যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনায় বাড়ির মালিককে হত্যা: ভাড়াটিয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
খুলনায় হত্যা মামলায় এক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা,অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি বাবু বিশ্বাস আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঘোড়াঘাট ইউএনও হত্যাচেষ্টা মামলায় বাগান মালির ১৩ বছরের কারাদণ্ড
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কালাম আজাদ। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি কামরুল হোসেন জোয়াদ্দার।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, খুলনার ৯ নং মিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম ডলার। তার বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন জনৈক সুধীর বিশ্বাসের ছেলে বাবু বিশ্বাস। ঘটনার আগের চারমাসের ঘর ভাড়া নিয়ে ভাড়াটিয়া বাড়ির মালিকের সঙ্গে তাল-বাহানা করতে থাকে।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর রাত ১২ টার দিকে বাড়ির মালিক ডলার ভাড়া আনতে আসামি বাবুর কাছে যান। এ সময়ে উভয়ের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে বাবু ঘর থেকে ধারালো একটি ছুরি দিয়ে ডলারের শরীরে উপর্যপুরী আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে পরিবার ও অন্যান্য ভাড়াটিয়া তার লাশ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ সুরতহাল রির্পোট করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
নিহত ডলারের স্ত্রী বাদী হয়ে ওই দিন থানায় হত্যা মামলা দায়ের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোশারেফ হোসেন ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাবুকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পদ্মা সেতুর নামে গুজব ছড়ানোর দায়ে যুবকের কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় ৫ জনের কারাদণ্ড
নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ২ আসামির যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থান কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম হত্যা মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই এলাকার ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী এবং তার কর্মচারী ফয়সাল।
এছাড়া এই মামলায় সোলেমান মিয়া ও আলী হোসেন নামে দুই আসামির অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বাড়িওয়ালাকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান জানান, রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার থান কাপড় ও ঝুট ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী সেলিমের দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করে একই এলাকার ঝুট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ও তার সহযোগীরা। পরবর্তীতে সেলিম পাওনা টাকা ফেরত চাইলে ২০১৯ সালে ৩১ মার্চ পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়।
এ ঘটনায় সেলিম নিখোঁজ হলে তার স্ত্রী রেহানা আক্তার রেখা বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। নিখোঁজের আট দিন পর ৯ এপ্রিল পুলিশ মোহাম্মদ আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাটি খুঁড়ে সেলিমের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে। পরে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলে তারা হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাদক মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমিন আহমেদ বলেন, স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালত এই রায় দিয়েছেন।
তবে আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান নিহতের স্বজনরা।
কুষ্টিয়ায় বাড়িওয়ালাকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় জালাল উদ্দিন (৭০) নামে বাড়িওয়ালা এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যার দায়ে সাহাবুল ও তার স্ত্রী মারিয়া খাতুনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মিরপুর উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মৃত মুন্তাজ মন্ডলের ছেলে সাহাবুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মারিয়া খাতুন।
আদালতে রায় ঘোষণার সময় আসামি সাহাবুল উপস্থিতিত থাকলেও তার স্ত্রী মারিয়া খাতুন পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাদক মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি আসামি সাহাবুল ও তার স্ত্রী মারিয়া বাড়িওয়ালা জালালের বাসায় চুরি করার পরিকল্পনা করেন। নিহতের স্ত্রী রিনা খাতুন বাড়ির বাইরে গেলে আসামিরা মেইন গেট দিয়ে বাসায় ঢুকে বাড়ির মালামাল চুরি করে। চুরি বিষয়টি বাড়ি মালিক জালাল টের পেয়ে চিৎকার করা শুরু করলে আসামি সাহাবুল ও তার স্ত্রী মারিয়া বাড়ির মালিককে কৌশলে মাটিতে ফেলে দিয়ে মুখ হাত পা চেপে ধরে ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
এ বিষয়ে একই দিন বিকালে নিহতের স্ত্রী রিনা খাতুন কুষ্টিয়া মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর স্বামী-স্ত্রী দু’জন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় এবং আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত এ মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ আসামির কারাদণ্ড
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় স্বামী উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সাহাবুলের স্ত্রী আসামি মারিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
খুলনায় মাদক মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
খুলনায় মাদক মামলায় এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আর তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া একই মামলার অন্য একটি ধারায় তাকে খালাস দেয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. আব্দুর রহমান চর রূপসা বাগমারা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর লুৎফর শেখের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাদক মামলায় ২ আসামির কারাদণ্ড
খুলনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালত (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক তাসনিম জোহরা এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি রাতে র্যাবের একটি অভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন, রূপসা উপজেলার জাবুসা মোড়ের জৈনক আব্দুল গনির দোকানের সামনে নেভীব্লু রংয়ের একটি ব্যাগ নিয়ে অজ্ঞাত একব্যক্তি ঘোরফেরা করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা সেখানে অভিযান চালালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি সেখান থেকে পালাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে তার ব্যাগ তল্লাশি করে ৩২ বোতল ফেনসিডিল, হুস্কি এবং ভারতীয় মদ উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় মাদক মামলায় নারীর মৃত্যুদণ্ড
এই ঘটনায় ওই দিন রাতে র্যাবের ডিএডি মো. নুর ই আলম বাদী হয়ে মাদক আইনের দুইটি ধারায় আব্দুর রহমানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি রূপসা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এম এ করিম তাকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
হবিগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন
হবিগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার হবিগঞ্জের নারীও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (১) এর বিচারক সুদীপ্ত দাশ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মনু মিয়া (৩০) বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বাবা হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি দিনমজুরের স্ত্রীকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে মনু মিয়া। বিষয়টি কাউকে জানালে তার স্বামী ও তাকে হত্যার হুমকি দেন তিনি। ভুক্তভোগীর স্বামী বাড়িতে এলে ঘটনার বিষয় জানায় ধর্ষণে শিকার গৃহবধূ। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মনু মিয়াকে আটক করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। এক পর্যায়ে মনু মিয়াকে তার ভাই উস্তার মিয়া ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণ: ৪ জনের যাবজ্জীবন
এদিকে এঘটনা দুদিন পর ১৭ জানুয়ারি রাত ১টায় মনু মিয়া ওই গৃহবধূর বসত ঘরের সিদ কেটে প্রবেশ করে ভয় দেখিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে আবারও ধর্ষণ করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নিজে বানিয়াচং থানায় মনু মিয়া ও উস্তার মিয়াকে আসামি করে এজহার দায়ের করে। তদন্ত শেষে পুলিশ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। মামলায় বাদীপক্ষের ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষগ্রহণ করা হয়।
খুলনায় বাবা হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
খুলনায় বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার আসামির উপস্থিতিতে অতিরিক্ত খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক তাসনিম জোহরা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত প্রশান্ত বিশ্বাস রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামের প্রফুল্ল বিশ্বাসের বড় ছেলে।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণ: ৪ জনের যাবজ্জীবন
আদালত সূত্র জানায়, নিহত প্রফুল্ল বিশ্বাস কৃষিকাজ ও ধর্মীয় গান করতেন। তার দুই ছেলে। একজন দর্জি ও অন্যজন এনজিওকর্মী। ছেলেদের দুই জনের কেউ বিয়ে করেনি। বড় ছেলে প্রশান্ত বিশ্বাস বিয়ের জন্য মা বাবাকে চাপ দিতে থাকে। এ নিয়ে তাদের পরিবারে প্রায়ই কলহ হতো। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাকে মারতে উদ্যত হয় প্রশান্ত। পরের দিন মা পাশের গ্রামে মামার বাড়িতে চলে যান। ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালাতে গিয়ে পাশের বাড়ির সুভদ্রা বিশ্বাস প্রফুল্লের গলা কাটা লাশ দেখে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। পরে নিহতের ছোট ছেলে সুশান্ত বিশ্বাস বাদী হয়ে বড় ভাই প্রশান্ত বিশ্বাসকে আসামি করে রূপসা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে স্ত্রী হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন
আসামি প্রশান্ত বিশ্বাস বাবাকে হত্যা করে বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারতে চলে যান। পশ্চিম বশিরহাটের একটি দোকানে দর্জির কাজ শুরু করেন তিনি। পরে দেশে ফিরে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গায় শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা, জামাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে জামাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় আরও চারজনের সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন। পরে সন্ধ্যার দিকে তাদেরকে জেলা কারাগারে নেয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- যশোরের চৌগাছা থানার গুয়াতলী গ্রামের মৃত শের আলী মণ্ডলের ছেলে আতিয়ার রহমান। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া একই গ্রামের মৃত জহর আলী মণ্ডলের আব্দুল লতিফ, লিয়াকত আলীর ছেলে মোমিন, মৃত হুজুর আলী মণ্ডলের ছেলে আব্দুল গনি ও একই উপজেলার বাদেখানপুর মাঝপাড়ার মৃত ইসমাইল বিশ্বাসের ছেলে আনোয়ার হোসেন আনু। এই চারজনকে সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার আজিমপুর স্কুলপাড়ার আব্দুল কাদেরের মেয়ে জোসনা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় চৌগাছার আতিয়ার রহমানের। এরপর তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদের জের ধরে ২০১৪ সালের ২৬ জুন আতিয়ারসহ পাঁচ আসামি জোসনা খাতুনের বাড়িতে হানা দেয়। এসময় সাবেক স্ত্রী জোসনাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় জোসনার মা তাহমিনা খাতুন বাধা দিলে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে মারা যান তহমিনা খাতুন। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে পরদিন দামুড়হুদা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তহমিনা খাতুনের স্বামী আব্দুল কাদের। মামলাটির তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন এসআই মিজানুর রহমান। এরপর ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দীর্ঘ আট বছর পর এ মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি বেলাল হোসেন।
আরও পড়ুন: গুরুদাসপুরে ভ্যান চালক হত্যার অভিযোগে ভাড়াটে খুনিসহ গ্রেপ্তার ৩
চট্টগ্রামে দুই ভাই হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন
খুলনায় হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
খুলনার আলোচিত মডার্ন সি ফুডের কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার সাহা হত্যা মামলায় প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলেসহ পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শহীদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া একই মামলায় অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় প্রত্যেককে খালাস দেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মডার্ন সি ফুডের মালিকের ছেলে মেহেদী হাসান স্টারলিং, মো.আরিফুল হক সজল, নাহিদ রেজা রানা ওরফে লেজার রানা, মো. ডালিম শিকদার ওরফে আমির শিকদার ডালিম ও সজল মোল্লা।
আরও পড়ুন: ফেনীতে শিশু হত্যা মামলায় চাচীর যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামি জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত সকলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৭ জুন সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েকে নিয়ে সামছুর রহমান রোডে জোহরা খাতুন স্কুলে আসেন উজ্জ্বল কুসার সাহা। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মেহেদী হাসান স্টারলিংয়ের খালাতো ভাই আরিফুল হক সজল তাকে ফোন দেয়। অবস্থান নিশ্চিত করে অন্যান্য আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সজল। আসামিদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষাও করে উজ্জ্বলের সঙ্গে। সজল স্থান ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমের ওপর ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ শুরু করে। তাদের আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামিরা উজ্জ্বলকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা জেনারেল ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন
এ ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই সুমন কুমার সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন খুলনা থানার এসআই সোহেল রানা। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে মামলার মূল পরিকল্পনাকারীর নাম বাদ দেয়ায় বাদী আদালতে নারাজি পিটিশন করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহাজাহানের কাছে দেয়া হয়। তিনিও আগের তদন্ত কর্মকর্তার পথ অনুসরণ করায় মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়। পরে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ সুপার হেড কোয়ার্টারস মো. আমিনুল ইসলাম ৯ জন আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন
খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম করাদণ্ড দেয়া হয়।
রবিবার খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় দেন। মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসাদ সরদার ওরফে আসাদউজ্জামান সরদার আরিফ বাগেরহাটের ফকিরহাটের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল সরদারের ছেলে।
নিহত জেসমিন নাহার খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ বাউন্ডারি রোড এলাকার বাসিন্দা রাশেদ মল্লিকের ছোট মেয়ে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে অস্ত্র মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-মো. আব্দুল হালিম গাজী, শেখ ফরহাদ আহমেদ, অনুপম মহলদার ও সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহর।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর মায়ের নাকফুল মেরামত ও উপটান কিনতে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেসমিন নাহার বাড়ি থেকে বের হন। পরবর্তীতে বাড়িতে ফিরে না আসায় তাকে খোঁজাখুজি করে পরিবারের সদস্যরা। সম্ভাব্য সব জায়গায় খবর নিয়েও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর দুদিন পর সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বড় বয়রার দাসপাড়া এলাকার একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে পলিথিনে মোড়ানো বস্তার মধ্যে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিনই নিহতের বাবা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১০ জুন উল্লেখিত আসামিদের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির এসআই পলাশ গোলদার।
আরও পড়ুন: চাচা হত্যার দায়ে ৩ ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের ছয় মাস আগে আসাদ নামে এক যুবকের সঙ্গে নিহত ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর বিকালে আসাদের সঙ্গে দেখা করতে যায় সে। পরে তাকে স্থানীয় একটি বাড়িতে নিয়ে যান আসাদ। ওইখানে তাকে বিয়ের আশ্বাসে কুপ্রস্তাব দেয়। তাতে সাড়া না দেয়ায় জেসমিনকে প্রথমে গ্রিলের সঙ্গে ধাক্কা দেয়া হয়। আঘাত পেয়ে জেসমিন চিৎকার করলে আসাদ তার মুখ চেপে ধরে তার তিনবন্ধু জেসমিনের হাত ও পা চেপে রাখে। এরপর তার মৃত্যু হলে পলিথিন পেঁচিয়ে বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের কবরস্থানে ফেলে আসে আসামিরা। স্থানীয়রা লাশ দেখে থানায় খরব দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
নড়াইলে অস্ত্র মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
নড়াইলে অস্ত্র মামলায় আক্তারুজ্জামান বাবুল ওরফে কোবরা বাবুল নামে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ আদেশ দেন।
এ মামলায় অপর দুই আসামি মাসুম ওরফে গ্রিল মাসুম ও খন্দকার নাসিম বিলল্লাহকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইমদাদুল ইসলাম এমদাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম জানতে পারে ভওয়াখালীর একটি বাড়িতে অস্ত্র কেনা-বেচা চলছে। এসময় পুলিশ ওই বাড়িতে হানা দিয়ে আক্তারুজ্জামান বাবুল ওরফে কোবরা বাবুল, মাসুম ওরফে গ্রিল মাসুম ও খন্দকার নাসিম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে। তাদের তল্লাশি করে বাবুলের কাছ থেকে ৬ রাউন্ডগুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে। এছাড়া ঘরের মধ্য থেকে ১১ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: নড়াইলে মাদক কারবারির যাবজ্জীবন
এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।