মিয়ানমার
মিয়ানমারে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন
মিয়ানমারে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. মনোয়ার হোসেন।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনি বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হবেন।
মনোয়ার হোসেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২০তম ব্যাচে পররাষ্ট্র ক্যাডার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন।
বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি ২০০১ সালে সার্ভিসে যুক্ত হয়ে ওয়াশিংটন ডিসি ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ মিশনসহ নানা দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য নীতি, পরিকল্পনা ও অর্থায়ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে জনস্বাস্থ্য যোগাযোগে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: আশিয়ান: বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য না থাকার ঘোষণা মিয়ানমারের
‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
টেকনাফে বিজিবি-বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত
সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছে। রবিবার সকাল ১০ টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট সংলগ্ন বিজিবির রেস্ট হাউজে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। টানা ৫ ঘন্টার পতাকা বৈঠকটি শেষ হয় বিকাল ৩ টায়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সীমান্তে মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশ এসে পড়া এবং আকাশ সীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় বৈঠকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ রূপ ঘটনা ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ।
বৈঠক শেষে বিকাল সাড়ে ৪ টায় টেকনাফে বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, বৈঠকের শুরুতে বিজিবি সীমান্তে গোলাগুলির বিষয়ে আলোচনা করেন। সম্প্রতি একাধিকবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা এসে পড়া ও মিয়ানমারের হেলিকপ্টার আকাশ সীমা লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানালে বিজিপির পক্ষে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: আশিয়ান: বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য না থাকার ঘোষণা মিয়ানমারের
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এ রূপ ঘটনা আর ঘটবে না বলে প্রতিশ্রুত দিয়েছে মিয়ানমার।
তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি-বিজিপি এক সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে অনুপ্রবেশ রোধ, মাদক চোরাচালন বন্ধ করতে কাজ করার জন্য উভয় পক্ষে আলোচনা হয়েছে।
বিজিবি অধিনায়ক জানান, বৈঠকে বিজিপির পক্ষে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে নানা অপরাধ করছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এ ঘটনার অস্বীকার করা হয়।
বিজিবির পক্ষে জানানো হয়, কখনও কোন সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোন প্রকার সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ কোন সহায়তা করেন না। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসীদের রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত বিজিবি কক্সবাজার সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ জানিয়েছেন, পতাকা বৈঠকটি নিয়মিত বৈঠকের একটি অংশ। গত তিন মাস ধরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজী হয়। এই বৈঠকে আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্টিত হয়েছে।
তিনি জানান, রবিবার সকাল ৯ টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিপির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল টেকনাফ পৌঁছেন। এর পর শুরু হয় বৈঠক। সেখানে বিজিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার। বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিয়ানমারের ১১ বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর দায় চাপাল মিয়ানমার
আশিয়ান: বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য না থাকার ঘোষণা মিয়ানমারের
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা স্বীকার করেছেন যে মিয়ানমারে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি এবং তারা দেশটিতে সহিংসতা বন্ধে দৃঢ় সংকল্প বৃদ্ধিতে ঐক্যমত হয়েছে। দেশটিতে গত বছর একটি সামরিক অভ্যুণ্থানের কারণে সংকট তৈরি হয়েছে যা এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
রবিবার মিয়ানমারের কাচিনে সামরিক বিমান হামলা চালিয়ে নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ৪০ জনেরও বেশি সদস্যকে হত্যা এবং জুলাই মাসে রাজনৈতিক বন্দীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাসহ সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংস্থা (আশিয়ান) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে৷
বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় মিয়ানমারের ওপর এক বিশেষ বৈঠকে আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন যে তাদের প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। গত বছরের এপ্রিলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে গ্রুপটি পাঁচ দফা ঐকমত্যে পৌঁছেছে তার বাস্তবায়নকে শক্তিশালী করতে ‘জোরলো, বাস্তবসম্মত এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ’ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পরপরই আসিয়ান অন্তর্ভুক্ত মিয়ানমারে শান্তি স্থাপনের ভূমিকা পালনের চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
পাঁচ দফা ঐকমত্য অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে একটি সংলাপ, একজন আসিয়ান বিশেষ দূতের মধ্যস্থতা, মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে দেখা করার জন্য বিশেষ দূতকে মিয়ানমার সফরের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মিয়ানমার সরকার প্রাথমিকভাবে ঐকমত্যে সম্মত হলেও তারা এটি বাস্তবায়নে খুব কম চেষ্টা করে। মানবিক সাহায্য এবং আসিয়ানের দূত কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোনকে স্বল্প পরিসরে সফর করার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু তাকে সু চির সাথে দেখা করার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। সু চিকে গ্রেপ্তার করে বিভিন্ন অভিযোগে বিচার করা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন রাজনীতি থেকে তাকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছে।
এসবের প্রতিক্রিয়ায় আসিয়ান জোট মিয়ানমার নেতাদের তাদের অফিসিয়াল বৈঠকে অংশ নিতে দেয়নি। যদিও কর্মরত পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা যোগ দিয়েছেন।
সর্বশেষ আশিয়ান বৈঠকের সভাপতিত্বকারী প্রাক সোখোন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বৈঠক থেকে বলা হয় যে, আসিয়ানের নিরুৎসাহিত হওয়া উচিত নয়, বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করতে মিয়ানমারকে সাহায্য করতে আশিয়ান আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বলেছেন, কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্য বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় মন্ত্রীরা তাদের উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন ‘অগ্রগতির পরিবর্তে পরিস্থিতির অবনতি এবং অবনতি হচ্ছে বলেও বৈঠকে বলা হয়।
মারসুদি আরও বলেন, ‘আবার সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’ ‘সহিংসতা বন্ধ না করলে এই রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের কোনও অনুকূল পরিস্থিতি থাকবে না।’
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে যে এটি ‘বৈঠকের ফলাফলের দ্বারা তারা প্রভাাবিত হবে না। কারণ বৈঠকে মিয়ানমারের উপস্থিতি ছাড়াই আসিয়ানের অন্য নয় দেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জোর দিয়েছে যে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার আসিয়ানের বিশেষ দূতকে সহযোগিতা করে। জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালানোর পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে পাঁচ দফা রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করছে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি ১১ থেকে ১৩ নভেম্বর আসিয়ানের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে অনুষ্ঠিত হলো। আসিয়ানের শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনায় থাকবে মিয়ানমার সংকট। এই সমস্যাটি গ্রুপের ঐক্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আশিয়ান সদস্যরা ঐতিহ্যগতভাবে একে অপরের সমালোচনা করা এড়িয়ে চলে। তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত সহিংসতাকে ব্যাপকভাবে দেখা হয়। একটি ভূ-রাজনৈতিক এবং মানবিক জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় গোষ্ঠীটির দুর্বলতা প্রকাশ করে যা তাদের সকলকে প্রভাবিত করতে পারে।
ক্রমবর্ধমান শরণার্থী মিয়ানমার ছেড়ে পুরো অঞ্চল জুড়ে আশ্রয় খুঁজছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্রুপ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে আনুমানিক সাত লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে। সংস্থাটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতাদের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে য, এসব জনগণকে যেন ওইসব দেশের সরকারগুলো মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাধ্য না করে।
এই সংস্থাটির গবেষক শায়না বাউচনার বলছেন, ‘জান্তার সহিংসতা এবং নিপীড়ন থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের রক্ষা করার পরিবর্তে আঞ্চলিক নেতারা মিয়ানমারের শরণার্থী এবং অন্যান্য নাগরিকদের ক্ষতির পথে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য করছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারে নির্বাসন ত্বরান্বিত করেছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে তাদের আশ্রয়ের দাবিগুলো অবজ্ঞা করে গত এপ্রিল থেকে দুই হাজার জনেরও বেশি লোককে ফিরিয়ে দিয়েছে। থাই কর্তৃপক্ষ আশ্রয়প্রার্থীদের তাদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা যাচাই না করেই মিয়ানমারের সীমান্তে ফিরিয়ে দিয়েছে।
আসিয়ান গঠিত হয়েছে- ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামকে নিয়ে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
মিয়ানমারের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মধ্য মিয়ানমারে তার শিরশ্ছেদ করা দেহ বিভৎসভাবে প্রদর্শনের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বৃহস্পতিবার বলেছেন, সেনাবাহিনী সামরিক শাসনের বিরোধিতাকে দমনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করা অনেকগুলো অপকর্মের সর্বশেষ ঘটনা এটি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং গ্রামীণ ম্যাগওয়ে অঞ্চলের তাউং মিন্ট গ্রামে তোলা ছবিতে দেখা যায়, ৪৬ বছর বয়সী স তুন মো-এর মাথাবিহীন দেহটি স্কুলের বন্ধ গেটের সামনে মাটিতে ফেলে রেখে তার মাথাটি ওপরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। গত বছর থেকে বন্ধ থাকা স্কুলটিও পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সামরিক সরকার বা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম কেউই এই শিক্ষকের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেনি।
গত বছর অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। দুই হাজার ৩০০ এর বেশি বেসামরিক মানুষকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয় এই জান্তা সরকারকে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস টুইটারে বলেছেন, ‘মিয়ানমার সামরিক শাসকদের দ্বারা ম্যাগওয়ে অঞ্চলে স্কুল শিক্ষককে গ্রেফতারের পর শিরোচ্ছেদ করে বিকৃতভাবে প্রকাশ্যে আনার খবরে আমরা হতবাক।’ ‘শিক্ষককে হত্যা সহ সকল নৃশংস সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দাবি করেন তিনি।’
সেপ্টেম্বরে, উত্তর-মধ্য মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে বৌদ্ধ বিহারের একটি স্কুলে হেলিকপ্টার হামলায় অন্তত সাতজন তরুণ ছাত্র নিহত হয়। সামরিক সরকার হামলার দায় অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার কমিটি জুন মাসে বলেছে, সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকে স্কুল ও শিক্ষা কর্মীদের ওপর ২৬০টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সব সময় একই দাবি করে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার অশান্ত হয়েছে। নাগরিকরা দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী মারাত্মক শক্তি প্রয়োগ করেছিল।জান্তা বাহিনীর নিপীড়ন ব্যাপকভাবে সশস্ত্র প্রতিরোধের দিকে পরিচালিত করে। যা পরবর্তীতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এটিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
দেশটির সেনাবাহিনী গ্রামাঞ্চলে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানকালে তারা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া এবং লক্ষাধিক মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া, এমনকি আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় কোনও সংস্থাকে তাদের মানবিক সহায়তার সামান্য বা কোনও প্রবেশাধিকার দেয়নি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালত মনে করছে যে ২০১৭ সালে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযানে সেখানে একটি নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে। এতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের প্রায় সাত লাখের বেশি সদস্যকে জীবন রক্ষার্থে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
নিহত শিক্ষক স টুন মো একজন প্রবীণ শিক্ষাবিদ ছিলেন।যিনি তার জন্মস্থান থিত নি নাউং গ্রামে দেশের গণতন্ত্রপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠিত একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেয়ার আগে সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
সামরিক শাসনের বিরোধী একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠন হলো জাতীয় ঐক্য সরকার। যারা নিজেকে দেশের বৈধ প্রশাসনিক সংস্থা হিসেবে দাবি করে। চলতি বছর দেশের কিছু অংশে একটি অন্তর্বর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে স্কুলগুলোর একটি নেটওয়ার্ক খোলা হয়েছে। তারা বিশ্বাস করেছিল নিজেদের রক্ষা করতে এটির প্রতি অনুগত সশস্ত্র মিলিশিয়ারা যথেষ্ট শক্তিশালী।
স টুন মো তার গ্রামের স্কুলে এবং নিকটবর্তী অন্য একটি স্কুলে গণিত পড়াতেন এবং থিট নি নাউং-এর প্রশাসনের সাথে জড়িত ছিলেন, যেখানে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি এর আগে ম্যাগওয়েতে একটি বেসরকারি স্কুলে ২০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। স্কুলটি ম্যাগওয়ে নামেও পরিচিত।
বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুতে দেরীতে একটি বিবৃতিতে এনইউজি-এর শিক্ষা শাখা শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তাকে এবং অন্যান্য নিহত শিক্ষকদের ‘বিপ্লবী নায়ক’ হিসেবে প্রশংসা করেছে এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
চলতি মাসে প্রায় ৯০ জন সরকারি সৈন্যের একটি বাহিনী অন্তত বেশ কয়েকটি গ্রাম্য এলাকায় অভিযান চালানোর সময় তার মৃত্যু ঘটে।
একজন গ্রামবাসী ফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে(এপি) জানিয়েছেন যে তিনি স টুন মো সহ প্রায় দুই ডজন গ্রামবাসীর মধ্যে ছিলেন যারা রবিবার সকাল সাড়ে নয়টায় একটি চিনাবাদাম খেতে একটি কুঁড়েঘরের পিছনে লুকিয়ে ছিলেন। যখন বেসামরিক নাগরিকদের সঙ্গে 80 টিরও বেশি সশস্ত্র সৈন্যের একটি দল এসে পৌঁছায়। আকাশে তাদের সামরিক অস্ত্র দিয়ে গুলি করছিল এবং তারা গাইড হিসেবে বেসামরিক লোকদের নিয়োগ করে অভিযানে অংশ নেয়।
কর্তৃপক্ষের শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা এড়াতে গ্রামবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছিলেন। কারণ তারা সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েছিল। তাদের ফোন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছিল তারা। এবং একজন অফিসারের নির্দেশে দল থেকে তিনজনকে আলাদা করেছিল। সে সময় কেবলমাত্র টুন মো স'কে নিয়ে গিয়েছিল।
গ্রামবাসী বলেছিলেন, ‘সে সময় আমাদের মাথা নত ছিল এবং আমরা তাদের দিকে তাকানোর সাহস করিনি। পরে একজন সৈন্য তাকে ডাকল এসো।’ ‘ মোটাসোটা এসো, আমাদের অনুসরণ কর,’ এবং তাকে নিয়ে গেল। সৈন্যরা তার সঙ্গে নম্র আচরণ করেছিল, তাই আমরা ভাবিনি যে এটি ঘটবে’।
তিনি বলেন, স তুন মোকে থিট নি নাউং থেকে এক কিলোমিটার (প্রায় এক মাইল) উত্তরে তাউং মিন্ট গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরের দিন তাকে সেখানে হত্যা করা হয়।
গ্রামবাসী আরও বলেন, ‘সোমবার সকালে জানতে পারি তাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন ভালো শিক্ষককে হারানো খুবই দুঃখজনক যার ওপর আমরা আমাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য নির্ভরশীল ছিলাম।’
তাউং মিন্ট গ্রামের আরেকজন গ্রামবাসী বলেছেন, সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি স তুন মো-এর লাশ দেখতে পান।
তাউং মিন্টের গ্রামবাসী বলেছেন , ‘প্রথমে আমি আমার বন্ধুদের ডেকেছিলাম। তারপরে আমি শরীরের দিকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে তাকিয়েছিলাম। আমি অবিলম্বে জানতাম যে এটি শিক্ষক স তুন মো। তিনি গত কয়েক মাসে একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে আমাদের গ্রামে যেতেন। তাই আমি তার মুখ চিনতে পেরেছি।’ যিনি নিজের নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করতে বলেছিলেন।
তার বন্ধুর তোলা ফটোতে শিক্ষকের শরীর ও মাথা দেখা গেছে। সু চির ছবি সম্বলিত একটি পুরনো প্রচারণার পোস্টারে মৃতদেহের উরু ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
গ্রামবাসীদের মতে, তার ডান হাত থেকে বিচ্ছিন্ন আঙ্গুলগুলো তার উরুর মধ্যে রাখা হয়েছিল। একটি তিন আঙুলের স্যালুট হল একটি অঙ্গভঙ্গি যা দেশের আইন অমান্য আন্দোলন দ্বারা গৃহীত হয়েছে।, যা ‘দ্য হাঙ্গার গেমস’ সিরিজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে।
রবিবার সৈন্যদের দ্বারা আংশিকভাবে পুড়িয়ে দেওয়া স্কুলের বাইরের দেওয়ালে একটি অশুভ সতর্কবাণীসহ গ্রাফিতি লেখা রয়েছে: ‘আমরা ফিরে আসব, তুমি (অপরাধী) যারা পালিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে ঢাকা
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের উপায় খুঁজে বের করার প্রচেষ্টার বিষয়ে বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার চীনা পক্ষের কাছ থেকে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। যেখানে রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে।
চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার অধীনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য একটি চুক্তি সই করে, কিন্তু প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে আছে।
বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় প্রক্রিয়ার ধারণাটি নিয়ে চার বছর আগে নিউইয়র্কে কয়েকটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য পদক্ষেপ নিতে পটভূমির পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত জিমিং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা মিয়ানমারের পক্ষের সঙ্গে যেসব কথা বলেছেন তার ভিত্তিতে তারা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফলাফল’ তুলে ধরতে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন ‘আমি এখনই এটি প্রকাশ করতে যাচ্ছি না।’
মিয়ানমারের আশ্বাস সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে একজনকেও ফেরত নেয়া হয়নি। বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।
১৩ অক্টোবর চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট দেশের একতরফা প্রচেষ্টা নয় বরং রোহিঙ্গা ইস্যুটির মূল বিষয় হচ্ছে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে আস্থা তৈরি করা ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়েই চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হওয়ায় আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহায়তার জন্য চীন কাজ করছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যদিও মিয়ানমারের বর্তমান অভ্যন্তরীণ অবস্থা এখনও অনিশ্চয়তার সম্মুখীন তবুও ‘চীনের মধ্যস্থতায়’ উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়নি এবং প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারের বর্তমান কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে।
এমতাবস্থায় তিনি বলেন, চীনের পক্ষ আশা করে যে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার একই দিকে কাজ করতে পারে যাতে প্রত্যাবাসন তাড়াতাড়ি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন ...
১৭ অক্টোবর মোমেন বলেছিলেন যে রোহিঙ্গাদের আদিস্থান ‘রাখাইন রাজ্যে’ তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ‘প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা উচিৎ’।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত। মিয়ানমারের উচিৎ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। তাদের এগিয়ে আসা উচিৎ এবং তাদের কাজ করা উচিৎ।’
একইসঙ্গে মোমেন সেইসব দেশগুলোর সমালোচনা করেন, যারা মিয়ানমারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কথা বললেও তাদের সঙ্গে ‘স্বাভাবিক ব্যবসা’ করছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। আপনি যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকারকে মূল্য দেন, তবে আপনাকে এটি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।’
মোমেন বলেন, মিয়ানমার তাদের যাচাই-বাছাই শেষে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে এবং আশ্বস্ত করেছে যে তারা সেখানে শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেবে।
তিনি বলেন, ‘তারা নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি শর্তারোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।’ কিন্তু সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো একজন রোহিঙ্গাও ফিরতে পারেনি।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেখানে ইচ্ছা আছে, সেখানে সমস্যা সত্ত্বেও উপায় আছে।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে পৌঁছেছে আরও ৯৬৩ রোহিঙ্গা
সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তে গত কয়েক সপ্তাহ গোলাবারুদের আওয়াজ বন্ধ থেকে আবারও নতুন করে আতঙ্কের বারুদ ছড়িয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ হেলিকপ্টার।
সীমান্তে বসবাসকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ঘুমধুমের বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত পিলার ১৮,৩১,৩৪,৩৫ দিয়ে এবং সদর ইউনিয়নের আশারতলী, ফুলতলী, জামছড়ির ৪৫ ও ৪৬ নং পিলার দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর মিয়ানমার হেলিকপ্টার থেকে বিভিন্ন প্রকার আওয়াজের গোলা নিক্ষেপ করে।
বিভিন্ন প্রকার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা ভারতের জন্য লজ্জাজনক: মোমেন
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নুরুল আমিন বলেন, সোমবার (১০ অক্টোবর) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ পরিদর্শন শেষে চলে যাওয়ার পরপরই বিকাল ৪টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের ৩৪, ৩৫,৩৬ ও ৩৯ পিলার রাইট বিজিপি ক্যাম্প ৪৫ ও ৪৬ নং পিলার সালিডং ক্যাম্প থেকে অগণিত মর্টার ও আর্টিলারি বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজে যেন এপারে ভূমিকম্প হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, ভোরে ওপার থেকে বিস্ফোরণের শব্দে এপারের শিশুদের ঘুম ভেঙেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি ইউএনবিকে বলেন, সকাল ৭ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত মোট তিন দফা মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণে শব্দ তিনি শোনেন, আবার মিয়ানমারের অভ্যন্তরের কিছু দূরের স্থলভাগ থেকে অনবরত গোলাগুলির আওয়াজও শুনেছেন।
তুমব্রু বাজারের ব্যবসায়ী মো. সরোয়ার জানান, পরিবার পরিজন এবং পাড়া প্রতিবেশীকে নিয়ে চিন্তাই আছেন। প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার সীমান্তে যা দেখাচ্ছে তা নিয়ে, অদূর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবনায় আছেন?
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, কয়েক দিন বন্ধ থেকে আবারও গোলাগুলির শব্দে আমাদের মাঝে আতঙ্ক বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ মিয়ানমারের সীমান্ত জুড়ে বিজিবির টহল বৃদ্ধিসহ সীমান্তের বিভিন্ন সম্ভাব্য পয়েন্টে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শঙ্কায় কঠোর নজরদারিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আরেক বাংলাদেশি নিহত
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
মিয়ানমারে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা কিশোর নিহত
মিয়ানমারে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত ও অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছে। রবিবার ভোরে বাংলাদেশের সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটনাটি ঘটে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ইউনিয়নের সদস্য মো. আলম জানান, নিহত ওমর ফারুক (১৬) শূন্য রেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গা শিবিরের মো. আইয়ুবের ছেলে। গুরুতর আহত হয়েছেন একই এলাকার মো. সাহাবুল্লাহ(৩০)।
ভোর ৫টা ২০ মিনিটে ওমর ও সাহাবুল্লাহ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক পাচার করতে গেলে বিস্ফোরণ ঘটে এবং ঘটনাস্থলেই ওই ব্যক্তি নিহত হন।
আরও পড়ুন: ‘এখন যুদ্ধের সময় নয়’:এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে পুতিনকে মোদি
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর জিরো পয়েন্টের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গা শিশু নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়।
ক্যাম্পের নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ইকবাল।
একই দিনে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন আরেক বাংলাদেশি যুবক।
আহত অঙ্গনথোয়াই তঞ্চঙ্গ্যা(২২) উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি আন্তর্জাতিক আইনপ্রণেতাদের
স্থানীয়রা বলছেন,মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ওই এলাকায় মাইনিং করেছে। যুবকরা তার গরু ফিরিয়ে আনতে গেলে তুমব্রু সীমান্তের কাছে একটি বিস্ফোরণ ঘটে।
কিছুদিন আগেও মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত ১২টি মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে। এ বিষয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
মিয়ানমার সব সময় একই দাবি করে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
এই অঞ্চলের সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতার বিষয়ে ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের কাছে বাংলাদেশ তার উদ্বেগ জানিয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কেও তাদের ব্রিফ করা হয়েছে।
শান্তি বজায় রেখে মিয়ানমারের ফাঁদে পা না দেয়ায় বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করেছেন কূটনীতিকরা।
মঙ্গলাবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খোরশেদ আলম (অবসরপ্রাপ্ত)।
কূটনীতিকরা বাংলাদেশের উদ্বেগ তাদের দেশকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
বাংলাদেশে মর্টার শেল নিক্ষেপের জন্য মিয়ানমার আরাকান আর্মি ও এআরএসএকে দায়ী করছে এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমার সব সময় একই দাবি করে আসছে।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা তাদের (কূটনীতিকদের) সাহায্য চেয়েছিলাম যাতে মিয়ানমার এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সুযোগ নিতে না পারে।’
পড়ুন: মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর দায় চাপাল মিয়ানমার
এর আগে সোমবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল মোঃ খোরশেদ আলম(অবসরপ্রাপ্ত) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মিশন প্রধানদের ব্রিফ করেন এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা আমলে নিয়েছেন এবং তাদের নিজ নিজ দেশে যথাযথভাবে পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে মর্টার শেল পড়া ও বিস্ফোরণের ঘটনা, নির্বিচারে বিমান থেকে গুলি, মানুষের প্রাণহানি ও গুরুতর জখম, সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণের সম্পত্তি ও জীবিকার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগের কথা আশিয়ান দূতদের জানান।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্বকারী কোনো কূটনীতিক ব্রিফিংয়ে ছিলেন না। তবে অন্যান্য আসিয়ান দেশ-ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া শাখা) মো. নাজমুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপ: বিদ্রোহীদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা রাষ্ট্রদূতের
মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপ: প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানাবে বাংলাদেশ
মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি ও আরসার ওপর দায় চাপাল মিয়ানমার
বাংলাদেশের ভূখণ্ডে সাম্প্রতিক একাধিক মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরাকান আর্মি এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ওপর দায় চাপিয়েছে মিয়ানমার।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌশলগত অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক জ ফিও উইন সোমবার ইয়াঙ্গুনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় মহাপরিচালক বলেন, আরাকান আর্মি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিদ্যমান ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে’ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে মিয়ানমার বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।
তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের স্থলমাইন বিস্ফোরণে যুবক আহত
জ ফিও উইন বলেন, অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সীমান্তের কাছাকাছি প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি মিয়ানমার সব সময় দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মেনে চলে এবং বাংলাদেশসহ সব দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি মাসের ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরে’ আরাকান আর্মি ও আরসার সন্ত্রাসীদের পরিখা এবং ঘাঁটির তথ্য অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া সেই সব স্থাপনা ও ঘাঁটি ধ্বংসে প্রয়োজনীয় এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য মিয়ানমারের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
সাক্ষাতে মহাপরিচালক বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের কাছে মিয়ানমারের ঘটনা সম্বলিত একটি আন অফিসিয়াল পেপার হস্তান্তর করেন।
পড়ুন: মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপ: বিদ্রোহীদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা রাষ্ট্রদূতের
মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপ: প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানাবে বাংলাদেশ
মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপ: বিদ্রোহীদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা রাষ্ট্রদূতের
বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিয়াও মো বাংলাদেশের ভূখণ্ডে একাধিক মর্টার শেল নিক্ষেপের কথা ‘স্বীকার করেছেন’। তবে তিনি দাবি করেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহীরা ভারী কামান ও মর্টার নিক্ষেপ করছে, যার মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে।
বাংলাদেশ মিয়ানমারকে জনগণের জীবন ও জীবিকার ক্ষতি করে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বলেছে, চলমান পরিস্থিতি মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী নিরীহ জনগণের মধ্যে ‘ভয়’-এর পরিবেশ তৈরি করছে।
পড়ুন: মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে সরকার: মর্টার শেল ছোড়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার আগস্টের পর চতুর্থবারের মতো মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে দেশটির মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল নিক্ষেপে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে জনগণ ও সম্পদের নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করছে এবং সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রদূতের কাছে একটি প্রতিবাদ নোটও হস্তান্তর করেছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোকে আরও মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে যে মানবিক কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
চলমান পরিস্থিতি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের এসব নাগরিকদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ক্ষতিকারক।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের স্থলমাইন বিস্ফোরণে যুবক আহত
রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা বজায় রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশের সার্বভৌম ভূখণ্ড ও আকাশসীমাকে সম্মান জানানোর দায়িত্ব মিয়ানমার সরকারের।
এ প্রসঙ্গে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং এ অঞ্চলের দেশগুলোর নিরাপত্তার প্রতি বিরূপ কোনো উপাদানকে আশ্রয় না দেয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপ: প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানাবে বাংলাদেশ