জাতিসংঘ
পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১২শ’ ছাড়িয়েছে
পাকিস্তানের বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর মানুষদের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে মানবিক সহায়তা বিশুদ্ধ খাবার সরবরাহ করার পরও মৃত্যু বেড়ে ১২শ’ ছাড়িয়েছে।
শুক্রবার দেশটির কর্মকর্তারা বলেন, বাস্তুচ্যুত পরিবার ও তাদের শিশুরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে আছে।
বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় প্রায় ৩০ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার অভিযানে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করতে আরব আমিরাতের ৯টি বিমান ও উজবেকিস্তানের একটি বিমান এসেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের আরও দুটি ত্রাণবাহী বিমান শুক্রবারের পর পাকিস্তানে পৌঁছাবে এবং বন্যা আক্রান্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণে তুরস্কের একটি ট্রেন পণ্যসামগ্রী নিয়ে পাকিস্তানের পথে রয়েছে।
ইতোমধ্যে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বন্যায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতরেসেসহ অনেক কর্মকর্তা বর্ষা পরবর্তী এই অস্বাভাবিক বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। তিনি এই সপ্তাহের শুরুতে বিশ্বকে এই ভয়ানক সংকটের মুহূর্তে ‘সজাগ ভূমিকা’ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘের বুধবারের তহবিলের আবেদনের ফলাফল ‘খুবই উৎসাহব্যঞ্জক’ হলেও আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ১৬ কোটি ডলারের জরুরি সহায়তার আবেদন জাতিসংঘের
ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র ম্যাথিও সল্টমার্শ বলেন, বন্যার্তদের জন্য তারা খুব দ্রুতই তাবু, কম্বল, প্লাস্টিক শিট, বাকেট ও অন্যান্য গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রী পাঠাবে।
তিনি বলেন, ‘দেশটিতে থাকা আমাদের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, মানুষ অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিমানে করে খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও তাবু পাঠানো হয়েছে। দেশের বন্যা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সংযুক্ত আরব আমিরাতের সফর স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে চীন, সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্য দেশ ত্রানসামগ্রী পাঠিয়েছে পাকিস্তানে। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের বন্যা কবলিতদের জন্য তিন কোটি মার্কিন ডলার ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
পাকিস্তান দাবি করছে, সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভারী বর্ষণ ও বন্যা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসিম ইফতেখার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিজ্ঞানীরা বলেছিল এই সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের সতর্কতাকে বিশ্বাসযোগ্যতা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এটি কোন ষড়যন্ত্র নয়, এটি বাস্তবতা এবং আমাদের সচেতন হওয়া দরকার।’
সরকারের প্রাথমিক হিসাবে বন্যার এই ধ্বংসযজ্ঞে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা: পাকিস্তানে মৃত্যু হাজার ছাড়াল
জাতিসংঘ পুলিশ, সংস্থা ও জাতীয় কর্তৃপক্ষসহ সকলের সমন্বয় প্রয়োজন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতিসংঘের কাছে সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ভঙ্গুরতার মূল কারণ চিহ্নিত করে ওই সকল দেশে মৌলিক সেবা প্রদান, অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সংস্কার বাস্তবায়নে দেশসমূহের সরকারি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জাতিসংঘকে সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ পুলিশ, জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম, বিভিন্ন সংস্থা ও জাতীয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে একটি সুসংগত ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন।’
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের জাতিসংঘের সদর দপ্তরে জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের সম্মেলন (ইউএনকপস ২০২২) উপলক্ষে আয়োজিত ‘জাতিসংঘ পুলিশ এর অংশগ্রহণে টেকসই শান্তি ও উন্নয়ন’- শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৮৯ সাল থেকে ‘জাতিসংঘ পুলিশ’ এর গর্বিত সদস্য হিসেবে, টেকসই শান্তি ও উন্নয়নের জন্য এর যেকোনো উদ্যোগে অবদান রাখতে আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।’
নিরাপত্তা ও উন্নয়ন পরস্পর নির্ভরশীল এবং এটি পারস্পরিকভাবেই শক্তিশালী একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুবিধার্থে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুসংগত দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিরাপত্তা খাত সংস্কারে জাতিসংঘ পুলিশিং এর ভূমিকা এবং ম্যান্ডেট অনুযায়ী আইনের শাসন জোরদার ও বিশেষায়িত পুলিশ টিমের (এসপিটি) ওপর গুরুত্বরোপ করেন।
পড়ুন: গুমের ঘটনা জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত করুন: সরকারকে ফখরুল
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ও চরমপন্থা প্রতিরোধে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভূমিকা প্রশংসা জাতিসংঘের
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল (ইউএসজি) ভ্লাদিমির ইভানোভিচ ভরনকভ সন্ত্রাস দমন ও সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।
ভরনকভ ২০২৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সন্ত্রাসবিরোধী সংগঠনগুলোর প্রধানদের আসন্ন উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে নিজেদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানান।
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল সন্ত্রাসে অর্থায়ন, পারমাণবিক সন্ত্রাসবাদ, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কারিগরি সহায়তাসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রসারিত করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ বজায় রেখেছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিবৃতিটি কোনো বৈশ্বিক প্রতিবেদন ছিল না: জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়
পাকিস্তানে বন্যা: ১৬ কোটি ডলারের জরুরি সহায়তার আবেদন জাতিসংঘের
পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ১৬ কোটি ডলারের জরুরি তহবিলের আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে কয়েক সপ্তাহের ভয়াবহ মৌসুমী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বিশ্বের কাছে একটি সংকেত।’
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের বিশ্ব যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে, তা চোখ বন্ধ না করে ব্যবস্থা নেই। আজ, এটা পাকিস্তানে হচ্ছে, আগামীকাল, এটা আপনার দেশে হতে পারে।’
এদিকে, জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ‘এই ভয়াবহ জলবায়ু বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করতে গুতেরেস ৯ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান সফর করবেন। জাতিসংঘের প্রধান বাস্তুচ্যুত পরিবারের সাথে দেখা করবেন।’
পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
পাকিস্তানে জুনের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া মৌসুমী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় এক হাজার ১৬০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে। চলমান বন্যার কারণে তিন কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, বন্যায় ফসল নষ্ট হয়েছে এবং তার সরকার খাদ্যের ঘাটতি এড়াতে গম আমদানির কথা ভাবছে।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে কোনও অনিচ্ছাকৃত বিলম্ব, তার দেশের জনগণের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে।’
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থ স্বচ্ছভাবে ব্যয় করা হবে এবং সমস্ত সাহায্য অসহায়দের কাছে পৌঁছানো হবে।
পড়ুন: বন্যা: পাকিস্তানে মৃত্যু হাজার ছাড়াল
পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার
আমরা ব্যাচেলেটের সফরের মাধ্যমে কিছু লোকের মুখোশ খুলে দিয়েছি: শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সাম্প্রতিক সফরের মাধ্যমে সরকার সুশীল সমাজের একটি অংশসহ কিছু লোকের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও মুখোশ খুলে দিয়েছে।
মঙ্গলবার তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কাজে বিশ্বাস করি। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও আমাদের যথেষ্ট সদিচ্ছা রয়েছে (মানবাধিকার বিষয়গুলো দেখার জন্য)। আমরা এটা প্রমাণ করতেও পারি।’
তিনি বলেন, কিছু লোক নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার হস্তক্ষেপ চেয়েছিল, এটা খুবই ‘নিচু ও নোংরা’ কাজ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের সফরকালীন সময়ে তার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন, তারা আসলে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক প্লাটফর্মকে (বিএনপি-জামায়াত) সহায়তা করছেন। ‘এটি সরকারকে অপমান করার একটি অশুভ প্রচেষ্টা।’
তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াত তাদের লোকজন নিয়ে দেশে-বিদেশে ক্রমাগত ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।
কিছু মানুষ জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের আলোচনার বাইরে গিয়ে কিছু বিষয় উত্থাপন করায় প্রতিমন্ত্রী তার বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, জাতিসংঘের কার্যপ্রণালী কিভাবে চলে সে সম্পর্কেও তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই।
শাহরিয়ার বলেন, সুশীল সমাজের একটি অংশের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ব্যাচেলেট স্পষ্ট করে বলেছেন যে বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কিত দাবিগুলো সমাধান করা তার আলোচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে নেই।
তিনি এই ধরনের প্রচেষ্টাকে ‘আপত্তিকর’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর চর্চা নয়।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে সরকার: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শাহরিয়ার বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বুঝতে পেরেছেন এই মানুষগুলো কোথা থেকে এসেছে এবং তাদের উদ্দেশ্য কী।
তিনি অবশ্য বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার জন্য সরকার সুশীল সমাজের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। তবে এর একটি অংশের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
শাহরিয়ার বলেন, তথাকথিত বিরোধী দলগুলোর একটি বড় ‘ভুল ও ভ্রান্ত ধারণা’ রয়েছে যে তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করলে তাদের অনেক দাবি পূরণ হবে। ‘তারা বোকার স্বর্গে বাস করে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যাচেলেট নিজে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করেননি তবে তার সহকর্মীকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে নিযুক্ত করেন।
বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারকে আমন্ত্রণ জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে তার এই সফর জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততা গড়ে তুলবে এবং বাংলাদেশে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।
ঢাকায় ব্যাচেলেট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন ও শিক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সরকার কখনই লবিস্ট নিয়োগ করেনি, করার পরিকল্পনাও নেই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বিবৃতিটি কোনো বৈশ্বিক প্রতিবেদন ছিল না: জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে, সম্প্রতি জেনেভায় বৈশ্বিক ইস্যুতে হাইকমিশনারের দেয়া প্রতিবেদনের শেষ বিবৃতির ভুল তথ্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে তারা বলেছে, এই বিবৃতিটি কোনো ‘বৈশ্বিক প্রতিবেদন’ ছিল না।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি ওই বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা ভুল তথ্যের জন্য দুঃখিত। এটি বৈশ্বিক প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য ছিল না।’
তিনি বলেন, যেহেতু হাইকমিশনার হিসেবে তিনি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়গুলোতে অনেক কিছু জেনেছেন, তাই তিনি জেনেভায় তার ২৫ আগস্টের শেষের ম্যান্ডেটের বিবৃতিকে বৈশ্বিক সমস্যাগুলোতে (জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য, জ্বালানি, অর্থ সংকট, নাগরিক স্থান ইত্যাদির ওপর ফোকাস করতে বেছে নিয়েছেন।)
মুখপাত্র বলেন, কেননা এই বিষয়গুলো বাংলাদেশ সহ সব দেশকে প্রভাবিত করছে এবং সেদিনই ছিল রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার পঞ্চম বার্ষিকী।
রাভিনা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য, জ্বালানি, আর্থিক সংকট, নাগরিক স্থান ইত্যাদিসহ বৈশ্বিক ইস্যুতে হাইকমিশনারের বক্তব্য বাংলাদেশের রোহিঙ্গা বর্ষপূর্তিসহ সকল দেশকে প্রভাবিত করছে।
আরও পড়ুন: সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
তিনি আরও বলেন, আপনারা অবশ্যই অবগত আছেন যে হাইকমিশনার ঢাকায় সরকার, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য সংলাপে তার বৈঠক এবং ঢাকায় তার মিশন শেষের বিবৃতিতে বিস্তৃত মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে তার উদ্বেগ ব্যাপকভাবে আলোচনা করেছেন।
ঢাকায় দেয়া তার বিবৃতিতে হাইকমিশনার বলেন, ‘সমস্যাগুলো স্বীকার করে নেয়া সমাধানের প্রথম ধাপ।’ এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় হাইকমিশনারের সুপারিশ অনুসারে বাংলাদেশে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা এবং অন্যান্য সহায়তা করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
পারমাণবিক চুক্তি সম্মেলনে চূড়ান্ত নথিতে রাশিয়ার বাধা
পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি বা অ-প্রফ্লফ্রেশন চুক্তি (এনপিটি) রিভিউ’ নিয়ে জাতিসংঘের চার সপ্তাহব্যাপী পর্যালোচনার চূড়ান্ত নথিতে বাধা দেয় রাশিয়া। কেননা এই নথিতে রুশ সেনাদের ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্রের সামরিক দখলের বিষয়ে সমালোচনা করা হয়। যার কারণে বড় ধরনের পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা ছিল।
শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপসারণ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপপরিচালক আইগর ভিশনেভেৎস্কি ৫০ বছরের এনপিটি চুক্তির পর্যালোচনামূলক চূড়ান্ত বৈঠকে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এই নথির ক্ষেত্রে কোনো ঐকমত্য নেই।’
এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি দেশের কাছে তিনি জোর দাবি করেছিলেন যে, নানা অসংগতিতে জর্জরিত ৩৬ পৃষ্ঠার ওই চূড়ান্ত খসড়া নথিতে যেন সম্মতি না দেয়া হয়।
নথিটিতে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ ও সেসব অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য ১৯১টি রাষ্ট্রের অনুমোদন প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ: ইউক্রেনে রেকর্ড মানবিক সহায়তা সংকটের মুখে জাতিসংঘ
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত ও সম্মেলনের সভাপতি গুস্তাভো জ্লাউভিনেন বলেন, চূড়ান্ত নথিটিতে বিভিন্ন মতামতের সমন্বয় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে এবং এতে অংশ নেয়া দেশগুলো এর মাধ্যমে একটি ‘ইতিবাচক ফলাফল’ প্রত্যাশা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব এমন এক মুহূর্তে আছে যেখানে আমাদের পৃথিবী ক্রমবর্ধমান সংঘাতে জর্জরিত এবং সবচেয়ে উদ্বেগজনক হচ্ছে অকল্পনীয় পারমাণবিক যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা।
কিন্তু ভিশনেভেৎস্কির বক্তব্য পেশ করার পর জ্লাউভিনেন সম্মেলনের প্রতিনিধিদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি যা দেখছি, তাতে সম্মেলনটি চুক্তি বাস্তবায়নের অবস্থায় নেই।’
এনপিটি চুক্তির পর্যালোচনা সম্মেলন প্রতি পাঁচ বছর পর পর হওয়ার কথা থাকলেও এবার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ সভা দেরিতে শুরু হয়েছে। নথির ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দেশগুলোর দ্বিতীয় ব্যর্থ চেষ্টা এটি।
এর আগে ২০১৫ সালের পর্যালোচনা সম্মেলনটিও ব্যর্থ হয়েছিল। গণবিধ্বংসী অস্ত্রমুক্ত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিয়ে গুরুতর মতপার্থক্যের কারণে সেসময়ের চুক্তি হয়নি।
সে মতপার্থক্যগুলো এখনও দূর হয়নি, তবে আলোচনা চলমান।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দ. কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সংগৃহীত খসড়া নথি অনুযায়ী একটি পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুতরাং,বলা যায় এ বছর এটি নিয়ে বড় কোনো মতপার্থক্য হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ইস্যুটি সম্মেলনের গতিপথ বদলে দিয়েছে। কেননা এই আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্টের সতর্কবার্তার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেসময়জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া একটি ‘পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ’ দেশ এবং তাদের কার্যক্রমে যেকোনো হস্তক্ষেপের ফলে ‘এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বিশ্ব যা আগে কখনও দেখেনি।’
যদিও পরবর্তীতে পুতিন তার বক্তব্য থেকে সরে এস বলেন, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ জয় করা সম্ভব না এবং এই যুদ্ধ করা উচিত নয়।’
২ আগস্ট সম্মেলনে একজন জ্যৈষ্ঠ রুশ কর্মকর্তা পুতিনের এই বক্তব্যটি পুনরায় ব্যক্ত করেন।
কিন্তু পুতিনের প্রাথমিক হুমকি ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্র দখল নতুন করে বিশ্বব্যাপী আরেকটি পারমাণবিক জরুরি অবস্থার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, বাইডেন প্রশাসন একটি সর্বসম্মত চূড়ান্ত নথি চাইছিল যা পারমাণবিক চুক্তিকে শক্তিশালী করবে এবং স্বীকার করবে যে রাশিয়ার যুদ্ধ ও তাদের ইউক্রেনে দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড গুরুতরভাবে চুক্তিটির অবমূল্যায়ন করেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া ওই কাউন্সিলের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, চূড়ান্ত নথির কাজে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার বদলে রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টের খসড়া চূড়ান্ত নথিতে চারটি রেফারেন্স রয়েছে, যেখানে রাশিয়া ও ইউক্রেনকে একে অপরকে গোলাগুলির জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
এ কথা বলে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে সামরিক অভিযানের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে।
খসড়াটি ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনা, বিশেষ করে জাপোরিঝিয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনজুড়ে সামরিক স্থাপনায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ভয় ও শঙ্কার মধ্যেই ইউক্রেনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
রুশ হামলার আশঙ্কায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেই ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ দেশটির স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছেন।
বুধবার (২৪ আগস্ট) একই সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে দেশটির স্বাধীন হওয়ার ৩১ বছর পূর্ণ করেছে এবং ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুরও ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে।
ফলে নতুন করে স্বাধীনতার শপথ নেন ইউক্রেনের নাগরিকরা।
কিয়েভের স্বাধীনতা দিবসে সাধারণত নগরের কেন্দ্রে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ দেখা যায়।
কিন্তু এবছর রাজধানীতে সাধারণ মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ যে কোনো সময় হামলার শিকার হতে পারে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্য রাশিয়া তার প্রচেষ্টা বাড়াতে পারে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দেয়া তার বক্তব্যে ‘কোন ছাড় দেয়া বা আপস ছাড়াই’ রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের সমস্ত অঞ্চল ‘মুক্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে সম্প্রতি রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়ায় বিস্ফোরণ এবং রাশিয়ার রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব আলেক্সান্দ্র দুগিনের মেয়ে দারিয়া দুগিনার মৃত্যুর পর আবারও উত্তেজনা বেড়েছে।
রাশিয়া যত বেশি ইউক্রেনকে তার স্বাধীনতার পথ থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা করবে, ইউক্রেনের জনগণের জাতীয়তাবোধ ততই শক্তিশালী হবে।
নাটালিয়ার নামের ইউক্রেনের এক নারী জানান, কিয়েভের ডিনিপার নদীর বাম তীরের একটি ছোট কারখানায় তিনি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম তৈরি করতেন, কিন্তু এখন তিনি ইউক্রেনের পতাকা তৈরি করেন।
তিনি জানান, হামলার প্রথম দিকে সামরিক চেকপয়েন্টগুলো থেকে তাকে পতাকা তৈরির অনুরোধ করা হতো। এখন তিনি কেবল সেনাবাহিনী থেকেই নয়, অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকেও মাসে ২৫০০টিরও বেশি পতাকা তেরির অর্ডার পান।
নাটালিয়ার আরও বলে, ‘এগুলো (পতাকার রং) আমাদের কাছে খুব প্রিয় রং। প্রত্যেক ইউক্রেনীয় এই রঙগুলো অনুভব করেন এবং আমরা এই রংগুলোর মধ্যে আমাদের দেশের মুক্ত আকাশ ও গম খেত দেখতে পাই। এগুলো আমাদের মধ্যে খুশি, আনন্দ ও ইতিবাচক আবেগ সঞ্চার করে।’
এদিকে ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ব নেতারা ইউক্রেনের সঙ্গে তাদের সংহতি প্রকাশ করছেন এবং তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ‘যতদিনই লাগুক (যুদ্ধ শেষ হতে) তার দেশ ও জাতি ইউক্রেনের পাশে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনের নাগরিকদের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের মানবিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা দেয়া হবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, ইউরোপ ‘আজ এবং সবসময়ই’ ইউক্রেনের সঙ্গে রয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা বলেছেন, ‘ইইউ ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও অবৈধ রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার সাহসী লড়াইকে সমর্থন করা কখনই বন্ধ করবে না’।
আরও পড়ুন: রুশ হামলায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ৯ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন, তার দেশের মানুষের ভালোবাসা ইউক্রেনের সঙ্গে রয়েছে। কারণ দেশটি আজ এক ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’র মধ্য দিয়ে তার স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতি তার সমর্থন ‘অবিসংবাদী ও অবিচল’। এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইন অবশ্যই প্রাধান্য পাবে।
এছাড়াও ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ফিনল্যান্ড, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, মলদোভা, পোল্যান্ড ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাসহ সারা ইউরোপের নেতারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
পড়ুন: ইউক্রেন হামলার পর দ্বিতীয় রুশ জাহাজ মোংলায় পৌঁছেছে
যুদ্ধ: ইউক্রেনে রেকর্ড মানবিক সহায়তা সংকটের মুখে জাতিসংঘ
যুদ্ধ: ইউক্রেনে রেকর্ড মানবিক সহায়তা সংকটের মুখে জাতিসংঘ
ইউক্রেনে মানবিক সহায়তার চাহিদা ক্রমবর্ধমান অবস্থায় জাতিসংঘ রেকর্ড সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। তহবিল সংকটে মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো তাদের কর্মসূচি বাতিল করছে।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলছে, ধনী দেশগুলো থেকে এবছর সহযোগিতার পরিমাণ বেড়েছে, কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় কম। ফলে এই তহবিল দিয়ে মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে না পারায় সংকট জটিল পরিস্থিতিতে রূপ নিচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা ও জরুরি ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান মার্টিন গ্রিফথস বলেন, ‘তহবিলের এই বিরাট সংকট আগে কখনও আমরা দেখিনি, যাদের সহায়তা দরকার তাদের দ্রুত দেয়া দরকার।’
আরও পড়ুন: কসমস-বিআইপিএসএস গোলটেবিল: ইউক্রেন সংঘাতের বিরূপ প্রভাব কাটাতে বাংলাদেশকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে
ইউক্রেনীয় শস্য বহনকারী প্রথম জাহাজ ওডেসা বন্দর ছেড়েছে
ইউক্রেনের শস্য বহনকারী জাহাজ ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে
রুশ হামলায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ৯ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য
ইউক্রেনে রুশদের হামলায় গত ছয় মাসে ৯ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য মারা গেছে। সোমবার তথ্যটি জানিয়ে দেশটির সেনাপ্রধান বলেন, এই যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
ইউক্রেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি এক অনুষ্ঠানে বলেন, অনেক ইউক্রেনীয় শিশুর দেখভাল প্রয়োজন। কারণ তাদের বাবা যুদ্ধক্ষেত্রে গেছে এবং সম্ভবত তারাও ৯ হাজার মৃত সৈন্যের মধ্যে আছে।
একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেনের প্রধান পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের অদূরে নিপার নদীর পাশে অবস্থিত নিকোপোল শহরে রুশদের গোলাবর্ষণে সোমবার চারজন আহত হয়েছে। শহরটি গত ১২ জুলাই থেকে অনবরত হামলার শিকার হচ্ছে। এতে ৮৫০টি স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে এবং শহরটির অর্ধেক নাগরিক (এক লাখ) পালিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংঘাতে ৩৭৫২ বেসামারিক মানুষের প্রাণহানি: জাতিসংঘ
জাতিসংঘ জানায়, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ হাজার ৫৮৭ জন বেসামরিক ব্যক্তি মারা যায় এবং সাত হাজার ৮৯০ জন আহত হয়। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা সোমবার জানিয়েছে, রাশিয়ার হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৯৭২ শিশু মারা গেছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেন, ‘সংখ্যাগুলো জাতিসংঘ নিশ্চিত করলেও আমরা মনে করি তা আরও বেশি হতে পারে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থেকে শুধু অস্ত্র উৎপাদনকারীরা লাভবান হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী