প্রধানমন্ত্রী
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। রবিবার সকালে এক টুইট বার্তায় সানচেজ নিজেই এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওই টুইটে তিনি লেখেন, ‘আজ সকালে আমি করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছি।’
তিনি আরও জানান, সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহন করে কাজ চালিয়ে যাবেন তিনি।
স্পেন ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি, স্বাস্থ্যকর্মী ও রেসিডেন্সিয়াল কেয়ার হোমে বসবাসকারী ব্যক্তিদের জন্য ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজ দেয়ার প্রচারণা শুরু করার একদিন আগে এ খবর জানা গেছে।
সম্প্রতি স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের করোনা থেকে সেরে উঠতে ১৪ দিনেরও বেশি সময় লাগছে। এরপরই করোনার সর্বশেষ স্ট্রেনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য এই দ্বিতীয় ‘বুস্টার ডোজ’ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যারা থাকছেন
রাশিয়ার ৩টি তেল শোধনাগারের নিয়ন্ত্রণ নিল জার্মানি
বাকিংহাম প্যালেসে রানির মরদেহ
বিএনপির শাসনামলে প্রতিটি ধাপে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপিকে কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কিন্তু তাদের শাসনামলে প্রতিটি ধাপে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভোট কারচুপিতে তারা (বিএনপি) চ্যাম্পিয়ন। এক কোটি ২৩ লাখ জাল ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা থেকে শুরু করে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে এবং সেই অধিকার রক্ষা করে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ ক্যান্টনমেন্টে বন্দী অবস্থা থেকে জনগণের ভোটাধিকারের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিন: প্রবাসীদের প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধারাবাহিকতার কারণে বাংলাদেশে সামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বারবার অগ্নিসংযোগ, হত্যা, অবরোধ আরোপের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে।
জিয়ার পরিবারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এতিমদের তহবিল অপব্যবহারের জন্য দুর্নীতির মামলায় এবং তার ছেলে তারেক রহমান মানি লন্ডারিং ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
তিনি জানান, জিয়ার অপর ছেলে প্রয়াত কোকোর অবৈধভাবে লুটপাট করা অর্থও বাংলাদেশ সরকার ফেরত এনেছে।
তিনি বলেন, তার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রবাসীদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সব সময় বাংলাদেশের দুঃসময়ে পাশে থাকে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, বিএনপির উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী
ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
নিউইয়র্কে রাষ্ট্রীয় সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন ইউএনবিকে জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা শনিবার সন্ধ্যায় সড়কপথে নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন ডিসি সফর করেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ও রাজা চার্লস তৃতীয় কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রথমে তিনি যুক্তরাজ্য পৌঁছান। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যান।
আরও পড়ুন: মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতিতে আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
নিউইয়র্কে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কে ভাষণ দেন। তিনি ইউএনজিএ’র পাশাপাশি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানেও অংশ নিয়েছেন।
৪ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
আরও পড়ুন: নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, বিএনপির উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী
জীবন ও জীবিকার স্বার্থে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, বিএনপির উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী
আগামী নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দেবে বলে সুস্পষ্টভাবে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা (বিএনপি) উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, কারণ তারা ভোট কারচুপি এবং ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাবে না। অন্যথায়, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
শনিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সব সময়ই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলতে চায় তারা কারা? আওয়ামী লীগ সব সময় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে।
পড়ুন: নিষেধাজ্ঞায় থেকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানানসই নয়: বিএনপি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ নির্বিঘ্নে নির্বাচনে তাদের ভোট দেবে। ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচন এমন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি, এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, ‘তারা জানত সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা খুন, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে অভ্যস্ত। এটাই বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে।
শেখ হাসিনা আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে এনেছে, যা সামরিক শাসন ও বিএনপি-জামায়াতের আমলে লাইনচ্যুত হয়েছিল।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে দ্রুত নির্বাচনী ফলাফল পাওয়া যায় এবং মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দিতে পারে।
তিনি অবশ্য বলেন, কিছু লোক ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে আছে এটা সত্য।
পড়ুন: জীবন ও জীবিকার স্বার্থে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে বিশ্ব শান্তির ওপর গুরুত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন
নিষেধাজ্ঞায় থেকে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য মানানসই নয়: বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যা বলেছেন তা তার জন্য উপযুক্ত নয়, কারণ তার সরকার হত্যা ও গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়ে লম্বা গল্প বলছেন। তিনি আমেরিকায় বলছেন যে তিনি যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা চান না ... তবে এটি তার মুখে শোভা পায় না। তিনি নিজেও তার দেশে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। সরকার যখন হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, তখন ৬০০ জনেরও বেশি মানুষকে গুম করা হয়েছে।’
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিএনপির জাতীয় কমিটির আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, কয়েকশ’ মানুষকে থানায় নিয়ে পঙ্গু করা হয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এক হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ‘এ কারণেই আগে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশে সুনাম
অর্জনকারী এলিট ফোর্স, র্যাব এবং এর সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারের অন্যায় আদেশ কার্যকর করার জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, আগে যারা বেআইনি নির্দেশ দিয়েছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। ‘দেশের জনগণ তাদের (সরকার) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মানুষ বলছে তারা আর বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার মানুষকে গুলি করে হত্যা করছে: বিএনপি
এর আগে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবিলম্বে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান এবং বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার
কারণে একটি দেশ নয়, বরং নারী ও শিশুসহ সমগ্র মানবজাতিকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে’।
মুন্সীগঞ্জ যুবদল কর্মী শহিদুল ইসলাম শাওন হত্যার বিষয়ে ফখরুল বলেন, গণমাধ্যমের একটি মহল পেছন থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে শাওনকে হত্যা করেছে বলে প্রচার কো হচ্ছে। ‘মিডিয়া যেভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, সংবাদপত্র সত্য বলার সাহস পাচ্ছে না। ঘটনা হলো শহিদুল ইসলাম শাওনকে গুলি
করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি শুধু বিএনপির জন্য নয়, সমগ্র জাতির জন্য রক্ত দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত শাওনের লাশ দাফন
জনসাধারণের ইস্যুতে তাদের দল সারাদেশে আন্দোলন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনে ইতোমধ্যে মুন্সীগঞ্জের শাওনসহ সারাদেশে বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের চার নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।
বিএনপি নেতা বলেন, মুন্সীগঞ্জে তাদের দলীয় কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি চালালে শাওন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আহত অবস্থায় তিনি মারা যান।
আবেগাপ্লুত হয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমরা আজ এখানে ভারী হৃদয় নিয়ে এসেছি। আমরা গত ১৫ বছর ধরে দুর্ভোগ, হতাশা এবং একটি ভয়ানক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি’।
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রধান ভূমিকা পালনকারী অধিকাংশ জাতীয় নেতার অবদানকে ক্ষমতাসীন দল স্বীকৃতি দেয় না বলে সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে।
ক্ষমতাসীন দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অপপ্রচার চালিয়ে তাকে হেয় করার চেষ্টা করে বলেও তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে শাওন হত্যার জবাব দেয়া হবে: ফখরুল
ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষকদের খোলা চিঠি
খুলনার দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছে এক হাজার কৃষক পরিবার।
সম্প্রতি বাণীশান্তা-ভোজনখালী সংযোগ সড়কে এ উপলক্ষে চিঠি লেখা কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বাণীশান্তা কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিহীন, তীব্র তাপদাহে রোপা আমন ও সবজি নিয়ে বিপাকে নওগাঁর কৃষকরা
পোস্টকার্ডের মাধ্যমে লেখা ওই চিঠিতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পশুর নদ খননের বালু কৃষিজমিতে না ফেলে বিকল্প জায়গায় ফেলার দাবি জানান কৃষকরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পশুর নদীর ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার ভুল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে কৃষকদের বিকল্প প্রস্তাব বিবেচনায় নেবেন। কিন্তু তারা তা না করে বিভিন্ন মহলকে উসকানি ও সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। এ অবস্থায় বাণীশান্তার ৩০০ একর তিন ফসলি উর্বর কৃষিজমি রক্ষায় ১২০০ কৃষক পরিবারের পাঁচ হাজার মানুষের পক্ষ থেকে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে অনাবৃষ্টিতে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
তারা বলেন, উন্নয়ন করতে গিয়ে কৃষিজমি নষ্ট করা যাবে না, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা জীবন দেবো, তবুও বাণীশান্তার তিন ফসলি কৃষিজমিতে বালু ফেলতে দেবো না।
সভাপতির বক্তব্যে ইউপি সদস্য কৃষক পাপিয়া মিস্ত্রি বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃক বাণীশান্তার কৃষিজমিতে বালু ফেলার বিরুদ্ধে দাকোপের জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা ঐক্যবদ্ধ।
আরও পড়ুন: তলিয়ে যাওয়া ফসল নিয়ে হাওরের কৃষকের হাহাকার
আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিকল্প জায়গায় বালু ফেলে বাণীশান্তার উর্বর কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগী হবে।
জীবন ও জীবিকার স্বার্থে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী ও শিশুসহ গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সময় শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বিগত বছরের মতো এবারও তিনি বাংলায় বক্তব্য দিয়েছেন। এ বছরের সাধারণ বিতর্কের থিম হল ‘এ ওয়াটারশেড মোমেন্ট: ট্রান্সফর্মেটিভ সলুশনস টু ইন্টারলকিং চ্যালেঞ্জেস’।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং সমস্ত দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকাকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে এবং তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। মানুষ খাদ্য,বাসস্থান,স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিবেকবান অংশের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করুন। শিশুদের খাদ্য, শিক্ষা,স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একই গ্রহে বাস করি এবং আমরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এটিকে আরও ভালো অবস্থায় রেখে যাওয়ার জন্য দায়বদ্ধ।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে বিশ্বব্যাপী সংহতি প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সংলাপ হচ্ছে সংকট ও বিরোধ নিরসনের সর্বোত্তম উপায়।’
এ প্রসঙ্গে তিনি ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ’- গঠনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই গ্রুপের একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে, আমি বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সঙ্কটের গভীরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বৈশ্বিক সমাধান নিরূপণ করতে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটি (যুদ্ধ) আমাদের মতো অর্থনীতিকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ফেলেছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা (বাংলাদেশ) বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও এর বাইরেও প্রভাব ফেলতে পারে
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গত মাসে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশ থেকে বাংলাদেশে অভিবাসনের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারকে সহায়তা করার জন্য ত্রিপক্ষীয় বিন্যাসে অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও একটি রোহিঙ্গাকেও তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে জাতিসংঘ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন উপস্থিতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। মানব ও মাদক পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত সংগঠিত অপরাধ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘সমস্যাটি অব্যাহত থাকলে এটি সমগ্র অঞ্চল ও এর বাইরেও নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু কর্মকাণ্ড প্রচার করুন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা প্রতিশ্রুতি দেয়া এবং ভঙ্গ করার একটি দুষ্ট চক্র দেখেছি। আমাদের এখন এই পথ পরিবর্তন করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন যে সরকার প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তনের বিপজ্জনক প্রভাব মোকাবিলায় অনেক রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের নেতৃত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, “ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি থাকাকালে আমরা ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রস্পারিটি প্লান’ গ্রহণ করি, যার লক্ষ্য হল বাংলাদেশকে ‘ঝুঁকির পথ থেকে জলবায়ু সহনশীলতা ও জলবায়ু সমৃদ্ধির টেকসই পথের’ দিকে নিয়ে যাওয়া।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কিত আমাদের জাতীয় পরিকল্পনা এবং নীতিগুলি লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল এবং অভিযোজন এবং প্রশমনে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিবেচনা করে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বিকাশের জন্য অন্যান্য দুর্বল দেশগুলোকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। আমি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানাই।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে বিশ্ব শান্তির ওপর গুরুত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন
সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার প্রতি বাংলাদেশের 'জিরো টলারেন্স' অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভূখণ্ড কোনো পক্ষকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা অন্যদের ক্ষতি করার জন্য ব্যবহার করার অনুমতি দিই না।’
সাইবার-অপরাধ এবং সাইবার-সহিংসতা মোকাবিলায় একটি আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যতামূলক যন্ত্রের সমাপ্তির জন্য জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ
একটি দায়িত্বশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার নিজস্ব জনগণের মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা একটি সামগ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন, সংঘাত ও অর্থ, জ্বালানি ও জ্বালানি সংকট প্রতিরোধে রূপান্তরমূলক সমাধান খুঁজতে আগ্রহী যা বিশ্ব এখন মোকাবিলা করছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতিতে আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
ফিলিস্তিনকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অধিকৃত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
তিনি ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের ভিত্তিতে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য সংক্ষেপে বর্ণনা করে তিনি বলেন, আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশের যোগ্য জনসংখ্যার শতভাগ টিকা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে এর সাফল্য এবং লিঙ্গ বৈষম্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় পদক্ষেপ প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে বিশ্ব শান্তির ওপর গুরুত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বিকালে (নিউইয়র্ক সময়ানুযায়ী) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব নিয়ে তার ভাষণ দেবেন।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশটি শান্তি ও স্থিতিশীলতা চায়। আমরা বলব যে সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলব যে কোনো ধরনের সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার সর্বোত্তম উপায় হল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সমাধান।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তার (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্য জলবায়ু সমস্যাও তুলে ধরবে। তিনি এর সাথে যোগ করেন, বাংলাদেশ আশা করে যে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ীরা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকারদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব ভাগ করে নেবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বহুপাক্ষিকতা প্রচারেরও আহ্বান জানাবেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতিতে আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বে শীর্ষ সফল দেশগুলোর একটি হয়ে ওঠার ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সাফল্যের কথাও প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ভূমিহীনদের ঘর উপহার দিচ্ছে। আমরা মানুষকে একটি বাড়ি ও একটি জীবন দিচ্ছি। আমরা বিশ্বকে দেখাব যে আমরা বেশ ভালো কাজ করেছি।’
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে পদ্মা সেতুর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন প্রধানমন্ত্রীর
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতিতে আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করার ও এর উদার বিনিয়োগ নীতিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, ওষুধ, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরিতে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই।’
লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের পলিসি গোলটেবিল বৈঠকে বক্তৃতা দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি উদার বিনিয়োগ নীতি আছে। যার মধ্যে রয়েছে বিদেশী বিনিয়োগ সুরক্ষা, কর অবকাশ, রয়্যালটির জন্য রেমিটেন্স, অনিয়ন্ত্রিত প্রস্থান নীতি, লভ্যাংশের সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তন, প্রস্থানের ওপর মূলধন এবং অন্যান্য সুবিধা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, আসুন আমরা আবারও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারিত্বের জন্য হাত মেলাই।’
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বেশ কয়েকটি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করছে। ছয় লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সিং আইটি পেশাদার থাকার কারণে বাংলাদেশ আইটি বিনিয়োগের জন্য সঠিক গন্তব্য।
তিনি বলেন, ‘অধিকন্তু, প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে দক্ষ মানবসম্পদ বাংলাদেশে একটি অতিরিক্ত সুবিধা। এমনকি যদি প্রয়োজন হয়, আমরা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিবেদিত 'বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল' প্রস্তাব করতে পারলে খুশি হব। আমি বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উতরে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ও রপ্তানি ক্ষেত্র বাড়ানোর জন্য দেশটির পর্যাপ্ত সহায়তা প্রয়োজন। আমি নিশ্চিত যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই চ্যালেঞ্জিং প্রচেষ্টায় আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার হতে পারে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্রগামী দেশ। কৌশলগত অবস্থানটি এই অঞ্চলের একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র হওয়ার অসাধারণ সম্ভাবনা প্রদান করে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ চার বিলিয়ন মানুষের সম্মিলিত বাজারের মাঝ অবস্থানে আছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাবিকাঠি। বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তৃতীয় বৃহত্তম সবজি উৎপাদনকারী, চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী এবং পঞ্চম বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনকারী।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক অংশগ্রহণকারীদের সাথে ধারাবাহিকভাবে অর্থনৈতিক কূটনীতি চালিয়ে যাবে। আমরা ক্রমাগত আমাদের ভৌত, আইনি ও আর্থিক অবকাঠামো উন্নত করছি এবং দেশে যোগাযোগ উন্নত করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপ্তি অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক উভয় ধরনের সংযোগ বৃদ্ধি করেছে। ঢাকা মেট্রোরেল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে দ্রুত অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা যুক্ত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পুষ্টি, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা এবং আইসিটি ক্ষেত্রে একটি অনুকরণীয় আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার দেশে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে। আইএলও রোডম্যাপ উদ্বেগ মোকাবিলার জন্য কর্মের একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও সময়রেখা প্রদান করে এবং শ্রম খাতে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার পরামর্শ দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সরকার এই সেক্টরে ক্রমাগত উন্নতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে ব্যাপকভাবে যুক্ত রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান যে বাংলাদেশে ১২১ মিলিয়ন মানুষ কমপক্ষে দুটি ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি মহামারি মোকাবিলায় দুর্দান্ত স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে।’
তিনি কোভ্যাক্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ৭৫ মিলিয়নেরও বেশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দান করার জন্য মার্কিন সরকারের আন্তুরিক প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় পদক্ষেপ প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় পদক্ষেপ প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) মোকাবিলায় বিশ্বের নিষ্পত্তিমূলক রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং পদক্ষেপ প্রয়োজন যা কয়েক লাখ মানুষের জীবন নষ্ট করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এটি (অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স) একটি সমস্যা, যা একটি সংকটে পরিণত হতে পারে। এটি বিশ্বব্যাপী কয়েক লাখ মানুষের জীবন নিতে পারে। এটা যাতে না ঘটে তার জন্য আমাদের টেকসই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের লেক্সিংটন হোটেলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিষয়ক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে আরও কিছু করা দরকার। কৌশলগত অগ্রাধিকারগুলো স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। তাদের ‘এক স্বাস্থ্যনীতি’ পদ্ধতি অনুসরণ করা দরকার।’
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৫০টি দেশে ইতোমধ্যেই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স নিয়ে তাদের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। ‘নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থপূর্ণ সমর্থন প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মাল্টি-পার্টনার ট্রাস্ট ফান্ড এক্ষেত্রে ভালো উপায় হতে পারে।
তিনি জানান, ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের জন্য বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি করা দরকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০১৯ সাল থেকে গ্লাস প্ল্যাটফর্মে এই প্রসঙ্গে কথা বলছে। ‘এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সঙ্গে সংযোগের মাধ্যমে প্রাথমিক রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করা যেতে পারে।’
তিনি উদ্বেগের প্রধান কারণ হিসেবে গবেষণার অভাব, নতুন ভ্যাকসিন ও অন্যান্য চিকিৎসার উদ্ভাবনের কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এ জন্য বেসরকারি খাতের যথাযথ প্রণোদনা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স নিয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। নভেম্বর মাসে বার্ষিক বিশ্ব সচেতনতা সপ্তাহ তার জন্য একটি উপযুক্ত উপলক্ষ। এসডিজি-এর জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের সূচক তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সূচকগুলোর প্রতিবেদন মানুষের স্বাস্থ্য, প্রাণীর স্বাস্থ্য, খাদ্য ব্যবস্থা ও পরিবেশকে প্রভাবিত করে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের নীতি বিকাশে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরে সাফজয়ী ফুটবলারদের পুরস্কারে দেবেন প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর