সম্পর্ক
'ইন্ডিয়া আউট' ক্যাম্পেইন: বাংলাদেশের সঙ্গে 'দৃঢ় ও গভীর' সম্পর্কের কথা জানাল ভারত
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে শক্তিশালী ও গভীর করার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে দৃঢ় ও বহুমুখী বলে বর্ণনা করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল 'ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন' সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে এই বিবৃতি দিয়েছেন।
অর্থনীতি, বিনিয়োগ, উন্নয়ন, যোগাযোগ ও জনগণের মধ্যে বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের বিস্তৃত পরিসর উল্লেখ করে ভারত-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের অনেক ক্ষেত্র তুলে ধরেন জয়সওয়াল।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনে বিএনপি দেশের অর্জন ধ্বংস করতে চায়: কাদের
তিনি বলেন, 'আপনারা যেকোনো মানবিক প্রচেষ্টার নাম বলুন, তা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
অংশীদারিত্বের গতিশীলতার উপর আরও জোর দিয়ে মুখপাত্র বলেন, ‘এতেই বোঝা যায় যে অংশীদারিত্ব কতটা প্রাণবন্ত এবং এটি অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত ও চীন যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র: মুখপাত্র
বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দেয় এবং অভিন্ন স্বার্থে তারা একসঙ্গে কাজ করা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ককে মূল্য দেই। একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করাসহ আমাদের অভিন্ন স্বার্থ অনুসরণ করতে উভয় দেশের সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব আমরা।’
সোমবার (১১ মার্চ) ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই অঞ্চলে তথাকথিত 'ইন্ডিয়া আউট' প্রচারণা সম্পর্কে প্রক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মিলার বলেন, ‘এই প্রচারণা সম্পর্কে আমরা জানি। ভোক্তাদের ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি অবশ্যই মন্তব্য করব না, সেটা বাংলাদেশ হোক বা বিশ্বের অন্য কোথাও।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ উভয় পক্ষ থেকে জানানো হয় তাদের একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে এবং তারা তাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় তৈরি করতে চায়।
তাদের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে জনগণ উপকৃত হবে।
আরও পড়ুন: অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে জনগণকেও সোচ্চার হতে হবে: হাছান মাহমুদ
প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লুবাখার, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার সম্প্রতি তিন দিনের বাংলাদেশ সফর করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, 'আপনারা এর আগেও মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলাগুলো নিয়ে আমার কাছ থেকে মার্কিন সরকারের উদ্বেগের কথা শুনেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের আইনের অপব্যবহার করে ড. ইউনূসকে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হতে পারে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে তার ক্ষমতার ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করেন।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বেলারুশের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী শেস্তাকভ এবং শ্রীলংকার হাইকমিশনার ভিরাক্কোডির সাক্ষাৎ
ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে পরবর্তী পর্যায়ে নেওয়ার চাবিকাঠি সদিচ্ছা, কৌশলগত বিবেচনা ও ভূ-রাজনৈতিক কারণ
বাংলাদেশের নির্বাচনের পর দুই দেশের সম্পর্ক পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, প্রাক-নির্বাচনি রাজনৈতিক মতপার্থক্য পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত বিবেচনা, ভূ-রাজনৈতিক কারণ এবং নতুন ক্ষেত্রে সম্পর্ক সম্প্রসারণের অকৃত্রিম ইচ্ছা দুই দেশের সম্পর্ককে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান চলতি সপ্তাহে ইউএনবিকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ ও পুরোনো সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কের নতুন অধ্যায় দেখে মনে হচ্ছে, দেশ দুটির ব্যাপক রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হবে।’
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার এবং অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে নিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লুবাখার, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) এশিয়া অঞ্চলের সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঢাকার জিরো টলারেন্স নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন
তাদের আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট ও শ্রম অধিকার নিয়েও আলোকপাত করা হয়। প্রতিনিধি দলটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নির্বাহী, নাগরিক সমাজের সংগঠন এবং শীর্ষ বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক শাহাব মনে করেন, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও ইন্দো-প্যাসিফিক এজেন্ডার বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তাই প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, অপ্রথাগত নিরাপত্তা ও মানব নিরাপত্তা ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন গতি পাবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারকেও জেগে ওঠার আহ্বান এটি। এ থেকে বোজা যায়, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তৃতীয় কোনো দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবে না।’
বরং তিনি মনে করেন, আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশই তাদের পারস্পরিক স্বার্থের সমন্বয় ঘটাতে পারে। ‘সর্বোপরি বাংলাদেশ পরাশক্তিগুলোর কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দেশ, কারণ আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো ফাটল ধরেনি বা কোনো রাজনৈতিক বা নিরাপত্তার বিষয়ও নেই।’
অধ্যাপক শাহাব বলেন, এই দুটি বিষয় বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় আঞ্চলিক নিরাপত্তার গ্যারান্টার করে তোলে।
নতুন অধ্যায় ও অগ্রাধিকার
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনার বিষয়ে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র হেইনেস মাহনি বলেন, বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অংশীদার এবং বাংলাদেশের সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের বৃহত্তম উৎস যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল যাতে অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ থাকে তা নিশ্চিত করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিস্তৃত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি।’
হেইনেস বলেন, 'প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেমন বলেছেন, আমরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমিত করতে এবং জনগণের জন্য বিনিয়োগে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার উপায়গুলো নিয়ে কাজ করব; যাতে তারা স্বাস্থ্যকর ও আরও সমৃদ্ধ জীবনযাপনের সুযোগ পায়।’
বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে সন্তুষ্ট যুক্তরাষ্ট্র। তিনি মনে করেন, অর্থনৈতিক বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা এবং দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তারা যা করার চেষ্টা করছে তার 'সত্যিকারের প্রতিফলন'।
হেইনেস বলেন, বাংলাদেশ অবশ্যই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর অন্যতম এবং এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।
অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের মাধ্যমে উন্নয়নে তাদের বিনিয়োগকে কাজে লাগাতে এবং যুবকদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে তারা ক্রমবর্ধমানভাবে মনোনিবেশ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী নেতা ও যুবকদের একত্রিত করছি যাতে বাজারে চাহিদা আছে এমন বিষয়ে তরুণদের আরও দক্ষ করে গড়ে তোলা যায়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে বৃহত্তর সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে এবং বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশকে আরও প্রতিযোগিতামূলক হতে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাসম্পন্ন মেধাবী কর্মী বাহিনী তৈরি করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে গবেষণা করছেন। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করার সময় যাতে দেশের প্রতিটি এলাকার জনগণ স্বাস্থ্যকর এবং সমৃদ্ধ জীবনযাপনের ন্যায়সঙ্গত সুযোগ পায়।
তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে সহযোগিতা করার বিষয়েও কাজ করছি। একই সঙ্গে উপকূলীয় সীমান্তে কী ঘটছে এবং আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে কী আসছে তা বোঝার জন্য সামুদ্রিক ডোমেন সচেতনতায় বিনিয়োগ করতে সক্ষম।’
আরও পড়ুন: ইউনূসকে নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে, বিবৃতি নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জিএসওএমআইএ ও এসিএসএ সম্পর্কিত সমস্যাগুলো
জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) এবং অ্যাকুইজিশন ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্টের (এসিএসএ) অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে হেইনেস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে জিএসওএমআইএ বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ উভয় পক্ষ 'আরও বাস্তব ও গভীর' সম্পর্কের সুযোগ খুঁজছে।
তিনি বলেন, চুক্তিটি কার্যকরভাবে একটি প্রতিশ্রুতি, যা প্রতিটি পক্ষ কার্যকরভাবে অন্য পক্ষের কাছ থেকে প্রাপ্ত যেকোনো তথ্য বা সংবেদনশীল সামগ্রী সুরক্ষিত রাখবে।
অন্যদিকে, তিনি বলেন, এসিএসএ অংশীদার সামরিক বাহিনীর মধ্যে লজিস্টিক সহায়তা বিনিময়কে সহজতর করে এবং অর্থবহ সম্পৃক্ততার সুযোগ বাড়ায়।
হেইনেস বলেন, যদিও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে এসিএসএ নিয়ে কোনো আলোচনা নেই, তবে দুই পক্ষ যদি মনে করে যে এটি যথেষ্ট সুবিধা দেবে তবে ভবিষ্যতে এটি পরিবর্তন হতে পারে।
মিয়ানমার পরিস্থিতি ও তার প্রভাব
মুখপাত্র বলেন, 'অবশ্যই আমরা খুবই উদ্বিগ্ন এবং বার্মার (মিয়ানমার) ঘটনাবলী নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বার্মায় (মিয়ানমার) চলমান সংঘর্ষ খুবই উদ্বেগজনক। এটি কেবল এই অঞ্চলের জন্যই নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়।’
তিনি বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংকট উদ্বেগজনক বিষয় এবং মিয়ানমারে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারসহ বর্তমান সংকটে মানবিক সহায়তা হিসেবে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা, স্থিতিশীলতা জোরদার করা এবং টেকসই ও মানবিক সমাধান খুঁজে বের করা অপরিহার্য।
ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কল্যাণ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ‘বিস্তৃত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’ পদ্ধতির উপর জোর দেন তারা। একই সঙ্গে মায়ানমারের পরিস্থিতির ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন তারা।
মুখপাত্র বলেন, 'বার্মায় সংঘর্ষের কারণে বার্মায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এবং বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থী উভয়ের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তাও আমরা স্বীকার করি।’
এ বছরের শুরুর দিকে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে অতিরিক্ত ৮৭ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যা শরণার্থীদের জন্য মাসিক খাদ্য রেশন প্রতি মাসে ১০ ডলারে উন্নীত করতে সহায়তা করেছে।
মুখপাত্র বলেন, ‘তাদের সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। আমরা বাংলাদেশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে চাকরি-দক্ষতা ও ব্যবসায় প্রশিক্ষণসহ বহুপক্ষীয় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছি যাতে জনগণকে তাদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।’
উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং ফরেন পলিসির সাপ্তাহিক দক্ষিণ এশিয়া ব্রিফের লেখক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও ইতিবাচক দিকে গেছে; যেই নির্বাচনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নয় বলে বর্ণনা করেছিল।
তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছেন, এই পরিবর্তন আসলে যতটা মনে হয় ততটা তীক্ষ্ণ নয়। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্পষ্ট পরিবর্তনের মধ্যে এই সফর হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পাঠানো বার্তা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইঙ্গিতের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের কয়েক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নিষেধাজ্ঞা ও সমালোচনাসহ মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের উন্নয়নে জোরালো পদক্ষেপ নেয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই ভোটকে অবাধ ও সুষ্ঠু নয় বলে উল্লেখ করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের 'পরবর্তী অধ্যায়কে' স্বাগত জানানো হয়েছে; সেখানে অধিকার বা গণতন্ত্রের কথা বলা হয়নি।
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ বাংলাদেশি কর্মকর্তারা নতুন অধ্যায় শুরুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, 'নির্বাচন এখন অতীতের বিষয়।’ নানা ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের উল্লেখসহ উভয় পক্ষের বার্তা উষ্ণ ও কার্যকরী ছিল।
ঘুরে দাঁড়ানোর কারণ কী- এ প্রসঙ্গে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, একটি সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে, ওয়াশিংটন ঢাকার উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিতে চায়।
আমাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে চাই: মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে তাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সৃষ্টির আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই দিক থেকেই সদিচ্ছা আছে। একসঙ্গে আমরা আমাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় তৈরি করতে চাই।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় চায়, এটি একটি বড় বিষয়।
সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে জনগণ উপকৃত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চাই।’
প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লুবাখার, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার তিন দিনের সফরে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।
এইলিন লুবাখার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের অভিন্ন অগ্রাধিকার এবং ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে সহযোগিতার উপায় নিয়ে আলোচনা করে আমরা আনন্দিত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র: ভারপ্রাপ্ত উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্কট উরবম
তিনি আরও বলেন, ‘তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে।’
বৈঠক শেষে মার্কিন দূতাবাস এক পৃথক বার্তায় বলে, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শরণার্থী, জলবায়ু, শ্রম ও বাণিজ্যসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের দুই দেশ কীভাবে কাজ করতে পারে তা নিয়ে আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
এতে বলা হয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাঁচটি পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশ অনুসরণ করবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করেছে। ‘আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি রাশেদ চৌধুরী প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য তারা মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। মার্কিন পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি মার্কিন বিচার বিভাগের অধীনে রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজার কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিন মার্কিন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে 'কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে' সফর করছেন।
তারা পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতা, যুব কর্মী এবং মুক্ত ও অবাধ গণমাধ্যম তৈরির কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও গভীর ও সম্প্রসারিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে চিঠি দিয়েছেন তা দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পত্রের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর লেখা পত্রের একটি কপি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী লুবাখারকে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জাতীয় নির্বাচনের পর ৮ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, 'অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য এগিয়ে নিতে, বাংলাদেশে মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজকে সমর্থন এবং আমাদের জনগণের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সীমান্তে আগের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এর আগে প্রতিনিধিদলের একাংশ পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এ দিন দুপুরে আসিয়ান দেশগুলোর ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মন্ত্রী জানান, আসিয়ানের পর্যবেক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি ও এই জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা বৈঠকে অংশ নেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় জাপান
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জাপান আরও জোরদার করতে চায় বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে এক সাক্ষাতে এ কথা জানান রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সাল থেকে দেশে দৃশ্যমান প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার একটি গ্রাম, একটি পণ্য কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য বাড়াতে কাজ করছে। এ কর্মসূচি সফল করতে জাপানের অভিজ্ঞতা দিয়ে সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
জাপানের রাষ্ট্রদূত এ কর্মসূচিকে সাধুবাদ ও সহযোগিতার আশা দিয়ে বলেন, জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপান অংশীদার হয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: রোজার আগেই ভারত থেকে আসতে পারে পেঁয়াজ-চিনি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর জাপানে অনুষ্ঠেয় ‘ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২৪’ আয়োজনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের আশা করছি।
এসময় দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে সব সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।
আরও পড়ুন: রমজানে সরবরাহ-দাম নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার প্রস্তুতি চলছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
সম্পর্ক গভীর করার অঙ্গীকার বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের
অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে আমরা সম্পর্ক আরও গভীর করতে পারি।’
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বহুমুখী সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: শ্রমবাজার ইস্যুতে কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন অংশীদার এবং এখানে তাদের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বিশেষ করে আইসিটি, সাইবার নিরাপত্তা, দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আমরা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে কাজ করছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে এক বার্তা পাঠিয়েছেন এবং এ সম্পর্ক জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে একযোগে কাজ করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন ও রোহিঙ্গাদের কল্যাণের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ইস্যু এবং দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবেন।
কুক বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে ভালো বৈঠক হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গাদের কল্যাণে আমাদের অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান।
মানবাধিকার ইস্যু সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই মানবাধিকার বিশ্বব্যাপী একটি ইস্যু এবং প্রতিটি দেশ এই ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য কাজ করছে।
যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর ও ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব রয়েছে।
আরও পড়ুন: বকেয়া পাওনা আদায়ে টেলিটক-বিটিসিএল-বিটিআরসির বৈঠক অনুষ্ঠিত
ঢাকা-লন্ডন সম্পর্ক আধুনিক অংশীদারিত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে: ক্যামেরন
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নকেন্দ্রিক থেকে আধুনিক অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও অভিবাসন অংশীদারিত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করতে পারব। নিরাপত্তাসংক্রান্ত অংশীদারিত্ব জোরদার করতে পারব এবং বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জসমূহ যেমন- জলবায়ু পরিবর্তন, অবাধ ও উন্মুক্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল (ইন্দো প্যাসিফিক) এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কল্যাণে সহযোগিতা করতে পারব।’
আরও পড়ুন: অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে শরণার্থীদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত প্রতিটি দেশের: ডেভিড ক্যামেরন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে বাংলাদেশসহ অন্য দেশের অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় সহযোগিতার অগ্রগতির উপর ‘অত্যন্ত গুরুত্ব’ দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য শোনার এবং আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষায় একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাম্প্রতিক নির্বাচনের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেল টঙ্গী পর্যন্ত সম্প্রসারণে জরিপ চলছে: ওবায়দুল কাদের
তিনি বলেন, ‘আমাদের গভীর পারস্পরিক সম্পর্ক, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক এবং পারস্পাকি স্বার্থ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে আমি আপনার সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস থেকে সম্প্রতি একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে এই মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটেছে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে গঠনমূলক যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন।
ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বুধবার হাছান মাহমুদের কাছে চিঠিটি হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: ক্যামেরনের সাথে আলাপে রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিয়ে সু চির মিথ্যাচার
বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করেছে ভারত: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ভারত ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ করছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর উগান্ডায় বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে।’
সোমবার (২২ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, জয়শঙ্করের বক্তব্য আংশিক সত্য।
আরও পড়ুন: আ. লীগের নতুন 'কৃষ্ণতম মেকি সরকার': রিজভী
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নয়। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ভারতের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার হারিয়েছে।’
জনগণের ভোট ছাড়াই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করায় দেশের সর্বত্র নৈরাজ্য বিরাজ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি এই নেতা।
তিনি দেশে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট গভীরতর হওয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন। ক্ষমতাসীন দল যেহেতু ব্যাপক উন্নয়ন করার কথা বলছে তাই এর পেছনের কারণ জানতে চান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশকে আমদানিনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
জনগণের ভোটাধিকার জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জনগণের ক্ষমতায়ন ও ১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপিসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দল রাজপথে সক্রিয়।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগের কবল থেকে দেশ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং জনগণের বঞ্চিত ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার প্রতারণামূলক নির্বাচন করতে গিয়ে তিন-চার মাস ধরে বিএনপির শত শত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের কেউ শারীরিক নির্যাতনে মারা গেছেন, আবার কেউ কেউ পঙ্গু হয়েছেন। হেফাজতে ও রিমান্ডে নির্যাতনের সময় জালিম নেতা-কর্মীদের নির্যাতন সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।’
তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কারাবন্দি নেতাদের তালিকা তুলে ধরেন এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তি দাবি করেন।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতি দেখেই জনগণের ইচ্ছা বোঝা যায়: রিজভী
বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে: ধর্মমন্ত্রী
ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ। আগামীতে দুই দেশের মধ্যকার এ সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে ধর্মমন্ত্রী তার অফিস কক্ষে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুহাইলেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে চীনা অর্থ ছাড় আগের চেয়ে সহজ হবে: অর্থমন্ত্রী
সাক্ষাৎকালে তারা আগামী দিনে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় ও সুসংহত করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ছাড়া হজের নিবন্ধন পরিস্থিতি, হজযাত্রী পরিবহন, ঢাকায় অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট স্থাপন, বাংলাদেশে আটটি আইকনিক মসজিদ স্থাপনের বিষয়সহ দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: সরকার কারো স্বীকৃতির অপেক্ষায় নেই: ওবায়দুল কাদের
মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় মো. ফরিদুল হক খানকে অভিনন্দন জানান সৌদি রাষ্ট্রদূত।
এসময় ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার ও হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুকে জাতিসংঘের আলোচ্যসূচির শীর্ষে রাখতে মহাসচিবের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে: জয়শঙ্কর
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর।
১৯তম ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি বলেন, 'শিগগিরই দিল্লিতে আপনাকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছি।’
জয়শঙ্কর বলেন, উগান্ডার কাম্পালায় বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে তিনি আনন্দিত।
আরও পড়ুন: ন্যাম সম্মেলন: ফিলিস্তিনিদের সমর্থন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে তার সাফল্য কামনা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, উভয় দেশের মন্ত্রী পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন।
তারা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন নয়াদিল্লি সফর নিয়েও আলোচনা করেন।
১৯-২০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৯তম শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন হাছান মাহমুদ।
আগামী ২১-২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জি-৭৭’র দক্ষিণ সম্মেলনে (সাউথ সামিট) বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বও দেবেন তিনি।
আরও পড়ুন: পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হাছান মাহমুদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ এ মুহিত এবং কেনিয়া ও উগান্ডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ তারেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
সফরের আলোচ্যসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি উল্লেখ করে ১৮ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ড. মাহমুদ বলেন, 'এটি তিন দিনের সফর হতে পারে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের আমন্ত্রণে তিনি এ সফর করবেন।
সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখনই এ বিষয়ে যাবে না।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদারের আগ্রহ ডাচ এনজিওগুলোর
জয়শঙ্কর এর আগে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে নয়াদিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানান। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এ আমন্ত্রণ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তাকে বলেন, তিনি শিগগিরই দিল্লি সফর করবেন।