বিএসএফ
ফেলানী হত্যার ১১ বছর: ন্যায় বিচারের প্রতীক্ষায় পরিবার
কুড়িগ্রাম সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পায়নি তার পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নুর ইসলামের সাথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন ফেলানী। এসময় মই বেয়ে কাঁটাতার পেরোনোর সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। বাবা নুর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারে।
পরে এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় নিজ বাহিনীর আদালত।
ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।
এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা ও মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ ব্রেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনও ন্যায় বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।
ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকের কাছে আমারা গিয়েছি, কিন্তু ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পেলাম না।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ফেলানীর বাড়িতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুই দুই বার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ননা দিয়েছি। তারপরও ন্যায্য বিচার পাইনি। তবে ভারতের সুপ্রীম কোর্টে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা ছাড়িনি।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডে পিতা নুর ইসরামের আইন সহায়তাকারী কুড়িগ্রাম পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, একাধিকবার তারিখ বদলের পর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতরে সুপ্রিম র্কোটের বিচারপতি এন ভি রামানা ও বিচারপতি মোহন এম সান্তনা গৌদ্ধারকে নিয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য আইটেম নম্বর-৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অথচ সুপ্রিম র্কোট থেকে বিবাদীকে শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা শোকজের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু পরর্বতীতে আর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। বর্তমানে কার্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে আছে রিটটি। করোনার কারণে রিটটির সর্বশেষ অবস্থা জানেন না তিনি।
অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন ন্যায্য বিচারের আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘জেনারেল সিকিউিরিটি ফোর্স কোর্টে বাদী ছিল বিএসএফ, আসামি ছিল বিএসএফ এবং বিচারকও ছিল বিএসএফ। ফলে ন্যায্য বিচার পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম কোর্টে ন্যায্য বিচার পাওয়া যাবে। আর এই রিট নিস্পত্তি করতে সুপ্রিম কোর্ট যে পর্যবেক্ষণ দেবেন তাতে দু-দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে প্রত্যাশা করছি।’
প্রসঙ্গত, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম পরিবার নিয়ে ভারতে থাকতেন এবং সেখানে ইট ভাটায় কাজ করতেন। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর রামখানার কলোনীটারী গ্রামে মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েঠিল। তাই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে ২০১১ সালরে ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হন বাংলাদেশে। ৭ জানুয়ারি এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আরও পড়ুন: শিবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের অভিযোগ
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী: হিলি সীমান্তে বিএসএফকে বিজিবি’র মিষ্টি উপহার
শিবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের অভিযোগ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার আজমতপুর বাগিচাপাড়া সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইব্রাহিম (২৪) শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের আজমতপুর ঢুলিপাড়া এলাকার আবু তাহেরের ছেলে।
নিহতের চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে ইব্রাহিম সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিল। সকালে আমরা জানতে পারি বিএসএফের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। তবে লাশ সীমান্তের ওপারে ভারতীয় অংশে পড়ে আছে।
আরও পড়ুন: মহেশপুর সীমান্তের ওপারে বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের অভিযোগ
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক জানান, দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির লাশ বিএসএফের কাছে রয়েছে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আমির হোসেন মোল্লা জানান, আজমতপুর বাগিচাপাড়া সীমান্তের ১৮২/২-এস নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় ভারতীয় অংশে গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে নিহত ব্যক্তি বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে কি না বা বাংলাদেশি কি না এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: নওগাঁও সীমান্ত থেকে বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
কালীগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফ'র গুলিতে ২ যুবক নিহতের অভিযোগ
বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার
বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিষ্টি উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আরও পড়ুন: হিলি বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সীমান্তের চেকপোস্ট গেটে জয়পুরহাট ২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে বিজিবির হিলি সিপি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার ইয়াসিন আলী ভারতের হিলি বিএসএফ ক্যাম্পের কমান্ডার সিতারাম সিংয়ের হাতে তিন প্যাকেট মিষ্টি তুলে দেন।
এ সময় বিজয় দিবসের শুভেচ্ছাসহ কুশল বিনিময় করেন তারা। সেখানে বিজিবি ও বিএসএফের নারী ও পুরুষ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতে চামড়া পাচাররোধে হিলি সীমান্তে সতর্কতা
বিজিবি জানায়, সীমান্তে দায়িত্বরত দুই বাহিনী তাদের মাঝে বিরাজমান সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে হিলি সীমান্তে বিভিন্ন জাতীয় ও ধর্মীয় উৎসবগুলোতে একে অপরকে মিষ্টিসহ বিভিন্ন উপহার দিয়ে থাকে।
ছোটখাটো সমস্যা বিজিবি-বিএসএফ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যেতে পারে: শ্রিংলা
বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তে ঘটা ছোটখাটো সমস্যা দু’দেশের সীমান্ত বাহিনীর বৈঠকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত আলোচনার মাধ্যমে সব বড় সমস্যা নিষ্পত্তি করেছে। দু’দেশের সীমান্তে ঘটে এমন কিছু ছোটখাটো ঘটনা বিজিবি ও বিএসএফ বৈঠক করে সমাধান করতে পারে।’
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শ্রিংলা বলেন, আমরা এ সমস্যার সমাধান চাই। প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে একমত হয়েছেন বলে জানান করিম।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা বিব্রতকর: শ্রিংলাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কোভিড -১৯ মহামারির ধাক্কা থেকে পুনরুদ্ধারের পর ভারতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। এছাড়া করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে তারা সতর্ক আছেন বলেও জানান তিনি।
শ্রিংলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির শুভেচ্ছা জানান। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মাধ্যমে শেখ হাসিনাও মোদিকে শুভেচ্ছা জানান।
কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং ভারতেও ভালো প্রবৃদ্ধি রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রিংলা বলেন, ‘এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশেষ বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ।’
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর জাতিসংঘে ভারত ও বাংলাদেশ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি যৌথ ছবি প্রদর্শনীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব।
নতুন প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের বাংলাদেশ সফর দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: ভারত
শিলিগুড়ি-পার্বতীপুর, ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-জলপাইগুড়ি রেল যোগাযোগ পুনরায় স্থাপনের ওপরও জোর দেন শ্রিংলা।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশও কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ও পরিবারের সদস্যদের বন্দিত্বের দিনগুলো স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের স্বীকৃতি তাদের অভিভূত করেছিল বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন যা দুই দেশের জন্য উপকারী হবে।
বাংলাদেশে ৯৯ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘যেখানে গ্রিড লাইন নেই সেখানে সৌরবিদ্যুতের সহায়তা দিচ্ছে সরকার।’
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি উপদেষ্টা অশোক মালিক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আগামী ৫০ বছরে দু’দেশকে অনেক কিছু করতে হবে: দোরাইস্বামী
নওগাঁও সীমান্ত থেকে বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
নওগাঁর পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্ত থেকে মনিরুল ইসলাম নামে এক বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার ভোর রাতে ভারতের কেদারীপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে যায়।
এরপর সকালে ভারতের মালদা জেলার হরিপুর থানায় মামলা দায়ের শেষে পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বিজিবিকে নিশ্চিত করেছে বিএসএফ।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফ'র গুলিতে ২ যুবক নিহতের অভিযোগ
বিএসএফের হাতে আটক মনিরুল ইসলাম উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নওগাঁর ১৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল কবির জানান, শুক্রবার রাতে নওগাঁর নিতপুর সীমান্ত দিয়ে স্থানীয় আটজন চোরাকারবারি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে গরু-মহিষ আনতে যান। এরপর তারা শনিবার ভোররাতে গরু-মহিষ নিয়ে বাংলাদেশে ফেরার পথে ভারতের মালদা জেলার হরিপুর থানার ভুতপাড়াগ্রাম এলাকায় কেদারিপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় অন্যরা পালিয়ে আসতে পারলেও মনিরুল ইসলামকে কয়েকটি গরুসহ আটক করে তারা। এরপর শনিবার সকালে ভারতের মালদা জেলার হরিপুর থানায় মামলা দায়ের শেষে পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বিজিবিকে নিশ্চিত করেছে বিএসএফ।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশিদের বাড়িতে বিএসএফ’র হামলার অভিযোগ
তিনি জানান, ঘটনাটি জানার পর বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সীমান্ত হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক আইনে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান বিএনপির
ভারতীয় সীমান্তে বাংলাদেশিদের অগ্রহণযোগ্যভাবে হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ঢাকা, সিলেট ও লালমনিরহাটে তিন দিনের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
তিনি জানান, কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৮ নভেম্বর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে এবং পরদিন সিলেটের কানাইঘাটে তাদের দল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক আর ভারতের জন্য লজ্জা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও জানান, সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে আগামী ২০ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনেও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
ফখরুল বলেন,তাদের বৈঠকে কালিগঞ্জ ও কানাইঘাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ)কর্তৃক সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশিদের হত্যার তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।
সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে ভারত সীমান্তে গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আমরা কোনো সীমান্তেই প্রাণহানি চাই না: ভারতীয় হাইকমিশনার
বিএনপি নেতা বলেন, সীমান্ত হত্যা ইস্যুতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করেছে তাদের স্থায়ী কমিটি। তিনি বলেন, চোরাচালান বন্ধে সীমান্তে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না।আমরা সরকারকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
আমরা কোনো সীমান্তেই প্রাণহানি চাই না: ভারতীয় হাইকমিশনার
সীমান্তে হত্যা বন্ধে বিএসএফকে নির্দেশনা দেয়া আছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, ভারত কখনোই চায় না কোনো সীমান্তে প্রাণহানি ঘটুক। সোমবার দুপুরে দিনাজপুরে একটি অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বিএসএফ কখনো কোন বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় না। কিন্তু অনুপ্রবেশসহ সীমান্ত সুরক্ষায় এবং কখনো কখনো নিজের আত্মরক্ষার্থে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে গুলি চালাতে বাধ্য হতে হয়।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক আর ভারতের জন্য লজ্জা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করলে সীমান্তে অনাকাংখিত ঘটনা বা প্রাণহানি শুন্যে নেমে আসবে বলে তিনি জানান।
এর আগে (সকালে) দিনাজপুর শহরের রায়সাহেব বাড়ীতে শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দির মাল্টিপারপাস কমিউনিটি হল উদ্বোধন উপলক্ষে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন ভারতীয় হাইকমিশনার।
এছাড়াও দিনাজপুরের কান্তজীউ মন্দির পরিদর্শনসহ ৮টি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ দ্রুত ও জরুরিভাবে টিকা পাবে: ভারতীয় হাইকমিশনার
সিলেট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার ডোনা সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে দুটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তারা পুলিশ ও বিজিবিকে বিষয়টি অবহিত করেন।
নিহতরা হচ্ছেন সীমান্তবর্তী এলাগুল গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে আসকর আলী (২৫) ও একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে আরিফ হোসেন (২২)।স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গুলিতে আরও দুজন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে দিন গড়িয়ে বুধবার দুপুরে লাশ দুটি মানুষের নজরে আসে।বিজিবি ও থানা পুলিশ সীমান্ত আইন মেনে নিহতদের লাশ উদ্ধারের চেষ্টায় রয়েছেন বলে বিজিবির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।নিহত আসকর ও আরিফ হুসেনের স্বজনরা জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের দিকে তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় লালবাজারে যায়। এরপর তারা আর বাড়িতে ফিরেনি। সীমান্ত এলাকার অনেকে ধারণা করছেন আসকর ও আরিফ মঙ্গলবার রাতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উকিয়াং এলাকায় অনুপ্রবেশ করতে পারে। এসময় তাদের গুলি করে বিএসএফ অথবা ভারতীয় অস্ত্রধারী খাসিয়ারা হত্যা করে তাদের লাশ নোম্যান্স ল্যান্ড ১৩৩১ মেইন পিলারের পাশে ফেলে রাখতে পারে। দুপুরে তাদের গুলিবিদ্ধ লাশ অনেকে দেখে তাদের পরিচয় শনাক্ত করেন।
আরও পড়ুন:সিলেটে রেস্টুরেন্ট মালিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কামান্ডার নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি ঘটনাটি বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। বিএসএফ এর গুলিতে তারা মারা গেছেন কি না তা এখনো তিনি বলতে পারবেন না। সীমান্ত আইন মেনে বিজিবি নিহতদের লাশ উদ্ধার করবে বলে জানান তিনি।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, দুপুরে স্থানীয়রা নো ম্যানস ল্যান্ডে দুটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ ও বিজিবিকে জানিয়েছেন।তিনি বলেন, এলাগাগুল দরিদ্র প্রধান এলাকা। এখানকার কিছু লোক প্রায়ই সুপারিসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাই পথে নিয়ে আসতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। নিহতরাও একইভাবে ভারতে গিয়েছিল কি না তা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।নিহতদের লাশ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে ওসি বলেন, যেহেতু লাশগুলো নো ম্যানস ল্যান্ডে রয়েছে। তাই বিজিবির কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন এবং লাশ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:সিলেট-তামাবিল সড়কে কার-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
ভ্যালি সিটি: পূণ্যভূমি সিলেটে বাংলাদেশের লন্ডনি পাড়া
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ভারতীয় চোরাকারবারীর লাশ হস্তান্তর
রাজশাহী সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে ধরা পড়ার পর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে মারা যাওয়া ভারতীয় চোরকারবারী ভরত মণ্ডলের (৩৩) লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরের দিকে বিজিবির রাজশাহীর ১০ নম্বর পদ্মার চর সীমান্ত ফাঁড়ির আওতাধীন ১৫৯/২এস সীমান্ত পিলারের কাছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ ও পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। বিজিবি, রাজশাহীর নৌ-পুলিশ, কাটাখালী থানা পুলিশ লাশ হস্তান্তর করে। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
ভরত মণ্ডল ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার রানিনগর থানার চকরাজাপুর পশ্চিম কলোনি গ্রামের তারপদ মণ্ডলের ছেলে। গত ২ অক্টোবর দিবাগত রাতে ফেনসিডিল নিয়ে রাজশাহী সীমান্তে এসে তিনি বিজিবির হাতে ধরা পড়েন। এরপর নৌকা থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিলে পানিতে ডুবে তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: বিজিবির ফাঁকা গুলি, অস্ত্র ফেলে পালালো ভারতীয় চোরাকারবারীরা
পরদিন রাজশাহী সীমান্তেই তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এরপর সেটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর হিমঘরে রাখা হয়েছিল। ওই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে বিজিবি।
বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমেদ বলেন, লাশ হস্তান্তরের আগে কিছু আইনগত প্রক্রিয়া আছে। সেগুলো শেষ করেই লাশ হস্তান্তর করা হলো।
আরও পড়ুন: চোরাকারবারীদের হামলায় বিজিবি সদস্য আহত
চুয়াডাঙ্গায় ভারতীয় রুপার গহনাসহ চোরাচালানি আটক: বিজিবি
ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশিদের বাড়িতে বিএসএফ’র হামলার অভিযোগ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বাংলাদেশিদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তর কুটিচন্দ্রখানা নাখারজান গ্রামে হামলার এই ঘটনা ঘটে।
এ সময় বিএসএফ সদস্যরা টানা হেচড়া করে বাড়ির মালিকসহ আরও তিন জনকে লাঞ্ছিত করেছে। এ নিয়ে বিজিবি বিএসএফের সাথে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে চোরাকারবারীদের ধাওয়া করতে গিয়ে ভুলবশত বাংলাদেশে রাতের অন্ধকারে প্রবেশ করেছেন বলে বিজিবিকে তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
স্থানীয় জায়দুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীমান্তে আন্তর্জাতিক ৯৪১ নং মেইন পিলারের সন্নিকটে দু’দেশের মাদক চোরাকারবারীরা মালামাল পার করার সময় ভারতীয় ১৯২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধীন সেউটি-২ ছাবরী ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফের সদস্যরা তাদেরকে ধাওয়া করে। মাদক চোরাকারবারীরা তাদের ধাওয়া খেয়ে বাংলাদেশের নাখারজান গ্রামে ঢুকে পড়ে। এ সময় বিএসএফের সদস্যরা তাদের পিছু নেন। পরে ওই গ্রামের নিরহ রফিকুল ইসলাম বাড়িতে সন্দেহ করে গেট খোলার জন্য চাপ দেয় বিএসএফের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
হামলার শিকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিএসএফকে বলেছি মাদক চোরাকারবারীরা আমার বাড়িতে প্রবেশ করেনি। তারপর আমার ঘরের বেড়ার টিন গেট ভাঙচুর করেছে। পরিবারের সদস্যকে লাঞ্ছিত করে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেছে। পরে এলাকার লোকজন জড়ো হলে তারা দ্রুত ভারতে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বাংলাদেশি ২ যুবককে বিএসএফ’র মারধর
এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম তৌহিদুল আলম জানান, ভুলবশত বিএসএফ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমরা প্রতিবাদ জানানোর কারণে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারা ভুল স্বীকার করেছেন। আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে তারা জানিয়েছে। তবে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।