প্রধান শিক্ষক
আলমডাঙ্গায় প্রধান শিক্ষককে মারপিট করা সেই কৃষকলীগ নেত্রী গ্রেপ্তার
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারপিটের ঘটনায় সেই সাবেক কৃষকলীগ নেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ৮টার দিকে পৌর এলাকার এরশাদপুর চাতাল মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার নেত্রী আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র সামসাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবি।
জানা যায়, বুধবার সকালে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণীর পর্যন্ত ছাত্রদের অর্ধ বার্ষিকী পরিক্ষা চলছিলো। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিক্ষার দিন ছিল। অর্ধ বার্ষিকী পরিক্ষার জন্য সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিলো। সে সময় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিলো। এরমধ্যে সামসাদ রানুর ছেলে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অর্ক ছিলো। তার গায়ে রোদ লাগার কারণে সে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম স্কুলে আসতেই কলার চেপে ধরে টানতে টানতে বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে কিলঘুষিসহ পায়ের স্যান্ডেল খুলে শিক্ষককে মারপিট করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বাদী হয়ে বুধবার বিকাল ৫ টায় আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: বসুন্ধরায় ‘কীটনাশকের বিষক্রিয়ায়’ দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
প্রত্যক্ষদর্শী সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াছ হোসেন বলেন,আমি অফিসের ভেতরেই ছিলাম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্যারকে মারধর শুরু করা হয়।
প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,যা ঘটেছে তা অত্যন্ত অপমানজনক। আমি হতবিহ্বল হয়ে পড়েছি। স্কুলের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার আমাকে ডেকেছিলেন। তার সঙ্গে পরামর্শ করে আইনগত ভাবে বিকালে থানায় মামলা করেছি।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, শিক্ষকের দায়ের করা মামলায় সামসাদ রানুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) কোর্টের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: নাটোরে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
রাজশাহীতে ২ কোটি টাকার হেরোইন জব্দ, নারী গ্রেপ্তার
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের ৩৭,৯২৬টি পদ শূন্য: প্রতিমন্ত্রী
বর্তমানে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের ৩৭ হাজার ৯২৬টি পদ শূন্য রয়েছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এ তথ্য জানান।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
সংসদ সদস্যদের উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের ২৯ হাজার ৮৫৮টি এবং সহকারী শিক্ষকের ৮ হাজার ৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে ৯ম গ্রেড ও শতভাগ পদোন্নতি দাবি এটিইওদের
তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের ১ হাজার ৯৫৫টি শূন্যপদ পূরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে একটি রিকুইজিশন পাঠানো হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের সংখ্যা ৪ লাখ ২৭ হাজার। এর মধ্যে ৩ লাখ ৯০ হাজার শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।
এদিকে, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খালেদা খানমের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সংসদে বলেন, প্রতিটি জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি সংসদকে জানান, বর্তমানে দেশে দু’টি মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহের কারণে ৫-৮ জুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাছিমুল আলম চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উচ্চশিক্ষা পর্যায়ে শিক্ষাগত সনদ জালিয়াতি বন্ধে অটোমেশন সফটওয়্যার চালুর কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সফটওয়্যারটি চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সব তথ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং সার্টিফিকেট বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনে যাচাই করা যাবে।’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জাল সনদধারী ৬৭৮ শিক্ষক/কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আরও দুই বিজ্ঞপ্তি আসছে
ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক প্রত্যাহার
চট্টগ্রামে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রবিবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের শিক্ষা বিভাগের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযুক্ত মো. আলাউদ্দিন নগরীর কাপাসগোলা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
আরও পড়ুন: রাবির ছাত্রীকে ‘যৌন নিপীড়ন’ ঘটনায় মামলা
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান জানান, কাপাসগোলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। রবিবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করে।
ওসি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনকে কাপাসগোলা থেকে নগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে হালিশহর আহমদ মিয়া সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রোমা বড়ুয়াকে পদায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যৌন নিপীড়ন: ঢাবির শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
যুক্তরাষ্ট্রে ২ বছরে ৬ হাজার যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পেয়েছে উবার
কুষ্টিয়ায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত, পুলিশে সোপর্দ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির মামলায় বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় পুলিশে সোপার্দ করেছেন এলাকাবাসী।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. আব্দুল হালিম (৪০)। তিনি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কয়া ইউনিয়নের খলিশাদহ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।
জানা যায়, বরখাস্ত হওয়ার পরও অভিযুক্ত ওই শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছেন। এমনকি আইন অমান্য করেই চালিয়ে যাচ্ছেন উপবৃত্তি, মাসিক রিটার্নসহ কার্যালয়ের নানা কার্যক্রম। বৃহস্পতিবারও বিদ্যালয়ে মাসিক রিটার্ন তৈরির কাজে আসেন ওই শিক্ষক। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের মাঠে ভিড় জমাতে থাকেন। লোকজন দেখে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন শিক্ষককে ধরে বিদ্যালয়ের কক্ষে আটক করে পুলিশ ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের খবর দেন।
পরে খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. জিন্নাত আরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চলন্ত বাসে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি: গ্রেপ্তার চালকের রিমান্ড মঞ্জুর
পুলিশ, শিক্ষা কার্যালয় ও মামলার বাদী সূত্রে জানা গেছে, ‘টিসি দেয়ার ভয় দেখিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি একাধিকবার ভুক্তভোগীর শ্লীলতাহানি করেছে। সর্বশেষ গত ২৩ আগস্ট দুপুরে ভুক্তভোগী তার পরিবারের সদস্যদের শ্লীলতাহানির কথা জানায়। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুমারখালী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা।
এরপর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গত ২০ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোয় বিভাগীয় উপপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগ অভিযুক্ত শিক্ষককে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
এসময় বিভাগীয় উপপরিচালক জানান, যতদিন মামলা চলমান থাকবে, ততদিন ওই শিক্ষক বরখাস্ত থাকবেন। বিদ্যালয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না।
এবিষয়ে স্থানীয় একজন বলেন, ‘অভিযুক্ত মাস্টারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বরখাস্ত হয়েও বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতেছে। আজ আমরা আটক করে রেখেছি। এর একটা বিচার হওয়া দরকার।'
গরিবুল্লাহ নামের আরেকজন বলেন, 'বহিস্কৃত হয়ে কিভাবে স্কুলে আসে তিনি। তার (শিক্ষক) জন্য মেয়েরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিছে। এমন শিক্ষকের ফাঁসি হওয়া উচিত।'
এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, 'অন্যান্য শিক্ষকেরা অফিসের কাজ বুঝতে পারছিলোনা। তাই সহযোগিতা করার জন্য বিদ্যালয়ে এসেছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান বলেন, 'স্যারের কোনো দোষ নেই। আমরা বিদ্যালয়ের সব কাজ বুঝিনা। তাই স্যারকে ডেকেছিলাম। ভুল হয়েছে। আর এমন হবেনা।'
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. জিন্নাত আরা বলেন, 'প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত রয়েছেন। উপজেলা অফিসে হাজিরা দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকালেও হাজিরা দিয়েছেন। কাউকে না জানিয়েই তিনি বিদ্যালয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়ে যেতে পারবেন না, কোনো কাজও করতে পারবেন না। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।'
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, 'খবর পেয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করে থানা আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।'
আরও পড়ুন: জিন তাড়ানোর নামে কিশোরীর শ্লীলতাহানি, গ্রেপ্তার ১
খুলনায় কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
কুষ্টিয়ায় প্রধান শিক্ষককে আওয়ামী লীগ নেতার চড়-থাপ্পড়!
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা কেএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মহন জোয়ার্দ্দার কুর্শা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই বিদ্যালয়টির অফিস কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনেই চড়-থাপ্পড় মেরে গলায় ধাক্কা দিয়ে এভাবেই লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ফাঁকা বাড়ি থেকে স্কুল ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মহন জোয়ার্দ্দার তার নিজের জন্য অষ্টম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেট নিতে বিদ্যালয়ে আসেন। খাতায় তার নাম রয়েছে আল-আমীন কিন্তু তিনি মহন জোয়ার্দ্দার নামে সার্টিফিকেট নিতে চান। নামের মিল না থাকায় সার্টিফিকেট দিতে অপারগতা জানালে অন্যান্য শিক্ষকদের সামনেই চড়াও হয়ে প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মেরে গলায় ধাক্কা দিয়ে এভাবেই লাঞ্ছিত করেন তিনি।
আমরা তার কঠোর শাস্তির দাবি করছি।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক নুরু নবী জানান, মহন জোয়ার্দ্দার এই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলেন। রবিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তার নিজের জন্য অষ্টম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেট নিতে আসেন।
তিনি এই বিদ্যালয় থেকেই এসএসসি পাস করেছিলেন। খাতায় তার নাম রয়েছে আল-আমীন কিন্তু তিনি মহন জোয়ার্দ্দার নামে সার্টিফিকেট নিতে চান।
নামের মিল না থাকায় সার্টিফিকেট দিতে অপারগতা জানালে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে চড়-থাপ্পড় মেরে গলায় ধাক্কা দেয়।
হুমকি দেয় দেখে নেয়ার।
বিষয়টি বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি শামসুর নাহারকে জানিয়েছি। আমি তার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা মহন জোয়ার্দ্দার বলেন, আমি ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলাম।
পড়াশোনাও করেছি ওই প্রতিষ্ঠানে। এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট হারিয়ে যাওয়ায় ডাইভিং লাইসেন্সের জন্য অষ্টম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেট নিতে গেলে এমন ঘটনা ঘটে।
তবে প্রধান শিক্ষককে চড়-থাপ্পড় মারার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুর নাহার বলেন, মারধরের ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানানো হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল আলম বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ডাকাতির সময় হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১৯ ফুট উচ্চতার গাঁজার গাছসহ আটক ১
এসএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁস: প্রধান শিক্ষকসহ আটক ৩
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে মঙ্গলবার চলমান মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান শিক্ষকসহ তিন স্কুল শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাবির বিভাগীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
আটক ব্যক্তিরা হলেন-ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সচিব লুৎফুর রহমান এবং বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক জুবায়ের হোসেন ও আমিনুর রহমান।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ঢাবির শিক্ষার্থীসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুলিশের একটি দল উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
চলমান এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজি ১ম এবং ২য় পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্নভাবে অভিভাবকদের হাতে চলে যায়।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের দায়ে আটক ২৯
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল ইসলাম, সচিব অধ্যাপক জহির উদ্দিন, জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম, দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আল আসাদ মাহফুজুল ইসলাম, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলমসহ অন্যরা অভিযোগটি তদন্ত করে তিনজনের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়েছেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীতের রায় বহাল
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে বৃহস্পতিবার প্র্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণীর। বর্তমানে তাদের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ১১তম গ্রেডে ও অপ্রশিক্ষিতরা ১২তম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। তবে এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন শিক্ষকের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন।
আরও পড়ুন: সিইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি
হাইকোর্টের রায়ে ৪৫ জন রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিসিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর শুনানি নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন।
আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির হলেও তারা বেতন পান ১১ ও ১২তম গ্রেডে। অথচ দ্বিতীয় শ্রেণির অন্য সব সরকারি চাকরিজীবী দশম গ্রেডে বেতন পান। ফলে সরকারি প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা দিলেও তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এ নিয়ে ৪৫ জন শিক্ষক রিটটি করেছিলেন। হাইকোর্ট তাদের দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে গেজেটভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে, যা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ফলে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রইল।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেদিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১ ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে, যা বৈষম্যমূলক দাবি করে ওই রিটটি করা হয়।
আরও পড়ুন: উচ্চ আদালতে বিচারপতির নিয়োগ সংক্রান্ত আইন অপরিহার্য: প্রধান বিচারপতি
কুষ্টিয়ায় প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত রেজাউল ইসলাম (৫৬) ওই ইউনিয়নের কেশবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাগুলাট ইউনিয়নের শালঘরমধুয়া গ্রামের মৃত আনছার উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: কাপ্তাইয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা!
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, রেজাউল ইসলাম ১৯৯০ সাল থেকে কেশবপুরের নিদেনতলায় ঘরজামাই থাকতেন। সোমবার বিকালে জন্মস্থান শালঘর মধুয়াতে যান। সেখানে তিনি বলেন, দুই লাখ টাকা না দিলে তাকে আর পাওয়া যাবে না। পরে তাঁর ভাইয়েরা এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন। তিনি টাকা নিয়ে রাতে বাড়িতে ফিরে আসেন এবং অন্যান্য দিনের মত ঘুমিয়ে পড়েন।
এরপর ভোর রাতে নিজের বাড়ির সামনের পাশের গ্রিলে রশির সাথে ঝুলতে দেখেন তাঁর স্ত্রী। এ সময় স্ত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে তাঁকে নিচে নামিয়ে ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয় ডাক্তার এসে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: পাহাড়তলীতে ঋণগ্রস্ত গার্মেন্টস মালিকের আত্মহত্যা!
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশের সুরতহাল করে কিন্তু কোন পরিবারের অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়।
ওসি জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
প্রধান শিক্ষক এখন চায়ের দোকানদার
এক সময় শিক্ষার্থীদের কোলাহল তার চারপাশে ঘিরে থাকত। কিন্তু করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় জীবন বাঁচাতে বেছে নিয়েছেন অন্যপথ। তিনি এখন চায়ের দোকানদার। বলছি মানুষ গড়ার কারিগর খায়রুল ইসলাম বাদশা মিয়ার কথা।
জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের শিক্ষিত পরিবারের সন্তান খায়রুল ইসলাম বাদশা। সরকারি চাকরি না করে নিজের বাপ-দাদার জমি বিক্রি করে রেজিয়া মার্কেটের পাশে চার শতক জায়গা কেনেন। আশায় বুক বেধে ২০০১ সালে ৮-১০ জন শিক্ষিত ছেলে মেয়েকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গড়ে তোলেন আহমোদিয়া স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টার। ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলত স্কুলটিতে।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি: মাটি কাটার কাজ করছেন শিক্ষকরা!
গিদারী ইউনিয়নের মহসিন আলী জানান, স্কুলটিতে পড়ালেখার মান ভালো হওয়ায় দূরদুরন্ত থেকে শিশুরা এই স্কুলে পড়তে আসতো। আমার দুই মেয়েও এই স্কুলে কোচিং করত।
কাউন্সিলের বাজারের আরজিনা বেগম জানান, মেয়েকে স্কুলে দিয়ে ভালো নিশ্চিন্তে ছিলেন। পড়ালেখা ভালোই হতো। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার তিনি মেয়েকে নিয়ে মহা বিপদে পড়েছেন। অতো টাকা দিয়ে প্রাইভেট মাস্টারও রাখতে পারছেন না, মেয়েকে পড়াতেও পারছেন না।
স্কুলের শিক্ষক হামিদা বেগম জানান, স্কুলের আয় দিয়ে ভালোই চলছিল। ১০ জন শিক্ষকসহ সকলের সংসার। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের কারণে সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। স্কুলের বেতন যা আসতো তাতে কৃষি মজুর স্বামীসহ চার জনের সংসারে অভাব হতো না। কিন্তু এখন তিনি ধার দেনা করে আর স্বামীর সামান্য আয়ে কোন মতো চালিয়ে নিচ্ছেন।
প্রধান শিক্ষক খায়রুল ইসলাম বাদশা মিয়া জানান, আর কতো টানা যায়। করোনা ও লকডাউনে তার স্বপ্নের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙে যাওয়ায় তার কাছেএক দুঃস্বপ্নের মতো । তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। কি বলবো, কি ছিলাম আর এখন কি হলাম।
তিনি জানান, করোনায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। নিজের জায়গা জমি বিক্রি করে শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করে বন্ধ করে দেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর নিজের পাঁচ ছেলে মেয়ের সংসার চালাতে গিয়ে সংকটে পরেন। এক প্রকার বাধ্য হয়ে বর্তমানে বাদশা মিয়া স্কুল ঘরের দুই পাশের বেড়া খুলে চায়ের দোকান খুলে বসেন। নিজের হাতে চা তৈরি করে খদ্দের মেটান। খদ্দেরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার তুললেও বাস্তবতা মেনে নিতে তাকে প্রধান শিক্ষক থেকে চায়ের দোকারি হতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাঙ্খিত উৎপাদনের আশায় ফরিদপুরের‘সোনালী আঁশ’ চাষিরা
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, ‘করোনাকালীন অসংখ্য স্কুল ও কোচিং সেন্টার নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এসব স্কুলের শিক্ষকদের আমরা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।’
করোনা মহামারি: মাটি কাটার কাজ করছেন শিক্ষকরা!
নন-এমপিভুক্ত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে চাকরি করেন নুরুল ইসলাম। দীর্ঘ নয় বছর ধরে বিনা বেতনে ওই এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন তিনি। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। এতে চরম বিপাকে পড়েন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আত্মমর্যাদা জলাঞ্জলি দিয়ে নুরুল ইসলামের মতো আরও চার শিক্ষক কাজ নেন সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পে। কিন্তু সেখানে তারা প্রতারিত হয়েছেন। পাননি ন্যায্য মজুরিও। যাও পেয়েছেন তাতে উপজেলা চেয়ারম্যান থাবা বসিয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে নুরুল ইসলাম জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় এমপি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: মহামারি-পরবর্তী বিশ্ব: বন্ধ হবে কি শ্রম অধিকার লঙ্ঘন?
ঘটনাটি ঘটেছে জেলার উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন সাহেবের আলগা ইউনিয়নে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ৯ বছর আগে দুর্গম চরাঞ্চল ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের ১০ জন শিক্ষক নিয়ে ‘দৈ খাওয়ার চর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়’ গড়ে তোলেন। তখন থেকে এসব শিক্ষকরা বিনা বেতনে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠদান করে আসছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন জাতি গড়ার এসব কারিগররা। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসে সব কিছু বন্ধ হয়ে গেলে, নুরুল ইসলামসহ তার বিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষক সরকারের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ নেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই ধাপে ৮০ দিন কাজ করেন তারা। দুইশ টাকা মজুরি হারে তাদের ১৬০০০ টাকা পাওয়ার কথা। গত ৩০ জুলাই ওই ইউনিয়নে শ্রমিকদের মজুরির টাকা বিতরণ করা হয়।
নুরুল ইসলামের অভিযোগ, ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে মজুরির টাকা নিয়ে বের হতেই বারান্দায় বসে থাকা আলী হোসেন, ইউসুফ আলী ও আয়নাল হক মৃধা ওই তিন ব্যক্তি উপকারভোগীদের কাছ থেকে জোর করে চার হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয়। শিক্ষকরা চার হাজার করে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, ইউসুফ আলী গংরা নানান হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। সেই সাথে তারা বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর নির্দেশে টাকা তুলতেছি। টাকা না দিলে এর পরিণাম ভালো হবে না বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি। নিরুপায় হয়ে তিনিসহ তাঁর স্কুলের শিক্ষক মনসুর আলী, শাহীন আলম, শহিদুল আলম ও, শহিদুল ইসলাম তাদের হাতে ২০ হাজার টাকা তুলে দিতে বাধ্য হন। পরে তাদের প্রদেয়ও ২০ হাজার টাকার ১০ হাজার ফেরত চেয়ে হাতে পায়ে ধরলেও মন গলেনি ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানের। বরং তারা উল্টো তাদের হুমকি দেন।
নুরুল ইসলাম আরও বলেন, গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পরিচয় দিয়ে অশ্লীল গালাগালিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় এমপি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ভিডিও ফুটেজ দেখে সংশ্লিষ্ট ইউএনওকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে, জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ওই শিক্ষকের লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মহামারির বছরে আকাশ থেকে খসে পড়া তারারা
স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, একজন শিক্ষক কতটুকু অসহায় হলে শ্রমিকের কাজ করেন। আর তাদের ন্যায্য মজুরি জোর করে হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত ঘৃণিত। শুধু এসব শিক্ষকদের নয়, সেখানে বেশিরভাগ উপকারভোগীর কাছ থেকে একইভাবে চার হাজার করে টাকা নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে এর সত্যতা পাই। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করব।