ভারত
ভারতের সিকিমে আকস্মিক বন্যায় নিহত ১৪, নিখোঁজ শতাধিক
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য সিকিমের বেশ কয়েকটি শহরে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ নিখোঁজ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সিকিম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবারের বন্যার পরে দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাজ্য কর্তৃপক্ষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের জন্য ২৬টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে।
বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানিয়েছে, ১০২ জন নিখোঁজ রয়েছে।
রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, বন্যায় ১৪ জন মারা গেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিখোঁজদের মধ্যে ২২ জন সেনা সদস্য রয়েছে। বন্যার কারণে কিছু সেনা ক্যাম্প ও যানবাহন কাদায় তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবার নিখোঁজ হওয়া এক সেনা সদস্যকে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করেছে।
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ১১টি সেতু বন্যার পানিতে ভেসে গেছে এবং চারটি জেলার ২৭০টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের শিমলায় ভূমিধসে ২১ জনের মৃত্যু: মুখ্যমন্ত্রী সুখু
সিকিম রাজ্যের লাচেন উপত্যকায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং একটি বাঁধের কিছু অংশ ভেসে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে।
রাজ্যের শিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, তিস্তার পাড়ের ডিকচু ও রংপোসহ বেশ কয়েকটি শহর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং রবিবার পর্যন্ত চারটি জেলার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের রাজধানী সিকিমের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযোগকারী একটি মহাসড়কের কিছু অংশ ভেসে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্যার পরে সরকার রাজ্য কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবে।
আকস্মিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই অঞ্চলে বন্যা ও ভূমিধস হতে পারে, যা হাজার হাজার মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। রাজ্যের ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এক ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
নিকটবর্তী হিমাচল প্রদেশে গত আগস্টে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
জুলাই মাসে রেকর্ড বৃষ্টিতে উত্তর ভারতে জলাবদ্ধ ও বাড়িঘর ধসে পড়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।
জুন-সেপ্টেম্বরে বর্ষা মৌসুমে ভারতের হিমালয় অঞ্চলে ভূমিধস ও বন্যায় প্রায়ই প্রাণহানি ঘটে।
আরও পড়ুন: ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসে ৫ তীর্থযাত্রী নিহত
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কারণে এ অঞ্চলে আরও ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে।
বুধবারের আকস্মিক বন্যার বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্টের জলবায়ু বিজ্ঞানী জ্যাকব স্টেইনার বলেছেন, ‘এটি দুঃখজনকভাবে সত্যি যে অনিবার্যভাবে এ ধরনের দুর্যোগ বাড়তেই থাকবে।’
এই বছরের শুরুতে স্টেইনারের সংস্থা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তবে হিমালয়ের হিমবাহগুলোর আয়তন ৮০ শতাংশ কমতে পারে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ২০০ মানুষ মারা যায় এবং বিপুল সংখ্যক ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে যায়।
আরও পড়ুন: ভারতে সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত ক্রেন ধসে ১৬ শ্রমিক নিহত
ভারত থেকে বেনাপোলে এল ৫০ হাজার ২৮০ ব্যাগ স্যালাইন
ভারত থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার ২৮০ ব্যাগ স্যালাইন মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছেছে।
এ নিয়ে ছয়টি চালানে ঢাকার জাস করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১ লাখ ৭৩ হাজার ব্যাগ স্যালাইন আমদানি করেছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ডিএনএস স্যালাইন সংকট, বিপাকে রোগীরা
এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে স্যালাইন আমদানির কথা জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জানা গেছে, স্যালাইন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের জেনটেক্স ফার্মাসিটিক্যাল। আমদানি করা প্রতি ব্যাগ স্যালাইনের কেনা দাম পড়েছে ৬১ টাকা ৩৫ পয়সা। এভাবে প্রথম দফায় পর্যায়ক্রমে ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন ভারত থেকে আমদানি করা হবে।
আমদানিকারকের প্রতিনিধি জানান, বর্তমান সংকটের মুহূর্তে আমদানি করা স্যালাইন বড় ভূমিকা রাখবে ও কম মূল্যে মানুষ কিনতে পারবে।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ভারত থেকে আমদানি করা স্যালাইন বন্দর থেকে দ্রুত ছাড়করণে সহযোগিতা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন সংগ্রহ করবে সরকার
খুলনায় আইভি স্যালাইন স্বল্পতায় ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত
সাইবার নিরাপত্তায় বাংলাদেশ-ভারত একসঙ্গে কাজ করবে: পলক
সাইবার নিরাপত্তা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, সাইবার জগৎকে নিরাপদ রাখতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে। আমরা যেভাবে পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশ থেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূল করেছি তেমনি সাইবার হামলা ও হুমকি মোকাবিলা করে সাইবার জগৎকে নিরাপদ রাখব।
আরও পড়ুন: জি-২০ সম্মেলনে পারস্পরিক সহযোগিতার আহ্বান পলকের
বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও ভারতের সহযোগিতামূলক যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ‘সাইবার-মৈত্রী ২০২৩’র সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ কর্মসূচির আওতায় তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
পলক বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র যদি শক্তিশালী হয় এবং সেই রাষ্ট্র যদি পাশে থাকে তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারত যখন একসঙ্গে শত্রুর মোকাবিলা করে তখন লড়াইটা অনেক সহজ হয়।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে যুদ্ধ করেছে। কোভিড-১৯ মহামারি একসোঙ্গে মোকাবিলা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণেও দুদেশ একসঙ্গে কাজ করেছে। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ ভিশন বাস্তবায়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।
ভারতের সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমকে (সিইআরটি) পাশে পেয়ে সাইবার হামলা মোকেবিলা ও অপরাধ দমনে আমরা অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী বলেও তিনি জানান।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আন্তঃসংযুক্তির বিশ্বে প্রযুক্তি রৈখিক গতির পরিবর্তে সূচকীয় গতিতে অগ্রসর হচ্ছে এবং তা আমাদের জন্য বিশাল সম্ভাবনা ও সুযোগ তৈরি করছে। এর পাশাপাশি সাইবার জগতের কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এমন বাস্তবতায় সাইবার হামলা ও হুমকি মোকাবিলায় সাইবার মৈত্রীর মতো আরও উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি তিন দিন ধরে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের নিষ্ঠার সঙ্গে প্রশিক্ষণ গ্রহণের প্রশংসা করে বলেন, আপনাদের প্রতিশ্রুতি ও প্রচেষ্টায় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় ভালো অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: রোবট এখন আর বিলাসী নয়, প্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে: প্রতিমন্ত্রী পলক
যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ পলকের
৪০ জনেরও বেশি কানাডীয় কূটনৈতিককে প্রত্যাহার করতে বলেছে ভারত
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, কানাডাকে তার ৪০ জনেরও বেশি কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে বলেছে ভারত সরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি প্রত্যাহারের জন্য ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে কানাডার ৬২ জন কূটনীতিক রয়েছে এবং এর আগেও নয়াদিল্লি বলেছিল মোট সংখ্যা কমিয়ে ৪১ জনে নামানো উচিত।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা: ট্রুডো
কানাডার মাটিতে একজন খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার বিষয়ে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে অটোয়ার অভিযোগের পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত কানাডাকে তার দেশে কূটনৈতিক উপস্থিতি কমাতে বলেছিল।
যদিও ভারত এই দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর সম্প্রতি বলেছেন, কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে ‘হিংসার পরিবেশ’ এবং ‘ভীতি প্রদর্শনের পরিবেশ’ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
ভারতে ছুটি থাকায় একদিন পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি পুনরায় শুরু
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর একদিন বন্ধ থাকার পর ফের বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়ছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে আমদানি বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক দেশে প্রবেশ করতে শুরু করে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, সোমবার ভারতে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিবস ও বিশ্ব অহিংসা দিবস উদযাপিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে সেখানে সোমবার সরকারি ছুটি থাকায় ভারতের ব্যবসায়ীরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে এই দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে দিকে এই কার্যক্রম শুরু হয়।
আরও পড়ুন: ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের সহ-ব্যবস্থাপক এসএম হায়দার জানান, মঙ্গলবার থেকে আবারও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাক বন্দরের পানামা পোর্টে প্রবেশ করছে। সোমবার এই কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
আরও পড়ুন: জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
দেশে ৫.৪ মাত্রার ভূমিকম্প
সোমবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) অনুসারে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভারতের আসামের গোয়ালপাড়া থেকে ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে, ১০ কিলোমিটার গভীরে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভারত ও বাংলাদেশের পাশাপাশি ভুটানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের শীর্ষ ১০ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ
ঢাকায় ৪.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
১২ দিনের মাথায় সিলেটে আবারও ভূমিকম্প
দিল্লিতে 'কূটনৈতিক সহায়তার অভাবে' আফগান দূতাবাস বন্ধ
আফগান দূতাবাস জানিয়েছে, ভারতে কূটনৈতিক সমর্থনের অভাব এবং কাবুলে একটি স্বীকৃত সরকারের অনুপস্থিতির কারণে রবিবার থেকে নয়া দিল্লিতে এটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়, তবে আফগান নাগরিকদের জরুরি কনস্যুলার সেবা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের জন্য উপলব্ধ কর্মী এবং সংস্থান উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, এতে কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।’
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলকারী তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। দুই বছর আগে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগে কাবুল থেকে তাদের নিজস্ব কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সেখানে এখন আর কূটনৈতিক উপস্থিতি নেই।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৬ জন আহত
নয়া দিল্লিতে আফগান দূতাবাসটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পূর্ববর্তী সরকারের নিযুক্ত কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি, তবে গত সপ্তাহে এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, আফগান রাষ্ট্রদূত বেশ কয়েক মাস আগে ভারত ত্যাগ করেছেন এবং অন্যান্য আফগান কূটনীতিকরা আশ্রয় পাওয়ার পরে তৃতীয় কোনো দেশে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
ভারত বলেছে, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা জাতিসংঘের নেতৃত্ব অনুসরণ করবে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভয়াবহ পঙ্গপালের বিষয়ে সতর্কতা জারি জাতিসংঘের
আফগান দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা ভারত সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চেয়েছিল যাতে ভারতে বসবাসকারী, কাজ করা, পড়াশোনা করা ও ব্যবসা করা আফগানদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতে নিবন্ধিত প্রায় ৪০ হাজার শরণার্থীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই আফগান। তবে এই পরিসংখ্যানে যারা জাতিসংঘে নিবন্ধিত নন তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর ভারত আফগানিস্তানে গম, ওষুধ, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং শীতবস্ত্রসহ ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছিল।
গত বছরের জুনে কাবুলে তাদের দূতাবাসে কর্মকর্তাদের একটি দল পাঠিয়েছিল ভারত।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা বন্ধে বিশ্ব নীরব: প্রধানমন্ত্রী
২০২২ সালে ভারতে বিদেশি পর্যটক আগমনের শীর্ষ তিন উৎস দেশ যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ
২০২২ সালে ভারতে বিদেশি পর্যটক আগমনের(এফটিএএস) শীর্ষ উৎস দেশের তালিকায় উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ।
বিশ্ব পর্যটন দিবসে ভারতীয় পর্যটন মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে পিটিআই।
এতে বলা হয়েছে, ভারতে ২০২২ সালে ৬ দশমিক ১৯ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটকের আগমন নথিভূক্ত করেছে, যা ২০২১ সালে ছিল ১ দশমিক ৫২ মিলিয়ন।
২০১৯ -এ প্রাক- মহামারির বছরে ভারতে ১০ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন বিদেশি পর্যটকের আগমন হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এপ্রিলে রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে বলেছিলেন, মহামারির পরে পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে সপ্তাহব্যাপী বিচ কার্নিভাল ও পর্যটন মেলা শুরু আজ
পর্যটন মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ভারত রাজস্ব থেকে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৩ কোটি রুপি (১৬ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বৈদেশিক মুদ্রা পেয়েছে, যা ২০২১ সালের ৬৫ হাজার ৭০ কোটি রুপি থেকে ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’।
এছাড়াও, মার্কিন ডলারে বিদেশি পর্যটক প্রাপ্তিতে ভারতের অংশ ২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুসারে, পর্যটক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৪তম স্থানে রয়েছে ভারত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দিল্লি বিমানবন্দর ২০২২ সালে ভারতের এফটিএ-র জন্য শীর্ষ আটটি বন্দরের ৩১ দশমিক ২১ শতাংশ গঠন করেছিল।
আরও পড়ুন: বিদেশি পর্যটকদের জন্য আমাদের দেশের ভিসা পদ্ধতি সহজ করা উচিত: পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা: ট্রুডো
ভারতের সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক বিরোধ সত্ত্বেও কানাডা সম্পর্ক জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দুই দেশের সম্পর্ক সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসার পর সম্প্রতি তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ট্রুডো ঘোষণা করেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী এক শিখ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় ভারতের জড়িত থাকার সম্ভাব্য অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কানাডা।
তবে, এই দাবিকে 'অযৌক্তিক' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লি।
গত জুনে কানাডার একটি মন্দিরের বাইরে খুন হন হরদীপ সিং নিজ্জার। নিজ্জার খালিস্তান আন্দোলন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন।
বৃহস্পতিবার ট্রুডো বলেন, ভারতকে 'গঠনমূলক ও গুরুত্বসহকারে' সম্পৃক্ত করা অপরিহার্য।
ন্যাশনাল পোস্ট তার বরাত দিয়ে জানায়, ‘ভারত একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দেশ। গত বছর আমরা যখন আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি উপস্থাপন করেছি, তখন আমরা ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক ছিলাম।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে ট্রুডো নেতাদের নৈশভোজে যোগ না দেওয়ায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এতে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রুডোর সংক্ষিপ্ত বৈঠক হলেও তাদের শরীরী ভাষা 'শীতল' ছিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর কয়েকদিন পর কানাডার পার্লামেন্টে ট্রুডো জানান, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার সম্ভাব্য অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন তারা।
এরপর থেকে দুই দেশই একে অপরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। গত সপ্তাহে কানাডার কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে কানাডার নাগরিকদের ভিসা সেবা স্থগিত করে ভারত।
আরও পড়ুন: 'ফাইভ আইজ' দেশগুলোর গোয়েন্দা তথ্য কানাডাকে শিখ হত্যার সঙ্গে ভারতকে যুক্ত করতে সাহায্য করেছে: মার্কিন কূটনীতিক
ট্রুডো বৃহস্পতিবার(২৮ সেপ্টেম্বর) ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের তাৎপর্য নিয়ে কথা বলেন, তবে হত্যার তদন্ত অব্যাহত থাকবে বলেও জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে, স্পষ্টতই আইনের শাসনের দেশ হিসেবে আমাদের জোর দিতে হবে যে কানাডার সঙ্গে কাজ করতে হবে ভারতকে, যাতে আমরা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য পেতে পারি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারত জোর দিয়ে বলেছে এই হত্যাকাণ্ডে তাদের কোনো ভূমিকা নেই এবং ২০২০ সালে দিল্লি নিজ্জারকে সন্ত্রাসবাদী বলে ঘোষণা করেছিল। যদিও তার সমর্থকরা দৃঢ়ভাবে সেটি অস্বীকার করে।
পশ্চিমা দেশগুলোতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের খালিস্তান বা একটি পৃথক শিখ রাষ্ট্রের দাবির বিষয়ে ভারত সরকার সবসময়ই কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া দিল্লিকে তদন্তে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তারা ভারতের সমালোচনা করেনি। যেটিকে তারা এশিয়ায় চীনের উত্থানের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক হিসেবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
স্বাধীন ও স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিকের আহ্বান ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানের
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে বলেছেন, ভারত একটি মুক্ত ও স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; যেখানে সকল জাতির সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করা হয়। কারণ এই অঞ্চলে চীনা প্রভাব নিয়ে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মি চিফস কনফারেন্সে জেনারেল মনোজ পান্ডে এসব কথা বলেন।
সামরিক কূটনীতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রচারের লক্ষ্যে এই কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। ৩০টি দেশের সেনাপ্রধান ও প্রতিনিধিদল দুই দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, যা বুধবার শেষ হবে।
পান্ডে বলেছেন, এই অঞ্চলের দেশগুলো যখন একটি মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক নিশ্চিতে কাজ করছে, তখন ‘আমরা আন্তঃরাজ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা দেখতে পাচ্ছি।’
পরোক্ষভাবে তিনি চীনের কথা বলেছেন, কেননা দেশটি সম্প্রতি এই অঞ্চলে তার কার্যক্রম বাড়িয়েছে।
পান্ডে বা মার্কিন সেনাপ্রধান র্যান্ডি জর্জ কেউই তাদের মন্তব্যে স্পষ্টভাবে চীনের কথা উল্লেখ করেননি।
একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনা সম্প্রসারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জর্জ বলেন, অঞ্চলটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার। ‘এ কারণেই আমরা এই কনফারেন্স আয়োজন করেছি এবং এজন্যই আমরা প্রশান্ত মহাসাগরের অন্য যে কোনও জায়গার চেয়ে এই অঞ্চলে বেশি সক্রিয়।’
মার্কিন সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘এই সম্মেলন যা প্রমাণ করে... তা হলো (আমাদের) ঐক্য ও প্রতিশ্রুতি।’
পরে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পান্ডে বলেন, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময়ই বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান, বলপ্রয়োগ এড়ানো এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা।
তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জগুলো ছাড়াও, আঞ্চলিক বিরোধসহ ‘কৃত্রিমভাবে সম্প্রসারিত দ্বীপগুলোকে রিয়েল এস্টেট অধিগ্রহণ এবং সামরিক ঘাঁটি স্থাপন’-সহ অঞ্চলটি স্থল নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং মানবিক উদ্বেগের সম্মুখীন হয়েছে।’
এখানেও চীনের নাম উহ্য রাখেন তিনি।
দ্বীপগুলোর উপর পূর্ব চীন এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আঞ্চলিক দাবি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাশাপাশি জাপানের বেইজিংয়ের ছোট প্রতিবেশীকে বিচলিত করেছে।
এদিকে ২০২০ সাল থেকে নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
সেসময় হিমালয় লাদাখ অঞ্চলে অনির্ধারিত সীমান্তে সংঘর্ষে মোট ২৪ জন ভারতীয় ও চীনা সৈন্য নেহত হয়। তাদের মধ্যে ২০ জন ছিল ভারতীয় এবং চার জন ছিল চীনা সৈন্য।