বর্ষণ
হাঁটু পানিতে ভাসছে বরিশাল নগরী
টানা বর্ষণে বরিশাল নগরীর জনগুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়কে হাঁটুপানি জমে যাওয়ায় জনসাধারণ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে।
চলতি মাসের সাত দিন টানা বর্ষণের পর শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালের দুই ঘণ্টার অতি ভারী বৃষ্টিপাতে নগরীর প্রধান সড়কসহ অলিগলিও পানির নিচে রয়েছে। ভোগান্তি এড়াতে কর্মজীবী ও জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাইরে বের হননি।
এছাড়া, নগরীর নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ টিনের ঘর, অর্ধপাকা ও পাকা ভবনের নিচতলা পানিতে তলিয়ে থাকায় দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ সড়ক প্লাবিত হয়েছে। নগরীর বটতলা থেকে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা সড়ক, বটতলা আদম আলী হাজির গলি, অক্সফোর্ড মিশন রোড, করিম কুটির, কলেজ এভিনিউ, গোরস্থান রোড, বগুড়া রোড, বিএম স্কুল সড়ক, রূপাতলী হাউজিং, ধান গবেষণা সড়কের খ্রিস্টান কলোনি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা কলোনি, পার্শ্ববর্তী শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির স্টাফ কোয়ার্টার, কালুশাহ সড়ক, কাজিপাড়া এবং কাউনিয়া এলাকার বেশ কিছু সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টিতে সিলেটে বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে
এ ছাড়া, বগুড়া রোড, বটতলা, কলেজ এভিনিউ ও গোরস্থান রোড এলাকার সড়কগুলোতে হাঁটুপানি বিরাজ করছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল জানান, চলতি মাসের সাত দিন টানা বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বজ্রসহ অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই দুই ঘণ্টায় ৪৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
চলতি মাসে বরিশালে স্বাভাবিক ১৭৬ মিলিমিটারের স্থলে আবহাওয়া বিভাগ থেকে ১৬০-২১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ১ অক্টোবর সকাল থেকে ৭ অক্টোবর দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবলভাবে মৌসুমি বায়ু এখনও সক্রিয় থাকার কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কোথাও কোথাও হালকা থেকে ভারী বা ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে আবারও বাড়ছে যমুনার পানি, বন্যার আশঙ্কা
সিরাজগঞ্জে যমুনায় বাড়ছে পানি, বন্যার আশঙ্কা
ভারি বর্ষণে সিলেট ও সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, রবিবার (২ জুলাই) সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী উজানে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে।
সুরমা, পুরাতন সুরমা, সারি গোয়াইন, খোয়াই, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভোগাই ও কংসসহ এই অঞ্চলের কিছু নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে। কারণ এখানে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা নদী স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে, অন্যদিকে গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় ১২ হাজার পরিবার পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
ভারতে ভারী বর্ষণের ফলে দেয়াল ধসে নিহত ১০
ভারতের উত্তরপ্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণে দেয়াল ধসে কমপক্ষে ১০ জন মারা গেছেন। শনিবার রাজ্যের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তরপ্রদেশে ও পাশ্ববর্তী দিল্লিতে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানাবে ভারত
এক পুলিশ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান,‘রাজ্যের ইটাওয়া জেলাজুড়ে ভারী বর্ষণের কারণে দেয়াল ধসে ১০ জন মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে সাত শিশু ছিল।’
পুলিশ আরও জানিয়েছে,বাকি তিনজনের মধ্যে এক বয়স্ক দম্পতিও ছিল।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শুক্রবার বন্যা কবলিত এলাকাগুলো আকাশপথে ঘুরে দেখেন এবং কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হৃদয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত: দোরাইস্বামী
ভারতে দেয়াল ধসে নিহত ৯
প্রবল বর্ষণে নাইজারে ১৭৯ জন নিহত
নাইজারে চলতি বছরের জুন থেকে হওয়া প্রবল বর্ষণে মোট ১৭৯ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দেশটির জেনারেল ডিরেক্টরেট অব সিভিল ডিফেন্স এ তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটি জানায়, সাধারণ নাগরিকদের বাড়িঘর ডুবে যাওয়া বা ভেঙে পড়ার কারণে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, এ অঞ্চলের অধিকাংশের বাড়ি মাটি দিয়ে তৈরি।
আরও পড়ুন: বন্যায় চীনে লোহার খনিতে ১৪ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১
দেশটির মানবিক সেবা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে জিন্ডার এলাকার অ্যাঙ্গুয়াল জুলুর জনগণের জন্য ১৮৫ ব্যাগ চাল, ১৮৫ ব্যাগ ভুট্টা এবং ১৬৬ ব্যাগ মটরশুটির দানা খাদ্য সহায়তা দিয়েছে।
২০২১ সালে গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাতে নাইজারে কমপক্ষে ৭৭ জনের মৃত্যু হয় এবং কমপক্ষে দুই লাখ ৫০ হাজার ৩৩১ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১২শ’ ছাড়িয়েছে
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে বন্যায় নিহত ৯
অবিরাম বর্ষণে বিপর্যস্ত নগরজীবন
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে সৃষ্ট গত দুই দিনের অবিরাম বর্ষণে বুধবার নগরবাসী বিশেষ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত কোনো বিরতি দেখা যায়নি।
টানা বৃষ্টিতে ঢাকাবাসী বিশেষ করে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
টানা তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাড়ি-ঘর, বিভিন্ন রাস্তাঘাটসহ কিছু কিছু জমির অবশিষ্ট পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, ধূমখালি ও ছাগলচোরাসহ বিভিন্ন হাওর, খাল-বিলের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী বাংলাবাজার, লক্ষ্মীপুর, বগুলা, নরসিংপুর, সুরমা, দোহালিয়া, পান্ডারগাঁও, মান্নারগাঁও ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তা, মাঠঘাট, আউশ জমিতে পানি ঢুকছে।
কৃষকরা জানান, পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মাঠের অবশিষ্ট বোরো ফসল ও রবিশস্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না আশঙ্কা করছেন তারা।
আরও পড়ুন: বন্যার পানি হাওরে ঢুকে ফসলহানির আশঙ্কা সুনামগঞ্জের কৃষকদের
এদিকে মাঠ ও গোচারণ ভূমিতে পানি উঠায় গো-খাদ্য সংকটসহ মৎস্য খামারিরাও রয়েছেন চরম শঙ্কায়। কেননা গত বছর চার দফা বন্যায় শতাধিক খামারের কোটি কোটি টাকার মাছ ও মাছের পোনা ও রেনু ভেসে গেছে।
অপরদিকে শ্রমিক সংকট ও আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে বিপাকে পড়েছে হাওরপাড়ের কৃষকরা।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, পানি বাড়লেও কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: অসময়ের বন্যা থেকে ফসল রক্ষায় নতুন প্রকল্প আসছে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
বন্যা ও নদীভাঙন মোকাবিলায় ১৮০৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন একনেকে
ভারতে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত শতাধিক
ভারতের পশ্চিমের রাজ্য মহারাষ্ট্রে গত দু’দিনের ভারী বর্ষণের ফলে ভূমিধস এবং বন্যায় প্রায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
শনিবার দেশটির সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুনঃ চীনে বন্যার পানি পাতাল রেলে ঢুকে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু
মহারাষ্ট্রে গত চার দশকের মধ্যে চলতি জুলাই মাসে সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে প্রাদেশিক রাজধানী মুম্বাই থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের রায়গড় জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রায়গড় জেলায় তিনটি ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। শতাধিক মৃত্যুর মধ্যে কেবল এই তিন ভূমিধসেই ৩৬ জনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও কয়েকশ ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে, ফলে গৃহহীন হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ।
আরও পড়ুনঃ জার্মানি ও বেলজিয়ামে বন্যায় ১২৫ জনের মৃত্যু, বহু নিখোঁজ
রায়গড় জেলার কালেক্টর নিধি চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভূমিধসের ঘটনায় তালিয়ে গ্রামে ৩২ জন এবং মাহাদ শহরে চারজন মারা গেছে। উদ্ধার অভিযান এখনও অব্যহত রয়েছে।’
ভারী বর্ষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পার্শ্ববর্তী সাতারা জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৭ টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আবারও বাড়ছে যমুনার পানি, বন্যার আশঙ্কা সিরাজগঞ্জে
পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে আবারও সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।