বিএসএফ
কুড়িগ্রামে আটকের ৩ ঘন্টা পর বাংলাদেশিকে ফেরত বিএসএফের
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে আটকের তিন ঘন্টা পর হাবিবুল ইসলাম (৪১) নামে এক বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার সকাল ১১টার দিকে তাকে ফেরত দেয় তারা। এর আগে এদিন সকাল ৮টার দিকে তাকে আটক করে বিএসএফ।
আটক হাবিবুল ইসলাম ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডল কৃঞ্চানন্দ বকসী গ্রামের হাসমত আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-বিএসএফের সীমান্ত বৈঠক
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুল ইসলাম শনিবার সকালে ভারতীয় সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯২৯ এর কাছ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। তিনি কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার মরাকুটি ভূরামপাকিস্থি এলাকার বাসিন্দা ফেলদেওয়ারের জেমিত দিনহাজিরায় পাট কাটতে যায়। এসময় ভারতীয় গিদালদহ ক্যাম্পের টহলরত এক বিএসএফ সদস্য তাকে আটক করে। খবর পেয়ে বিএসএফ সদস্যদের কাছে বাংলাদেশি ওই নাগরিককে ফেরত দিতে মৌখিকভাবে জানায় বিজিবি। এ ঘটনার তিন ঘন্টা পর বেলা ১১টার দিকে হাবিবুল ইসলামকে বিজিবি’র মাধ্যমে ফেরত দেয় বিএসএফ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি’র গোড়কমণ্ডল ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মো. খলিলুর রহমান জানান, আটকের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে দিনমজুরকে ফেরত চেয়ে বিএসএফ’র কাছে অনুরোধ জানাই আমরা। এর তিন ঘন্টা পর তারা আটক বাংলাদেশিকে ফেরত দেয়।
আরও পড়ুন:ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু
পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে পাঁচ দিনব্যাপী মহাপরিচালক (ডিজি) পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন রবিবার ঢাকায় শুরু হয়েছে।
বৈঠকে বিভিন্ন নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয় যেমন সীমান্ত হত্যা, মাদক, অস্ত্র, গোলাবারুদ, নারী ও শিশু পাচার, আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে সোনা চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও নদী তীর রক্ষা, সশস্ত্র চরমপন্থী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তথ্য বিনিময়, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) বাস্তবায়নের জন্য যৌথ উদ্যোগ, বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হয়।
ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উপায় নিয়েও দুই পক্ষ কথা বলেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ২০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপরদিকে তার ভারতীয় সমকক্ষ শ্রী পঙ্কজ কুমার সিং নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আগামী ২১ জুলাই একটি জয়েন্ট রেকর্ড অফ ডিসকাশনস (জেআরডি) স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে সম্মেলন শেষ হবে।
সম্মেলন উপলক্ষে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ভারতীয় প্রতিনিধি দল পদ্মা সেতু ও কক্সবাজার পরিদর্শন করবে।
আরও পড়ুন: বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন শুরু গুয়াহাটিতে
বিজিবি-বিএসএফের স্থগিত হওয়া সীমান্ত সম্মেলন ১৬-১৯ সেপ্টেম্বর
ধাওয়া খেয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ, ভাই-বোনের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে মৃত দুই শিশুর লাশ উদ্ধারের দুইদিন পরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কাশীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্তে আন্তর্জাতিক পিলার ৯৪২ এর সাব পিলার ৮ এস’র পাশে বিএসএফ-বিজিবি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
নিহত শিশুর চাচা নেওয়াশী ইউনিয়ন ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল জানান, তার ভাই রহিজ উদ্দিন ১৫ বছর আগে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে যান। একটি ইটভাটায় কাজ করেন। সেদেশেই ওই দুই শিশুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা।
আরও পড়ুন: বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার
তিনি জানান, শনিবার ভোরে দালালের মাধ্যমে রহিচ উদ্দিন (৩৮) ও তার স্ত্রী সামিনা খাতুন (৩৩) তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছিলেন। সীমান্তে নীলকমল নদীর তীরে বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে দালালদের কথা অনুযায়ী তারা নদীতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় শিশু দুটি ভেসে যায়। তবে রহিচ উদ্দিন ও তার স্ত্রী সামিনা খাতুন প্রাণে বেঁচে যান। পরদিন বরিবার নদী থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করে বিএসএফ।
বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে নদীতে পড়ে দুই শিশু নিখোঁজ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবশের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে নদীতে পড়ে দুই শিশু নিখোঁজ হয়েছে।
শুক্রবার (১ জুলাই) দিবাগত রাতে ফুলবাড়ী সীমান্তে নদী পারাপারের সময় এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ পারভীন খাতুন (৮) ও শাকিবুল হাছান ( ৪) পাশ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের পশ্চিম শুকাতি গ্রামের রহিম উদ্দিনের সন্তান।
জানা গেছে, ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় দালালদের ভুল পথে নিয়ে আসার কারণে বিএসএফের ধাওয়ায় মায়ের হাত থেকে রাতের অন্ধকারে নদীতে ভেসে গেছে এই দুই শিশু। সাঁতার জানায় মা সামিনা খাতুন বেঁচে গেলেও ১৮ ঘন্টাতেও খুঁজে পাননি দুই সন্তানকে। দুই দেশের নোম্যান্স ল্যান্ডের নীলকুমর নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে শিশুদের সন্ধান পাওয়ার আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন স্বজনরা।
নিখোঁজ শিশুর দাদা জিয়া উদ্দিন জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে অভাবের তাড়নায় আমার ভাগ্নে রহিম উদ্দিন অন্যদের সঙ্গে কাজের সন্ধানে দিল্লিতে যান। সেখানে কাজ করার পর ২০০৫ সালে ভারতের দিনহাটার নয়ারহাট এলাকার সাজেদুল হকের মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সেখানে তারা বসবাস করেন। সময় পেলে মাঝে মধ্যে দেশে আসতেন রহিম উদ্দিন। এর মধ্যে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে জন্ম নেয় তাদের ঘরে। টাকাও পাঠাতেন তার বৃদ্ধ মা রহিমার কাছে।
আরও পড়ুন: ধনু নদীতে ট্রলারডুবি: নারীর লাশ উদ্ধার, শিশু নিখোঁজ
তিনি বলেন, নিখোঁজ ওই দুই শিশু ভারতের ভূ-খন্ডে জন্ম নিলেও দাদার বাড়িতে আসেনি কোনদিন। সে জন্য ইদুল আযহা পালন করার জন্য প্রথমবারের মতো ছেলে-মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিল রহিম উদ্দিন। তার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে গেলো কাঁটাতার পার হওয়ার সময়।
নিখোঁজ শিশুদের বাবা রহিম উদ্দিন জানান, সন্তানরা আমার জন্ম ভূমি দেখেনি। তাই ঈদ করার জন্য বাড়িতে প্রথমবার নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। পরিবারের ও ছেলে মেয়েদের নতুন কাপড় কিনে ট্রাংকে রাখা হয়েছে। নিরাপদে দেশে ফেরার জন্য ভারতের দালালদের সঙ্গে ৩০ হাজার টাকা চুক্তি করা হয়। তারা আমাদেরকে সীমান্তে কোন এক বাড়িতে নিয়ে এসে রাখে রাতে। সেখানে আরও ২০-২৫ জন নারী পুরুষ ও শিশুও ছিল।
তিনি আরও জানান, মধ্য রাতে ৯৪৩ নং মেইন পিলারের পাশে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের র্ধমপুর সীমান্ত দিয়ে পার করার চেষ্টা করেন। তারা কাঁটাতার পার করে নদী পথে নিয়ে আসেন। সে জন্য নদীর তীরে আমাদেরকে রাখেন। এ সময় ভারতের শেউটি -১ ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা লাইট জ্বালিয়ে দেখার পর আমাদেরকে ধাওয়া করে। এ সময় দালালরা তড়িঘড়ি করে নদী পার হওয়ার জন্য বলে। আমি জিনিসপত্র নিয়ে নদীর মাঝ পথে যাই। এ সময় আমার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নদীতে নামেন। কিন্তু তারা কেউই সাঁতার জানে না। স্রোতের টানে রাতের অন্ধাকারে স্ত্রীর হাত থেকে আমার সন্তানরা নিখোঁজ হয়। পানিতে ডুবে অনেক চেষ্টা করেছি, খোঁজাখুঁজি করেছি। তাদের সন্ধান পাইনি। কষ্ট করে আমার স্ত্রীকে পার করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। তারা বেঁচে আছে, না মারা গেছে, তা জানি না।
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আদম আলী বকুল জানান, নীলকুমর নদীর তীরে অনেক লোকজন নিখোঁজ শিশু দুটিকে খোঁজার জন্য জড়ো হয়েছে। পানিতে ডুবেও খুঁজছে।
এ বিষয় লালমনিহাটের অধীনে কাশিপুর কোম্পানি কমান্ডার কবির হোসেন জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার পথে দুটি শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। আমাদের টহল সেখানে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়াও এ বিষয় বিএসএফকে অবগত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রহ্মপুত্র নদে গোসল করতে নেমে শিশু নিখোঁজ
সমন্বয় সম্মেলনে যোগ দিতে বিএসএফের ৮ সদস্যের দল বাংলাদেশে
৯ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) সকাল ১১ টার দিকে প্রতিনিধি দলটি ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ সময় প্রতিনিধি দলকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার মো. ওমর সাদি।
দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন, যশোর ও রংপুর এবং বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল, সাউথ বেঙ্গল ও গোহাটি ফ্রন্টিয়ার কর্মকর্তারা সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
বিজিবি’র দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন যশোরের রিজিয়ন কমান্ডার অতিরিক্ত মহাপরিচালক ওমর সাদী, এনডিসি, পিএসসি এর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে বেনাপোলের পরিবহন মালিকরা
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবি’র উত্তর-পশ্চিম রিজিয়ন রংপুর এর রিজিয়ন কমান্ডার এবং যশোর ও রংপুর রিজিয়নের সংশ্লিষ্ট সেক্টর কমান্ডারগণ, বিজিবি সদর দপ্তরের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
অপরদিকে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি ডা. অতুল ফুলজেলে, আইপিএস এর নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
ভারতীয় প্রতিনিধিদলে অন্যান্যদের মধ্যে বিএসএফ এর নর্থবেঙ্গল ও গোহাটি ফ্রন্টিয়ারের আইজি, নোডাল অফিসার, সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার ও সেক্টর পর্যায়ের ষ্টাফ অফিসারবৃন্দ এবং ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন।
বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার মো. ওমর সাদি জানান, সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি, হত্যা, মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের চোরাচালান, অস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান, সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক আটক, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম, সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ কাজ সংক্রান্ত ইস্যু, সীমান্তে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, বিজিবি-বিএসএফ সমন্বিত টহল, উভয় বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি এবং যৌথ সেমিনার, সিম্পেজিয়াম, ওয়ার্কসপ ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় স্থান পাবে। সম্মেলন শেষে আগামী ১২ জুন বিকালে ভারতীয় প্রতিনিধি দল বেনাপোল বর্ডার দিয়ে ভারতে ফিরে যাবেন।
আরও পড়ুন: ৩ দাবিতে বুধবার থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা বেনাপোল পরিবহন মালিকদের
বেনাপোলে যাত্রীর পাকস্থলী থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২
আটকের ৮ ঘণ্টা পর বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার মইদাম সীমান্তে শূন্য রেখা থেকে এক বাংলাদেশিকে আটকের আট ঘণ্টা পর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী (বিএসএফ)। পরে তাকে আইন অনুযায়ী থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।
আটক কামাল হোসেন শেখ (৩৮) উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ বাঁশজানি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ময়দান বিওপি ক্যাম্পের বরাত দিয়ে উপজেলার পাথরডুবি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বলেন, গত শনিবার বিকালে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার নং ৯৭৭ এর সাব পিলার ৭ এসের পাশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার ১২৯ বিএসএফ দিঘলটারী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা কামাল হোসেন নামে এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যায়।
পরে বিএসএফ'র হেফাজতে থাকা বাংলাদেশিকে ফেরত আনার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে চিঠি পাঠানো হয়। ওইদিন দিবাগত রাতেই বিজিবি-বিএসএফ পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৭৫/৮ এস ও ৭৮/১২ এর স্থানে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আটক কামাল হোসেনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে বিজিবি সদস্যরা কামাল হোসেনকে ভূরুঙ্গামারী থানায় সোপর্দ করে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অবৈধভাবে ভারত যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পার্সপোর্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে কামাল হোসেনকে কুড়িগ্রাম কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাফলংয়ে গুলিতে নিহত যুবকের লাশ হস্তান্তর করলো বিএসএফ
পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
বিএসএফের গ্রেনেডে আহত শিশু বাড়ি ফিরতে চায়
ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বিএসএফ’র ছোঁড়া স্টান গ্রেনেডের আঘাতে আহত বাংলাদেশি শিশু রমজান আলী (১০) এখন ভারতের দিনহাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাবা-মা জানে না তাদের সন্তানের অবস্থা। অপরদিকে আহত রমজান আলীও জানে না বাবা-মায়ের ভাগ্যে কি জুটেছে। এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা রমজান বাড়ি ফেরার আঁকুতি জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
ভারতের কোচবিহার জেলার বিশিষ্ট সাংবাদিক খাজা মাইনুদ্দিন চিশতীর এক প্রতিবেদনে শিশু রমজান আলীর বিষয়টি সকলের নজরে আসে। তিনি জানান, গত ১৭ মে কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার ২ নম্বর ব্লক দিয়ে বাংলাদেশের খুলনা জেলার বাগেরহাটের রায়ান্দা শরণখোলার উপজেলার খোন্তাকাটা গ্রামের বাসিন্দা মুনির শরীফ, তার স্ত্রী ও ছেলে রমজান আলীসহ ১০-১৫ জনের একটি দল কাজ শেষে অবৈধভাবে দালালের মাধ্যমে গোপনে বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল। এসময় বিএসএফ টহলদল বিষয়টি টের পেয়ে স্টান গ্রেনেড ছুঁড়ে । এসময় স্টান গ্রেনেড রমজান আলীর শরীরের উপর এসে পরলে তার পাজরে ও পেটে আঘাত লাগে। অপরদিকে রমজান আলীর বাবা-মা ও অন্যান্যরা কাটাতারের বেড়া টপকিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। পরে বিএসএফ আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে ভারতীয় পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম: অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৫ ভারতীয়কে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ
শিশু রমজান আলী জানায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজের সন্ধানে তারা ভারতে যায়। এরপর তার বাবা শরীফ মুনির বেঙ্গালুরুতে কাজ পেয়ে সেখানে পরিবারসহ অবস্থান নেয়। দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থানের পর গত ১৭ মে ঝড়-বৃষ্টির রাতে দিনহাটা থানা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় রমজান আহত অবস্থায় বিএসএফ’র কাছে ধরা পরে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী ও বর্ডার ভিকটিমস রেসকিউ লিগ্যাল এসিসট্যান্স ফোরামের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস. এম আব্রাহাম লিংকন জানান, আমরা উভয় পক্ষ শিশুকে দেশে ফেরাতে ভারত সরকার, দিল্লি, কলকাতা ও আসামস্থ বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছি। এছাড়াও পশ্চিম বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ মাসুম, ভারতীয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ উভয় দেশের গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
মানবিক বিষয় বিবেচনা করে শিশুটিকে জেলে না রেখে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে অনুপ্রবেশকালে ঝিনাইদহে আটক ১০
৫ ভারতীয় নাগরিক ফের কুড়িগ্রাম কারাগারে
বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় ৫ নাগরিককে দেশে পাঠানোর উদ্যোগ বাতিল হয়ে গেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র না পাওয়ার কথা জানিয়ে তাদেরকে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার সময় পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পুনরায় কুড়িগ্রাম কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের জেল সুপার মো. ইসমাইল হোসেন।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস.এম আব্রাহাম লিংকন জানান, মাদক বহন ও পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাত ভারতীয় নাগরিককে আটক করে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। দীর্ঘ কারাভোগের পর সাজার মেয়াদ শেষ হলেও আসামি হস্তান্তরের জটিলতায় এদের কেউ কেউ ছয়মাস থেকে একবছর ধরে বিনা বিচারে কারাগারে ছিলেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম: অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৫ ভারতীয়কে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ
মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ পাঁচ ভারতীয় নাগরিককে পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর চেকপোস্ট দিয়ে বিএসএফ’র কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেয়। তবে কাগজপত্রের জটিলতার কারণে তাদেরকে চেকপোস্ট থেকে আবারও কুড়িগ্রাম কারাগারে নেয়া হয়েছে।
এর ফলে এই ৫ নাগরিক ছাড়াও আরও ২ ভারতীয় নাগরিককে এখন সাজাভোগের পর বিনা অপরাধে কারাগারে সাজাভোগ করতে হবে।
বুড়িমারী চেকপোস্ট থেকে ফেরত প্রদানকারী ৫ ভারতীয় নাগরিক হলেন, কুচবিহার জেলার আলম মিয়া, আসামের ধুবরী জেলার মো. নুরুজ্জামান, দক্ষিণ মাইনকারচর জেলার সেলিম মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম ও মাহা আলম শেখ।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে অনুপ্রবেশকালে ঝিনাইদহে আটক ১০
জাফলংয়ে গুলিতে নিহত যুবকের লাশ হস্তান্তর করলো বিএসএফ
সিলেটের গোয়াইনঘাটে খাসিয়াদের গুলিতে নিহত যুবক মো. কবির হোসেনের (৩২) লাশ হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার পশ্চিম জাফলং সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এই লাশ হস্তান্তর করা হয়।
নিহত কবির হোসেন পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের চম্পকনগর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে।
বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চম্পকনগর গ্রামের কবির হোসেন, সেলিম মিয়া ও কামিল মিয়া মিলে মায়াবতী ঝর্ণার পাশ দিয়ে ভারতীয় সীমানার ভেতর মায়াবতী এলাকায় ঢুকে পড়েন। এর মিনিট দশেক পরে ভারতীয় খাসিয়ারা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। সেসময় সেলিম ও কামিল দৌড়ে বাংলাদেশ সীমান্তে চলে আসেন। কিন্তু কবির হোসেন আসতে পারেননি।
আরও পড়ুন: পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
২৬ মে দুপুরে মায়াবতী ঝর্ণার পাশে কবির হোসেনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। বিষয়টি গোয়াইনঘাট থানা পুলিশকে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন।
লাশ ভারতীয় এলাকায় থাকায় বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করে বিজিবি। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
লাশ হস্তান্তরে বিজিবি ও বিএসএফের ক্যাম্প কমান্ডারগণ ছাড়াও গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) উপস্থিত ছিলেন।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) ওমর ফারুক মোড়ল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
কুষ্টিয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
হিলি সীমান্তে বিএসএফকে বিজিবির মিষ্টি উপহার
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কে মিষ্টি উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার ১২টার দিকে সীমান্তের চেকপোস্টর শূন্য রেখায় বিজিবির হিলি সিপি ক্যাম্পের সুবেদার মোকলেছুর রহমান ভারতের হিলি বিএসএফের ক্যাম্পের এএসআই বালকিশানের হাতে পাঁচ প্যাকেট মিষ্টি তুলে দেন।
আরও পড়ুন: বাংলা নববর্ষ: হিলি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
পরে দুই বাহিনীর পক্ষ থেকে একে অপরের কুশল বিনিময় করেন।
বিজিবির হিলি সিপি ক্যাম্পের সুবেদার মোকলেছুর রহমান জানান, সীমান্তে সোহার্দ-সম্প্রতি ও ভ্রাতত্ববোধ বজায় রেখে বিজিবি ও বিএসএফ তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে এবং দুইবাহিনীর মধ্যে বিরাজমান সুসম্পর্ক যেন আরও জোরদার হয় সেই লক্ষে মিষ্টি উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়েছে। এসময় বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো হয়।