জাতিসংঘ
এখনই জলবায়ু নিয়ে ভাবুন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শুনুন: ব্যাচেলেট
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই বাংলাদেশের মতো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের কথা ‘শুনতে’ হবে এবং সবার জন্য সুস্থ পরিবেশের মানবাধিকারকে বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য সব উপায় কাজে লাগাতে হবে।
বুধবার বাংলাদেশে চার দিনের সফর শেষ করার কয়েক ঘন্টা আগে ব্যাচেলেট এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এখন কাজের সময়, আমরা অনেক কথাই বলেছি এবং এখন আমাদের কথা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
এসময় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর কথা শোনার এবং ‘ঐক্য, সংকল্প ও সংহতি’ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্যাচেলেট বলেন, তারা জানেন যে তাদের কী করতে হবে।
তিনি আশা করেন, কেবল বন্ধ ঘরে আলোচনা না করে চলতি বছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২০২০-পরবর্তী জীববৈচিত্র্য কাঠামোর আলোচনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং আমি যেমন বলেছি, আমরা জানি আমাদের কী করতে হবে। এ বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নির্বাচনকালে সুশীল সমাজের আরও স্পেস প্রয়োজন: ব্যাচেলেট
বিআইআইএসএস মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘নিউ ফ্রন্টিয়ার্স অব হিউম্যান রাইটস: ক্লাইমেট জাস্টিস ইন পারস্পেক্টিভ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বলেন, ‘সুতরাং আমাদের একটি নতুন পথ আঁকতে হবে। ’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়ানক হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশেগুলোর সারিতে প্রথম দিকে রয়েছে।
বিশ্বব্যাংক অনুমান করে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণ জলবায়ু অভিবাসীতে পরিণত হতে পারে। যা বাংলাদেশের সমগ্র জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশ বা চিলির সমগ্র জনসংখ্যার সমান।
আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ততদিনে তার প্রায় ১১ শতাংশ স্থলভাগ হারাতে পারে এবং এর অর্থ কেবল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ১৮ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
ব্যাচেলেট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন খাদ্যের ওপর আরও বেশি প্রভাব ফেলে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও তাপের প্রভাবে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের কিছু অংশে ধান উৎপাদন প্রভাবিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য ও শিক্ষা বিষয়ে এসডিজি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি করেছে। ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য এবং ২০২৬ সালে ‘স্বল্পোন্নত দেশের’ মর্যাদা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য আমি বাংলাদেশের প্রশংসা করি।’
ব্যাচেলেট একই সময়ে বলেন, লিঙ্গ সমতার এসডিজি ৫ এবং বৈষম্য হ্রাসে এসডিজি ১০ পূরণের জন্য শক্তিশালী প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- বাল্যবিয়ে দূর করার জন্য কাজ করা, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা করা, প্রতিটি শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা এবং আয় বৈষম্য কমাতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী উভয় ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা।
এছাড়াও ব্যাচেলেট বলেন, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টা এসডিজি ১৬-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের প্রচার, সবার জন্য ন্যায়বিচারের সুবিধা প্রদান এবং কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা, জনসাধারণের মতপ্রকাশের জন্য নাগরিক স্থান সম্প্রসারণ (অনলাইন এবং অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই) এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন পরিকল্পনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবেন না, সহযোগিতা বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ব্যাচেলেট
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের শ্রদ্ধা
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
ঢাকায় সফররত জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের (ওএইচসিএইচআর) এশিয়া-প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান ররি মুনগোভেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চার সদস্যের বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- শ্যামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়াল ও ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস।
বৈঠক শেষে আসাদ বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছি এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে কথা বলেছি।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মুনগোভেন কোনো মন্তব্য করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের বক্তব্য শুনেছেন, উনি তো আমাদের ফিড ব্যাক দেবেন না।’
শ্যামা ওবায়েদ বলেন, দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মুনগোভেনের সাথে বৈঠক করেছি এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছি। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশে কোনো রাজনীতিকের সঙ্গে বৈঠক করেননি, আমরা তার দলের সদস্য মুনগোভেনের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’
গত রবিবার চারদিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
পড়ুন: রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবেন না, সহযোগিতা বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ব্যাচেলেট
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানকে শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘের তদন্ত করার এখতিয়ার নেই: কাদের
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে তদন্ত করার এখতিয়ার জাতিসংঘের নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘কথিত গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের কাছে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে তা তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার জাতিসংঘের নেই।’
২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ১৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সারাদেশে ৫০০ টিরও বেশি স্থানে সিরিজ বোমা হামলা হয়।
পড়ুন: বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন
সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর
রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবেন না, সহযোগিতা বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ব্যাচেলেট
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ও ইউক্রেনে যুদ্ধের প্রভাবের কারণে খাদ্য ব্যয় বৃদ্ধির কারণে রোহিঙ্গাদের সঙ্কট মোকাবিলায় সহায়তার জন্য তাদের সমর্থন বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে না এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে; এমনকি তারা তাদের সমর্থন বাড়াতে পারে কিনা তাও দেখবে।’
তিনি জানান, বিশ্বের অন্যান্য জায়গার মতো এখানেও তারা যে সমস্যাগুলো দেখছেন, তার মধ্যে একটি হলো খাবারের দাম বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এবং এর অর্থ হল যে একই পরিমাণ অর্থ দিয়ে আগে বেশি খাবার কিনতে পারত, এখন কম কিনতে পারে। এবং এটি কক্সবাজারের মানুষের জন্য সমস্যা তৈরি করছে।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের শ্রদ্ধা
আইজিপি’র যুক্তরাষ্ট্র সফর: সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি ‘সমঝোতা’র ভিত্তিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের যুক্তরাষ্ট্রে পরিকল্পিত সফরের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতিসংঘ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বোঝাপড়া আছে। সেই বিশেষ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই বিষয়টি (আইজিপির পরিদর্শন) আলোচনাধীন রয়েছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।’
বেনজিরের জাতিসংঘের তৃতীয় পুলিশ প্রধান সম্মেলনে যোগদানের কথা রয়েছে। যেটি উপলক্ষ্যে আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘের সদর দপ্তরে মন্ত্রী, পুলিশ প্রধান এবং আঞ্চলিক ও পেশাদার পুলিশ সংস্থার সিনিয়র প্রতিনিধিরা একত্রিত হবে।
এর আগে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দ্বারা আইন লঙ্ঘন রোধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর কথা ব্যাখ্যা করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ সাত খুনের মামলার পর গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি যে অভিযোগ পাওয়ার পর কয়েকজন র্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট
দেশে গুম নেই, স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ নেই: ব্যাচলেটকে বললেন মোমেন
দেশে গুম এবং গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের স্বাধীনতার ওপর কোনো বিধিনিষেধ নেই বলে সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেটকে জানিয়েছে বাংলাদেশ।
রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ব্যাচলেটের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুমের বিষয়টি উত্থাপন করেননি। তবে বাংলাদেশ পক্ষ তা নিজ থেকে উত্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (জাতিসংঘ পক্ষ) বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তোলেনি। কিছু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের অবহিত করা হয়। আমরা বলেছি এ রকম কোনো তথ্য থাকলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’
সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোনো ঘটনার কথা শোনেননি বলে জানান মোমেন। তবে ২০০২-২০০৩ সালে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেননি: আইনমন্ত্রী
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানের কাছে নেত্র নিউজের (ইংরেজি) সম্পাদক ডেভিড বার্গম্যানের খোলা চিঠির বিষয়ে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে- এ জন্য তারা (বার্গম্যান ও অন্যরা) খুবই অসন্তুষ্ট ও এক ধরনের মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক তাদের (বার্গম্যান ও অন্যদের) টাকা দিচ্ছে। তারা পেইড ব্যক্তি।’
যারা তাদের (বার্গম্যান ও অন্যরা) পয়সা দেয় তাদের পক্ষে কাজ করে- এমন শুনেছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় বার্গম্যানের ভূমিকার কথা স্মরণ করে মোমেন বলেন, তিনি তখন অর্থের বিনিময়ে কাজ করতেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানকে আরও বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধের ধারণাটি সত্য নয়। ‘আমি দেখছি এখানে মিডিয়া খুব শক্তিশালী।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা (জাতিসংঘের পক্ষ) খুবই উদ্বিগ্ন।
ব্যাচলেট রোহিঙ্গাদের প্রতি উদারতার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। তবে একই সঙ্গে তারা রোহিঙ্গাদের প্রতি আরও বেশি সহযোগিতা চান, বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট
দেশে মানবাধিকার রক্ষা ও উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে ব্যাচলেটকে অবহিত করেন মোমেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাখাইন রাজ্যে তাদের সহায়তা বাড়াতে তাকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পক্ষ।
এর আগে রবিবার সকালে চারদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ব্যাচলেটকে স্বাগত জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ব্যাচলেট সকাল ৯টায় পৌঁছানোর কথা ছিল, কিন্তু ফ্লাইটটি বিলম্বিত হয়।
ব্যাচলেট দুই দফায় (২০০৬-২০১০ ও ২০১৪-২০১৮) চিলির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দেখা করার কথা রয়েছে।
রবিবার ব্যাচলেট পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ছাড়াও সরকারের মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
তিনি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেননি: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। তবে উভয় পক্ষই বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করেছে।
কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যু, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ), মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সামগ্রিক অধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলো এ আলোচনায় স্থান পেয়েছে।
রবিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ব্যাচেলেটের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এসময় আনিসুল হক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মানবাধিকার বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। কারণ তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার।
চারদিনের সফরে রবিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন মিশেল ব্যাচলেট। তিনি আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন ছাড়াও সরকারের মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন মিশেল ব্যাচলেট।
আরও পড়ুন: ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট
জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান আসছেন রবিবার
শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদকে ব্রিফ করলেন রাষ্ট্রদূত মুহিত
শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সভাপতি হিসেবে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত নিরাপত্তা পরিষদ আয়োজিত ‘আফ্রিকাতে শান্তি ও নিরাপত্তা: টেকসই শান্তির জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত বিতর্কে বক্তব্যে দিয়েছেন।
উন্মুক্ত বিতর্কটিতে শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত মুহিত। এসময় তিনি আফ্রিকার শান্তি বিনির্মাণ অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা জোরদার করার ক্ষেত্রে পিবিসি’র প্রসারিত সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করেন।
এছাড়া টেকসই উন্নয়ন, অন্তর্বর্তীকালীন ন্যায়বিচার, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীদের সমান অংশগ্রহণ, যুবদের ক্ষমতায়ন এবং আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক শান্তি বিনির্মাণ উদ্যোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে পিবিসির অতীত এবং চলমান কর্মকাণ্ডসমূহ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা জাতিসংঘ মহাসচিবের
আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক আর্থিক সংস্থাগুলির সাথে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি এবং আফ্রিকার জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান পিবিসি’র সভাপতি।
তিনি আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সংস্থাগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আফ্রিকায় সক্ষমতা তৈরিতে সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মূহিত।
রাষ্ট্রদূত মুহিত আফ্রিকায় শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তার ক্ষেত্রে শান্তিবির্নিমাণ তহবিলের অমূল্য অবদানের স্বীকৃতি দেন এবং শান্তি বিনির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত, অনুমানযোগ্য এবং টেকসই অর্থায়নের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
আারও পড়ুন: জুলাইয়ে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমেছে: জাতিসংঘ
পিসবিল্ডিং কমিশন (পিবিসি) হল ৩১ সদস্যের একটি আন্তঃসরকারি উপদেষ্টা সংস্থা যা সংঘাত-আক্রান্ত দেশগুলিতে শান্তিপ্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান।
জুলাইয়ে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমেছে: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বৈশ্বিক খাদ্য মূল্য সূচক অনুযায়ী, টানা চতুর্থ মাসের মতো জুলাইয়ে খাদ্যমূল্য কমেছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, তবে ২০২১ সালের জুলাইয়ের তুলনায় এখনও খাদ্যমূল্য ১৩ শতাংশ বেশি।
এফএও বলেছে, ২০০৮ সালের পর গত মাসে খাদ্যমূল্য সর্বোচ্চ আট দশমিক ছয় শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের পর মার্চ মাসে খাদ্য সূচক সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছেছিল।
এফএও বলেছে, জুলাইয়ে উদ্ভিজ্জ তেল খাদ্যশস্যের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। তবে চিনি, দুগ্ধজাত পণ্য ও মাংসের দাম ততটা কমেনি।
এফএও বলেছে, খাদ্য মূল্য সূচক খাদ্যপণ্যের আন্তর্জাতিক মূল্যের মাসিক পরিবর্তন পরিমাপ করে। এটি গড়ে পাঁচটি পণ্য গ্রুপ নিয়ে গঠিত। এগুলো হলো- খাদ্যশস্য, উদ্ভিজ্জ তেল, মাংস, দুগ্ধ ও চিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্ব ‘পরমাণু বিপর্যয়ের’ থেকে এক ধাপ দূরে: জাতিসংঘ মহাসচিব
সড়ক নিরাপত্তায় সার্বিক পদক্ষেপ বৃদ্ধির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
বিশ্ব ‘পরমাণু বিপর্যয়ের’ থেকে এক ধাপ দূরে: জাতিসংঘ মহাসচিব
ইউক্রেনের যুদ্ধ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক হুমকি এবং অন্যান্য অনেকগুলো কারণের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘের মহাসচিব সোমবার সতর্ক করে বলেছেন, ‘মানব জাতি পরমাণু বিপর্যয়ের’ থেকে এক ধাপ দূরে রয়েছে।’
আন্তোনিও গুতেরেস পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ এবং একটি পরমাণু অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব অর্জনের লক্ষ্যে দীর্ঘ বিলম্বিত এনপিটি রিভিউ’ সম্মেলনের উদ্বোধনী ব্ক্তব্যে এই ভয়ানক সতর্কবাণী দিয়েছেন।
পাঁচ বছর অন্তর ‘পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি বা অ-প্রফ্লফ্রেশন চুক্তি (এনপিটি) রিভিউ’ সম্মেলনে ঐতিহাসিক এই চুক্তির অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রোধের পাশাপাশি এই চুক্তির আওতায় পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও তরান্বিত করা হয়। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে নির্ধারিত সময়ে এই সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব হয় নি। বাধ্য হয়ে সম্মেলনের দিনক্ষণ ২০২২ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দিতে হয়েছিল।
ক্রমবর্ধমান পরমাণু হুমকি ও পারমাণবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রধান এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতারা এনপিটি সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে এ চুক্তির অগ্রগতি ও বাস্তবায়নের জন্য নেয়া ভবিষ্যতের পদক্ষেপ সম্পর্কে পর্যালোচনা করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া তার সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে; ইরান তার ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিটি গ্রহণ করতে ‘হয় অনিচ্ছুক বা অক্ষম’ এবং রাশিয়া ‘ইউক্রেনে বেপরোয়া ও বিপজ্জনকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র দেখিয়ে আস্ফালন করছে।’
আরও পড়ুন: কাউকে পেছনে না ফেলে ন্যায়সঙ্গত ও বর্ধনশীল কর্মী তৈরির আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
তিনি ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণের পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বলা সতর্কবাণীর কথা উল্লেখ করেন। যেখানে পুতিন বলেন, ‘আপনারা কখনও চিন্তাও করেননি এমন পরিণতি’ ঘটবে।’
পুতিন জোর দিয়ে বলেন,তার দেশ ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু শক্তিগুলোর মধ্যে একটি।’
ব্লিঙ্কেন বলেন, পুতিনের এই ধরনের কথা ১৯৯৪ সালে সোভিয়েত যুগের পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করার সময় ইউক্রেনকে দেয়া তার সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার আশ্বাসের পরিপন্থী।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ২০১৫ সালে শেষ এনপিটি সম্মেলনের পর থেকে বিশ্বে বিভক্তি আরও বেড়েছে।
কিশিদা আরও বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি ‘বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক রাশিয়াকে ১৯৯৪ সালে ইউক্রেনকে দেয়া আশ্বাস ‘নিষ্ঠুরভাবে লঙ্ঘন’ করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, দুর্বল প্রতিবেশিকে আক্রমণের পর থেকে মস্কোর ‘বেপরোয়া পরমাণু হুমকি ’ ‘এনপিটির পাঁচ দশকে অর্জন করা সমস্ত কিছুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।’
সোমবার এনপিটি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে এর ওয়েবসাইটে পোস্ট করা শুভেচ্ছা বার্তায় পুতিনকেও পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপারে সতর্কতার কথা বলতে দেখা যায়।
পুতিন বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে পারমাণবিক যুদ্ধে কোনোদিন জয়লাভ করা যায় না এবং কখনই এই লড়াই করা উচিত নয় এবং আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সকল সদস্যের জন্য সমান ও অবিচ্ছেদ্য সুরক্ষার জন্য কাজ করে যাবো।
আরও পড়ুন: লিসবনে জাতিসংঘ মহাসাগর সম্মেলনে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পুতিন বলেন, তার দেশ এনপিটি’র ‘প্রতিটি অক্ষর ও চেতনা মেনে চলে’ এবং তিনি আশা করেন যে সব পক্ষই তাদের প্রতিশ্রুতি কঠোরভাবে মেনে চলবে। এবং বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে এই সম্মেলনে ‘গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গিকার’ করবে।
সম্প্রতি ব্লিঙ্কেন বলেন, রাশিয়া জাপোরিঝিয়ায় ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল করেছে এবং এটিকে ইউক্রেনীয়দের ওপর আক্রমণের জন্য একটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
ব্লিঙ্কেন আরও বলেন,‘তারা (রাশিয়া) জেনেশুনেই এটা করছে। তারা জানে ইউক্রেন এখানে পাল্টা গুলি ছুঁড়তে পারবে না, কারণ তাদের (ইউক্রেনের সেনারা) আঘাত দুর্ঘটনাক্রমে তেজস্ক্রিয় পদার্থ থাকা পারমাণবিক চুল্লিতে আঘাত করতে পারে।’
যদিও এনপিটি-তে রাশিয়ার প্রতিনিধিদল সোমবার রাতে একটি বিবৃতি জারি করে ব্লিঙ্কেনের এই যুক্তিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
বিবৃতিতে তারা জানায়, রাশিয়া জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টকে একটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে না এবং শুধুমাত্র ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেখানে সীমিত সংখ্যক সার্ভিসম্যান আছে।’
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেছেন, ইউক্রেনের সংঘাত ‘এত গুরুতর যে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘর্ষ বা দুর্ঘটনার ভীতি আবার ভয়ঙ্কর করে জাগিয়ে তুলেছে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক প্ল্যান্টে ‘পরিস্থিতি দিন দিন আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে’।
এছাড়াও তিনি আইএইএ’র সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একটি দল নিয়ে ওই প্ল্যান্টে তাকে পরিদর্শনে যেতে সাহায্য করার জন্য সব দেশকে অনুরোধ করেন।
গুতেরেস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের হলে জড়ো হওয়া অনেক মন্ত্রী, কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের বলেন, ‘কোল্ড ওয়ারের পর থেকে সর্বোচ্চ পরমাণু সংকটের সময়ে মাসব্যাপী পর্যালোচনা এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, সম্মেলনটি ‘কিছু নির্দিষ্ট বিপর্যয় এড়াতে ও মানবতাকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি দারুণ সুযোগ।’
গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।’ বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৩ হাজার পরমাণু অস্ত্র রয়েছে এবং ‘মিথ্যা নিরাপত্তা’ চাওয়ার অজুহাতে অস্ত্রধারী এসব দেশ ‘ধ্বংসকারী এসব অস্ত্রের’ জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ, জলবায়ু বিপর্যয় বহুমুখী খাদ্য সংকট সৃষ্টি করছে: জাতিসংঘ