গণতন্ত্র
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চলবে: জেল থেকে বেরিয়ে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
কারাগার থেকে বের হওয়ার পরপরই তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'জনগণের বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় ফখরুল-খসরুর জামিন
বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিএনপির কোনো ক্ষতি হয়নি, আন্দোলনেরও ক্ষতি হয়নি। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সব সময় গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছে, সংগ্রাম করেছে। ‘ইনশাল্লাহ এই লড়াইয়ে তারা (জনগণ) জয়ী হবেই।’
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রায় গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে তিন মাস আটক থাকার পর জামিনে মুক্তি পান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, জামিনের আদেশ কেরাণীগঞ্জের কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছানোর পর বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে তারা কেরাণীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
জেলগেটে তাদের স্বাগত জানান দলের নেতাকর্মী ও দলের শীর্ষ দুই নেতার স্বজনরা।
ফখরুল ও খসরু কারা গেটে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আমীর খসরু বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করেছে, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘নির্বাচনে তারা জনগণের কাছে নৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ‘গণতন্ত্র ও জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের পক্ষে রায় দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ফখরুল-খসরু জামিনে মুক্ত
নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলন পরিচালনার জন্য বিএনপিসহ সব গণতন্ত্রপন্থী দলের মনোবল যথেষ্ট শক্তিশালী।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালত গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ চলার সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের মামলায় মির্জা ফখরুল ও খসরুকে জামিন দেন আদালত।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের আবেদনের শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ২৯ অক্টোবর ফখরুল, খসরুসহ বিএনপির ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
সমাবেশে সহিংসতার ঘটনায় ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি ও খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। গত ২৯ অক্টোবর ফখরুল ও ৩ নভেম্বর গুলশানের বাসা থেকে খসরুকে আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় আদালত থেকে জামিন পেয়ে তাদের মুক্তির পথ সুগম হয়।
আরও পড়ুন: আজ মুক্তি পেতে পারেন ফখরুল-খসরু
গণতন্ত্রের স্বার্থেই জাতীয় নির্বাচন আ. লীগের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত ছিল: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি যদি গত মাসে(৭ জানুয়ারি) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার দলের সদস্যদের নির্বাচনে অংশ নিতে না দিতেন, তাহলে দেশের গণতন্ত্র হরণ করা হতো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত না হলে শুধু নির্বাচনই কলঙ্কিত হতো না, দেশের গণতন্ত্রও ছিনতাই হয়ে যেত।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সূচনা বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা যে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম, তা ভুলে গেলে চলবে না এই অর্জন ধরে রাখতে হবে। প্রতি বছর বাজেট প্রণয়নের সময় আমরা নির্বাচনি ইশতেহার অনুসরণ করি।’
আরও পড়ুন: টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে বিজ্ঞানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো উচিত: প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, তার দল আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে দলের সব সদস্যের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকাকালীন সাধারণ মানুষের জন্য কতটুকু কাজ করেছেন, কারা করতে পেরেছেন বা পারেননি তাও খতিয়ে দেখা হবে। এর মাধ্যমে আমরা দেখব জনগণ কাকে গ্রহণ করে।
আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেকোনো ধরনের সংঘাতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো ধরনের সংঘাত চাই না। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিরা যেই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: আইএমও'র প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততা ও নেতৃত্বের প্রত্যাশা করছি: সংস্থাটির প্রধান
দেশে গণতন্ত্র না থাকায় ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে: নজরুল ইসলাম
দেশে গণতন্ত্র না থাকায় ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, ‘সবার উন্নয়নের কথা চিন্তা করলে গণতন্ত্র ছাড়া উপায় নেই। গণতন্ত্র না থাকায় দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট। আর মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ কোটি কোটি টাকার বাড়ি কিনছে।’
দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে বিএনপি নেতা আরও অভিযোগ করে বলেন, মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ দুর্নীতি ও লুটপাটে লিপ্ত হয়ে দেশের বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎ করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থনের প্রয়োজন নেই বলেই ৫ শতাংশ মানুষকে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ‘ফলে তারা ভোটে বিশ্বাস করে না।’
আরও পড়ুন: জনসমর্থন নেই বলেই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা হবে: মঈন খান
তিনি আরও বলেন, 'যদি ভোটের প্রয়োজন হতো (সরকার গঠনের জন্য), তাহলে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারত, ৭ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন করত না।’
দেশের এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিরোধী দলগুলোর চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন সফল করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে দেশের মানুষ জীবন ও রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। ‘সেই গণতন্ত্র এখন বাংলাদেশে নেই। তা ধ্বংস হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকার ‘তাসের ঘরের মতো’ ভেঙে পড়বে: মঈন খান
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি।
অনুষ্ঠান শেষে কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এর আগে সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা কোকোর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করেন।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪৫ বছর বয়সে মারা যান কোকো।
২৭ জানুয়ারি তার লাশ দেশে আনা হয় এবং বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: বর্তমান সরকারের অধীনে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিরোধী দল রাজপথ ছাড়বে না: বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিরোধী দল রাজপথ ছাড়বে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা থাকবে না।’
শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বন্দুকের জোরে দেশ শাসন করছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
মঈন খান বলেন, ‘এখন শুধু আমরাই বলছি না, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচন নিয়ে সারা বিশ্বের মিডিয়ার দিকে তাকান, বিভিন্ন দেশের বিবৃতির দিকে তাকান। প্রহসনের নির্বাচন নিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক বিরোধী দলগুলো গত কয়েক বছর ধরে যা বলে আসছি, তারাও তারই প্রতিধ্বনি করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, দেশে-বিদেশে এটা প্রতিষ্ঠিত যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন মৃত।
তিনি বলেন, দলের একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। ‘ইনশাল্লাহ আমাদের গণতন্ত্রের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে নাগরিক ঐক্যের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দেশের প্রতিটি মানুষ যোগ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এছাড়া তিনি বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
নাগরিক ঐক্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্রের পক্ষে ও ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে টিআইবির বক্তব্য 'জনমতের প্রতিফলন': বিএনপি
আয়োজকরা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিরোধী দলগুলোর দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণের অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে, জেলা ও উপজেলা এবং আন্তর্জাতিকভাবে সর্বস্তরের জনগণের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য নয় বলেই ৭ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করেছে।
মান্না আরও বলেন, এজন্য আমরা এই স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির আয়োজন করেছি। আমরা শুধু বাংলাদেশের ১০ কোটি ভোটার নয়, দেশের ১৭ থেকে ১৮ কোটি মানুষের কাছেও পৌঁছানোর চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের কর্মসূচি অফলাইন ও অনলাইন উভয় ক্ষেত্রেই অব্যাহত থাকবে।
মান্না বলেন, দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে গঠিত সরকারের নিন্দা জানাতে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সারাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন তারা।
তিনি আরও বলেন, গণস্বাক্ষর কর্মসূচির পাশাপাশি অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে তাদের দল রাজপথে একযোগে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে গিয়ে আমরা রাস্তা ছেড়েছি, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, ‘রাজপথের আন্দোলন জোরদার করতে আমরা স্বাক্ষর সংগ্রহ করছি। আমরা এমন একটি সংগ্রাম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি যাতে দখলদারকে মাথা নত করতে বাধ্য করা যায়।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: মঈন খান
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: মঈন খান
গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। গণতন্ত্র বলতে শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে বোঝায়। তাই নীতিগতভাবে সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম হতে হবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক।
এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, রাস্তায় সরকারের বন্দুক ও গুলি মোকাবিলায় নিরস্ত্র জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে আ. লীগ: মঈন খান
তিনি বলেন, এভাবে আমরা এই সরকারকে পরাজিত করব। আজকের এই দিনে আমরা এই শপথ নিই। আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব এবং এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।
জনগণই বিএনপির শক্তি উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, বন্দুকের নল, বুলেটের শক্তি, কাঁদানে গ্যাসের শক্তি, জলকামানের শক্তি বা এই সরকারের যত ক্ষমতাই থাকুক না কেন জনগণের সেই শক্তি দিয়ে বিএনপি বর্তমান অবৈধ দ্বিতীয় বাকশাল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
আরও পড়ুন: বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ‘তাদের দল লগি-বৈঠা দিয়ে রাজনীতি করে না। তিনি বলেন, সভ্য মানুষই বিএনপির রাজনীতি করে। এখানেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে পার্থক্য।’
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে তিনি বলেন, চূড়ান্ত সফলতা পেতে হয়তো দীর্ঘ সময় লাগতে পারে, কিন্তু তারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের ভোটাধিকার ও অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথের আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হবে না।
জিয়াউর রহমানের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আন্দোলনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ড. মঈন।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতি দেখেই জনগণের ইচ্ছা বোঝা যায়: রিজভী
৭ জানুয়ারির নির্বাচন গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের বিজয় এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতার বিজয়।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থবার বিজয়ে অভিনন্দন জানাতে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে শতাধিক প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, তার সরকার এই মাসের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনটি অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ সবাইকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শেখ হাসিনাকে মন্ত্রিসভার অভিনন্দন
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রার্থীদের নির্বাচনি প্রতীক নৌকা দিয়েছি এবং আগ্রহী দলের অন্যদের নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছি।’
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেন, তারা কীভাবে নির্বাচনে আসবে।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাদের ২০ দলীয় জোট নিয়ে মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল এবং আওয়ামী লীগ একাই ২৩৩টি আসন পেয়েছিল।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভেবেছিলেন সাংগঠনিক শক্তি বিবেচনায় বিএনপি আওয়ামী লীগের সমান। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে তা ভুল প্রমাণিত হয়।’
আরও পড়ুন: রমজানে আগাম পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কখনই নির্বাচন চায়নি। তারা নির্বাচন নষ্ট করতে অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে, ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) যতই অগ্নিসংযোগ করবে, ততই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। তারা জানে যে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কারণেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না।
তিনি বলেন, ‘বরং তারা নির্বাচন নষ্ট করতে চেয়েছিল এবং ক্ষমতায় আসার জন্য অবৈধ উপায় খুঁজছিল।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতি সহ্য করা হবে না: নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
গণতন্ত্রের দুর্বলতা আছে, অনুশীলনেই পরিপক্কতা অর্জন করে: কূটনীতিকদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সরকার বলেছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে কোনো ধরনের অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছাড়াই নির্বাচিত সরকারগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের দেওয়া এক ব্রিফিং নোটে বলেছে, 'গণতন্ত্রের দুর্বলতা আছে, কিন্তু চর্চার মাধ্যমেই তা পরিপক্কতা অর্জন করে।’
মন্ত্রণারয় কূটনীতিকদের জানিয়েছে, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী এতে অংশ নিতে আগ্রহী হলেও এটা দুঃখজনক যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অসাংবিধানিক দাবির অজুহাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের মূলমন্ত্র গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা: মোমেন
২০১১ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক বিধানকে ‘অতি বৈষম্যমূলক’ (আইনী কর্তৃত্বের আওতা বহির্ভূত যে কোনও কাজ) এবং বাতিল ঘোষণা করে। কারণ, এটি গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
নির্বাচন কমিশন বারবার বিএনপিকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিল, এমনকি বিএনপি যোগ দিলে ইসি নির্বাচনের তফসিল সংশোধন করতে ইচ্ছুক ছিল।
সরকার বলছে, বিএনপি এই 'অযৌক্তিক দাবিকে' তাদের প্রধান রাজনৈতিক নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং জনগণের জানমাল ধ্বংস করে তাদের জিম্মি করে রেখেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির হরতাল ‘ঢংঢাং’, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিন: মোমেন
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিএনপি ও তার মিত্ররা সারাদেশে যে ভয়াবহ সহিংসতা চালিয়েছে তা ২০০১, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তাদের কার্যক্রমের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত তারা প্রায় এক হাজার সরকারি ও বেসরকারি যানবাহন এবং পুলিশ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও অ্যাম্বুলেন্সসহ দুই শতাধিক স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। প্রায় এক হাজার যানবাহন ও প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনসহ অনেক স্থাপনা ভাঙচুর করেছে। এছাড়া প্রায় দেড় হাজার পুলিশ সদস্য ও প্রায় ৫০০ বেসামরিক লোককে আহত করেছে। এমনকি সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দুই পুলিশ সদস্যসহ ২৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনকে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের উপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রয়োগ করা উচিত: মোমেন
ব্রিফিং নোটে বলা হয়,‘তারা আমাদের রেল ব্যবস্থায় নাশকতা চালিয়েছে, যার ফলে এক মা ও তার তিন বছরের শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এতে আরও অনেকে গুরুতর আহত হওয়াসহ পাঁচটি মূল্যবান জীবনহানি হয়েছে।’
নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপি ভয় ও আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য 'সহিংসতা বাড়িয়েছে'। নির্বাচনের আগের দিন ভোটারদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে তারা ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে কূটনীতিকদের জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করতে এবং ভোটারদের ভোট দিতে তাদের নির্বাচনী এলাকায় যেতে বাধা দিতে বিএনপি দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
এতে বলা হয়, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, এতে চারজন যাত্রী নিহত হন। অনেকে গুরুতর আহত হন এবং যাত্রীবাহী ট্রেনটির একটি বগি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
গত ৭ জানুয়ারি ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে 'অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ' পদ্ধতিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রত্যক্ষ করেছে যে, বর্তমান সরকার সমর্থিত একটি স্বাধীন ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত সাংবিধানিক সংস্থা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দক্ষতার সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পারে।
২০২৪ সালের নির্বাচন বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের যাত্রার ইতিহাসে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের জনগণ তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি নিয়মভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং শান্তি, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার প্রতি তাদের দৃঢ় সংকল্প প্রদর্শন করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসীবান্ধব: মোমেন
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে, সাংবিধানিক ম্যান্ডেট সমুন্নত রাখতে এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অভূতপূর্ব রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রকাশ করেছে।
বিএনপির নির্বাচন বর্জন সহিংসতা এবং ক্রমাগত ভীতি প্রদর্শনের আহ্বান সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনগণ একটি শান্তিপূর্ণ ও 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্পের প্রতি তাদের অঙ্গীকার ও আকাঙ্ক্ষাকে জোরদার করেছে।
এতে বলা হয়, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আস্থা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচনী ইতিহাসে এটি একটি নতুন দৃষ্টান্ত।
ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গউইন লুইস এবং বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনউপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আমি দৌঁড়াতে পারি বলেই নড়াইলে মেগা প্রকল্প আসছে : মাশরাফি
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংকল্পে মিয়ানমারের জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লিঙ্কেন
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, মিয়ানমারের সামরিক শাসনকে অবশ্যই তাদের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে, অন্যায় ও নির্বিচারে আটক সবাইকে মুক্তি দিতে হবে, নিরবচ্ছিন্ন মানবিক প্রবেশাধিকার দিতে হবে এবং অগ্রগতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘মিয়ানমারে গণতন্ত্র, আত্মনিয়ন্ত্রণ, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার সংকল্পে আমরা দেশটির জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’
মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বার্তায় ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘৪ জানুয়ারি বার্মার স্বাধীনতার ৭৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি দেশটির জনগণের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।’
আরও পড়ুন: কল্পনা প্রসঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইবে ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন করে আসছে এবং একটি সমন্বিত ইউনিয়নের প্রতি তাদের নিজস্ব ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকারকে সমর্থন করেছে।
বার্তায় ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনীর সহিংসতা অভিযান বার্মার জনগণের সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধার এবং স্বাধীনতা, শান্তি ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকারকে ম্লান করেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই সাধনায় হারিয়ে যাওয়া জীবনগুলোর প্রতি শোক ও সম্মান জানাই।’
আরও পড়ুন: সংলাপে যোগ দিতে ১০ নভেম্বর ভারতে আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন
উন্নয়নের মূলমন্ত্র গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, উন্নয়নের মূলমন্ত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ আছে বলে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, রিজার্ভ বাড়ছে। আর উন্নয়নের মূলমন্ত্র হচ্ছে গণতান্ত্রিক ক্ষমতার ধারাবাহিকতা। তাই দেশের উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করতে হবে।’
সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৩টায় সিলেট নগরীর হাফিজ কমপ্লেক্সে ‘দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে আয়োজিত সিলেটের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগসংক্রান্ত আলোচনা সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন নালিশ পার্টি। তারা অযথা লবিং করে বেড়াচ্ছে। এগুলো ঠিক নয়। কারণ বাস্তব অবস্থা সবাই জানে। কাজেই কোনো ব্যক্তি বিশেষ বা কারো প্রোপাগান্ডায় কোনো কিছু হবে না। বিভিন্ন রাষ্ট্রের দূতাবাসগুলো তাদের কথায় প্রভাবিত হবে না।
তিনি সিলেটের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনার প্রশংসা করেন এবং প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, বর্তমান সরকারের গত ১৫ বছরের মেয়াদে সিলেটে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে সিলেটের সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীমহল উপকৃত হয়েছেন। আগামীতেও নির্বাচিত হয়ে বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখবেন।
তাহমিন আহমদ সিলেট চেম্বারের উদ্যোগে এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহী মো. ফয়সালের সহযোগিতায় প্রস্তুত করা সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলায় বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাতসংক্রান্ত গবেষণাপত্র এবং সিলেটের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে ১৬টি প্রস্তাব লিখিতভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: আমি দৌঁড়াতে পারি বলেই নড়াইলে মেগা প্রকল্প আসছে : মাশরাফি
প্রস্তাবনার মধ্যে ছিল- সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে ইন্টার কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) স্থাপন, ইসলামপুরে অবস্থিত বিটিএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন সিলেট টেক্সটাইল মিলের জমি প্লট আকারে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের বরাদ্দ প্রদান, সিলেট থেকে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে তাজা শাক-সবজি ও ফলমূল রপ্তানির লক্ষ্যে সিলেটে প্যাকিং হাউজ ও সার্টিফিকেশন ল্যাব নির্মাণ, সিলেট-চট্টগ্রাম হাইওয়ে ৬ লেনে রূপান্তর, সিলেটে এনআরবি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা, সিলেটের পর্যটন খাতের বিকাশ ঘটাতে “সিলেট পর্যটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ” গঠন, সিলেটে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের লক্ষ্যে নতুন একটি বিসিক শিল্প নগরী স্থাপন, ভোলাগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশনে ইমিগ্রেশন চালু, সিলেট-ঢাকা ও ঢাকা-সিলেট রুটে বাংলাদেশ বিমানের সান্ধ্যকালীন ফ্লাইট প্রতিদিন চালু।
সিলেট চেম্বারের সিনিয়র কর্মকর্তা মিনতি দেবীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক 0মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক ও সাবেক সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব।
আরও পড়ুন: মোড়েলগঞ্জে নৌকা প্রতীকের অফিসে অগ্নিসংযোগ
২০২৪ সালে শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে: বিএনপি
২০২৪ সালে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আগামী দিনগুলোতে জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি বলেন, 'ভুয়া ও সাজানো নির্বাচনের জন্য যে প্রহসন করা হচ্ছে তা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। জনগণের সঙ্গে আমরাও এই একদলীয় সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছি।’আরও পড়ুন: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শেরপুরে ৪ বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সমর্থনে দিয়ে নয়, বুলেট ও রাষ্ট্রযন্ত্রের শক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতায় রয়েছে।
তিনি বলেন, 'বুলেট, পুলিশের লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডের ব্যবহার ছাড়াই আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। আমরা জনগণের শক্তিতে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এটা করব।’
বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবে।
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচন করবে।
তিনি বলেন, 'আপনারা দেখেছেন সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করে ইতোমধ্যে সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। এমনকি নিজেদের জোট ও পোষা বিরোধী দলের প্রার্থীরাও এই নির্বাচনের সমালোচনা করছেন। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার দরকার নেই।’
ড. মঈন বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে কারা এমপি হবেন তা নির্ধারণ করে নির্বাচন করেছে।
‘সুতরাং এটি একটি ভুয়া নির্বাচন। কোনো জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্য হবেন না কারণ এটি মনোনয়নের নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন ৭ জানুয়ারি পূর্বনির্ধারিত ফলাফল ঘোষণা করবে।’ ৭ জানুয়ারির ভোট এখন অর্থহীন হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: উত্তাল বছর শান্তভাবে শেষ হলেও সরকারের পতনে বিএনপির সংকল্প অটুট
এদিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ‘তারা এখন ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে কবর দিতে চায়।’
আজ রাজধানীর কাফরুল এলাকায় লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার সরকারের স্বপ্ন এবার বাস্তবায়িত হবে না।
তিনি বলেন, 'দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি কোনো ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিজভী বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতারাও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: লিফলেট বিতরণ-গণসংযোগ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে বিএনপি