ইউনিসেফ
উদয়ন স্কুলে দিনব্যাপী হেলথ ক্যাম্প আয়োজন ডিনেটের
ইউনিসেফ বাংলাদেশের কারিগরী সহায়তায় শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করেছে ডিনেট।
হেলথ ক্যাম্প আয়োজনের সহায়তায় আরও ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর (ডিজিএফপি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লিখিত সব প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বৃহত্তম ও দ্রুত বর্ধনশীল কিশোর জনসংখ্যা থাকা বিশ্বের অন্যতম দেশ। তাই গত কয়েক বছরে সরকার বয়ঃসন্ধিকালের স্বাস্থ্যসেবাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বেশকিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর ফলে, জাতীয় পর্যায়ে লক্ষ্য করা গেছে যে শহরের কিশোর-কিশোরীদের এই বিষয়ে জ্ঞান আদান-প্রদান অথবা সেবা চাওয়ার প্রবণতা গ্রামীণ কিশোর-কিশোরীদের চেয়ে তুলনামূলক কম।
সম্মিলিতভাবে ডিনেট ও ইউনিসেফ সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে উল্লিখিত গোষ্ঠির সুরক্ষার্থে শহরের কিশোর-কিশোরীদের জন্য ব্যাপকভাবে হেলথ ক্যাম্প করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রিম্যাচ্যুরিটির কারণে দেশে নবজাতক মৃত্যুর হার বেশি: ডা. নব কৃষ্ণ
এই হেলথ ক্যাম্প আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল- জাতীয় কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ সম্পর্কে শহরের কিশোর-কিশোরীদের অবগত করা, চিকিৎসকদের দ্বারা তাদের চক্ষু পরীক্ষাসহ কিছু মৌলিক শারীরিক পরীক্ষা করা, এমনকি উল্লিখিত বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বাল্যবিবাহ, স্বাস্থ্যবিধি ও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি।
ডিনেটের ডাক্তারেরা কিছু প্রাথমিক মেডিকেল চেকাপ এবং সচেতনতা সেশন পরিচালনা করেন।
এরপরই একজন শিক্ষাবিষয়ক মনোবিজ্ঞানী একটি গ্রুপে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কিছু পরামর্শ দেন।
এছাড়াও, ডিনেটের প্রতিনিধিরা জাতীয় কিশোর স্বাস্থ্য ওয়েবসাইটের একটি ওরিয়েন্টেশন প্রদর্শন করেন এবং অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রাসঙ্গিক প্রশ্নের উত্তর দেন।
ডিনেটের যুগ্ম পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময় এবং ডিজিএফপি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এএন্ড আরএইচ) ডা. মো. মনজুর হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ডিনেটকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য এই ধরনের অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজন করা উচিত। যাতে তাদের মধ্যে সচেতনতা এবং পারস্পরিক সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
আসিফ আহমেদ তন্ময় বলেন, সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যম থেকে শহর অঞ্চলে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য নিয়ে তুলনামূলোক অনেক কম কাজ হয়। এরই প্রেক্ষিতে আমাদের এই কর্মসূচি। যাতে করে শহর অঞ্চলের কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে আরও বেশি কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি হয়।
ডা. মো. মনজুর হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১২ হাজার নারী জরায়ু মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে প্রায় ৫ হাজার নারী মৃত্যুবরণ করেন। অথচ সময়মত টিকা দেওয়ার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যায়। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করা উচিত।
আরও পড়ুন: নিবারণযোগ্য অন্ধত্ব প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করবে চক্ষু চিকিৎসক সমিতি ও অরবিস ইন্টারন্যাশনাল
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমন্বিত কর্মপন্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়নই হেলথ প্রমোশন: সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা
জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে দেশব্যাপী এইচপিভি টিকাদান অভিযান শুরু
ইউনিসেফ, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (গ্যাভি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এর প্রতিষেধক টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে।
এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো, দেশের লাখ লাখ মেয়ে ও নারীদেরকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যত সুরক্ষিত করা। প্রতি বছর হাজার হাজার নারীর জীবন কেড়ে নেয় এই জরায়ুমুখ ক্যান্সার।
এই টিকাদন কার্যক্রম প্রথমে ঢাকা বিভাগে শুরু হবে। পরে পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে বাংলাদেশের মোট আটটি বিভাগে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই কর্মসূচির আওতায় পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী এবং স্কুলে পড়ে না এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুসহ প্রায় এক কোটিরও বেশি মেয়েদের বিনামূল্যে এই এইচপিভি টিকা প্রদান করা হবে।
প্রথম পর্যায়ে, মোট ১৮দিন এই টিকাদান কর্মসূচি চলবে। টিকা গ্রহণে উপযুক্ত মেয়েরা ভ্যাক্সেপি অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে ঢাকায় তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অথবা মনোনীত টিকাদান কেন্দ্রে এইচপিভি টিকা নিতে পারবে। ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের অন্য বিভাগের মেয়েদের এই টিকা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার দেশের সকল জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে বদ্ধ পরিকর। ইতোমধ্যেই সরকার টিকা দ্বারা প্রতিরোধযোগ্য রোগের বিরুদ্ধে টিকা প্রদানের মাধ্যমে মা ও শিশু মৃত্যু এবং পঙ্গুত্ব রোধে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে। বৈশ্বিক কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবিলাতেও বাংলাদেশ সারাবিশ্বে নিজেকে রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কলেরা টিকাদান কার্যক্রম শুরু ১৭ সেপ্টেম্বর
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে টিকাদান কার্যক্রমের অসামান্য সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে গ্যাভি কর্তৃক ভ্যাকসিন হিরো সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ ইপিআই কার্যক্রমের ইতিহাসে একটি মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা উপনীত হয়েছি, কারণ আজ আমরা জরায়ুমুখ ক্যান্সারের মত একটি প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে ১ ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদানের মাধ্যমে দেশকে জরায়ুমুখ ক্যান্সারমুক্ত করার মহৎ যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি।’
গ্যাভির সহায়তায় ইউনিসেফ ঢাকা বিভাগের মেয়েদের জন্য ২৩ লাখ এইচপিভি টিাকা সরবরাহ করেছে। সরকার প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছাতে এবং স্কুল থেকে ঝরে পড়া ও এইচপিভি টিকা গ্রহণের উপযুক্ত পথ শিশুদের এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স গ্যাভির কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডেলিভারি ম্যানেজিং ডিরেক্টর থাবানি মাফোসা বলেন, ‘জীবন রক্ষাকারী এইচপিভি টিকা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশের কিশোরীদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অভিনন্দন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাপক পরিসরে এই কর্মসূচির বাস্তবায়ন বাংলাদেশে সব মেয়ের সুস্বাস্থ্য ও বিকাশ নিশ্চিত করতে এবং দেশে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে দারুণ সহায়ক হবে। জীবন রক্ষায় সাহায্যকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই টিকা তৈরিতে সহযোগিতা করতে পেরে গ্যাভি গর্বিত।’
জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) থেকে। আর এইচপিভি টিকার মাত্র একটি ডোজই জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘এটি দুঃখজনক যে বাংলাদেশে প্রতি বছর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে বিপুল সংখ্যক নারীর মৃত্যু হয়। অথচ অল্প বয়সে মেয়েদের মাত্র এক ডোজ টিকা দিয়ে এই মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। এইচপিভি টিকা প্রদানে সরকারকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এই টিকার মাধ্যমে দেশের কয়েক লক্ষ মেয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাবে, নিশ্চিত হবে কিশোরী মেয়েদের ভবিষ্যৎ।’
আরও পড়ুন: বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ: টিকাদান নিশ্চিত করতে দেশগুলোকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
এই টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং শিক্ষক, বাবা-মা ও ধর্মীয় নেতাদের এ বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করা হয়েছে, যাতে কোনো মেয়ে এই টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়ে।
বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. বারদান জাং রানা বলেন, ‘বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার বিবেচনায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার-এর অবস্থান দ্বিতীয়; দেশে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় এই জরায়ুমুখ ক্যান্সারের মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, ‘অনুমান করা হয় যে বাংলাদেশে প্রতি বছর জরায়ুমুখ ক্যান্সারে প্রায় ৮ হাজার ৩০০টি নতুন কেস ধরা পড়ে এবং এই রোগে ৪ হাজার ৯০০ জন মারা যায়। আমরা এই পরিসংখ্যান পরিবর্তন করতে পারি যদি এখনই পদক্ষেপ নেই এবং নিশ্চিত করি যে, ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রতিটি মেয়ে এইচপিভি টিকার একটি করে ডোজ পাবে। এইচপিভি টিকা জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর টিকাগুলোর একটি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকা গ্রহণে উপযুক্ত মেয়েদের জন্য ঢাকা বিভাগে এই টিকাদান কার্যক্রম শুরু করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানায়। এই উদ্যোগ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয় ক্ষেত্রে আমাদের নারীদের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ এই টিকা প্রদানে সহযোগিতা করতে পেরে গর্ববোধ করে। পাশাপাশি এইচপিভি টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত কিশোরীদের সহায়তা করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করে।’
তিনটি পর্যায় শেষ হলে এইচপিভি টিকা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এবং লেখপড়ার বাইরে থাকা ১০ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যকর ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই টিকাদান কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: ১ ডিসেম্বর থেকে ৭ দিনব্যাপী করোনার টিকাদান কর্মসূচি
নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রথম দিনই স্কুলে ৩ লাখ রোহিঙ্গা শিশু: ইউনিসেফ
বাস্তুচ্যুতি, শিক্ষাকেন্দ্রগুলো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত কাটিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে।
রবিবার (২৩ জুলাই) স্কুলের প্রথম দিনেই ৩ লাখ শিশু নিবন্ধন করেছে। কিশোর-কিশোরী ও মেয়েদের জন্য শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।
নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো সব বয়সের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমে পড়াশোনা করবে।
২০২১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে এই আনুষ্ঠানিক পাঠ্যক্রমটি ধীরে ধীরে গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-৫ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছে এবং রবিবার এটি প্রথমবারের মতো গ্রেড-১০ পর্যন্ত চালু হচ্ছে।
এই উদ্যোগ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বড় ও ছোট উভয় শিশুদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের পর ঝুঁকিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে লাখ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা শিখতে চায়। তারা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা ও স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে চায়। মিয়ানমারে এই শিশুদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- বাংলাদেশে থাকাকালীন তারা যেন তাদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে। প্রত্যেক রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুর জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমি আমাদের সহযোগী ও দাতাদের ইউনিসেফের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।’
বড় শিশুদের জন্য নতুন এই সুযোগের পাশাপাশি, একটি সর্বাত্মক প্রচারাভিযানের মাধ্যমে স্কুলের বাইরে থাকা ১৩ হাজারের বেশি শিশুকে শ্রেণিকক্ষে আনা সম্ভব হয়েছে। এ বছর রেকর্ড উপস্থিতির মূলে কাজ করেছে, কিশোরীদের শিক্ষা চালিয়ে যেতে সহায়তা দেওয়া।
সামাজিক রীতিনীতির কারণে অভিভাবকরা প্রায়ই বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চান না। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভিভাবকদের কাছে মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে, শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য শ্রেণিকক্ষ তৈরি করতে এবং নারীদের সহচার্যে কিশোরীদের স্কুলে পাঠাতে ইউনিসেফ ও তার সহযোগীরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাড়ে ৩৪ মিলিয়ন নারীর বিয়ে হয় ১৮ বছর বয়সের আগেই: ইউনিসেফ
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা একটি বিশাল কর্মকাণ্ড। সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী, যাদের অর্ধেক শিশু। তারা একটি ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে। সেখানে ৩ হাজার ৪০০ শিক্ষাকেন্দ্রে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষাদান কার্যক্রম চলছে। যার মধ্যে ২ হাজার ৮০০ শিক্ষাকেন্দ্র ইউনিসেফের সমর্থিত। আরও রয়েছে কমিউনিটি বেসড লার্নিং ফ্যাসিলিটি।
শরণার্থী শিবিরে স্কুলের প্রথম দিনে ইউনিসেফ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় জরুরিভিত্তিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের জন্য আবেদন করেছে।
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে জরিপে: ইউনিসেফ
বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখতে শিশুদের আহ্বান
জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখার জন্য শিশুরা ও ইউনিসেফ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বুধবার (৭ জুন) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ইউনিসেফ ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের (পার্লামেন্টারি ককাস অন চাইল্ড রাইটস) যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২০২৪ এবং শিশু অধিকার- শীর্ষক ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানানো হয়।
সারাদেশ থেকে আসা শিশু এবং ককাস ও অর্থ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা থেকে আসা ১৪ বছর বয়সী শিশু সাংবাদিক মাইশা আঞ্জুম আরিফা বলেন, ‘আমি অনেক শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি যাদের দিনে তিনবেলা খাবারের জন্য কাজ করতে হয়। তাদের বেশিরভাগই আর স্কুলে যায় না এবং অনেককে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।’
গত কয়েক দশক ধরে শিশুদের জন্য সরকারি অর্থায়নের কল্যাণে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে এবং টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে এই অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরও লক্ষ্যকেন্দ্রীক বিনিয়োগ প্রয়োজন।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এবং শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ার শামসুল হক টুকু বলেন, ‘আজ শিশুদের কথা শুনে এটা পরিষ্কার যে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। আমি তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং তাদের মতামত তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। একই কাজ করার জন্য আমি আমার সহকর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানাই।’
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিকভাবে কমেছে।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে বিদায়ী অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের অধিকার পূরণে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে/ উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বজায় না থাকলে এই অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’
ইউনিসেফের বিশ্লেষণ তুলে ধরে, স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ এ বছর জিডিপির ০ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজ বা সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২ শতাংশ বাড়ানোর দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন হবে।
এ ছাড়াও, ইউনিসেফের উপস্থাপনা তুলে ধরে, বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তবে, বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলো প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো।
প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ। পাশাপাশি সুবিধার প্রকৃত মূল্যের উল্লেখযোগ্য পতন রোধে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
শিশুদের স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য সরকার ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেলডন ইয়েট তার বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বলেন, ‘সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। বাজেটে শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য ইউনিসেফ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানায়।’
আরও পড়ুন: অপর্যাপ্ত শিক্ষা বাজেট প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে, বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি শিক্ষার্থীদের
বাজেট: নাগরিকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের পর ঝুঁকিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে লাখ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
ইউনিসেফ বুধবার বলেছে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কিছু অংশে ঘূর্ণিঝড় মোখার ধ্বংসযজ্ঞের পর লাখ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত শিশু এবং পরিবারের জীবনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, যার মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যেই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বসবাস করছে।
এমনকি ঝড়ের সবচেয়ে খারাপ সময় পেরিয়ে গেলেও, ভূমিধসের ঝুঁকি বেশি থাকে এবং সামনের দিনগুলোতে পানিবাহিত রোগসহ আরও বিপদ বাড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা গত ১৪ মে, স্থানীয় সময় প্রায় বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ ও মায়ানমারের উপকূলে আঘাত হানে। যা ভারী বৃষ্টিপাত, ঝড়বৃষ্টি এবং প্রতি ঘণ্টায় ১৭৫ মাইল প্রবল বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়েছিল।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু শিশু এবং পরিবার আবারও একটি সংকটের তীক্ষ্ণ প্রান্তে রয়েছে, যা তাদের সৃষ্ট নয়। ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে ইতোমধ্যেই সংঘাত, দারিদ্র্য, অস্থিতিশীলতা এবং জলবায়ু সংকট , পরিবেশগত ঝুঁকির মধ্যে সম্প্রদায়গুলো বসবাস করছে।’
‘যেহেতু আমরা জরুরিভাবে এই ঘূর্ণিঝড়ের পরে শিশুদের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনের মূল্যায়ন এবং প্রতিক্রিয়া জানাই, সেহেতু আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে শিশুদের এবং তাদের পরিবারের জীবন বাঁচাতে এবং উন্নত করার সর্বোত্তম উপায় হলো দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজে বের করা।’
কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরের আবাসস্থল বাংলাদেশে। যেখানে ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবল ঝড়ের কবলে পড়েছে, যাদের অর্ধেকই শিশু। শরণার্থী শিবিরগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে আঁটসাঁট জায়গাগুলোর মধ্যে স্থাপিত হয়েছে, যা শিশুদের রোগ, অপুষ্টি, অবহেলা, শোষণ এবং সহিংসতার জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতিতে প্রকাশ করে। শিবিরগুলোও ভূমিধসের প্রবণ, এবং শিশুরা ভঙ্গুর অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা ২০১৯ সালের গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ফণীর সঙ্গে উত্তর ভারত মহাসাগরে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় হিসাবে যুক্ত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি দেখেছেন যে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় মৃত্যুর সংখ্যা হ্রাস করেছে, জলবায়ু পরিবর্তন এই অগ্রগতিকে হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাড়ে ৩৪ মিলিয়ন নারীর বিয়ে হয় ১৮ বছর বয়সের আগেই: ইউনিসেফ
তারা উল্লেখ করেছে যে ঝড়ের ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতা আগামী দশকগুলোতে বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি করবে।
কক্সবাজার ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেলেও, হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শরণার্থীদের দেওয়া বেশ কিছু অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, সুযোগ-সুবিধা এবং অবকাঠামো বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং প্রবল বাতাস ও বৃষ্টির কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উভয় দেশের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সময়মত এবং জরুরি মানবিক প্রবেশাধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইউনিসেফ মাঠে রয়েছে, প্রয়োজন মূল্যায়ন করছে এবং জরুরি ত্রাণ প্রদান করছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন, শিশু সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং শিক্ষাসহ আমাদের প্রতিক্রিয়া পরিষেবাগুলোকে আরও বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারে সরবরাহের পূর্ব বরাদ্দ করেছে।
রবিবার দিনের শেষের দিকে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িঘর, স্বাস্থ্য সুবিধা, স্কুল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ওপর দিয়ে বয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ লক্ষাধিক লোকের মধ্যে অনেকেই উদ্বাস্তু বা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ (আইডিপি), শিবিরে এবং নাগালের কঠিন এলাকায় দুর্বল কাঠামোগত আশ্রয়ে বসবাস করে।
তারা খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সুরক্ষার জন্য মানবিক সহায়তার উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।
বিশেষ করে মিয়ানমারে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ১৬ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ - এর মধ্যে ৫৬ লাখ শিশু - রোহিঙ্গা, জাতিগত রাখাইন এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের ১২ লাখ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকসহ রাখাইন রাজ্যে এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের চীন রাজ্য এবং সাগাইংসহ ম্যাগওয়ে অঞ্চলঅবস্থানগুলো ঘূর্ণিঝড়ের পথে ছিল।
এলাকাগুলো নিচু এবং বন্যার ভূমিধসের ঝুঁকিপূর্ণ।
মূলত বিঘ্নিত পরিবহন ও টেলিযোগাযোগ পরিষেবা এবং গাছপালা ও ধ্বংসাবশেষের কারণে কিছু রাস্তার দুর্গমতার কারণে মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের মূল্যায়ন চ্যালেঞ্জিং।
তবে, প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ঝড়ের শিকারদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে জরিপে: ইউনিসেফ
বাংলাদেশে সাড়ে ৩৪ মিলিয়ন নারীর বিয়ে হয় ১৮ বছর বয়সের আগেই: ইউনিসেফ
বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ যুবতীর শৈশবে বিয়ে হয়। ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের ডেটা ব্যবহার একটি নতুন প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বুধবার ইউনিসেফের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এক নতুন বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি এবং বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ প্রকোপ রয়েছে।
বাংলাদেশে আনুমানিক তিন কোটি ৪৫ লাখ নারী তাদের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে করেছিলেন এবং এক কোটি ত্রিশ লাখের বেশি নারী তাদের ১৫ বছর বয়সের আগেই বিয়ে করেছিলেন।
আরও পড়ুন: সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা ইউনিসেফের
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেছেন, ‘সন্তানদের বিয়ে করা উচিত নয়। অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে বাল্যবধূর সংখ্যা বিস্ময়কর। লক্ষ লক্ষ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মেয়েদের সুরক্ষার জন্য, তারা যাতে স্কুলে থাকে এবং তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের জরুরি এবং সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন।’
আজ ইউনিসেফের প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণ অনুযায়ী গত এক দশকে বাল্যবিবাহের স্থিতিশীল পতন সত্ত্বেও, সংঘাত, জলবায়ু ধাক্কা এবং কোভিড-১৯ থেকে চলমান ফলআউট সহ একাধিক সংকট কঠোর অর্জিত লাভগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘বিশ্ব এমন সংকটের মধ্যে রয়েছে যেগুলো অরক্ষিত শিশুদের আশা ও স্বপ্নকে চূর্ণ করে দিচ্ছে, বিশেষ করে মেয়েরা যাদের ছাত্র হওয়া উচিত, কনে নয়।’
‘স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাত, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিধ্বংসী প্রভাব পরিবারগুলোকে বাল্যবিবাহের মিথ্যা ধারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য করছে। তাদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়িত জীবনের অধিকার যাতে সুরক্ষিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের ক্ষমতায় সবকিছু করতে হবে।’
বিশ্বব্যাপী, বিশ্লেষণে অন্তর্ভুক্ত সর্বশেষ বিশ্বব্যাপী অনুমান অনুসারে, আনুমানিক ৬৪০ মিলিয়ন জীবিত মেয়ে এবং মহিলা আজ শৈশবে বিবাহিত হয়েছে, বা প্রতি বছর ১২ মিলিয়ন মেয়ের বিয়ে হয়েছে।
পাঁচ বছর আগে সর্বশেষ হিসাব প্রকাশের পর থেকে শৈশবে বিয়ে করা তরুণীদের অংশ ২১ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
এছাড়া, এই অগ্রগতি সত্ত্বেও, ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণের জন্য বিশ্বব্যাপী হ্রাসগুলো ২০ গুণ দ্রুততর হতে হবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বব্যাপী হ্রাস অব্যাহত রেখেছে এবং প্রায় ৫৫ বছরে বাল্যবিবাহ নির্মূল করার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
যাইহোক, এই অঞ্চলটি বিশ্বের প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) বাল্যবধূর আবাসস্থল। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি রেকর্ড করেছে, এটি এখনও বিশ্বব্যাপী মোটের এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী।
সাব-সাহারান আফ্রিকা - যা বর্তমানে শিশু পাত্রীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈশ্বিক অংশীদার (২০ শতাংশ) - বর্তমান গতিতে এই অনুশীলনটি শেষ হতে ২০০বছরেরও বেশি দূরে রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাকালে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে জরিপে: ইউনিসেফ
দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, চলমান সংকটের পাশাপাশি, বিশ্বের বাকি অংশে প্রত্যাশিত হ্রাসের বিপরীতে শিশু পাত্রীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।
ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ানরাও পিছিয়ে পড়ছে এবং অবশ্যই ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আঞ্চলিক স্তরে থাকবে। ধারাবাহিক অগ্রগতির পর, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়াও স্থবির হয়ে পড়েছে।
যেসব মেয়েরা শৈশবে বিয়ে করে তারা তাৎক্ষণিক এবং আজীবন পরিণতি ভোগ করে।
তাদের স্কুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম, এবং প্রাথমিক গর্ভাবস্থার বর্ধিত ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। ফলস্বরূপ শিশু এবং মাতৃস্বাস্থ্য জটিলতা এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।
এই অভ্যাসটি মেয়েদের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের থেকেও বিচ্ছিন্ন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়ে অংশগ্রহণ থেকে তাদের বাদ দিতে পারে, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার উপর একটি ভারী প্রভাব ফেলে।
বিশ্বব্যাপী, সংঘাত, জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপর্যয়, এবং কোভিড১৯- এর চলমান প্রভাব - বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, আয়ের ধাক্কা, এবং স্কুল থেকে ঝড়েপড়া - বাল্যবিবাহের চালকদের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করছে এবং মেয়েদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা গ্রহণ করা কঠিন করে তুলছে। শিক্ষা, সামাজিক সেবা এবং সম্প্রদায় সহায়তা যা তাদের বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা করে।
ফলস্বরূপ, ভঙ্গুর পরিবেশে বসবাসকারী মেয়েরা বিশ্বব্যাপী গড় মেয়ের তুলনায় বাল্যবধূ হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ, বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংঘাতজনিত মৃত্যুর প্রতি দশগুণ বৃদ্ধির জন্য বাল্যবিবাহের সংখ্যা ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো একটি মেয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।যা, প্রতি ১০ শতাংশ বৃষ্টিপাতের বিচ্যুতি বাল্যবিবাহের প্রকোপ প্রায় এক শতাংশ বৃদ্ধির সাথে যুক্ত৷
বিগত দশকে বাল্যবিবাহ বন্ধ করার জন্য মূল্যবান লাভগুলো ও হুমকির সম্মুখীন - বা এমনকি বিপরীত – কোভিড-১৯-এর চলমান প্রভাবগুলোর দ্বারা, বিশ্লেষণ সতর্ক করে। এটি অনুমান করা হয় যে মহামারিটি ইতোমধ্যে ২০২০ সাল থেকে এড়ানো বাল্যবিবাহের সংখ্যা এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে দিয়েছে।
রাসেল আরও বলেছেন, ‘আমরা প্রমাণ করেছি যে বাল্যবিবাহ বন্ধ করার অগ্রগতি সম্ভব। এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত মেয়ে এবং পরিবারের জন্য দৃঢ় সমর্থন প্রয়োজন।’ ‘আমাদের অবশ্যই মেয়েদের স্কুলে রাখা এবং তাদের অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি স্কুলে যায় না, উদ্বেগ ইউনিসেফের
করোনাকালে শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে জরিপে: ইউনিসেফ
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও জাতিসংঘ জরুরি শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) এর এক যৌথ জরিপে করোনাকালে বাংলাদেশের শিশুদের লেখাপড়ার ওপর ডিজিটাল-বৈষম্যের ভয়াবহ প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেন’স এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১’- শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ ছিল, তাদের একটি হলো বাংলাদেশ। করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজনেরও কম (১৮ দশমিক ৭ শতাংশ) দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।
জরিপে দেখা যায়, করোনার সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুরা। যাদের ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ব্যবহারের সুযোগ সীমিত এবং যাদের বাড়িতে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মত সহায়ক ডিভাইসের অভাব রয়েছে।
তাছাড়া, শহর এলাকার শিশুদের (২৮ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় কম সংখ্যক শিশু (১৫ দশমিক ৯ শতাংশ) দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণ করে।
এই জরিপে বড় ধরনের ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টিও জরিপে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি স্কুলে যায় না, উদ্বেগ ইউনিসেফের
যেখানে দেখা গেছে, দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের হার সবচেয়ে বেশি ছিল খুলনা ও ঢাকায় (যথাক্রমে ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ ও ২৩ দশমিক ১ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম ছিল ময়মনসিংহে (৫ দশমিক ৭ শতাংশ)।
সবচেয়ে কম বয়সী শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে।
দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশগ্রহণের হার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের (নিম্ন মাধ্যমিকে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও উচ্চ মাধ্যমিকে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ) তুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ক্ষেত্রে (১৩ দশমিক ১ শতাংশ) ছিল কম।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের ওপর মহামারির প্রভাব দেশজুড়ে এখনও একই রকম। শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও বেশি মাত্রায় অভিঘাত সহনশীল করতে ডিজিটাল-বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে।’
উদ্ভাবনী প্রতিকারমূলক শিক্ষাসহ পড়াশোনার ক্ষতি দূর করতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, ‘ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেন’স এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১’- জরিপটি কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দীর্ঘস্থায়ী স্কুল বন্ধের কারণে শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি, স্কুলের বাইরে থাকা, ঝরে পড়া ও শেখার ক্ষতিসহ শিক্ষার অনান্য ফলাফলের ওপর প্রভাব বুঝতে সাহায্য করবে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে।’
জরিপে বাল্যবিয়ে সম্পর্কিত মহামারি-পরবর্তী প্রাথমিক উপাত্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জরিপটি এক্ষেত্রে নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে, যা আশা জাগিয়েছে।
শিশুদের পরিস্থিতির ওপর দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জরিপ ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) অনুসারে, ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে।
২০২৪ সালে হতে যাওয়া পরবর্তী এমআইসিএস নিশ্চিত করবে যে, ‘ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেন’স এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১’- জরিপে নির্দেশিত বাল্যবিয়ের ইতিবাচক নিম্নগামী প্রবণতা টিকে আছে কিনা।
আরও পড়ুন: সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা ইউনিসেফের
ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১১ সাংবাদিক
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি স্কুলে যায় না, উদ্বেগ ইউনিসেফের
জাতীয় পর্যায়ের নতুন তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় নথিভুক্ত নয়।
ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ (এনএসপিডি) ২০২১’-এ এই তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপ বলছে, প্রতিবন্ধী শিশুদের (৫-১৭ বছর বয়সী) মধ্যে মাত্র ৬৫ শতাংশ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং মাত্র ৩৫ শতাংশ শিশু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নথিভুক্ত আছে।
আরও পড়ুন: ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১১ সাংবাদিক
মোট ৬০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে।
সমীক্ষায় আরও উঠে এসেছে যে, প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে যারা আনুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করছে তারা তাদের বয়স অনুপাতে শিক্ষাগতভাবে গড়ে দুই বছরের বেশি পিছিয়ে।
এছাড়া এই প্রথম বিবিএস প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংক্রান্ত একটি জাতীয় জরিপ পরিচালনা করেছে। এই জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য প্রতিবন্ধী শিশুরা বেড়ে ওঠার সময় কত প্রকার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় তা তুলে ধরেছে।
বিবিএসের প্রকল্প পরিচালক ইফতেখাইরুল করিম বলেন, রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা ও উদ্যোগ প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করবে।
জরিপের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের ১.৭ শতাংশ শিশু ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’-এ সংজ্ঞায়িত ১২ ধরনের প্রতিবন্ধিতার অন্তত একটি প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বেঁচে আছে।
অন্যদিকে ৩.৬ শতাংশ শিশুর অন্তত এক ধরনের ‘ফাংশনাল ডিফিকাল্টি’ রয়েছে।
ফাংশনাল ডিফিকাল্টির বিভিন্ন ধরনের মধ্যে রয়েছে দেখা, শোনা, হাঁটা, আঙ্গুল ব্যবহার করে কাজ করা, যোগাযোগ, শেখা, খেলা বা আচরণ নিয়ন্ত্রণ।
আরও পড়ুন: সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা ইউনিসেফের
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে কতজন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তা তুলে ধরেছে নতুন এই তথ্য। এই শিশুদের জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করা দরকার। আমাদেরকে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সেবাসমূহ প্রদান করতে হবে এবং এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে তারা উন্নতি করতে পারে।
এছাড়া প্রতিবন্ধী শিশুরা বড় হওয়ার পর প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় তার ওপরও আলোকপাত করেছে জরিপ থেকে উঠে আসা তথ্য।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা কাজ করার বয়সী তাদের মাত্র এক তৃতীয়াংশ কর্মরত, যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারীদের কাজে নিযুক্ত না থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
আর যদিও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে যারা সরকারিভাবে নিবন্ধিত, তাদের ৯০ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষা হিসেবে ভাতা পান, বেশিরভাগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি-প্রায় ৬৫ শতাংশ-অনিবন্ধিত থেকে যায়।
প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বেড়ে ওঠা শিশুদের মাঝে থাকা সম্ভাবনার সর্বোচ্চ বিকাশের জন্য শৈশবকালীন দ্রুত শনাক্তকরণ ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে পরিবার ও সেবা প্রদানকারীরা প্রতিবন্ধী শিশুদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করতে পারে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানে প্রতিবন্ধী শিশুদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে এবং সামাজিক নেতিবাচক ধ্যানধারণা ও কুসংস্কার দূর করতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকার ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হলেন বিদ্যা সিনহা মিম
সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা ইউনিসেফের
ইউনিসেফ বাংলাদেশে দ্রুত সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করায় রেজিস্ট্রার জেনারেল, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের প্রশংসা করেছে।
রবিবার জাতিসংঘের এই সংস্থাটি বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অগ্রগতি সত্ত্বেও, বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী মাত্র ৫৬ শতাংশ শিশুর সরকারি জন্ম নিবন্ধনপত্র রয়েছে।
এর মানে হল প্রায় দুই সন্তানের মধ্যে একজনের জন্ম নিবন্ধন নেই।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়মিত টিকাদানের হার ৯০ শতাংশের বেশি।
আরও পড়ুন: ৩৪৫ শিশুর মুক্তিতে বাংলাদেশের প্রশংসা ইউনিসেফ’র
রবিবার সই হওয়া চুক্তিটি একটি সমন্বিত পদ্ধতির পথ প্রশস্ত করে, যেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিশুদের জন্ম নিবন্ধন হবে। যদি তারা জন্মের সময় নিবন্ধিত না-ও হয়, তাদের নিয়মিত প্রথম টিকা দেয়ার সময় নিবন্ধিত করা হবে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেছেন, ‘জন্মের সময় নিবন্ধন প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার। এই অপরিহার্য ও সামগ্রিক উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানাই। এই পদক্ষেপটি একবার বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের কয়েক লাখ শিশু উপকৃত হবে।’
তিনি বলেন, জন্ম নিবন্ধন শিশুর জাতীয়তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষাসহ অন্যান্য সমস্ত অধিকার দাবি করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বর্তমানে বাংলাদেশে জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক।
তবে, অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত নয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) মো. রাশিদুল হাসান বলেন, ‘জন্ম একজন ব্যক্তির জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আজ সই হওয়া এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনের প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, সহজ ও নির্ভুল করা হবে। এটি শিশু অধিকার রক্ষার পাশাপাশি পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
ইউনিসেফের প্রযুক্তিগত সহায়তায়, ২০৩০ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের সার্বজনীন জন্ম নিবন্ধনের লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে জন্ম নিবন্ধন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ডেটাবেসের একীকরণ বাস্তবায়ন করা হবে।
ইউনিসেফ ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সালে অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন পরিষেবার উন্নতির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগকে সমর্থন করেছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপর্যয় এড়াতে স্কুল খোলা রাখুন: ইউনিসেফ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে আর অপেক্ষা নয়: ইউনিসেফ-ইউনেস্কো
ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১১ সাংবাদিক
শিশুদের অধিকার নিয়ে অসামান্য প্রতিবেদনের জন্য ১১ বাংলাদেশি সাংবাদিক পেলেন ১৭ তম ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। ২০০৫ সালে ইউনিসেফের চালু করা মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস শিশুদের অধিকার নিয়ে লেখা প্রতিবেদনে শ্রেষ্ঠত্বকে স্বীকৃতি দেয়।
ইউনিসেফ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পুরস্কার বিজয়ীরা জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সকল ধরনের গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রায় ৩০০টি প্রতিবেদন জমা পড়েছিল। সেখান থেকে বিচারকদের একটি স্বাধীন প্যানেল এই ১১ সাংবাদিককে নির্বাচিত করেছে।
বিজয়ী এবং মনোনীতদের প্রতিবেদনগুলো শিশুদের জোরপূর্বক বিয়ে, শিশুশ্রম, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ঋতুস্রাব, পথশিশু, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, নির্যাতন ও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কথা উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, 'আজ আমরা শক্তিশালী যেসব প্রতিবেদনকে সম্মান জানাচ্ছি সেগুলো শিশু অধিকারের কথা সবার সামনে তুলে ধরতে এবং ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সাংবাদিকরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তার-ই প্রতিফলন। তিক্ত বঞ্চনার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি এগুলোতে উঠে এসেছে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে প্রতিদিনের বিজয়ের গল্পগুলোও, যা আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।'
আরও পড়ুন: ‘কপ-২৭ সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমাতে অনেকেই আগের চেয়ে বেশি কমিটমেন্ট করেছে’
এছাড়াও ১৮ বছরের কম বয়সী প্রতিভাবান শিশু সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।
তাদের চলমান প্রতিবেদনগুলি শিশুদের এমন সরঞ্জাম এবং প্ল্যাটফর্ম দেয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে যা তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলিতে তাদের নিজস্ব মতামত, ধারণা এবং চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে সক্ষম করে।
রয়টার্স বাংলাদেশের চিফ করেসপন্ডেন্ট এবং মীনা অ্যাওয়ার্ডসের বিচারক রুমা পাল বলেন, 'আমরা এই বছর শক্তিশালী কিছু প্রতিবেদন দেখেছি এবং আগামী দিন, সপ্তাহ ও মাসগুলোতে আমাদের নৈতিকতার সর্বোচ্চ মানদণ্ডে সমবেদনামূলক, সহানুভূতিশীল রিপোর্টিংয়ের উচ্চ মান বজায় রাখতে হবে। নৈতিকতা এবং সংবেদনশীলতা ভাল প্রতিবেদনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এবং গল্পটি যত বেশি আকর্ষক হয়, এটি কীভাবে পরিচালনা করা হয় সেদিকে আরও যত্ন নেয়া দরকার।’
ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের নামকরণ করা হয়েছে মীনার নামে, জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র যা বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে জনপ্রিয়।
মীনা চরিত্রটি ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশে এবং এর বাইরে শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলে আসছে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের তাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
২০০৫ সালে শুরু হওয়া একটি ঐতিহ্যের ১৭তম পুরস্কার হলো ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড -২০২২।
পুরষ্কার বিরতণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ঔপন্যাসিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পাঠশালা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক শামীম আখতার। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম পুরস্কারে মনোনীতদের জন্য একটি ভিডিও বার্তা পাঠান।
মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২২ বিজয়ীরা হলেন-
প্রিন্ট সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন কালের কণ্ঠের এমরান হাসান সোহেল ‘মানবতা শিশুদের শুধু জল আছে’, বিডিনিউজ২৪.কমের হিমু চন্দ্র শীল ‘রোহিঙ্গা শিশু আয়াত উল্লাহর জীবনে একটি দিন’, নিউজ বাংলা ২৪ এর জেসমিন আক্তার পাপড়ি ‘রাইজিং স্যানিলিটি: কিশোরী মেয়েরা পিরিয়ড বন্ধ করতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করে’, ঢাকা ট্রিবিউনের নওয়াজ ফারহিন অন্তরা ‘প্যাড আপা': গ্রামীণ মাসিক স্বাস্থ্যবিধির জন্য একটি আশার আলো’ এবং ঢাকা পোস্টের তানভীরুল ইসলাম।
ফটো সাংবাদিকতায় পুরস্কার পেয়েছেন প্রথম আলোর মো. সাজিদ হোসেন ‘শিশু শিক্ষা’ ও জাহিদুল করিম।
‘সরকারিভাবে বাল্যবিবাহ কমেছে... কিন্তু বাস্তবতা কি?" (ভিডিও সাংবাদিকতা) এর জন্য নাগরিক টিভির শাহনাজ শারমীন, “আমরা কি ‘অটো পাস’ এবং ‘কোভিড ব্যাচ’ শব্দ ব্যবহার করে শিশুদের ক্ষতি করছি” (প্রিন্ট সাংবাদিকতা) জন্য ঢাকা পোস্টের তানভীরুল ইসলাম, ‘চালের দাম’(ফটোসাংবাদিকতা) এর জন্য দৈনিক প্রথম আলোর জাহিদুল করিম।
ইউনিসেফ চিলড্রেনস মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২২ এর বিজয়ীরা (অনূর্ধ্ব-১৮)
মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, জাগো নিউজ ২৪.কম, ‘শিক্ষা বঞ্চিত বেদে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে’ (প্রিন্ট সাংবাদিকতা), খালিদুল ইসলাম তানভীর, এটিএন বাংলার জন্য ‘শিক্ষা যখন মারাত্মক হয়ে ওঠে’ (ভিডিও সাংবাদিকতা), ধী অরনী পল , হ্যালো.বিডিনিউজ২৪.কম-এর জন্য ‘রাস্তায় তাদের ঠিকানা’ (ফটোসাংবাদিকতা)।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি নেই: ফখরুল
প্রধানমন্ত্রী সম্মানসূচক “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস”-এর উপাধিতে ভূষিত