মিয়ানমার
মিয়ানমারে সেনা অভুত্থানের ১ বছর: সেনাবাহিনীর ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘের
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের সাধারণ জনগণের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং দ্রুত বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগ জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাশেলেট এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সেনা অভ্যুত্থানের এক বছরে মিয়ানমারের জনগণকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। তাদের জীবনযাপন ও স্বাধীনতার ওপর প্রভাব পড়েছে। তিনি মনে করেন সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে জান্তা বাহিনী। সেদিনই গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাই ত্বরান্বিত করতে সম্মত বাংলাদেশ-মিয়ানমার
দিনটিকে সামনে রেখে শুক্রবার মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট।
তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ২০২২ সালের মার্চ মাসে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির বিশদ বিবরণ দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এ হাইকমিশনার আরও বলেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ও নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু করার এখনই সময়। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যাশেলেট বলেন, তিনি মিয়ানমারে সাংবাদিকদের ওপর চালানো নির্যাতনের হিমশীতল বিবরণ শুনেছেন; কারখানার শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখা হচ্ছে এবং শোষণ করা হচ্ছে; রোহিঙ্গাসহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর তীব্র নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্বিচারে আটক ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মিথ্যা বিচার করা হচ্ছে; গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান হামলা এবং ভারী অস্ত্রের ব্যবহারসহ নির্বিচারে আক্রমণ চালানো হচ্ছে- যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ডে মিয়ানমারের শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘের
তিনি বলেন, তবুও সাহসী কিছু মানবাধিকারকর্মী ও ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ সংগ্রহ এবং আমাদের কাছে পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
ভিন্নমতকে দমন করার জন্য ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনীর নির্যাতনে কমপক্ষে এক হাজার ৫০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এর থেকেও অনেক বেশি।
সেনাবাহিনীর বিরোধিতার জন্য কমপক্ষে ১১ হাজার ৭৭৮ জনকে নির্বিচার আটক করা হয়েছে। নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছেন আট হাজার ৭৯২ জন।জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় আরও বলেছে, বন্দি অবস্থায় অন্তত ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গণহত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে ফিরে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাই ত্বরান্বিত করতে সম্মত বাংলাদেশ-মিয়ানমার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব যাচাইয়ে বিলম্ব হওয়ার কারণ চিহ্নিত করতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে প্রস্তুতির কথা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের যাচাইয়ের জন্য নবগঠিত কারিগরি স্তরের অ্যাড-হক টাস্কফোর্সের প্রথম বৈঠক বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) শাহ রিজওয়ান হায়াত এবং মিয়ানমারের অভিবাসন ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়ের উপমহাপরিচালক ইয়ে তুন উও নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ প্রতিনিধির কার্যকর ভূমিকা চায় বাংলাদেশ
আরআরআরসি শাহ রিজওয়ান হায়াত অসংখ্য বাধা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও রাখাইন থেকে বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
তিনি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়ার ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করেন এবং তা দ্রুত সম্পন্ন করতে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের প্রস্তাব দেন।
কারিগরি অসুবিধা ও তথ্যের ঘাটতির বিশদ বিবরণ দিয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল প্রক্রিয়াধীন যাচাইকরণ সম্পূর্ণ করতে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
টাস্কফোর্স যাচাই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে সহায়ক হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের আগুন, পুড়েছে ২৯ ঘর
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চেষ্টা অব্যাহত রাখবে তুরস্ক: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ প্রতিনিধির কার্যকর ভূমিকা চায় বাংলাদেশ
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দেশটিতে প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি এ সংকটের ‘টেকসই সমাধান’ খুঁজে বের করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে মিয়ানমারে নবনিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি নোলিন হেইজারকে আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র সচিব হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সংকটের পঞ্চম বছরে বাংলাদেশ এখনও ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দেয়ায় একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি এ অঞ্চলে মানব ও মাদক পাচারসহ নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: ইয়াবা পাচার মামলায় রোহিঙ্গা নাগরিকের ছয় বছরের কারাদণ্ড
১০ লাখের বেশি নির্যাতিত মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রোহিঙ্গা সমস্যা তার এজেন্ডায় শীর্ষে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছেন বিশেষ প্রতিনিধি।
নোলিন হেইজারকে গত বছরের অক্টোবরে মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গেনারের স্থলাভিষিক্ত হন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চেষ্টা অব্যাহত রাখবে তুরস্ক: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ একা নয়: সোলাইমান সয়লু
থাইল্যান্ডে মিয়ানমারের শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘের
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে থাইল্যান্ডে আসা মিয়ানমারের শরণার্থীদের সুস্থতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।
সরকারি সূত্র অনুসারে, আশ্রয় ও সুরক্ষার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব মিয়ানমারের কাইন এবং কায়াহ রাজ্যের সাড়ে ৯ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে থাইল্যান্ডের তাক এবং মে হং সন প্রদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকেরা মিয়ানমারে ফিরে এসেছে, তবুও এখনও কমপক্ষে এক হাজার শরণার্থী থাইল্যান্ডের মায়ে সোটে নামক স্থানে রয়ে গেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে, স্থানীয় সম্প্রদায়ের মাধ্যমে থাই সরকার যে সহায়তা দিয়েছে, তা শরণার্থীদের জন্য টেকসই বা পর্যাপ্ত নাও হতে পারে।
সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারে পরিস্থিতি খুবই অনিশ্চিত ও অস্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী, সুনামির আশঙ্কা নেই
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে, মিয়ানমারে অব্যাহত সংঘাত চলতে থাকায় দেশটির নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
সংস্থাটি থাই সরকারকে তাক প্রদেশের ‘মায়ে সোটে’তে ‘অস্থায়ী নিরাপত্তা এলাকায়’ আশ্রয় দেয়া শরণার্থীদের অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তাদের এমন কোথাও স্থানান্তরিত করা হোক, অস্থায়ী হলেও যেখানে তারা নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে থাকতে পারে এবং উন্নত মানবিক সহায়তা পেতে পারে।
ইউএনএইচসিআর থাইল্যান্ডে নতুন আসা শরণার্থীদের মানবিক প্রয়োজনে সাড়া দেয়ার জন্য থাই কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেভিড সাসোলি আর নেই
সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড
সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড
মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে আরও চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সেনা শাসিত দেশটির একটি আদালত।
অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি ও করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনসহ কয়েকটি অভিযোগে তাকে এই দণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার দেশটির রাজধানী নেপিডোতে একজন আইনি কর্মকর্তা আদালতের রায়ের খবর জানান। তবে শাস্তি হতে পারে এই ভয়ে নিজের নাম না প্রকাশ করেননি এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ওয়াকিটকি আমদানির জন্য রপ্তানি-আমদানি আইনে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং সেগুলো রাখার জন্য টেলিযোগাযোগ আইনে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি নির্বাচনী প্রচারণার সময় করোনভাইরাস নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অধীনে দুই বছরের সাজা পেয়েছেন।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর উসকানি ও করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল দেশটির একটি বিশেষ আদালত। তবে রায়ের কয়েক ঘণ্টা পর সামরিক সরকারের প্রধান জ্যৈষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইং তা অর্ধেক কমিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: সু চির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলার রায় স্থগিত
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী এবং এর ফলে দ্বিতীয় বারের মতো সরকার গঠন করতে পারেনি নির্বাচনে জয়ী সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
এরপর থেকে ৭৬ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী সু চির বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দায়ের করা হয়। আর এসব মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তার ১০০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে।
তবে সু চির সমর্থক ও স্বাধীন বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
আরও পড়ুন: সু চির ৪ বছরের কারাদণ্ড
গণহত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে ফিরে যাচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আবারও তাদের গণহত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে ফিরে যাচ্ছে। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এপির এক অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। এসময় এপি কমপক্ষে ৪০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে, সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, স্যাটেলাইট থেকে তথ্য নিয়ে এবং মৃতের সংখ্যা পর্যালোচনা করে।
এপির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সেনাবাহিনী একদিকে যেমন দেশের বেসামরিক নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি বিরোধী দলগুলোর ওপরও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি জান্তাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটির কিশোর, তরুণ, স্বাস্থ্যকর্মী ও বিক্ষোভকারীদের ওপর নিষ্ঠুরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে সেনাবাহিনীর এ ধরনের গণহত্যা ও নগ্ন হিংস্রতার চিত্র উঠে এসেছিল দেশটির মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো নির্যাতন থেকে। ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নির্যাতনে হাজার হাজার রোহিঙ্গা সেসময় প্রাণ হারান।
গত ক্রিসমাসের সন্ধ্যায় পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের কারেন্নি নৃগোষ্ঠীর ৩৫ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। এ হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী এপিকে জানিয়েছেন, হত্যার পর অজ্ঞাত পরিচয়ের অনেক নারী, পুরুষ ও শিশুর লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী।
কিন্তু বর্তমানে সেনবাহিনী তাদের বৌদ্ধ বামার সম্প্রদায়ের মানুষের ওপরও একই ধরনের নির্যাতন চালাচ্ছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বৌদ্ধ বামার জনবহুল অংশেও সেনাবাহিনীকে ব্যাপক গণহত্যা চালাতে দেখা যাচ্ছে।
মিয়ানমারে রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা সংস্থার (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট থেকে শুধুমাত্র সাগাইং অঞ্চলে তিন বা তার বেশি হত্যাকাণ্ডে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এই মৃত্যু প্রবণতার হিসাবে সাগাইংকে মিয়ানমারের সবচেয়ে সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলে পরিণত করেছে৷
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ‘সেনাবাহিনীর হামলা’য় সেভ দ্য চিলড্রেনের ২ কর্মী নিখোঁজ
এছাড়া বিরোধীদের সমর্থন থাকতে পারে এমন গ্রাম পুরো ধ্বংস করার জন্য আগুনে জ্বালিয়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। ম্যাক্সার টেকনোলজিস থেকে প্রাপ্ত উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর থেকে শুধুমাত্র উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর থান্টলাং-এ ৫৮০ টিরও বেশি বাড়ি পুড়ে গেছে।
এএপিপির তথ্য যাচাইয়ের জন্য এপি কয়েক ডজন সাক্ষী, নিহতদের পরিবারের সদস্য, পদত্যাগ করেছিলেন এমন একজন সামরিক কমান্ডার, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। এছাড়াও স্যাটেলাইট ইমেজ এবং কয়েক ডজন ছবি ও ভিডিও পর্যালোচনা করেছে এপি।
তাদের অনুসন্ধানে উঠে এসছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা সম্ভবত প্রকাশিত মৃতের সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি। কারণ সেনাবাহিনী বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, এবং তখন ওইসব অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়; যাতে করে নিপীড়নের তথ্য প্রকাশ না হতে পারে।
কিয়াও মো টুন, যিনি সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পরে মিয়ানমারের জাতিসংঘের দূত হিসেবে তার অবস্থান ছাড়তে অস্বীকার করেছিলেন; তিনি বলেছেন এই মুহুর্তে সারা দেশে একই ধরনের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অংশে ব্যাপক গণহত্যা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
তিনি এপিকে আরও বলেন, গণহত্যার ধরন দেখুন। তারা যেভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় এগুলো পূর্বপরিকল্পিত ও ভয়াবহ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর গবেষক ম্যানি মং বলেছেন, কতটা নির্লজ্জভাবে এইসব হামলা করা হয়েছে তাতে সত্যিই বোঝা যায় যে আমরা আগামীতে; বিশেষ করে আগামী বছর অনেক সহিংসতার মুখোমুখি হবো।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার আশ্বাস জাপানের
জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বহালে খোলা চিঠি
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত: কক্সাবাজারে ১০৫৬ পরিবার পাচ্ছেন ৪৭ লাখ টাকা
কক্সবাজারে কোভিড-১৯ মহামারিতে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হোস্ট কমিউনিটির এক হাজার ৫৬ পরিবারকে ৪৭ লাখ ৫২ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিল্টন রায়।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজারে কারিতাস বাংলাদেশের জরুরি সাড়াদান কর্মসূচী এবং সার্বিক সহযোগিতা করে সদর উপজেলা প্রশাসন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি কারিতাস বাংলাদেশের জরুরি সাড়াদান কর্মসূচীর প্রকল্প পরিচালক মার্সেল রতন গুদা বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে এক হাজার ৫৬ জনের কাছেই আর্থিক সহায়তা পৌঁছে যাবে।’
তিনি বলেন ‘কক্সবাজারের হোস্ট কমিউনিটির পিছিয়ে পড়া পরিবারের মানুষেরা যেন করোনাভাইরাসের ক্ষতি পুষিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেজন্যই কারিতাস বাংলাদেশের এই প্রয়াস।’
আরও পড়ুন: উখিয়ায় ৬ লাখ ইয়াবা জব্দ, রোহিঙ্গা যুবক আটক
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকেও সহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসা উচিত।’
অনুষ্ঠানে কারিতাসের জরুরি সাড়াদান কর্মসূচী’র হেড অব অপারেশন ইন্মানুয়েল চয়ন বিশ্বাস বলেন ‘ক্যাফডসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার সহযোগিতায় আমরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটির পিছিয়ে পড়া মানুষেরও পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, আমরা আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটির পরিবারকে বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রীও প্রদান করছি যাতে তারা করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলা করতে পারে।’
অনুষ্ঠানে কক্সবাজারে কারিতাসের জরুরি সাড়াদান কর্মসূচীর হেড অব প্রোগ্রাম আবদুল্লাহ ফুয়াদ, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. সজিব আলী ও মো সামিউল হক চৌধুরী এবং কমিউনিকেশনস অফিসার রতন মালো উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারে আশ্রিত মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটির মানুষের সহায়তায় কারিতাস বাংলাদেশ নানাবিধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পড়ুন: বাংলাদেশের পক্ষে একা রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেয়া উচিত না: জাতিসংঘ
সু চির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলার রায় স্থগিত
মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি ও ব্যবহারের অভিযোগে করা দুই মামলার রায় সোমবার স্থগিত করেছে সেনা শাসিত দেশটির একটি আদালত।
এক আইনি কর্মকর্তার মতে,১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলার রায় বিলম্ব করার কোনো কারণ জানাননি আদালত। তবে শাস্তি হতে পারে এই ভয়ে নিজের নাম না প্রকাশের ওপর জোর দেন এই কর্মকর্তা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী এবং এর ফলে দ্বিতীয় বারের মতো সরকার গঠন করতে পারেনি নির্বাচনে জয়ী সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
এরপর থেকে ৭৬ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী সু চির বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দায়ের করা হয়। আর এসব মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তার ১০০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে।
তবে সু চির সমর্থক ও স্বাধীন বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
গত বছরের সাধারণ নির্বাচন সু চির দল জয়ী হয়। আর এ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করেছে সেনাবাহিনী। তবে স্বাধীন পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনে তেমন অনিয়ম পাননি।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর উসকানি ও করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে সু চিকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল দেশটির একটি বিশেষ আদালত। তবে রায়ের কয়েক ঘণ্টা পর সামরিক সরকারের প্রধান জ্যৈষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইং তা অর্ধেক কমিয়ে দেন। সামরিক সরকার তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখেছেন এবং সরকারি টেলিভিশন জানিয়েছে সেখানে তিনি সাজা কাটছেন।
সু চির এ বিচার কার্যক্রম গণমাধ্যম ও দর্শকদের দেখার সুযোগ দেয়া হয়নি। এছাড়া এই নেত্রীর পক্ষের আইনজীবীদেরও গণমাধ্যমে তথ্য প্রদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ‘সেনাবাহিনীর হামলা’য় সেভ দ্য চিলড্রেনের ২ কর্মী নিখোঁজ
অস্ট্রেলিয়ায় ওমিক্রনে প্রথম রোগীর মৃত্যু
মিয়ানমারে ‘সেনাবাহিনীর হামলা’য় সেভ দ্য চিলড্রেনের ২ কর্মী নিখোঁজ
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হামলায় আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের দু’জন কর্মী নিখোঁজ রয়েছে। রবিবার বার্তা সংস্থা বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই হামলায় ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক মারা গেছেন।
এর আগে শনিবার একটি বিবৃতিতে সেভ দ্য চিলড্রেন দেশের বেসামরিক নাগরিকের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, সেনাবাহিনীর হামলায় সেদিন কমপক্ষে ৩৮ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, শুক্রবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যে সৈন্যরা তাদের গাড়ি থেকে বেশকিছু লোককে গ্রেপ্তার করেছে এবং কয়েকজনকে হত্যার পর তাদের লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, মানবিক কাজের পরে ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিল তাদের দুই কর্মী, এই হামলায় তারা নিখোঁজ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে গোপন হাসপাতালে সামরিক বাহিনীর হামলা
সংস্থাটি বলেছে, আমরা নিশ্চিত যে তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে হামলা করা হয়েছে এবং পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে সেভ দ্য চিলড্রেন-এর প্রধান নির্বাহী ইনগার অ্যাশিং আরও বলেছেন, নিরাপরাধ বেসামরিক নাগরিক ও আমাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে চালানো সহিংসতায় আমরা আতঙ্কিত। আমাদের কর্মীরা নিবেদিত মানবতাবাদী মানুষ, তারা মিয়ানমার জুড়ে লাখ লাখ শিশুকে সহায়তা করতে প্রাণ বাজি রেখে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর বিরোধিতাকারী মিলিশিয়াদের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম কারেন ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স বলেছে, নিহতরা মিলিশিয়া সদস্য নয় বরং সংঘর্ষ থেকে দূরে যেতে চাওয়া বেসামরিক নাগরিক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে গ্রুপের একজন কমান্ডার বলেছেন, মৃতদেহগুলো দেখে আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ নিহতেরা সবাই বিভিন্ন বয়সী নারী, শিশু ও বৃদ্ধা।
অন্যদিকে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, শুক্রবার তারা ওই এলাকায় বেশ কয়েকজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর ওপর হামলা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত নেতা অং সান সু চি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সদস্যদের গ্রেপ্তার ও দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে মিয়ানমার জুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর দফায় দফায় সেনাবাহিনীর হামলায় শিশুসহ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বহালে খোলা চিঠি
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার আশ্বাস জাপানের
ভাসানচর থেকে পালানোর সময় রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু
নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর রোহিঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে পালানোর সময় এক রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু হয়েছে।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক তরিক জানান, মৃত সেতারা বেগম (৩০) ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১০নং ক্লাস্টারের ১৩নং কক্ষের নূর মোহাম্মদের মেয়ে। এসময় তার সাথে থাকা মা নূর বাহারকে (৬০) আটক করেছে পুলিশ।
ওসি জানান, সেতারা বেগম গত ২০-২৫ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল। এর মধ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর শনিবার দালালের মাধ্যমে ভাসানচর থেকে পালিয়ে কুতুপালং যাওয়ার উদ্দেশ্যে মাছ ধরার নৌকাযোগে পালিয়ে আসে। ওইদিন রাতের কোন এক সময় দালালরা তাদের কৌশলে সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর মোজাম্মেল গ্রামের ঘাটে নামিয়ে দিয়ে যায়। পরে সেখানে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে রবিবার বিকালে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ভাসানচর আশ্রায়ণ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পক্ষে একা রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেয়া উচিত না: জাতিসংঘ
১ বছর আগে অপহৃত রোহিঙ্গা মাঝির লাশ উদ্ধার, আটক ৩
অষ্টম ধাপে ভাসানচর পৌঁছেছে ৫৫২ রোহিঙ্গা