সুরমা নদী
সিলেটে সুরমা নদীর তীর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
সিলেট নগরীর সুরমা নদীর তীর থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার সুরমা নদীর তীর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ফয়েজ আহমদ (২০) সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক এলাকার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে। সিলেট নগরীর সোবহানীঘাট এলাকার একটি কলোনিতে ভাড়া থাকতেন ফয়েজ। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন জানান, সকালের দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে খুনের ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, সত্যতা উদঘাটনে কাজ চলছে। লাশটির সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাবনায় চাচাতো ভাইয়ের ঘরে বাক্স থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
ঝালকাঠিতে জমি কেনা-বেচার মধ্যস্থতাকারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার
অবৈধ ড্রেজার দিয়ে রাতের আঁধারে লুট হচ্ছে সুরমার বালু
রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে সুরমা নদীর বালু তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ শহরের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
এভাবে বালু নিয়ে যাওয়ায় দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে শহরের সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগ সেতু আব্দুজ জহুর। এছাড়া এভাবে ড্রেজার চালানোয় এবং শব্দ দূষণের কারণে হুমকিতে পড়েছে নদীর দুই তীরের জনপদ।
সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতু এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সেতুসংলগ্ন সুরমা নদীর কয়েকশ মিটার এলাকাজুড়ে একাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলছে।
এদিকে প্রতি রাতে নদীর কয়েকটি স্থানে ড্রেজারের তাণ্ডব চললেও এসব বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, আটক ২: নৌপুলিশ
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে সুবিধা দিয়ে সুরমা নদীর বালু এভাবে লুটে নিচ্ছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
ড্রেজারের তাণ্ডব বন্ধ না হলে আব্দুজ জহুর সেতুসহ দুই তীরের কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, কিছুদিন ধরে জলিলপুর, আব্দুজ জহুর সেতু এলাকা, অচিন্তপুর, বড়পাড়া এলাকাসহ একাধিক স্থানে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। রাত ১টার পর থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত বিরামহীনভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। পরে এসব বালু বাল্কহেড বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। প্রতি রাতে কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন হয় বলে তাদের ধারণা।
সম্প্রতি এ বিষয়ে কথা হয় বালু উত্তোলনে কাজ করা এক শ্রমিকের সঙ্গে হয়।
আরও পড়ুন: কৃষি জমির স্বার্থে বালু উত্তোলন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ
সিলেটের সুরমা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
সিলেটের সুরমা নদী থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজিরবাজারের মাছবাজারসংলগ্ন সুরমা নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: যশোরে পেঁপেখেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
সিলেট মহানগর পুলিশের নগর বিশেষ শাখার কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ওসমানী মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, লাশটির পরিচয় শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা চার দিনের বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢল নেমেছে। এছাড়া উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হাওড় এলাকার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল, ব্যাহত হচ্ছে গ্রামীণ যোগাযোগ।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে অসময়ে যমুনায় পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুল হাওলাদার বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে কোনও কোনও নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, তবে বৃষ্টিপাত কমে গেলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।
এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা পাউবো। এসময়ে যাদুকাটা, চলতি খাসিয়ামারা, চেলা, মনাই, সোমেশ্বরীসহ সব পাহাড়ি নদীর পানি বেড়েছে। ফলে প্লাবিত হচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চল।
এদিকে সুনামগঞ্জ শহরেরে সাহেববাড়ি ঘাট, কাজির পয়েন্ট, নবীনগর, হাছননগর, নতুনপাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে। সাধারণ জনগণের চলাচলের সড়ক ডুবে হু-হু করে ঢলের পানি ডুকছে হাওর ও নদ-নদীতে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরী বলেন, সুনামগঞ্জে বন্যা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে হবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বাড়ছে নদ-নদীর পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
নিখোঁজের ৬ ঘন্টা পর সুরমা নদী থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
সিলেটের কানাইঘাটে সুরমা নদী দিয়ে গরু পার করার সময় পানিতে ডুবে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ ছয় ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে স্থানীয় নক্তিপাড়া গ্রাম সংলগ্ন সুরমা নদএত তার লাশ ভেসে ওঠে।
নিখোঁজ আব্দুর রব (৬০) দিঘীরপাড় পূর্ব ইউপির দর্পনগর পশ্চিম গ্রামের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: সিলেটে আবাসিক হোটেল থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
জানা যায়, এদিন সকাল ৯টার দিকে আব্দুর রব তার কয়েকটি গরু নিয়ে মমতাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন সুরমা নদী পার হওয়ার সময় পানিতে তলিয়ে যান। তার পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয়রা সুরমা নদীর আশপাশ স্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে গোলাপগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দিলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থল সুরমা নদীর আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে আব্দুর রবের সন্ধান পাননি।
কানাইঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কানাইঘাট থানা পুলিশের উপস্থিতিতে আব্দুর রবের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: জাবি’র হল থেকে ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামে নারী এনজিও কর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সিলেটের সুরমা নদীর পাড় থেকে বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সুরমা নদীর পাড় থেকে বস্তাবন্দী অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানার বরইকান্দির টেকনিক্যাল রোডের মেসার্স ইমরান চায়না অটো রাইসমিলের সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান তালুকদার।
তিনি বলেন, অজ্ঞাত লাশটি পঁচে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই’র একটি টিমও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কুকুরের মুখ থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার!
মতলবে ভুট্টাখেত থেকে অজ্ঞাত বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সিলেটের সুরমা নদীর খনন কাজ শুরু
সিলেট নগরবাসীকে বন্যামুক্ত করার লক্ষ্যে এবং সুরমা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খনন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় সুরমা নদীতে খনন কাজের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, প্রথম দফায় সিলেটে সুরমা নদীতে ১৮ কিলোমিটার খনন করা হবে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সুরমা নদী থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
শীত মৌসুমে সুরমা নদী শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়, আর বর্ষায় দেখা যায় ভয়াবহ রূপ। গভীরতা কমে যাওয়ায় নদীর তীর উপচে পানি ঢুকে সিলেট শহরে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় শহর। পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম ছড়া-খালগুলো দিয়ে উল্টো শহরে প্রবেশ করে সুরমার পানি। গত বছর দুই দফা বন্যায় নাকাল হতে হয়েছে সিলেট নগরবাসীকে। অবশেষে নগরবাসীকে এ সমস্যা থেকে মুক্ত করতে সুরমা খননের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পাউবো সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মে ও জুন মাসে সিলেট নগরীতে ভয়াবহ বন্যা হয়। ওই সময় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সুরমা নদী খনন, শহররক্ষা বাঁধ এবং নদী ও ছড়া-খালের উৎসমুখে স্লুইস গেট নির্মাণের দাবি তোলা হয়।
ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ নদী খননে জোর দেন। এর প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুরমা নদী খননে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
বোর্ড সূত্র জানায়, এর আগে কানাইঘাট থেকে ছাতক পর্যন্ত সুরমা নদী খননের জন্য একটি ডিপিপি জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি আলোর মুখ দেখেনি। গেল বছর বন্যার পর কুশিঘাট থেকে ছাতকের লামাকাজি সেতু পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার খননে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া নদী খনন করছে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমদ জানান, প্রথম দফার খনন শেষ হওয়ার পর কুশিঘাট থেকে লামাকাজি সেতু পর্যন্ত খনন হলে সুরমার নাব্যতা বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে পানি প্রবাহ। এতে বর্ষায় সিলেট মহানগরে বন্যার আশঙ্কা কমবে। এছাড়া আগামী জুন মাসের মধ্যেই খনন সম্পন্ন হওয়ার কথা।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম জানান, লামাকাজি পর্যন্ত কোথাও ২০ ফুট আবার কোথাও ১৫ ফুট খননের ডিজাইনসহ কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুরমা নদী থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
সুরমা নদী থেকে ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি কমেছে, বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি গতকালের তুলনায় কিছুটা কমলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কাছে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল সাত দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা সাত দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ২১ মিলিমিটার। এর আগের দিন বৃষ্টি হয়েছিল ১৮৫ মিলিমিটার।
আরও পড়ুন: সিলেটে ফের বৃষ্টি, বন্যার অবনতির আশঙ্কা
পাউবোর কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। বৃষ্টি হলেই জেলার নদ-নদীর পানি কিছুটা বাড়বে। তবে সেটার পরিমাণ বেশি হবে না। আগের মতো পরিস্থিতি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই।
এদিকে জেলায় বানভাসি অনেকেই এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে রয়ে গেছেন। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে তাঁবু টাঙিয়ে শত শত পরিবার দিন যাপন করছেন। তাদের অনেকেই বাড়িঘর হারিয়েছেন। অন্যদের ঘর থেকে পানি নামছে না। বন্যা পরিস্থিতি উত্তরণ না হওয়ায় চারটি উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যায় ঘরবন্দী সাড়ে ৪ লাখ শিক্ষার্থী
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কাজীর পয়েন্ট, বিলপাড়া, নবীনগর, পশ্চিম নতুনপাড়া এলাকার যেসব স্থানে বৃহস্পতিবার নতুন করে পানি উঠেছিল, রাতে বৃষ্টি না হওয়ায় সেসব স্থান থেকে পানি নেমে গেচে।
সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমছে, তবে আটকে পড়া বর্জ্যে দুর্ভোগ
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি শুক্রবার সকালে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে পচা বর্জ্যের দুর্গন্ধে পৌর এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পৌরবাসী।
সরজমিনে উত্তর আরপিন নগর, সাহেব বাড়ি ঘাট, মোদ্দো বাজার, সুরমা মার্কেট, আলফাত স্কয়ার পয়েন্ট, কালিবাড়ি, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, জামাই পাড়া, হাজির পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানিতে জমে থাকা বর্জ্য দেখা গেছে।
পানি কমতে শুরু করলেও এলাকার বাসিন্দারা নিত্যকাজে বাড়ির বাইরে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
উত্তর আরপিন নগর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, এলাকায় এত দুর্গন্ধ যে সকাল থেকেই বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি।
নতুন পাড়া এলাকার অসীম রায় বলেন, বন্যার পানি কমেছে কিন্তু এই পচা বর্জ্যের কারণে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
তবে সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, পানি সরে যাওয়ার পরপরই কর্তৃপক্ষ শহর পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ হোসেন জানিয়েছেন, পানিবাহিত রোগে এখনো কেউ অসুস্থ হয়নি। তবে ১২৩ টি মেডিকেল টিম সেবা দিতে প্রস্তুত আছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
গত তিনদিন বৃষ্টি কম হওয়ায় সিলেটের সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। একই সঙ্গে তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে ভারতের আসামের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, এতে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুশিয়ারা নদীর ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ও ডাইক উপচে পানি ঢুকে জেলার জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও গোলাপগঞ্জ মোট ছয়টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তবে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে এখনো সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: যমুনায় পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
জানা গেছে, দুদিন ধরে কুশিয়ারা নদীর পানি ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কিন্তু রবিবার থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে। ফলে রবিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক মাসের পূর্বের বন্যার সময় যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল, তার পাশাপাশি নতুন নতুন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ডাইকের ওপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করা শুরু করেছে। ফলে কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এসব উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। কুশিয়ারা তীরবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জকিগঞ্জ উপজেলার ৩৯টি স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছিল। এর মধ্যে সুলতানপুর ইউনিয়নের ভক্তিপুর, সদর ইউনিয়নের রারাই, বীরশ্রীর সুপ্রাকান্দি, কাজলসারের বড়বন্দ এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি, পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে আরও ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদী ও তীরবর্তী এলাকা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বানের পানিতে উপজেলা সদরসহ ৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
বালাগঞ্জ উপজেলার অবস্থাও একই। কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে ও ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাড়িঘর, হাটবাজার ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে বালাগঞ্জ-খছরুপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া বন্যার কারণে জেলা সদরের সঙ্গে এখনো বিয়ানীবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ঠিকে থাকলেও যে কোনো সময় তা বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সোমবার সারাদিন বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চারখাই, আলীনগর, শেওলা, দুবাগ, কুড়ারবাজার ও থানাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ওসমানীনগর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ হয়ে ওঠেছে। উপজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুর, দয়ামীর, বুরঙ্গা, সাদিপুর, পশ্চিম পৈলনপুর, উসমানপুর ও উমরপুর ইউনিয়নের পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সময় সময় বন্যা পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটছে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুরমা তীরবর্তী বাঘাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কুশিয়ারা তীরবর্তী এলাকায় অবনতি হয়েছে। উপজেলার শরীফগঞ্জ, বাদেপাশা, ঢাকাদক্ষিণ, আমুড়া ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির বেশ অবনতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুশিয়ারা তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোর নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে, নিচু এলাকা প্লাবিত
সুরমা নদীর তীরবর্তী সিলেট নগরী, সদর, বিশ্বনাথ ও কানাইঘাট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সিলেট নগরীর উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় এখনো লাখো মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বাকি উপজেলাগুলোতেও লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি কমায় জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার পানি কিছুটা কমেছে। তবে পানি কমার গতি খুবই ধীর বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই তিন উপজেলার এখনও ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত রয়েছে।