আত্মসমর্পণের নির্দেশ
সেলিম চেয়ারম্যানকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুরের বিতর্কিত চেয়ারম্যান সেলিম খানকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বশরীরে হাজির হয়ে রবিবার আগাম জামিনের আবেদন জানালে তাকে আগাম জামিন না দিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।
আদালতে সেলিম খানের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া আক্তার পপি।
দুদকের আইনজীবী ফৌজিয়া আক্তার পপি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সেলিম খান আগাম জামিন আবেদন করেছিলেন। আদালত তাকে জামিন দেননি। তাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ গত ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সেলিম খান অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন। এছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
আরও পড়ুন: মেঘনায় বালু তুলতে পারবেন না সেলিম চেয়ারম্যান
কিশোরীকে ধর্ষণ: বিজিবি সদস্যকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ধর্ষণের অভিযোগ থেকে এক বিজিবি সদস্যকে অব্যহতি দিয়ে বিচারিক আদালতের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে নীলফামারীর এক কিশোরীর করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে মামলার আসামি ওই বিজিবি সদস্য মো. আক্তারুজ্জামানকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী বদরুন নাহার।
এর আগে গত ১৫ জুন দরিদ্র পরিবারের ওই কিশোরী স্বশরীরে হাইকোর্টের উপরোক্ত বেঞ্চে হাজির হয়ে তার ধর্ষণের বিচার চান। ওই কিশোরী আদালতে সেদিন বলেন, আমার বয়স ১৫ বছর। আমি ধর্ষণের শিকার। একজন বিজিবি সদস্য আমাকে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল তাকে খালাস দিয়েছে। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের টাকা পয়সা নাই। আমরা আপনার কাছে বিচার চাই।
এরপর আদালত ওই কিশোরীর কাছে জানতে চান, যে তার কাছে মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র আছে কি না? তখন কিশোরী মামলার কাগজ আছে বলে আদালতকে জানান। ওই সময় উপস্থিত সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের আইনজীবী বদরুন নাহারকে মামলাটির দেখভাল করতে বলেন আদালত।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ
পরে গত ২৬ জুন ধর্ষণের অভিযোগ থেকে বিজিবি সদসদ্যকে অব্যহতির আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করেন আইনজীবী বদরুন নাহার। আপিলে নারাজি আবেদন গ্রহণ করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়। আদালত শুনানি নিয়ে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে এ মামলার একমাত্র আসামি বিজিবি সদস্য মো. আক্তারুজ্জামানকে অব্যহতির আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। একই সঙ্গে আসামিকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আইনজীবী বদরুন নাহার জানান, এখন কিশোরীর পক্ষে হাইকোর্টে করা এই আপিলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি হবে।
জানা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার এক ভ্যানচালকের সন্তান ওই ভুক্তভোগী কিশোরী। বিজিবি সদস্য আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর ধর্ষণ মামলা করেন কিশোরীর মা। এ ঘটনার তদন্তে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি মর্মে পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ১৭ মে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। এরপরই ওই কিশোরী বিচার চেয়ে হাইকোর্টে আসেন।
আরও পড়ুন: কেন্দুয়ায় প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
কার্তিক সিকদার হত্যা মামলা: ৩ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
প্রায় ১৫ বছর আগে ফরিদপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক কিশোরীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ের পর মেয়ের বাবা কার্তিক সিকদারকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
যাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে তারা হলেন- ইমারত মোল্লা, কালাম মোল্লা ও সিদ্দিক মোল্লা।
হাইকোর্টের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ।
জানা যায়, ফরিদপুরের নগরকান্দার চর যশোরদী ইউনিয়নের যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ মোল্লা মেঘারকান্দি গ্রামের কার্তিক সিকদারের এক নাবালিকা কন্যা চঞ্চলাকে অপহরণ ও জোর করে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করেন সিরাজ মোল্লা। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ১ জুন রাতে বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদলের তখনকার ইউনিয়ন সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ মোল্লা ও তার সহযোগীরা কার্তিক সিকদারকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে ফেলে রেখে যায়। আহত কার্তিককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যেতেও বাধা দেয়া হয়। পরদিন ২ জুন হাসপাতালে নেয়ার পথে কার্তিক সিকদার মারা যান। এরপর তার মরদেহ পোড়াতে না দিয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়।
এ ঘটনায় ২০০৭ সালের ১৩ মার্চ নিহত কার্তিক সিকদারের স্ত্রী মিলনী সিকদার আদালতে সিরাজ মোল্লা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় নিম্ন আদালত ২০১৯ সালের ২২ জুলাই সিরাজ মোল্লাসহ ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয়। রায়ের পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ অবস্থায় ইমারত মোল্লা, কালাম মোল্লা ও সিদ্দিক মোল্লা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাদের জামনি দেন। এরপর তারা কারাগার থেকে মুক্তি পান। এ অবস্থায় তাদের জামিন স্থগিত ও গ্রেপ্তারের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ভুয়া এজাহার দাখিল: ৫ আসামির জামিন বাতিল করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ভুয়া এজাহার দাখিল করে জামিন নেয়া খুলনার দিঘলিয়া থানার পদ্মবিলা গ্রামের টিপু শেখ হত্যা মামলার পাঁচ আসামির জামিন বাতিল করে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।