ইসি
নির্বাচন সংক্রান্ত সংঘাত-বিশৃঙ্খলায় ব্যবস্থা নেওয়া ইসির দায়িত্ব: কাদের
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের সংঘাত বা বিশৃঙ্খলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে তার প্রতি আওয়ামী লীগের আস্থা আছে।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপি হরতাল, অবরোধ, আগুন সন্ত্রাস করে জনগণকে নির্বাচন বিমুখ করতে পারেনি। জনগন পুরোপুরি নির্বাচনমুখী হয়ে পড়েছে। এ নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের ট্রেন চলছে, কোথাও থামবে না: কাদের
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ঠেকাতে বিএনপি যে অপচেষ্টা করেছিল তা এখনো অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের জনগন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। তারা আরেকটি বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাতে চায়। এজন্য ভোট দিতে তারা উন্মুখ হয়ে আছে।’
চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র করে মানুষকে নির্বাচন বিমুখ করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে এবং আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেখাতে চাই আমরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি: কাদের
নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে আ. লীগের প্রার্থী-নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান কাদেরের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ওসিদের বদলির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ ইসি’র
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এক্ষেত্রে, প্রথমে যেসব থানার ওসির বর্তমান কর্মস্থলে চাকরির বয়স ছয় মাসের বেশি হয়েছে তাদের বদলি করতে হবে। ইতোমধ্যে এ চিঠি জননিরাপত্তা সচিবকে পাঠানো হয়েছে।
ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমানের সই করা চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
আরও পড়ুন: ইসির সঙ্গে বৈঠকে ইইউ মিশনের প্রতিনিধি দল
চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
এলক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ওসির বর্তমান কর্মস্থলে চাকরির বয়স ছয় মাসের বেশি হয়েছে তাদের অন্য জেলায় বা অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী ০৫/১২/২০২৩ তারিখের মধ্যে ইসিতে পাঠানো প্রয়োজন।
এই সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।
আরও পড়ুন: বিএনপি ভোটে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের ব্যাপার: ইসি আনিছুর
ফুরিয়ে আসছে ইসিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ৪৪ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি দল যোগ দিয়েছে
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি দল ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।
ইসি সচিবালয়ের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ৩০০টি সংসদীয় আসনে প্রায় ৭০০ স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ২ হাজার ৭৫০ জনের বেশি প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত অনুমানের পর প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাকের পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও বাংলাদেশ কংগ্রেস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, তরিকত ফেডারেশন, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ৩০০ আসনে ২ হাজার ৭৪১টি মনোনয়ন ফরম জমা
অংশগ্রহণকারী বাকি দলগুলো হলো- গণফ্রন্ট, জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টি, গণফোরাম, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ১৫টি রাজনৈতিক দল হলো- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিশ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ
জাতীয় নির্বাচন: মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বৃহস্পতিবার
ইসির সঙ্গে বৈঠকে ইইউ মিশনের প্রতিনিধি দল
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মিশনের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় নির্বাচন ভবনে প্রতিনিধি দলের এই বৈঠক শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি নির্বাচনে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে পুনঃতফসিল হতে পারে: সিইসি
বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধিদল আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফুরিয়ে আসছে ইসিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ প্রতিনিধিদলের ডেপুটি হেড অব মিশন ড. বার্ন্ড স্প্যানিয়ার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ প্রতিনিধিদলের রাজনৈতিক কর্মকর্তা সেবাস্টিয়ান রিগার-ব্রাউন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি অ্যাসিস বেনিটেজ সালাস, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুয়েরেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার। ফরাসি দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন গিলাউম অড্রেন ডি কেরড্রেল, জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ইয়ান জানোস্কি।
আরও পড়ুন: বিএনপি ভোটে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের ব্যাপার: ইসি আনিছুর
বিএনপি ভোটে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের ব্যাপার: ইসি আনিছুর
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি আসবে না, সেটি তাদের ব্যাপার।
তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সবাই আসবে এটি স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইসি তার কথা রাখবে: জাপা
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
এছাড়া, এখনও বিএনপির নির্বাচনে যোগ দেওয়ার সুযোগ থাকার কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। যদি তারা আসে তাহলে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হবে।
তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সবাই আসবে এটা স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, কোনো আসনকে হালকাভাবে নেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক আসনই গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি খারাপ হতে সময় লাগে না। তাই ব্যাপক প্রস্তুতি রাখা হবে।
যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে তাহলে ভোটের তারিখ পেছানো হবে কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হতে পারে। ইসি মনে করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সবার আসা উচিত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবি সদর দপ্তর কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ শামীম আলম, ডিজিএফআইয় কক্সবাজারের কর্নেল জিএস মোরশেদ আহমদ চৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ সৈকত শাহীহ, কক্সবাজার এবং বান্দরবানের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ফুরিয়ে আসছে ইসিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়
কৌশলগত সহযোগিতার জন্য জেবিআইসি’র সঙ্গে জ্বালানি বিভাগের সমঝোতা স্মারক সই
বুধবার অবরোধ, বৃহস্পতিবার হরতাল ডেকেছে বিএনপি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে ফের সারাদেশে ২৪ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ এবং বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী হরতাল পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল ৬টায় অবরোধ শুরু হবে এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় শেষ হবে এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল চলবে।
রিজভী বলেন, এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, অন্যান্য বিরোধী দল যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে তারাও এই কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: শিথিলতায় চলছে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ
বিরোধী দলের চলমান ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়। এর ১৪ ঘণ্টা আগেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য দেশবাসী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান রিজভী।
বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো দেশব্যাপী ১৯ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করে এবং ২২ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ এবং ২৬ নভেম্বর থেকে আরেক দফা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা করে, যা মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলগুলো এখন পর্যন্ত সাত দফায় অবরোধ পালন করেছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে তারা ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালও পালন করে। যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার মধ্যে দিয়ে হরতাল শেষ হয়।
২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর আধা ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। খুব দ্রুতই নয়াপল্টনের চারপাশে ছড়িয়ে সহিংস সংঘর্ষ পড়ে এবং মাঝপথে সমাবেশ বন্ধ করে দেয় বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে
ডিসেম্বরে অবরোধের পরিবর্তে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা বিএনপির
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইসি তার কথা রাখবে: জাপা
জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু জানান, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া কথা তারা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইসিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে অত্যন্ত উদগ্রীব হয়ে উঠেছে।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মুজিবুল হক বলেন, যারা দলকে সমর্থন করেন তারা দলের মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন এবং তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্য থেকে মনোনয়ন বোর্ড ঠিক করবে কারা টিকিট পাবে।
আরও পড়ুন: জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে জাপা: চুন্নু
আগামীকাল বিকালে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে মুজিব বলেন, জাপা প্রায় ৩০০ আসনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে।
আজ সকাল ১১টা থেকে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে সাক্ষাৎকার সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও কাজী ফিরোজ রশীদসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: মূল চ্যালেঞ্জ হলো ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনা: জাপা মহাসচিব চুন্নু
জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই: মুজিবুল হক চুন্নু
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন নিয়ে চিন্তা নেই: ইসি রাশেদা
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা।
তিনি বলেন, ইসি সবার সঙ্গে মিলে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তাব দেবে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশনার রাশেদা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না: ইসি আনিছুর
তিনি বলেন, ‘কমিশন এখন ভোটারদের জন্য একটি নতুন আইন করেছে। তাদের (ভোটারদের) অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে কি না জানতে চাইলে ইসি বলেন, ‘নির্বাচন যথাসময়ে হবে, তফসিল পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করবে।’
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, ঊর্ধ্বতন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইসি ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে: ডিএমপি
সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে তফসিল ঘোষণা করবেন সিইসি
নির্বাচন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না: ইসি আনিছুর
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, 'নির্বাচন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য নির্বাচন করতে হবে, না হয় সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। নিশ্চয়ই এটা আমাদের কাম্য হতে পারে না।'
বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিছুর বলেন, 'একটি দল' নির্বাচনে আসলে নির্বাচন পেছানোর বিষয় বিবেচনা করা যাবে। 'তারা (দলের নাম নেননি) নির্বাচনে আসলে আমরা বিবেচনা করব। আমাদের সুযোগ আছে পেছানোর, কারণ পরে যথেষ্ট সময় আছে। তবে এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে ওইরকম তথ্য পাইনি।'
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শতভাগ দল নিয়ে নির্বাচন করার পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'শতভাগ কখনোই আসেনি, ইতিহাস বলে। অধিকাংশ দল নির্বাচন করে, সেটাই তখন নির্বাচনী আমেজ চলে আসে। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বরাবরই আহ্বান জানাচ্ছি, আমাদের নিবন্ধিত ৪৪টা দলের সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।'
বিএনপি নির্বাচনে না আসলে প্রভাব পড়ার কোনও আশঙ্কা আছে কিনা এমন প্রশ্নে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘গণমাধ্যমে আসা তথ্য অনুযায়ী ৭০ ভাগ দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা উঠছে। ৭০ ভাগ যদি হয়ে থাকে, যদিও কত ভাগ সেটি নির্বাচন কমিশন বিশ্লেষণ করেনি। যদি ৭০ ভাগই অংশ নিয়ে থাকে তবে নির্বাচনে প্রভাব পড়ার কোনও কারণ নেই।’
নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্ন হওয়ার মতো কিছু দেখছি না। যেহেতু একটা চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি আছে, সেটাকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা হয়েছে। সেটার সাথে নির্বাচনকে মেলানো ঠিক হবে না। এটা নির্বাচনকে উপলক্ষ করেই হচ্ছে, কিন্তু নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্ন করছে এমন কিছু পরিলক্ষিত হয়নি।'
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতাল উপলক্ষে বিএনপি ও জোটের সমাবেশ
আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের সমর্থনে রবিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপিসহ কয়েকটি সমমনা দল ও জোট।
বিরোধী দলগুলো একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফসিল বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে তেজগাঁও, ফকিরাপুল, জিগাতলা, বাড্ডা, মালিবাগ, গুলশান, বনানী, গ্রিন রোড, ধানমণ্ডি, রমনা ও মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
অন্যদিকে, রবিবারও তালাবদ্ধ বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দুই পাশের সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল।
গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণ অধিকার পরিষদ, ১২ দলীয় জোট এলডিপি, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, গণফোরাম-এনপিপি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটও বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, নাইটিঙ্গেল ক্রসিং, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
এসব মিছিল-সমাবেশ থেকে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সরকারের বিরুদ্ধে একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টার অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য বিরোধী দল আজ সকাল ৬টায় সারাদেশে হরতাল পালন করে।
আরও পড়ুন: তফসিল বাতিল করে আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন: বিএনপি
গত ৭ জানুয়ারি ইসি দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ার পর বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে এই প্রথম হরতাল পালন করা হচ্ছে।
গত ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ঘোষণা করেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চ বিজয়নগর থেকে একটি মিছিল বের করে, যা সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্যে জোট নেতারা অভিযোগ করেন, দেশ ও জনগণকে বিপদে ফেলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি 'প্রহসনমূলক' নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল এখন ঐক্যবদ্ধ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো প্রতিপক্ষ ছাড়াই ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আরেকটি একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে দেশ শুধু অর্থনৈতিক সংকটই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ভয়ানক কূটনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হবে।’
সাকি বলেন, সরকার যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষকে বিপদে ফেলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জোটের শরিক জাতীয় পার্টিও বলছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
সাকি আরও বলেন, ‘ভোট কারচুপিকে নির্বাচন হিসেবে প্রচারণা চালানোটা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক। আমরা জনগণ এভাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হতে দেব না। সেজন্য আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং আমরা বিজয়ী হব।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সব মানুষ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন। এমনকি তাদের (আওয়ামী লীগ নেতাদের) প্রতারণামূলক বক্তব্য শুনে শয়তানও লজ্জিত হয়।’
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু
দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংকট চরমে, জনগণ প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত: রিজভী