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধি-২০১৮ সাল থেকে সংশোধন করা হয়েছিল।
বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ঘোষণা বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
একদিন বিরতির পর বুধবার থেকে সারাদেশে ফের ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ ঘোষণা করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে দফায় দফায় অবরোধ দিচ্ছে বিএনপি।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, অন্যান্য বিরোধী দল; যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে, তারাও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করছে।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানান রিজভী।
এটি হবে বিরোধী দলগুলোর অবরোধ কর্মসূচির পঞ্চম ধাপ।
আরও পড়ুন: অবরোধ: সারাদেশে ১৮৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা চতুর্থ ধাপের দ্বিতীয় দিনের অবরোধ চলছে
একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে স্থানান্তরের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকার তৈরি পোশাক খাতকে ধ্বংস করছে।
রবিববার (১২ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ ছাড়া ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি পোশাক শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শিথিল করা এবং চার শ্রমিককে হত্যা করার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
তিনি বলেন, ‘সরকার অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় খাত গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) ১৯৭৪ সালের মতো আবারও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চান এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চান।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকারের প্ররোচনায় মালিকরা শনিবার ১৫০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যে পুলিশ তৈরি পোশাক শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছে তারা ১১ হাজার তৈরি পোশাক শ্রমিককে আসামি করে মামলা করেছে।
রিজভী বলেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক ব্যবসা অন্য দেশে স্থানান্তর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চান।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে শুধু বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই নয়, পেশাদার গার্মেন্টস শ্রমিকরাও নিরাপদ নয়। এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে চারজন গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত হয়েছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন দমনে সরকার আবারও সাদা পোশাকে পুলিশ ব্যবহার করে গুম করতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা কালো গ্লাসে ঢেকে মাইক্রোবাসে করে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে তুলে নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না। তারা র্যাব-পুলিশের নামে গণতান্ত্রিক শক্তির বাবা-মা, ছেলে, সন্তান, ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনদের তুলে নিয়ে গুম করছে।’
ভোটের অধিকার ফিরে পেতে যারা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করছে তাদের বিরোধী না হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ৩৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১০ হাজার ৭৭০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী