দুর্নীতি
মহামারির মধ্যে দুর্নীতি জীবনকে মূল্যহীন করে তুলেছে: বিএনপি
স্বাস্থ্য খাতে 'ব্যাপক দুর্নীতির' কারণে সরকার টিকা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় জনগণের জীবন মূল্যহীন হয়ে উঠেছে বলে রবিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে করুণ অবস্থা। এখন পর্যন্ত জনগণের করোনার টিকার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, এই টিকার সাথে, স্বাস্থ্য খাতের যারা জড়িত, তারা সবাই দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়ে গেছেন।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় জামিনে মুক্ত
জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জিয়া পরিষদ-কেন্দ্রীয় কমিটি’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
সরকার দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করে পরিকল্পিত উপায়ে অর্থনীতি ধ্বংস করেছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘তারা মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে জনসাধারণের অর্থ লুট করছে। ১০ হাজার কোটি কোটি টাকার একটি প্রকল্প ৫০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে পরিণত হচ্ছে, এভাবেই তারা অর্থ উপার্জনের সরঞ্জাম হিসাবে মেগা প্রকল্পগুলো তৈরি করছে।’
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
তিনি বলেন, ‘সরকার গেট তৈরি করার জন্য টাকা দিয়েছে। স্কুল-মাদরাসা সব জায়গায় বড় বড় গেট নির্মাণ করতে হবে। এই মুহূর্তে গেট নির্মাণের চেয়ে ট্রান্স রুট নির্মাণ করা বেশি দরকার। তবে তারা এটি করছে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, সামাজিক অপরাধের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন দেশে মানুষের নিরাপত্তা নেই। খবরের কাগজ খুললেই দেখা যায় ভয়াবহ হত্যার ঘটনা। আজকের (রবিবার) পত্রিকায় যে ঘটনাটি এসেছে তা হলো একটি মেয়ে তার বাবা-মা এবং বোনকে হত্যা করেছে। এই জাতীয় ঘটনাগুলো দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে।’
আরও পড়ুন: পরীমণির ঘটনায় সন্দেহের গন্ধ খুঁজছে বিএনপি
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ও কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করেছেন।
দুর্নীতি আমাকেও মর্মাহত করে: অর্থমন্ত্রী
আগামী ৬ মাসের মধ্যে অর্থপাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান কয়েকটি আইনের সংশোধনসহ আরও ১৫টি আইন সংসদে পাস করা হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দুর্নীতি দেখলে অন্যদের মতো তিনিও মর্মাহত হন।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সংসদে এই আইনগুলো পাস হওয়ার পর আপনারা দুর্নীতির যথেষ্ট অবনতি দেখতে পাবেন।’
আরও পড়ুন: করোনায় ২.৫ কোটি মানুষ দরিদ্র হবার দাবি নাকচ অর্থমন্ত্রীর
অর্থমন্ত্রী জানান, যখন অর্থপাচার দেখেন তখন তিনিও জনগণের মতোই একই কষ্ট অনুভব করেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অর্থ পাচারকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। যারা চিহ্নিত ছিল তাদের কারাগারে সাজা দেয়া হয়েছে বা বিচার চলছে।’
মন্ত্রী বলেন, দুটি কারণে অর্থপাচার হয়, প্রথমত অনেকেই এটিকে বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম মনে করেন, দ্বিতীয়ত লোভের কারণে অনেকেই এটি করে থাকে।
আরও পড়ুন: বাজেট: ক্রমবিকাশের পথে সুবিধা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেলেন অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা যদি বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ তৈরি করতে পারি তাহলে যারা বাইরে বিনিয়োগ করেন তারা তা দেশে করবেন।
এর আগে ৭ জুন সংসদে মন্ত্রী বলেন, ‘এমন একটা সময় ছিলে যখন সিমেন্টের নাম করে বালু আসত। এক পণ্যের নাম করে আরেকটা পণ্য আসত। তবে এখন আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং খুব কমই হয়। তবে একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলব না। আমরা পত্রপত্রিকায় এমন খুব কমই দেখতে পাই।’
আরও পড়ুন: আর্থিক খাতে দুর্নীতির ব্যাপারে সরকারের জিরো টলারেন্স: অর্থমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'আমি জানি কীভাবে এগুলো হয়, তবে কারা করে জানি না। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অকার্যকারী ব্যবস্থাপনার কারণে এগুলো হয়। এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে।' ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিতে নতুন নতুন আইন করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
আর্থিক খাতে দুর্নীতির ব্যাপারে সরকারের জিরো টলারেন্স: অর্থমন্ত্রী
আর্থিক খাতে অনিয়মের ব্যাপারে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে আগামী এক বছরের মধ্যে ১৫টি আইন প্রণোয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার ২০২১-২২ রাজস্ব বছরের বাজেটে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জন্য মঞ্জুরি দাবির প্রেক্ষিতে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে গেলে আপনাদের মতো আমারও খারাপ লাগে। আমি সর্বদা যে কোনো পরিস্থিতিতে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই এবং আমাদের সরকারও এগুলো বন্ধ করতে চায়।’
আরও পড়ুন: বর্তমানে বাংলাদেশ 'বিস্ময়ের বিস্ময়’: অর্থমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, এমন একটা সময় ছিলে যখন সিমেন্টের নাম করে বালু আসত। এক পণ্যের নাম করে আরেকটা পণ্য আসত। তবে এখন আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং খুব কমই হয়। তবে একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলব না। আমরা পত্রপত্রিকায় এমন খুব কমই দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, 'আমি জানি কীভাবে এগুলো হয়, তবে কারা করে জানি না। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অকার্যকারী ব্যবস্থাপনার কারণে এগুলো হয়। এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে।' ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিতে নতুন নতুন আইন করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
বিরোধী দলের সাংসদদের উদ্দেশে মুস্তফা কামাল বলেন, 'কারা অর্থপাচার করে তাদের নাম যদি আপনারা জেনে থাকেন তবে আমাদের জানান। আমাদের মতো এই সংসদে আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে, আপনারা যদি আমাদের সাহায্য করেন তবে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হয়ে যাবে।'
বাজেটে জীবন, জীবিকার সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট রূপরেখা নেই: সিপিডি
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করোনা থেকে সুরক্ষা এবং করোনার কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলো মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট কোনও রূপরেখা দেওয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।
শুক্রবার আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিয়ে পর্যালোচনায় এসব কথা জানায় সিপিডি।
সিপিডির কার্যনিবাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেটে জীবন ও জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জরুরি সংশোধন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়িয়ে কীভাবে এটি সম্ভব হবে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ধারণা তুলে ধরা হয়নি।
আরও পড়ুন: বাজেট: কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ না দেয়ায় টিআইবির সাধুবাদ
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গতবারের মতো এবারের বাজেটেও করোনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়েছে, তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গৃহীত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং বরাদ্দের সাথে এর কোনও মিল নেই।
তিনি আরও বলেন, আশা করা হয়েছিলে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ আরো বৃদ্ধি করা হবে কিন্তু তেমনটা হয়নি।
স্বাস্থ্য খাতে সেবার মান বাড়ানো এবং বরাদ্দগুলোর যাতে সঠিক প্রয়োগ হয় সেজন্য স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম এবং দুর্নীতি দূর করতে হবে এবং এক্ষেত্রে দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
এছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ পর্যাপ্ত নয় বলেও মন্তব্য করেন ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডি মনে করে, সামাজিক নিরাপত্তার সিকি অংশ ব্যয় করা হয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের প্যানশনের জন্য।
দেশের কৃষি ক্ষেত্রে সামগ্রিক বরাদ্দের পরিমাণ কমেছে, তবে এ খাতের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
সিপিডির কার্যনিবাহী পরিচালক জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অনেকেই যেহেতু চাকরি হারিয়েছে সেহেতু কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এই সংক্রান্ত অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে বরাদ্দ কমেছে। বিপুল সংখ্যক তরুণ কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে, কিন্তু তাদের জন্য সুযোগ খুব কম।
তিনি বলেন, যেহেতু করোনার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম অনেক দিন ধরেই ব্যাহত হচ্ছে সেহেতু সরকারের উচিৎ ছিলে শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এ ব্যাপারে বরাদ্দ খুবই নগণ্য।
শ্রীপুর পৌরসভায় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দুই অর্থ বছরে কর আদায় করে সরকারি তহবিলে জমা না দিয়ে ওই টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।
এ ঘটনায় পৌরসভার গঠিত তদন্ত কমিটি তিনজন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে জড়িতদের থেকে অর্থ আদায় ও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। এর আগেও এই পৌরসভায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে দুদুকে।
আরও পড়ুন: কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামে রেল কর্মকর্তা আটক
তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আজগর জানান, কমিটি গঠনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর সোমবার প্রতিবেদন জমা দেন তারা। ১ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতে জড়িতরা হলেন- কর আদায়কারী মো. শফিউল আলম রায়হান, সহকারী কর আদায়কারী ফাহিমা সানজিদা ও জান্নাতুল ফেরদৌস।
সোমবার পৌর মেয়রের কাছে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আত্মসাৎ করা টাকার মধ্যে ফাহিমা সানজিদ ৫২ লাখ ও জান্নাতুল ফেরদৌস নিয়েছেন দুই লাখ ৩৬ হাজার। বাকি সব টাকা গেছে রায়হানের পকেটে। পৌরসভার এই অর্থ আদায় ও জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় চাল আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান কারাগারে
কাউন্সিল আজগর আলীকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- পৌর সচিব সরকার দলীল উদ্দিন আহম্মেদ, হিসাব কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী ও রফিকুল ইসলাম।
পৌর হিসাবরক্ষক ইদ্রিস আলী জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরের আদায়কৃত রশিদ জমা দেয়ার জন্য কর আদায়কারী শফিউলকে লিখিতভাবে আদেশ দিলেও জমা দেননি। এছাড়া তিনি হিসাব শাখার প্রত্যয়ন ব্যতীত রশিদ বই ইস্যু না করার জন্যও স্টোরকিপার তৌফিককে লিখিত নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা তা মানেননি।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ২.১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংক কর্মকর্তা আটক
পরে পৌর সচিব দলিল উদ্দিনের নেতৃত্বে কার্যালয়ে আলমারি খুলে কর আদায় রশিদের কয়েকটি পাতায় গরমিল দেখা যায়। শফিউল রশিদগুলোর মাধ্যমে আদায়কৃত রাজস্ব পৌর তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়।
নবীনগরে পাড়ের মাটি কেটেই খাল খনন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল বাজারে খাল পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খালের তলদেশ খনন না করে শুধু পাড়ের মাটি কেটে প্রস্থ বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খালপাড়ের বাসিন্দারা।
সেই মাটি আবার খালের পাড়েই ফেলার কারণে আসন্ন বর্ষায় মাটি ধ্বসে ফের খাল ভরাট হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে কোন লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
আরও পড়ুন: সালথায় পাউবোর খাল পুনঃখনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ
বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, 'দেশের ৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় আমাদের এখানে খাল খনন করতে প্রায় ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বড়াইল, খারঘর ও জালশুকা এই তিনটি গ্রামের প্রায় ৩০ একর কৃষি জমিতে পানি সেচ এবং খরা মৌসুমে খালে পানি সংরক্ষণের জন্য এই খালটি পুনঃখনন অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু খাল খননের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ময়মনসিংহের এম/এস এম রহমান এন্টারপ্রাইজ নিজেরা কাজ না করে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আল-আমিন নামের এক ঠিকাদারের সঙ্গে এটি খননের ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হন।
তিনি বলেন, ভৈরবের ঠিকাদারও নিজেরা কাজ না করে স্থানীয় খারঘর গ্রামের ব্যবসায়ি মুজিবুর রহমানকে খাল খননের দায়িত্ব দেন। এভাবে হাত বদলের পর দায়সারাভ খনন কাজ করে নদীর পানি খালে ছেড়ে দেয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টদের নির্লিপ্ততা ও খামখেয়ালির কারণে খননকাজ ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে অভিযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, 'সরকারের এই টাকা যে জলে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে অসময়ে যমুনার ভাঙনে বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খালটি খননের ক্ষেত্রে নিয়মের ধার-ধারেনি ঠিকাদার। পাউবোর লোকজন সঠিক সময়ে খনন কাজও তদারকি করেনি। বড় আকারের ভেকু মেশিনের সাহায্যে খনন করার কথা থাকলেও ছোট মেশিনে খনন করে মাটি উত্তোলন করে দূরে না ফেলে পাড়েই রেখে দেয়ায় সামান্য বৃষ্টি হতে না হতেই কিছু কিছু অংশের মাটি ধ্বসে গেছে।
গত ২৭ মে খাল পুনঃখনন কাজ পরিদর্শন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রঞ্জন কুমার দাসসহ অন্য দুজন প্রকৌশলী।
রঞ্জন কুমার দাস বলেন, 'স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সার্ভে করা হয়। খাল খনন প্রকল্পের শিডিউলে ২০০০ ঘনমিটার মাটি কাটার কথা উল্লেখ আছে, কিন্তু সার্ভেতে ১৬০০ ঘনমিটার পাওয়া গেছে। মাটি কম কাটার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।'
আরও পড়ুন: দাকোপে কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে নদী-খাল খননের দাবি
বড়াইল গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, 'যারা কাম করছে তারা কইছিল পরে পাড়ের মাডি দূরে সরাইয়া খাল আরও গভীর কইরা দিবে। কিন্তু তারা এইডা না কইরা নদীরপানি হালে (খাল) ছাইড়া দিছে।'
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে খনন কাজে নিয়োজিত মুজিবুর রহমান বলেন, ‘খাল খননের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম করা হয়নি।’
এলাকার একটি কুচক্রী মহল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।
সালথায় পাউবোর খাল পুনঃখনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ
ফরিদপুরের সালথায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতায় দুটি খাল পুনঃখননের কাজ শুরু হলেও কাজের মান নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
খনন যন্ত্র নিয়ে (এসকেবেটর) খাল খনন করে মাটি ফেলানো হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমিতে। এতে সোনলি আশ নামে খ্যাত জমিতে থাকা পাটের ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পাট চাষিরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, খরা মৌসুমে খালে পানি সংরক্ষণ ও কৃষি জমিতে পানি সেচের জন্য ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সমন্বিত পানি ব্যবস্থা প্রকল্প’র অধীনে গত ২৯ এপ্রিল থেকে পাউবোর উদ্যোগে এ দুটি খালের পুনঃখনন কাজ শুরু হয়।
উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের সিংহপ্রতাপ এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িদিয়া নদী থেকে বাইনাখালি পর্যন্ত ১ হাজার ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট রাজাবাড়ি খাল এবং মোড়হাট এলাকা দিয়ে বয়ে যওয়া কুমার নদী থেকে দীঘের বিল পর্যন্ত ১ হাজার ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্য কেষ্টখালি খালের খননকাজ চলছে। এ খনন কাজ বাস্তবায়ন করছেন কুমিল্লার ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত মেসার্স সারা এন্টারপ্রাইজ।
খাল দুটি পুনঃখনন কাজের জন্য ৬৩ লাখ ৬২ হাজার ৪০২ টাকায় বাস্তবায়ন করার কথা তাকরেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ৪১ ভাগ ছাড়ে কাজটি নিয়েছেন ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৮১৮ টাকায়। এ খনন কাজ আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা। তবে গতকাল ৩০ মে পর্যন্ত ওই কাজের ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন এ কাজের তদারকিতে নিয়োজিত পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী।
গট্টি ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলু এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য দ্বয় মোশাররফ হোসেন ও শাহজাহান মাতুব্বর অভিযোগ করে বলেন, রাজাখালি ও কেষ্টখালি খাল খনন কাজ করা হচ্ছে দুটি খনন যন্ত্র দিয়ে। কাজের সাইডে প্রকল্পের ঠিকাদার বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো তদারকি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেখা যায় না। কেষ্টখালি ও রাজাবাড়ি খাল খননে উপরে প্রস্থ ৪৪ থেকে ৪৫ ফিট করে কাটার কথা থাকলেও বাস্তবে কোথাও কোথাও ২৫ থেকে ৩৫ ফিট করে কাটা হচ্ছে। খালের তলায় প্রস্থ ১৩ থেকে ১৬ ফিট করে কাটার কথা থাকলেও এটিও ১০ থেকে ১২ ফিট করে কাটা হচ্ছে। খাল দুটির গভীরতা সাড়ে ৩ ফিট থেকে ৮ফিট করে খনন কথা থাকলেও বাস্তবে গভীর করা হচ্ছে ২ থেকে ৪ ফিট।
উভয় খালের দুই পাড়ে বসবাসরত বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায়সারা গোছের কাজ করে খালের মাটি ফসলি জমিতে ফেলানোয় পাট, বেগুন-মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। খালের পাড় অত্যন্ত খাড়া করে কাটা হয়েছে। খননের শুরুতেই খালের পাড়ে এলোমেলো করে মাটি রাখা হয়েছে। তাতে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধসে আবার খাল ভরে যাবে।
অভিযোগ রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকজন সঠিক সময়ে তা পরিদর্শন করছেন না।
গট্টি ইউনিয়নের কাউলিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক এসকেন মাতুব্বর (৩৯) কেষ্টখালী খালের পাড়ে কৃষকদের ২০ বিঘা জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১০ বিঘা জমির পাট খালের কাটা মাটির কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
মেম্বার গট্টি গ্রামের বাসিন্দা মো. ওহেদুজ্জামান (৩১) জানান, তার দুই বিঘা জমির ফসল কেষ্টখালী খাল কাটার মাটির নিচে চাপা পড়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেষ্টখালী খালের মাটি রাখার জন্য ওই এলাকার অন্তত ১০ বঘিা জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
একই অভিযোগ এসেছে রাজাবাড়ী খাল খনন এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে।
সিংহ প্রতাপ গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম (৪৩) বলেন, রাজাবাড়ী খালের মাটির কারণে তার ১৪ কাটা জমির বেগুন গাছ চাপা পড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ওই খালের মাটি রাখার জন্য ওই এলাকার অন্তত আট বিঘা জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
খাল দুটির খনন কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, খালের গভীরতা শিডিউল অনুযায়ী শতভাগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে খালের পাশের কিছু জায়গায় ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় শিডিউল অনুযায়ী চওড়া করা যায়নি। কোন কোন জায়গায় কিছু কম করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ কাজ তদারকি করে ওয়াটার বোর্ড টাক্স ফোর্স। আমি একশ ভাগ কাজ করলেও তারা ৯৫ ভাগের বেশি বিল দেয় না।’
কম টাকায় কাজ নেয়ার বিষয়ে ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি ব্যবসার দিকে তাকিয়ে কাজ নেইনি, জেদ করে এবং অন্যকে নিতে দেব না এই মনোভাব নিয়ে কাজ নিয়েছি। খালের মাটি রাখায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। কেননা এ খাতে কোন টাকা বরাদ্দ নেই।’
এই প্রসঙ্গে ফরিদপুর পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অতনু প্রামাণিক বলেন, ‘পাউবো কাজের তদারকি করছে না এ অভিযোগ সঠিক নয়।
তিনি নিজে, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পাউবোর কর্মকর্তারা কাজের তদারকি করছেন বলে জানান।
তিনি বলেন, আপাত দৃষ্টিতে খালের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীরতা সঠিকভাবে করা হচ্ছে বলে তাদের মনে হয়েছে। তবে বিল দেয়ার আগে শিডিউল অনুযায়ী কাজ বুঝে নেয়া হবে। কাজ সিডিউল অনুযায়ী না হলে বিল দেয়া হবে না।
অতনু প্রামাণিক বলেন, খালের মাটি পাশের জমিতেই রাখাতে হবে। তবে মাটির পরিমাণ কম বলে আমরা ইউএনকে দিয়ে জমি ইজারা নেয়ার উদ্যোগ নেইনি।’
মাগুরায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের প্রণোদনার টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
মাগুরায় করোনায় কর্মহীন ৪৩৮ জন শিল্পী কলাকুশলীর জন্য ৪৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের সহায়তা বিতরণ তালিকায় ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার ও একজন সহ সাধারণ সম্পাদকসহ কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে ওই তালিকা তৈরি করা হয়।
বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী নামে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিজ পরিবারের ১৪ জনসহ অন্তত ৫০ জনের নাম দিয়ে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যারা কেউ দুঃস্থও নন, শিল্পীও নন।
আরও পড়ুন: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা: আর্থিক প্রণোদনা পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
একইভাবে শিল্পকলার সংগীত শিক্ষক অজিত রায়ের বিরুদ্ধে একই পরিবারের ৬ জনের নাম দিয়ে ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়াসহ শিল্প সংস্কৃতির সাথে নূন্যতম সংযোগ নেই এমন ব্যক্তিদের নাম দিয়ে লাখ লাখ টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমনকি জেলা শহরে ২টি ফ্ল্যাট ও ২টি বাড়িসহ অন্তত ৩ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিকের স্ত্রীকেও দেয়া হয়েছে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীর প্রণোদনা। এর ফলে অনেক প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পী সহায়তা পাননি। এতে সরকারের এ মহতি উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জেলার শিল্পী সমাজের মধ্যে।
আরও পড়ুন: প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে সিরিজ মতবিনিময় সভা করবে অর্থ বিভাগ
লিখিত এক অভিযোগে জেলার কয়েকজন সাংস্কৃতিক কর্মী ওই তালিকায় শিল্প সাহিত্যের সঙ্গে নূন্যতম যোগাযোগ না থাকা একাধিক ব্যক্তির নাম দিয়ে টাকা উঠিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন।
তারা জানান, তালিকার ২২৯ নং সিরিয়ালে পবিত্র কুমার চক্রবর্তী নামে স্থানীয় একটি কাপড়ের দোকানের সেলসম্যানকে নাট্যশিল্পী হিসেবে দেখানো হলেও তিনি জীবনে কোনদিন স্টেজে উঠেছেন বলে শহরের কেউই জানেন না। তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সহ-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর ভগ্নিপতি।
আরও পড়ুন: সময়মতো প্রণোদনা প্যাকেজ অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছে: প্রধানমন্ত্রী
একইভাবে ২৩০নং সিরিয়ালের ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী বিশ্বজিতের ভাইপো, ২৫৫ সিরিয়ালের বরুন চক্রবর্তী বড়ভাই, ২৫৬ ইতি চক্রবর্তী ছোটবোন, ২৬৪ প্রনয় চক্রবর্তী ভাগ্নে, ২৬৫ প্রিয়াংকা চক্রবর্তী ভাগ্নি, ২৬৬ গোপাল চক্রবর্তী চাচাতো ভাই, ২৬৭ বন্দনা চক্রবর্তী ভাইয়ের বৌ, ২৬৮ প্রদীপ চক্রবর্তী চাচাতো ভাই এর ছেলে, ২৭০ কার্তীক চক্রবর্তী চাচাতো ভাই এর ছেলে, ২৭১ সুদীপ্ত চক্রবর্তী ভাতিজা, ২৭২ আনন্দ চক্রবর্তী ভগ্নিপতি, ২৭৪ বিথি চক্রবর্তী ছোট বোন ও ২৫৭ ছবি রানী ভট্টাচার্য ভাইয়ের স্ত্রী। এভাবে শিল্পীদের নাম দিয়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে লাখ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী ও তার সঙ্গীরা।
শিল্পকলা একাডেমীর সংগীত শিক্ষক অজিত রায় ও শহরের সাতদোহা পাড়া এলাকার একটি পরিবারের ৬ নারীর নাম দিয়ে টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরা হলেন সন্ধ্যা রানী ঘোষ (৪১৯), প্রিয়া ঘোষ (৪৪), রিয়া ঘোষ (৮৫), ডলি ঘোষ (১০৪), আপন ঘোষ (১০৫) ও লিলি ঘোষ (১৭২)। এদের কারোই শিল্প সংস্কৃতির সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। অথচ তাদের প্রত্যেকের নামে ১০ হাজার টাকা করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। শহরের কেশব মোড়ের বাসিন্দা বর্তমানে স্বামীর কর্মস্থল ঢাকায় অবস্থানরত সিগ্ধা পাল নামে এক সাবেক নৃত্য শিল্পী ও তার মায়ের নামে ১০ হাজার করে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কাস্টমস বিভাগে কর্মরত এক ব্যক্তির স্ত্রী সিগ্ধা পালের মাগুরা শহরে ২টি ফ্ল্যাট, ১টি বাড়ি ও একটি বিশাল বাগান বাড়ি রয়েছে। যার মূল্যমান কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা। স্বজনপ্রীতি করে তাকে ও তার মা জোসনা পালকে ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারিভাবে যখন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের সহায়তা দেয়ার জন্য নামের তালিকা আহ্বান করা হয় তখন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী ও অজিত রায় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি অসাধুচক্র একত্রে বসে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ও আইডি নম্বর সংগ্রহ করে নিজ মনগড়া একটি তালিকা প্রেরণ করে। কিন্তু সেক্ষেত্রে প্রকৃত শিল্পীদের বিষয়টি জানতেই দেয়া হয়নি। অথবা তাদের আবেদন ফেলে দেয়া হয়েছে। যার ফলে প্রকৃত শিল্পীরা অনেকেই বঞ্চিত হলেও মুখচেনা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম দিয়ে তালিকা প্রেরণ করা হয়। ফলে সরকারের এত বড় একটি মহতি উদ্যোগ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
অন্যদিকে, অচলা মন্ডল নামে এক নারীর নাম তালিকায় থাকলেও তালিকায় দেয়া ফোন নম্বরে ফোন দিয়ে ওই নারীর স্থলে সাতক্ষীরা থেকে আব্দুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ফোন ধরে।
অন্যদিকে শহরের তাতীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শিল্পী কবরী ঘোষের নাম থাকলেও তাকে ফোন করলে তিনি জানান, তিনি কোনো টাকা বা চেক পাননি। অথচ ইতোমধ্যে চেক বিতরণ করা হয়ে গেছে মর্মে জানিয়েছেন শিল্পকলা সংশ্লিষ্টরা।
মাগুরার বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী শামসুজ্জামান পান্না, সাহিত্যিক এম এ হাকিম, লোক সাংস্কৃতি সংগঠক এ.টি.এম. আনিসুর রহমান, সাহিত্য সংগঠক অ্যাডভোকেট কাজী মিহির, সাহিত্যিক ও গীতিকবি লিটন ঘোষ জয়, কবি রহমান তৈয়বসহ একাধিক ব্যক্তি ক্ষোভ ও দুঃখের সঙ্গে জানান, শিল্প সংস্কৃতিক সঙ্গে যারা জড়িত তারা সাধারণত উদার মানবিক হবেন, এমনটিই ভাবা হয়ে থাকে। প্রকৃত শিল্পীরা যেখানে করোনার কারণে চরম অর্থ সংকটে অনেকে অনাহারে অর্ধাহারে আছেন। সেখানে শিল্পীদের জন্য দেয়া টাকা নয়-ছয় করে খরচ করা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। মাগুরা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ব্যানারে একটি অসাধু চক্র যেভাবে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করেছেন তাতে আমরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। এরা শিল্প সংস্কৃতির চরম শত্রু।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সহ সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যরা যদি পাওয়ার উপযোগী হন তাহলে তারা টাকা পেতেই পারেন। আমি কোনো স্বজন প্রীতি বা দুর্নীতি করিনি।’
এ প্রসঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর কালচারাল অফিসার জসিম উদ্দিন জানান, শিল্পকলা একাডেমী থেকে নামের তালিকা চেয়ে পাঠানোর পর দ্রুত তালিকা পাঠানো হয়েছে। ফলে কিছুটা অসামঞ্জস্য থাকতেই পারে। তালিকার সবাইকে টাকা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে একটি তালিকায় একই পরিবারের ১৪ জনের নাম থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক বলেন তিনি।
জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম জানান, কয়েকজন শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে তালিকা প্রস্তুত করতে। ভবিষ্যতে প্রকৃত শিল্পীরা যেন সকল ধরনের সহায়তা পান সেজন্য প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে।
তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা নেই: তথ্যমন্ত্রী
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কোন ব্যর্থতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
দুর্নীতির মামলায় হাজী সেলিমের ১০ বছর দণ্ডের রায় হাইকোর্টে বহাল
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে দেয়া বিচারিক আদালতের ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় মঙ্গলবার বহাল রেখেছে হাইকোর্ট।