প্রতিমা
শিকদারবাড়ি দুর্গোৎসব: পূজামণ্ডপে ৫০১ দেব-দেবীর প্রতিমা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের শিকদারবাড়ির দুর্গাপূজা করোনা সংক্রমণের কারণে কর্তৃপক্ষ গেল ৩ বছর উৎসব বন্ধ রাখার পর এবার ৫০১টি প্রতিমা নিয়ে আগের রূপে ফিরছে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: মৌলভীবাজারে মণ্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
মহামারির সময় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে সমুন্নত রাখার জন্য ছোট পরিসরে পূজার আয়োজন করা হয়েছিল। তবে এই বছর আগের মতোই জাঁকজমকপূর্ণ পূজা উদযাপন করতে চলেছে শিকদারবাড়ি।
শিকদারবাড়ী পূজামণ্ডপে মোট ৫০১টি দেব-দেবীর প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে।
একাদশ প্রহরে পূজা মণ্ডপে প্রতিমা সাজানোর কাজ চলছে। দর্শনার্থীদের মুগ্ধতে প্রতিমাগুলোতে নানা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এদিকে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে মহামায়া দেবী দুর্গার সঙ্গী হিসেবে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলিযুগের দেব-দেবীরা পূজামণ্ডপ জুড়ে বিস্তৃত।
নিরাপদে প্রতিমা বিসর্জন নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: নৌপুলিশ প্রধান
নৌপুলিশ সারাদেশে দুর্গাপূজা চলাকালীন প্রতিমা বিসর্জনের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঘাট এলাকায় ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) নৌপুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
এসময় প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে বলে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য পূজা কমিটিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, যারা সাঁতার জানেন, প্রতিমা বিসর্জনের জন্য তাদের বেছে নিতে হবে।
তিনি বলেন, ইভটিজিং ঠেকাতে পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি বসানো হবে।
নৌ পুলিশের কঠোর পদক্ষেপের কারণে জনগণ এখন নৌপথে ডাকাতদের ভয় পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নৌপুলিশ সব নদীকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন, আটক ২: নৌপুলিশ
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরা: লক্ষ্মীপুরে জেলে-নৌপুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১
মেঘনায় নৌপুলিশের ওপর জেলেদের হামলা: আটক ৫
ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর: সুষ্ঠু তদন্তের দাবি ফখরুলের
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ১২টি হিন্দু মন্দিরে ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে দোষীদের খুঁজে বের করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি শুধু আপত্তিকরই নয়, রহস্যজনক, পূর্বপরিকল্পিত এবং লজ্জাজনকও বটে। এর নিন্দা করার উপযুক্ত শব্দ নেই।’
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তারা নরকের পোকা।
তিনি বলেন, ‘বালিডাঙ্গীর ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। বালিয়াডাঙ্গীতে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরকারী অপরাধীদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ফখরুল।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১২টি হিন্দু মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে অজ্ঞাতনামারা।
ফখরুল বলেন, সামাজিক সম্প্রীতির পরিপন্থী এই নৃশংস ঘটনার পর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাস্তার ধারের মন্দির ও প্রতিমা বেশি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা সাধারণত রাতে এই এলাকায় টহল দেয়। কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে দুর্বৃত্তরা তাদের (পুলিশের) অবহেলার কারণেই এত বড় মন্দির ও প্রতিমা সহজেই ভাঙচুর করতে পেরেছে। এক্ষেত্রে সরকার তার দায় এড়াতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, দেশে চলমান দুঃশাসন একটি অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যেখানে প্রকৃত অপরাধীরা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অপরাধ করে পালিয়ে যায়।
ফখরুল বলেন, ‘ফলে, অপরাধীরা দ্বিগুণ উদ্যমে নতুন অপরাধ করে চলেছে। দেশ এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হওয়ায় মানুষ এখন এখানে অত্যন্ত নিরাপত্তাহীন।
দেশে অনিরাপদ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড চালাতে হয় বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, অতীতেও মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, কিন্তু সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারের মাধ্যমে দোষীদের বিচার করতে পারেনি।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং তাদের জমি-জমা, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের আগের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ, তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার অনুগত লোকজন শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিই দখল করেনি, হামলা ও ভয়ভীতিও দেখিয়েছে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
ফখরুল অবিলম্বে সরকারি খরচে ভাঙচুর করা মন্দিরের পুনর্নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা: ফখরুল
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
জয়পুরহাট সদর উপজেলায় প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে নিখোঁজ দুই মাধ্যমিক শিক্ষার্থী লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
নিখোঁজের প্রায় ২০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকালে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরিরা প্রথমে শিক্ষার্থী সনজিত (২৩) ও কিছুক্ষণ পর তন্ময়কে (১৭) ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিক্ষার্থী সনজিত বাশফোর জয়পুরহাট শহরের রেলস্টেশন রোড এলাকার শান্তিনগর মহল্লার মৃত বিশ্বজিৎ বাশফোরের ছেলে। সে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আরও পড়ুন: ভোলার মেঘনায় অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
তন্ময় রজক একই এলাকার পরেশ চন্দ্রের ছেলে। সে শহরের কাশিয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র, এবার এসএসসি পরীক্ষা দিতো।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই শিক্ষার্থী জেলা হিন্দু ছাত্র যুব পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিল ।
জয়পুরহাট সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর মহীউদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী থেকে সিভিল ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের ছয় সদস্যের ডুবুরির দল জয়পুরহাটের চকশ্যামের ছোট যমুনায় দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
তারা রাত প্রায় সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এবং অক্সিজেন (গ্যাস) সংকটের কারণে কিছু সময় বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় দফায় অভিযান শুরু করে।
তবে প্রায় রাত ১টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও ওই রাতে (বুধবার রাতে) কাউকে উদ্ধার করতে পারেনি তারা।
এরপর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে আবারও উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ডুবুরিরা।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রথমে সঞ্জিত ও তার আধঘন্টা পর সোয়া ১০টার দিকে তন্ময়কে ছোট যমুনা নদীর ওই দুর্ঘটনাস্থলের প্রায় ১০০ মিটার দূর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার আনুমানিক দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে জয়পুরহাটের সদর উপজেলার চকশ্যাম ব্রিজের কাছে ছোট যমুনা নদীতে কালী প্রতিমা (মূর্তি) বিসর্জন দিয়ে স্নান (গোসল) করার সময় এ নিখোঁজের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় পাঠানো কনটেইনার থেকে লাশ উদ্ধার: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
লক্ষ্মীপুরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
রাত পোহালেই লক্ষ্মীপূজা, জমে উঠেছে প্রতিমা আর সোলার ফুল বিক্রি
রাত পোয়ালেই লক্ষ্মীপূজা। লক্ষ্মীপূজার আয়োজন চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে। লক্ষ্মীপূজার প্রধান উপকরণ প্রতিমা আর সোলার ফুল। তাই হাট-বাজারে এখন লক্ষ্মী প্রতিমা আর সোলার ফুল বিক্রি জমে উঠেছে। নারী-পুরুষ ঘুরে দেখে পছন্দমতো প্রতিমা এবং নানা রকম সোলার ফুল ক্রয় করছেন।
ক্রেতারা বলছেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা আর সোলার ফুলের দাম বেশি।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সব কিছু মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবছর প্রতিমা এবং ফুলের দাম বেড়েছে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে মা লক্ষ্মী ধন-সম্পদ আর ঐশ্বর্যের প্রতীক। লক্ষ্মীর কৃপা হলে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে।
তাই প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসবের পর আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করে থাকে।
আরও পড়ুন: করোনার কারণে ২ বছর পর কুমারী পূজা
শনিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের কাপুড়েপট্টিতে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে সোলার ফুল আর প্রতিমা বিক্রির হাট বসেছে। ক্রেতারা দর দাম করে প্রতিমা আর সোলার ফুল ক্রয় করছেন।
পাঁচ কদমের একটি সোলার ফুল ৭০ টাকা আর ৩৬ কদমের একটি ফুল একহাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিমা ১০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সোলার ফুল নিয়ে হাটে বিক্রি করতে আসা কচুয়া উপজেলার শিবপুর পালপাড়া গ্রামের গৌতম শিকদার জানান, তারা প্রতিবছর লক্ষ্মীপূজার সময় সোলার ফুল বিক্রি করে।
কলকাতার কারিগরদের রঙ, ছাঁচে দুর্গাপূজার প্রতিমা
বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপনে হাজার হাজার মানুষ ‘সিটি অব জয়’ খ্যাত কলকাতার রাস্তায় জড়ো হয়েছে। এ যেন উচ্ছ্বসিত আত্মার ভেসে বেড়ানো!
শনিবার থেকে শুরু হওয়া পাঁচদিনের উৎসবটি হিন্দু দেবী দুর্গার কাছে প্রার্থনা, ভোজ, আনন্দ, সঙ্গীত, নৃত্য ও মন্দের কাছে ভালোর জয়সূচক নাটকের মধ্যদিয়ে উদযাপন করা হয়। বাঙালি হিন্দু সম্পদায়ের মানুষ পূজা অর্পণের জন্য জমকালো আলোকসজ্জা ও অলঙ্কৃত কমিউনিটি সেটারগুলোতে দুর্গা ও অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি পরিদর্শন করে।
মহামারির দুই বছর এবং কলকাতার এই উৎসবকে ইউনেস্কোর ‘মানবতার অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ এর অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বড় সমাবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা
বাগেরহাটে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, আটক ৩
বাগেরহাটের মোংলায় একটি সর্বজনীন কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে উপজেলার ‘কানাইনগর সর্বজনীন কালী মন্দির’-এ এই প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিন যুবককে আটক করেছে।
আটক যুবকেরা হলেন- মো. রাহাত চৌধুরী (২০), মো. নয়ন মুন্সি (২৪) এবং মো. আসিফ খান (২২)। এদের সবার বাড়ি কানাইনগর গ্রামে।
স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনা রাণী বিশ্বাস জানান, তিনি প্রতিদিনের মতো রবিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে মন্দিরে গিয়ে দেখেন ভাঙা প্রতিমা মেঝেতে পড়ে আছে। পরে তিনি প্রতিবেশিদের বিষয়টি জানান।
মন্দির কমিটির সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে মন্দিরে গিয়ে ভাঙা প্রতিমা দেখতে পান তিনি।
দেবাশীষ বিশ্বাস আরও জানান, মন্দিরের সামনে তাদের একটি মাঠ রয়েছে। সম্প্রতি বালু দিয়ে ওই মাঠ তারা ভরাট করেছে। শনিবার বিকালে স্থানীয় ১৫ থেকে ১৬ জন যুবক ওই মাঠে ফুটবল খেলছিল। এসময় তিনি তাদের ওই মাঠে খেলা করতে নিষেধ করে। এতে ওই যুবকরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তাদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা এবং এক পর্যায়ে হট্টগোল তৈরি হয়। এসময় ওই যুবকরা তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
দেবাশীষের ধারণা মাঠে ফুটবল খেলা নিয়ে যাদের সঙ্গে তার বাক-বিতণ্ডা হয়েছে, তারাই মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করতে পারে।
রবিবার সকালে এ ঘটনার খবর পেয়ে সহকারি পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল ওই মন্দিরে যান এবং মন্দির কমিটিসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। বর্তমানে মন্দিরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মোংলা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পীযুষ মজুমদার জানান, ওই এলাকার হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে বসবাস করেন। তাদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রয়েছে।
যারা মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতের কোন এক সময়ে সর্বজনীন ওই মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে তারা মন্দিরে ছুটে গিয়ে কমিটির কর্মকর্তা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। ভাঙচুরের বিষয়টি পুলিশ গভীর ভাবে তদন্ত করছে।
তিনি বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ফুটবল খেলা নিয়ে যাদের সঙ্গে মন্দির কমিটির বাক-বিতণ্ডা হয়েছে তাদের মধ্যে তিন যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নড়াইলে ভাঙচুর: ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে সেই যুবক গ্রেপ্তার
নড়াইলে হিন্দু বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর
পঞ্চগড়ে প্রতিমা ভাঙচুর, ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
পঞ্চগড়ে তিনটি কালিমন্দিরের ১০টি মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেলার আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নে এই প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার এ ঘটনায় এক ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে আটোয়ারী থানা পুলিশ। তারা দুজনই হিন্দুধর্মাবলম্বী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-শক্তি চন্দ্র পাল ও সনাতন চন্দ্র পাল। শক্তি চন্দ্র পাল বর্তমান ইউপি সদস্য ও আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রার্থী।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে হিন্দু ভোটারদের সমর্থন আদায়ের অপকৌশল ও অপর ইউপি সদস্য প্রার্থী শাহজাহান আলী টিএনওকে ফাঁসাতে প্রতিমা ভাঙচুর করা হতে পারে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন।
পুলিশ জানায়, আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বহুবাঁধ শ্মশান কালি মন্দির, দোমুরকী-ঝাকুয়াপাড়া কালী মন্দির এবং ঠাকুরপাড়া পুরানপাড়া কালি মন্দিরে গভীর রাতে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। সকালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পুজা অর্চনার জন্য মন্দিরে গেলে প্রতিমাগুলোর বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে। ভাঙচুর অবস্থা দেখে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যোদয়
এই ঘটনার খবর পেয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, সিআইডির ক্রাইম ইউনিটসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এই ইউনিয়নের ৫নং ওয়াডের দয়াল চন্দ্র রায় জানান, শক্তি চন্দ্র পাল হিন্দু ভোটারদের সমর্থন আদায়ের জন্য মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটা কোন ভাবে মেনে নেয়া যায়না। এখানে আমরা হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে বসবাস করছি। এটা হিন্দু ধর্মের জন্য লজ্জার ব্যাপার।
ওই এলাকার বিপ্লব রায়, বিষ্ণু রায়, অনিমেষ জানান, ঘটনা যেই ঘটাক তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবেন এমনটি আশা করছি। এ বিষয়ে ছাড় দেয়া ঠিক হবে না।
পঞ্চগড় জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায় জানান, স্থানীয় নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর জন্য প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
আলোয়াখোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদিপ কুমার রায় জানান, সকালে আলোয়াখোয়া গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আমাকে খবর দেয় প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। আমি তাৎক্ষনিক ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি,তবে কেন এই প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে এখনই বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পুকুর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী আটক
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. রাকিবুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তদন্ত করা হচ্ছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, রাতের কোন অংশে দুষ্কৃতিকারীরা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনাটি তদন্তের বিষয়। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে কে কারা এবং কেন ভাঙচুর চালিয়েছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই এর রহস্য উদঘাটন করা হবে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান,নির্বাচনকে ঘিরেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা তদন্ত করছি। জড়িতদের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা সজাগ রয়েছি।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ নভেম্বর আটোয়ারী উপজেলার আলোয়া খাওয়া ইউনিয়নে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে শক্তি চন্দ্র পাল টিউবওয়েল প্রতিকে এবং মো. শাহজাহান আলী টিএনও তালা প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে শিশু ও নারীসহ ১১ রোহিঙ্গা আটক
জয়পুরহাটে দুটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর: গ্রেপ্তার ১
জয়পুরহাটে সদর উপজেলার শুকতাহার গ্রামের পূর্বপাড়া সার্বজনীন ও বারোয়ারী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার শামছুল আলম ওরফে লালবাবু (৩৪) জয়পুরহাট সদরের ধুলাতর মন্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর
পুলিশ ও এলাকাবাসি জানায়, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরে পৃথকভাবে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছিল। সেখানে বেশ কয়েকটি প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্নও হয়। শুক্রবার গভীর রাতে কে বা কারা ওই দুটি মন্দিরের কয়েকটি প্রতিমা ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়।
প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি জানাজানির পর শনিবার জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভুঞা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ওই গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ শিকদার বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভুঞা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যেই প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়, এমন কোন কাজ কাউকেই করতে দেয়া হবে না। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
চুয়াডাঙ্গায় দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর
চুয়াডাঙ্গায় একটি মন্দিরে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার শহরতলীর দৌলতদিয়ার দক্ষিণ পাড়া মন্দিরে দুস্কৃতিকারীরা এই প্রতিমা ভাঙচুর করে বলে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় সমগ্র চুয়াডাঙ্গা জেলায় দূর্গাপূজা আয়োজকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এমন ঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, এএসপি (সদর) কনক কুমার দাস ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ মহসিন পিপিএম।
আরও পড়ুন: নিকলীতে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় আটক ৫, একজনের স্বীকারোক্তি
ওসি জানান, কি কারণে এধরনের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ তা তদন্ত করছে।
জেলার নেতৃবৃন্দ জানায়, কারিগররা প্রতিমার কাজ করে রাতে বিশ্রামে চলে যায় । বিকেলে এসে ভাঙচুরের ঘটনা দেখতে পেলে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে আজ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা নেতারা আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে। অন্যথায় তারা কঠোর কর্মসুচি ঘোষণা করবেন বলে জানান।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ