দাবি
তেজগাঁওয়ে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ: অবিলম্বে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি বিএনপির
ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অবিলম্বে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ ধরনের জঘন্য ও নৃশংস অপরাধ কেবলমাত্র গণবিরোধী শক্তির সহায়তায় সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘আজ যারা ঢাকার তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন দিয়েছে এবং চারজন যাত্রীর জীবন কেড়ে নিয়েছে তারা নিঃসন্দেহে অমানবিক। বিশেষ মহলের সম্পৃক্ততা ছাড়া যা করা সম্ভব নয়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে নিতে চক্রান্ত হিসেবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে কি না- তা নিয়ে জনগণের মধ্যে গভীর সন্দেহ রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন, শিশুসহ নিহত ৪
রিজভী বলেন, ‘নাশকতাকারীরা মানবতার শত্রু। এই নৃশংস ও হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।’
তিনি অবিলম্বে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।
নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন রিজভী।
উল্লেখ্য, বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা হরতাল শুরুর মাত্র এক ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তরা আগুন দিলে শিশুসহ অন্তত ৪ জন নিহত হয়।
ভোর ৫টা ৪ মিনিটের দিকে ট্রেনের ৩টি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং সকাল পৌনে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে
‘রাজ্জাকের বক্তব্য বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার-জেলে রাখার সরকারের পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ’
বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির প্রতীকী অনশন শুরু
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তিন ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি।
শনিবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপার্সনের স্থায়ী মুক্তির দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
প্রতীকী অনশন দুপুর ২টার দিকে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া দেশের সব জেলা শহর ও মেট্রোপলিটন শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
একই দাবিতে গত সোমবার রাজধানীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ সারাদেশে সমাবেশ করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে: ওবায়দুল কাদেরের 'ইউরেনিয়াম' মন্তব্য প্রসঙ্গে আব্বাস
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করে যে, বাংলাদেশে এখন তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো হোক।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া।
গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: আমাদের সর্বোচ্চটা করেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
অবিলম্বে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবি বিএনপির
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশ্বনেতা ও নোবেল বিজয়ীদের একটি খোলা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতির ‘সূর্য সন্তান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আরও পড়ুন: নেতাদের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়া নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে: বিএনপি
তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে তার (ড. ইউনূস) বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, এমনকি ১০০ বছর পরেও জাতি তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে এবং লজ্জিত হবে এই ভেবে, দেশের সরকার এমন একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে এত খারাপ আচরণ করেছে।
ড. ইউনূস এদেশের একজন বিখ্যাত ব্যক্তি উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, যারা তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে চায়, তারা নতুন করে জন্ম নিলেও তার মতো মর্যাদায় পৌঁছাতে পারবে না।
তিনি বলেন, এই অনিবার্য সত্যটি স্বীকার করুন ও তাকে হয়রানি করা বন্ধ করুন এবং (তার বিরুদ্ধে) মামলা বন্ধ করুন।
এর আগে সোমবার ১০০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০জনেরও বেশি বিশ্বনেতা বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সুরক্ষা এবং সুস্থতার বিষয়ে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে তারা লিখেছেন, ‘আমরা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, নির্বাচিত কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের নেতার পাশাপাশি, বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে লিখছি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে আপনাদের জাতি যেভাবে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে আমরা তার প্রশংসা করি।’
চিঠিতে সইকারীরা আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে তারা লিখেছেন, ‘তবে, সম্প্রতি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি যে হুমকি দেখেছি তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা বিশ্বাস করি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া এবং দেশের সব বড় দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগের দুটি জাতীয় নির্বাচনে বৈধতার অভাব ছিল।’
আরও পড়ুন: 'আওয়ামী নিপীড়নের শেষ ঘাঁটি আদালত': তারেকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের আদেশের তীব্র নিন্দা বিএনপির
ব্রিকসে প্রবেশের 'ব্যর্থতা'কে বিএনপি কীভাবে দেখছে
দাবি আদায়ে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ধর্মঘটে যাবে খুলনার জ্বালানি ব্যবসায়ীরা
আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে জ্বালানি তেল বিক্রয়ে কমিশন বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করেছে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।
বুধবার (২৩ আগস্ট) রাত ৮টায় খুলনা নিউ মার্কেট এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
খুলনা জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির আয়োজনে এই প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের চেষ্টা করছে সরকার: জ্বালানি সচিব
তাদের ৩ দফা দাবি হলো- জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরীর ইকোনোমিক লাইফ ৫০ বছর নির্ধারণ করতে হবে, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ করতে হবে এবং জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট এ সংক্রান্ত সু-স্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, অনেকদিন ধরে তিনটি দাবি জানিয়ে আসছি। অথচ সরকার মানছে না। আগে তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিশন বাড়ানো হতো। তাই এবার তেলের দাম বাড়লেও কমিশন বাড়েনি। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের বিষয় সমাধান না হলে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ থাকবে। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালন করব।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান, সহ-সভাপতি মহিবুল হাসান থ্রাইমস ও কোষাধ্যক্ষ এসএম মুরাদ উজ্জামান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাতের জন্য আগামী ২ বছর ঝুঁকিপূর্ণ: নসরুল হামিদ
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের দাবিতে সিগনেচার ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত
প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী চলতি সংসদ অধিবেশনে পাসের দাবিতে সিগনেচার ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বেসরকারি এনজিও নারী মৈত্রী ও ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালাইডোস্কোপ ক্লাবের যৌথ সহায়তায় দিনব্যাপী এই ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।
এই ক্যাম্পেইন থেকে সংগ্রহ করা স্বাক্ষরের তালিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: শিশু-কিশোরদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের বিকল্প নেই: শিক্ষামন্ত্রী
এ সময় ক্যাম্পেইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ছয়টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সংশোধনী প্রস্তাবনাগুলো হলো- উন্মুক্ত স্থানে 'ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান' বাতিল ও গণপরিবহনে নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রর্দশন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট-কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমম্বয়কারী নাসরিন আক্তার জানান, দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে এবং বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তামাক ব্যবহারকারীর বিবেচনায় অন্যতম।
গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ মতে, বাংলাদেশে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (১৫ বছর বা বেশি) তামাক ব্যবহার করে থাকে। অন্যদিকে ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ ধূমপান না করেও বিভিন্ন গণপরিবহন ও উন্মুক্ত স্থানে প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়।
টোব্যাকো এটলাস ২০১৮ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের ফলে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ অকালে মারা যান।
তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির সংশোধনী পাস করার দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছে শিক্ষার্থীরা। যত দ্রুত আইন পাস হবে, তত বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে তারা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে 'ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) -এর অধিকতর সংশোধনের জন্য এফসিটিসি'র আলোকে একটি খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। যা মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য এখন কেবিনেট ডিভিশনে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তুলনায় তামাকের দাম কমবে: প্রজ্ঞা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি বিএনপির
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে (ডিএসএ) গণতন্ত্র ও জনগণের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে জঘন্য কালো আইন আখ্যা দিয়ে আইনটি পরিবর্তন না করে সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট দিয়ে ডিএসএ পরিবর্তন করার সরকারের পদক্ষেপ জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। কারণ আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পূর্ণ বাতিলের পক্ষে।
আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার দেশব্যাপী বিএনপির সমাবেশ
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আইনটি কোনোভাবেই বহাল থাকা উচিত নয়। কারণ এটি গণতন্ত্র ও জনগণের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে জঘন্যতম কালো আইন।
বিএনপি নেতা বলেন, ডিএসএ প্রত্যাহার তাদের অন্যতম দাবি। যার জন্য তারা সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে।
ফখরুল বলেন, আমাদের মূল বক্তব্য হলো- আমরা আইনটির সম্পূর্ণ বাতিল চাই। কারণ, এটি গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে একটি আইন। সুতরাং, এই আইন (যেকোনো রূপে) রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, সরকার মানুষকে প্রতারিত করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সাইবার নিরাপত্তা আইনে রূপান্তর করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচণ্ড চাপের মধ্যে থাকায় সরকার তাদের এই পদক্ষেপ নিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, উটপাখি ঝড়ের মুখোমুখি হলে বালিতে মাথা লুকানোর প্রবণতা রয়েছে। সরকারের পদক্ষেপও সেরকমই। তারা মনে করে যে তারা এভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে খুব স্মার্ট কাজ করছে।
আইন পরিবর্তনে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের পর তারা সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে তাদের দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা বলেন ফখরুল।
এর আগে সোমবার ডিএসএ-এর কিছু ধারা সংশোধন করে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতিস্থাপন করতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তারা ডিএসএ’র ধারায় অনেক পরিবর্তন এনেছে এবং নাম পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। ডিএসএ বাতিল করা হয়নি বরং রূপান্তরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি বাংলাদেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছে, তাদের প্রতিহত করুন: কাদের
সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে যাবে না: রিজভী
কুমিল্লা নামে বিভাগ আমার ব্যক্তিগত চাওয়া নয়, কোটি মানুষের দাবি: বাহার
কুমিল্লা নামেই বিভাগের নামকরণের দাবির কথা ফের বলেছেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
তিনি বলেছেন, কুমিল্লা নামে কুমিল্লা বিভাগ চাওয়ার কথাটা আমার ব্যক্তিগত কথা না। কুমিল্লার কোটি মানুষে দাবি এটা। আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু কন্যা গণমানুষের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করবেন না। কুমিল্লা নামেই কুমিল্লা বিভাগ দিবেন তিনি।
রবিবার (০৯ জুলাই) বিকালে লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে অনুষ্ঠিত গণসংবর্ধনা ও কুমিল্লা নামেই বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে এসব কথা বলেন আ ক ম বাহার উদ্দিন বাহার।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মা ও ৮ বছরের ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা
এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দ্য কুমিল্লা কনসোর্টিয়াম ইউকে।
দ্য কুমিল্লা কনসোর্টিয়াম ইউকের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম দুদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর জাতীয় সংগীত ও সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লায় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার অনেক স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়েছে। এই কুমিল্লা খুনি খন্দকার মোশতাকের কুমিল্লা নয়, এমনকি সে কুমিল্লায় স্থায়ী বাসিন্দাও নয়। কুমিল্লা অসংখ্যা জ্ঞানী ও গুণী মানুষের জন্ম। তাই আমরা সবাই কুমিল্লা নামেই বিভাগ চাই।
নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমার একটি স্লোগান আছে ‘কুমিল্লা এগোলে, এগোবে বাংলাদেশ’। আমি একদিনে এই বিভাগ দাবি করিনি সেই ১৯৮৮ সাল থেকে কুমিল্লা বিভাগের জন্য আন্দোলন করে আসছি। বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, দ্য কুমিল্লা কনসোর্টিয়াম ইউকের প্রধান উপদেষ্টা রুহুল আমিন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. তাহসিন বাহার সূচনা, যুগ্ম-আহবায়ক আইনজীবী সোহেল কারিম।
এছাড়াও আরও উপস্তিত ছিলেন- আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মঞ্জু, ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ হোসেন বাবু, বরুরা সমিতির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সেলিম মিয়া, জহিরুল ইসলাম, সৈয়দ এহছানুল হক, সাংবাদিক রাশেদুল হক রিয়াদ, সেলিনা আক্তার জোৎসা, খালেদুজ্জামান খালেদ, দিল জাহান আলী খোকন।
উল্লেখ্য, দ্য কুমিল্লা কনসোর্টিয়াম ইউকের উদ্যোগে ১০ হাজার গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। যা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত সাঈদা তাসনিম মুনার কাছে হস্তান্তর করবেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ‘চোর’ সন্দেহে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কুমিল্লায় বাবাকে হত্যার দায়ে ৩ ছেলের মৃত্যুদণ্ড
গাজীপুরে বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুরের টঙ্গীতে বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রিন্স জ্যাকের্ড সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বুধবার (২১ জুন) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ
শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরের টঙ্গীর সাতাইশ এলাকার ওই কারখানাটির প্রায় সাড়ে ৭শ’ শ্রমিকের মধ্যে ৫০ জন শ্রমিকের এপ্রিল মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ বকেয়া রাখে কারখানার মালিকপক্ষ।
গত মে মাস আবারও কারখানা সকল শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ জুন) শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার কথা থাকলেও কারখানার মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করেনি। ওই দিন শ্রমিকরা দিনভর বেতন-ভাতার জন্য অপেক্ষা করে বিকালে বিক্ষোভ করে চলে যান।
বুধবার (২১ জুন) সকালে কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় এসে তালাবদ্ধ দেখতে পায়। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের উদ্দেশ্যে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়।
এসময় পুলিশ শ্রমিকদের মহাসড়কে উঠতে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে ২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেট নিক্ষেপ করে পুলিশ।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের পরিদর্শক মো. ওসমান গণি জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করেছিল। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: ওভারটাইম ও ঈদ বোনাসের দাবিতে গাজীপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ
মারধর ও ছাঁটাইয়ের অভিযোগে বরিশালে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
জিডিপির ৩.২% জলবায়ু অর্থায়ন হিসাবে দাবি অধিকার-ভিত্তিক নাগরিক সমাজের
অধিকার ভিত্তিক সুশীল সমাজ প্রতি বছর জাতীয় বাজেট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) কমপক্ষে ৩ দশমিক ২ শতাংশ দাবি করে।
এছাড়াও, তারা জলবায়ু অর্থায়নের জন্য অভ্যন্তরীণভাবে প্রয়োজনীয় সংস্থান সংগ্রহের জন্য কর ও আর্থিক ব্যবস্থা সংস্কার করে মূলধন বাড়ানো বন্ধ করতে পরিমিত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুশীল সমাজের নেতারা এ দাবি তুলে ধরেন।
কোস্ট ফাউন্ডেশন, সিপিআরডি (সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট), সিএসআরএল (সেন্টার ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড), ইক্যুইটিবিডি (ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশ), এওএসইডি (আর্থিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি সংস্থা)-খুলনা অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি সুশীল সমাজ সংস্থা,কানসা-বিডি (ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক অন সাউথ এশিয়া-বাংলাদেশ) এবং লিডারস-সাতক্ষীরা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের এম. রেজাউল করিম চৌধুরী।
ইক্যুইটিবিডির আমিনুল হক তার বক্তব্যে বলেন, সরকার স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বাজেটের অর্থের একটি অংশ বরাদ্দ করে আসছে। এই অর্থ শুধু জলবায়ু অর্থায়নের নামে স্থানান্তরিত হয়েছে দাতাদের দেখানোর জন্য যা বর্তমান জলবায়ু প্রেক্ষাপট এবং জলবায়ু সহনশীল বাংলাদেশ অর্জনে এর প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন: জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহায়তার নিশ্চয়তা চায় ঢাকা
তিনি আরও দেখিয়েছেন যে সরকারের কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনা যেমন ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ২০৩০ এবং এনডিসি (জাতীয় নির্ধারিত অবদান ইত্যাদি) প্রতি বছর জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ (বছরে ১,৮৩০০০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ প্রয়োজন যেখানে লক্ষ্যের বিপরীতে বরাদ্দ অনেক কম।
এই প্রেক্ষাপটে, তিনি জলবায়ু অর্থায়ন সংক্রান্ত কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে যে সরকারকে অবশ্যই তাদের কৌশলগত পরিকল্পনা এবং সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়ন হিসাবে জিডিপির কমপক্ষে ৩ দশমকি ২ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারকে এর পরিবর্তে একটি সমন্বিত জাতীয় জলবায়ু বাজেটের কথা ভাবতে হবে। স্বতন্ত্র জলবায়ু অর্থায়নের যা বাস্তবসম্মত নয়।
সিএসআরএল-এর মো. জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, সরকারি জলবায়ু পরিকল্পনা যেমন ডেল্টা পরিকল্পনা এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা ইত্যাদির মধ্যে নীতিগত সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ বাজেট বাস্তব জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্য ছাড়াই এই অসঙ্গতির ফলাফল।
তিনি আরও বলেন, সরকারকে কৌশলগত জলবায়ু পরিকল্পনার বিষয়গুলোর ওপর জোর দিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী জলবায়ু অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।
সিপিআরডির মো. শামসুদ্দোহা বলেছেন যে সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর অর্থ ব্যবহারের ক্ষমতার অভাব রয়েছে এবং তাদের একটি সেক্টরাল প্ল্যান নেই যা আলাদা জলবায়ু অর্থায়নের অন্যতম কারণ। এছাড়াও, মন্ত্রণালয়গুলো আইএফআইএস (আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থাগুলি) থেকে জলবায়ু অর্থ নিতে খুব আগ্রহী কারণ তাদের সার্বভৌম দাতাদের মতো বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থের তুলনামূলক জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নেই।
আরও পড়ুন: কপ-২৭ এর আগে জলবায়ু অর্থায়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান বাংলাদেশের
এওএসইডির শামীম আরেফিন বলেন, সরকার উপকূল সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষা করেছে। এ কারণেই জলবায়ু জনিত স্থানচ্যুতি ও অভিবাসন ঘটছে এবং আর্থ-সামাজিক ভারসাম্যহীনতা বাড়ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সরকার সমস্যাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে উপলব্ধি করবে এবং সেই অনুযায়ী জলবায়ু অর্থায়ন কৌশলগুলো সংশোধন করবে।
ইভেন্ট মডারেটর এম. রেজাউল করিম একটি সমন্বিত উপকূলীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং অর্থায়নের দাবি জানান। যেখানে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, সামাজিক উন্নয়ন যেমন স্বাস্থ্য, কারিগরি শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি কর্মসূচি একই সঙ্গে বাস্তবায়িত হয় এবং এটিই হবে প্রকৃত সুরক্ষা এবং উপকূলবাসীদের জন্য উপকারী।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়ন দ্বিগুণ চায় বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো
প্রাণঘাতী জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধের দাবি বাংলাদেশি তরুণদের
বাংলাদেশের তরুণ কর্মীরা জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অর্থায়ন অবিলম্বে বন্ধ করতে এবং নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য জি-৭ দেশগুলোর বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার(১৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত জলবায়ু ধর্মঘটের সময়, ফ্রাইডেস ফর ফিউচার বাংলাদেশ এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ করার এবং জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির ওপর দেশের নির্ভরতা কমানোর অঙ্গীকার করেছে, প্রাথমিকভাবে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস(এলএনজি)।
বক্তারা বলেন, অক্সফামের সর্বশেষ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে গ্রুপ অব সেভেন (জি-৭) দেশগুলোর জলবায়ু কর্মকাণ্ডের জন্য অবৈতনিক সহায়তা এবং অর্থায়নে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কাছে ১৩ দশমিক তিন ট্রিলিয়নমার্কিন ডলার ( ১২ দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ইউরো) বকেয়া ঋণ রয়েছে।
জাপানের হিরোশিমায়২০২৩ সালের ১৯-২১মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৯তম জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আগে এই জরুরি আবেদনটি আসে। শীর্ষ সম্মেলনে জরুরি জলবায়ু সংকট সহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকট নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং উন্নত দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানায়।’
তাদের আবেগপূর্ণ আবেদনে, তরুণ কর্মীরা হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়ার মতো মিথ্যা সমাধানের বিরুদ্ধে সতর্ক করার পাশাপাশি ক্ষতি এবং ক্ষতির অর্থায়নের গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০% বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৬.৫ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশি তরুণ কর্মীদের দাবি যে জি-৭ দেশগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ক্লিন এনার্জিকে অগ্রাধিকার দেয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়নে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে।
তারা জি-৭-এর মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি এবং নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে অর্থায়নের বিষয়ে আলোচনাকে ঘিরে বিদ্যমান অস্পষ্টতা, বিলম্ব এবং অস্থিরতার উপর আলোকপাত করেছে।
তরুণ কর্মীরা মতামত দিয়েছেন যে দুর্ভাগ্যবশত, সদস্য দেশগুলোর প্রতিশ্রুতিগুলো বর্তমানে স্থবির বা এমনকি বিপরীত দিকেও চলছে ।
বাংলাদেশের উৎসাহী যুবকরা তাদের দেশের বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলা করার জন্য সমালোচনামূলক স্টেকহোল্ডারদের আহ্বান জানায়। এলএনজির মতো ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানির ক্ষতিকর পরিণতিগুলো তুলে ধরে, যা দেশের জন্য আর্থিকভাবে বোঝা।
তারা জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে উদ্ভূত জটিল চ্যালেঞ্জগুলোর উপর আরও জোর দেয়। নতুন বিদ্যুৎ খাতের মাস্টার প্ল্যানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উচ্চ অনুপাতের জন্য তাদের দৃঢ় সমর্থনের লক্ষ্য হলো জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ন্যায়সঙ্গত পরিবর্তনের প্রসার।
এছাড়াও, বাংলাদেশি তরুণদের দাবি যে উন্নত দেশগুলো প্যারিস চুক্তি মেনে চলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে কঠোরভাবে এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করে এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ থেকে নিরুৎসাহিত করে, যার ফলে ক্ষতিকারক কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পায়।
ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান ঘোষণা করেছেন, ‘ক্ষতিকর এবং ব্যয়বহুল জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার জরুরি প্রয়োজন অনুধাবন করার জন্য আমরা আগামীকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না। এখনই পদক্ষেপ নেয়ার সময় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব ইতোমধ্যেই জলবায়ু ও জ্বালানি সংকটে ভুগছে, এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যথেষ্ট বিনিয়োগ এবং জি-৭ দেশগুলোর মতো বিশ্ব নেতাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ অপরিহার্য। আমরা আর কোনো বিলম্ব সহ্য করতে পারি না; তাদের এই মুহূর্তের জরুরিতার প্রতি জাগ্রত হতে হবে।’
তরুণ অ্যাক্টিভিস্টরা জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রতিশ্রুতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়, বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতির পক্ষে কথা বলে, যার অন্তত ৫০ শতাংশ নবায়ণযোগ্য জ্বালানির অর্থায়নের জন্য বিশেষভাবে বরাদ্দ করা হয়।
তদুপরি, তারা দৃঢ়ভাবে দাবি করে যে জাপান সহ জি-৭ দেশগুলো বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর হাইড্রোজেন জ্বালানি এবং অ্যামোনিয়ার মতো অপরীক্ষিত, বিতর্কিত এবং ব্যয়বহুল প্রযুক্তি চাপিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির দাম স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম কমানো যাবে না: তৌফিক ইলাহী
সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক পলিউশন স্টাডিজ (ক্যাপস) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে এবং বায়ু দূষণরোধে অবিলম্বে কাজ করতে হবে। কারণ, দু’টি আন্তঃসম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আসুন আমরা ব্যক্তি, ব্যবসায়িক হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হই। এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নবায়ণযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের সুবিধার্থে এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে পথ প্রশস্ত করি৷ আমরা প্রতিটি নিঃশ্বাস গ্রহণ করি এবং প্রতিটি তাপপ্রবাহ সহ্য করার জন্য জরুরি পদক্ষেপের একটি প্রখর অনুস্মারক৷’
কপ-২৮ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) -এর পরিচালক প্রফেসর সালেমুল হক জোর দিয়ে বলেন, ‘জলবায়ু সংকট ভবিষ্যতের জন্য সীমাবদ্ধ কোনো দূরের হুমকি নয়; তাদের ন্যূনতম অবদান থাকা সত্ত্বেও এটি ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।’
‘ধনী দেশগুলো এবং জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য অপরাধী প্রধান কর্পোরেশনগুলো তারা যে ক্ষতি করেছে তার জন্য দায়িত্ব নেওয়া এবং সকলের জন্য একটি ন্যায্য এবং টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এটিই উপযুক্ত সময় ।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক দেরি হওয়ার আগে আমরা এখন আমাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের কাছে সিদ্ধান্তমূলকভাবে কাজ করার জন্য ঋণী।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ১৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন: নসরুল