প্রাণহানি
ট্রেনে অগ্নিসংযোগে মা-শিশুসহ ৪ জনের প্রাণহানির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চায় জাতিসংঘ
সম্প্রতি চলন্ত ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মা ও তার শিশুসহ চারজনের প্রাণহানির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছে জাতিসংঘ।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি মনে করি, কারা এ হামলা চালিয়েছে তা শনাক্ত করতে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্ব।’
একই সঙ্গে অগ্নিসংযোগের হামলায় নিহতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল জানিয়েছে, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস 'দ্রুত' উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়েছে।
নাশকতার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘তদন্তে দেখা গেছে যে এই কাজ পূর্বপরিকল্পিত ছিল, এই মারাত্মক ঘটনার পরিকল্পনা করার জন্য সভা করেছিল। আসন্ন নির্বাচন ও দেশের অগ্রগতি ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে এই নাশকতা রাষ্ট্র ও জনগণের ওপর সরাসরি হামলা।’
এক প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, তারা বাংলাদেশে 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন, যেখানে জনগণ কোনো ধরনের ভয়ভীতি ছাড়াই ভোট দিতে পারবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
তিনি বলেন, 'অবশ্যই নির্বাচনের পর আমাদের কিছু বলার আছে, কিন্তু আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে 'দৃঢ় অবস্থান' নিয়েছে।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে,‘এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তারা শান্তি সমুন্নত রাখতে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।’
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন বৃহস্পতিবার বিকালে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, ৯টি দেশ আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ভারত, জাপান, শ্রীলঙ্কা, চীন, রাশিয়া, জাপান, উজবেকিস্তান, মরিশাস, জর্জিয়া ও ফিলিস্তিন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে।
ওআইসি, কমনওয়েলথ ও আরব পার্লামেন্টও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউ'র চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল ইতোমধ্যে ঢাকায় এসেছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের বিবৃতি বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে: তথ্যমন্ত্রী
একটি কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, এনডিআই-আইআরআই-এর ছোট একটি দলও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জনপ্রিয় ও রাজনৈতিক সমর্থন অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তাদের মিত্রদের একটি অংশ আসন্ন নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অবরোধ আরোপের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
বিএনপির এই কৌশলগত পদক্ষেপের ফলে সারাদেশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাদের সমর্থকরা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এবং তাদের বিতর্কিত দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর অযৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করতে এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা প্রতিরোধে রাষ্ট্রসমূহ বাধ্য: জাতিসংঘ কমিটি
ঢাকায় প্রাণহানি-সহিংসতায় ইইউ ও সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শোক প্রকাশ
ঢাকার রাস্তায় প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও এর সদস্য দেশগুলো।
ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল রবিবার (২৯ অক্টোবর) টুইটারে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ঢাকার রাস্তায় প্রাণহানি ও সহিংসতা দেখে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো গভীরভাবে শোকাহত।’
তারা বলেন, ‘অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পথ খুঁজে বের করা জরুরি।’
এর আগে ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ৬ বছরের জিএসপি+ সুবিধা দিতে ইইউ'র প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেছেন, ‘আমরা সব পক্ষকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার জন্য সমস্ত সহিংসতার ঘটনা পর্যালোচনা করব।’
শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যা ও একটি হাসপাতাল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা অগ্রহণযোগ্য।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়।
শনিবার বিএনপির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য ও একজন রাজনৈতিক কর্মী নিহত হন। এ ছাড়া অপর এক পুলিশ সদস্য ও দুই আনসার সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন: আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইইউ’র সমর্থন চান প্রধানমন্ত্রী
ওষুধ ও ভ্যাকসিন উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনতে ইইউ'র প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে পারে বাংলাদেশ: ইআইবি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রী
ফরিদপুরে ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, নতুন রোগী ২৪৩ জন
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত চিকিৎসাধীন চারজনের প্রাণহানি হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮২ জনে।
এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২৪৩ জন রোগী। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭০৪ জন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে ফরিদপুরে ৩ জনের মৃত্যু
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই নারী ও দুই পুরুষ মারা গেছেন।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন রাজবাড়ির বালিযাকান্দির গোলাপী, রাজবাড়ির উড়াকান্দার হাবিবুর, মাগুরার চাদপুরের রুপা ও ফরিদপুরের নগরকান্দার রাজ্জাক মোল্লা।
ডা. এনামুল হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালটিতে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৫৯ জন রোগী। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ২৯৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ২৪৩জন রোগী। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০৪ জন।
সিভিল সার্জন আরও জানান, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৮২ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাগুরা, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা। জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ২১৮ জন। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৪৩২ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের ভুবনেশ্বর নদে কুমির, এলাকায় আতঙ্ক
বিএনপি-জামায়াতের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: ফরিদপুরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী
বৃষ্টিতে রাজধানীতে জনজীবন বিপর্যস্ত, ঘটছে প্রাণহানিও
গতকাল রাতে মাত্র ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের ফলে রাজধানীর জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় সন্ধ্যা ৬ টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে অস্ত্রোপচার করে সুঁই বের করার সময় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। যার ফলে যাত্রীরা আটকা পড়েন এবং প্রচণ্ড অসুবিধার সম্মুখীন হন। রাস্তাগুলো জলমগ্ন ছিল এবং প্রধান সড়কগুলোতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
রাজধানীর মিরপুর ১০, মিরপুর ১১, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, পুরানা পল্টন, গুলিস্তান, পুরান ঢাকা, বংশাল রোড, বিজয় সরণি, ইস্কাটন, ফার্মগেট, তেজগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থানরত নিম্নচাপের কারণে ঢাকা শহরে অবিরাম বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিপ্তরের কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: অতি বৃষ্টির কারণে চবির ২২ বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, রাজধানীতে ১২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
শুক্রবার এ রিপোর্ট লেখাপর্যন্ত রাজধানীর বংশাল, সিদ্দিক বাজার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, খিলগাঁও, রামপুরা, পুরান ঢাকার কিছু এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় পানি আটকে রয়েছে।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ মাসে ৫৭৯ জনের মৃত্যু: এসসিআরএফ
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সারা দেশে এক হাজার ৩০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ৪৮৪ জন নিহত ও দুই হাজার ৪৮৫ জন আহত হয়েছেন। এই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৬ জনের (১৬ দশমিক ৪৮) মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দিক থেকে মোটরসাইকেলের অবস্থান শীর্ষে।
আরও পড়ুন: ছয় মাসে রেলপথে দুর্ঘটনায় নিহত ২০৯: এসসিআরএফ
এ সময়ে ৫২৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৫৭৯ জন; যা মোট দুর্ঘটনা ও নিহতের যথাক্রমে ৪০ দশমিক ৪৭ ও ৩৯ দশমিক ০১ শতাংশ। দুই চাকার এ ক্ষুদ্র বাহনে গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছে ৬ জনেরও (৬ দশমিক ৪৩) বেশি মানুষ।
ঢাকার গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন শিপিং এ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) পর্যবেক্ষণ ও জরিপ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
রবিবার (৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: এসসিআরএফের সভাপতি আশীষ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর
১২টি বাংলা জাতীয় দৈনিক, ৫টি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ৯টি অনলাইন নিউজপোর্টাল ও সংবাদ সংস্থা এবং ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে সংগঠনটি জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা এড়াতে পদ্মা সেতুর ওপর মোটরসাইকেল চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা ও ঈদযাতায়াতে সকল মহাসড়কে এই বাহন নিষিদ্ধ ঘোষণার সুপারিশ করেছে এসসিআরএফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে সর্বাধিক ৪৭৯টি দুর্ঘটনায় ৫৮৪ জন নিহত ও এক হাজার ১০২ জন আহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে সর্বনিম্ন ৩৯২টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪১১ ও এক হাজার ১০২।
জানুয়ারিতে ৪৩১টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮৯ জনের। এ তিন মাসে সর্বাধিক ৪২১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কে; যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সড়কে নিহতের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পথচারি।
এ সময়ে ৩৭০ জন পথচারি মারা গেছেন; যা মোট নিহতের ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তিন মাসে ২১১ নারী ও ২১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
মোট প্রাণহানির মধ্যে নারী ও শিশুর অবস্থান যথাক্রমে ১৪ দশমিক ২১ ও ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ সময়ে অন্যান্য গাড়িচালক ও সহকারি নিহত হয়েছেন ২০৯ জন; যা মোট প্রাণহানির ১৪ দশমিক ০৮ শতাংশ।
দুর্ঘটনার সড়কভিত্তিক পর্যবেক্ষণ
প্রতিবেদনে সড়কভিত্তিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তিন মাসে সর্বাধিক ৪২১টি দুর্ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কে; যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আঞ্চলিক সড়কে ঘটেছে ৩২৭টি; যা মোট দুর্ঘটনার ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ। গ্রামীণ সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও হার যথাক্রমে ২৮৭ ও ২২ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং শহরের সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা ও হার যথাক্রমে ১৮৯ ও ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। বাকি ৭৮টি (৬ দশমিক ০১ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে অন্যান্য স্থানে।
আরও পড়ুন: রেল দুর্ঘটনায় ২০১৯ সালে ৪২১ জনের প্রাণহানি: এসসিআরএফ
দুর্ঘটনার সময়ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ
প্রতিবেদনে সময়ভিত্তিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তিন মাসে সবচেয়ে বেশি ৩৭৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে; যা মোট দুর্ঘটনার ২৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
দুপুরে ও রাতে ঘটেছে যথাক্রমে ৩৬৪টি ও ২৪৭টি; যা মোট দুর্ঘটনার যথাক্রমে ২৭ দশমিক ৯৫ ও ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া ১৬৩টি ঘটেছে বিকালে; যা মোট দুর্ঘটনার ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ। অন্যান্য সময়ে ঘটেছে বাকি ১৫২টি (১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ) দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১২ জনের মৃত্যু: এসসিআরএফ
দুর্ঘটনার ১৬টি কারণ
পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার ১৬টি কারণ চিহ্নিত করেছে এসসিআরএফ। সেগুলো হলো- ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন। ২. অদক্ষ ও অসুস্থ চালক। ৩. গাড়ির বেপরোয়া গতি। ৪. প্রচলিত আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ওভারটেকিং। ৫. নিয়োগপত্র, সাপ্তাহিক ছুটি ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকায় চালক ও সহকারিদের মানসিক অবসন্নতা। ৬. বিভিন্ন স্থানে সড়কের বেহাল দশা। ৭. জাতীয় মহাসড়ক ও আন্ত:জেলা সড়কে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। ৮. দূরপাল্লার সড়কে বাণিজ্যিকভাবে বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল চলাচল। ৯. মহাসড়কে স্বল্পগতির তিন চাকার যানবাহন চলাচল। ১০. তরুণ ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মোটরসাইকেল চালানো। ১১. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি ও সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারির অনিয়ম-দুর্নীতি। ১২. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। ১৩. সাধারণ মানুষের সচেতনতার ঘাটতি ও ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ধারণা না থাকা। ১৪. চালক ও পথচারিদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা। ১৫. প্রচলিত আইন প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শিথিলতা এবং ১৬. বিভিন্ন টার্মিনাল ও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন থেকে চাঁদাবাজি।
আরও পড়ুন: সড়কপথে ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে এসসিআরএফের ১২ সুপারিশ
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এ বছর ২০৯৭ জনের প্রাণহানি
বাংলাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১৯.২৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দুই হাজার তিনটি দুর্ঘটনায় দুই হাজার ৯৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১
রবিবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি নতুন প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
গত বছর প্রথম ১০ মাসে এক হাজার ৬৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক হাজার ৭৫৮ জন নিহত হয়েছে।
এটি বলেছে যে এই বছরের তুলনায় এই সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনার সংখ্যা ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৭৬৪ জন ছাত্র, যা মোট মৃত্যুর ৩৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং চার দশমিক ৩৮ শতাংশ মোটরসাইকেলের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত পথচারী।
আরও পড়ুন: বরগুনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ কিশোরের মৃত্যু
৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সড়ক নিরাপত্তা ফাউন্ডেশন এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
মোট দুর্ঘটনার মধ্যে ৩৭৪টি অন্য যানবাহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ৬২৯টি ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। ৯৫৮টি দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল অন্য যানবাহনের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে এবং ৪২টি অন্যান্যভাবে ঘটেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই হাজার তিনটি দুর্ঘটনার মধ্যে ৮৩৭টির ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল চালকরা ঘটনার জন্য দায়ী ছিল।
গ্রুপের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, আঞ্চলিক সড়কে ৮৭৯টি, জাতীয় সড়কে ৬৯৫টি এবং গ্রামের সড়কে ১০২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরএসএফ বিশ্লেষণ অনুসারে, দুর্ঘটনার ২৬ দশমিক ৮০ সকালে এবং ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ রাতে ঘটেছে।
আরও পড়ুন: সাভারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬ বছরের কিশোর নিহত
কারণ
আরএসএফ যুবক, কিশোরদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো, দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের সহজলভ্যতা, শিথিল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, নজরদারিতে অসঙ্গতি, সব যানের বেপরোয়া গতি, অদক্ষ চালক, মোটরসাইকেল চালকদের ট্রাফিক নিয়ম না মানার প্রবণতা, যুবকদের অতিরিক্তগতিতে গাড়ি চালানোর উৎসাহমূলক ভাষা বিজ্ঞাপনে ব্যবহারা করা। সড়ক ও মহাসড়কে ডিভাইডারের অভাব এবং বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর সংস্কৃতি তৈরিতে রাজনৈতিক মদদই দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
আরও পড়ুন: ঝিকরগাছায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
সুপারিশ
গ্রুপটি তাদের প্রতিবেদনে যুবকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে এবং দ্রুতগতির যানবাহনের বিক্রি নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে।
এতে ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ, মোটরসাইকেল ও কম গতির যানবাহনের জন্য মহাসড়কে সার্ভিস রোড নির্মাণ, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার স্থাপন, গতি নিরীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আরএসএফ সুপারিশ করে যে রাস্তাগুলোতে এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু বন্ধ করতে গণপরিবহনের উন্নতি এবং আরও সহজলভ্য করে মোটরসাইকেল চালানোকে নিরুৎসাহিত করা উচিত।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চবির শিক্ষক নিহত
সিউলে হ্যালোইন উৎসবে প্রাণহানিতে বিশ্ব নেতাদের শোক
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে অন্তত ১৫১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ব নেতারা শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শনিবার রাতে সিউলের ইটাউয়ন জেলায় হ্যালোউইন উৎসবের সময় একটি সরু গলিতে বিশাল জনসমাগমে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক এই দুর্ঘটনায় অন্তত ৮২ জন আহত হয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন নিহতদের পরিবারের প্রতি তাদের ‘গভীর সমবেদনা’ জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের জনগণের প্রতি শোক প্রকাশ করছি এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি’।
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই দুঃসময়ে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
একইভাবে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক টুইটারে সিউলের ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
সুনাক লিখেছেন,‘ এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি এবং সমস্ত দক্ষিণ কোরিয়ানদের প্রতি আমাদের সমবেদনা রইল।’
এছাড়া জাপান, ফ্রান্স, চীন ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের নেতা সিউলের ট্র্যাজেডিতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক টুইট বার্তায় বলেছেন,‘সিউলের ইটাওয়ানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত এবং গভীরভাবে শোকাহত।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো ফরাসি এবং কোরিয়ান উভয় ভাষায় টুইট করে সিউলের বাসিন্দাদের এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিউলে হ্যালোইন উৎসবে পদদলিত হয়ে নিহত অন্তত ১৫১
তিনি বলেছেন,‘ফ্রান্স আপনাদের সঙ্গে আছে’।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইটারে একই রকম অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের প্রতি তার ‘গভীর সমবেদনা’ প্রকাশ এবং আহতদের দ্রুত এবং পূর্ণ সুস্থতা কামনা করেছেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন।
এতে তিনি সিউলে পদদলিত হওয়ার দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
হংকংয়ের নেতা জন লি ফেসবুকে এক বিবৃতিতে সিউলের দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
লি বলেছেন,‘আমি নিহতদের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন যে ‘সিউলের মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সকলকে মর্মাহত করেছে।’
স্কোলজ এক টুইটে বলেছেন,‘অসংখ্য ভুক্তভোগী এবং তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য একটি দুঃখের দিন। জার্মানি তাদের পাশে রয়েছে।’
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন যে সিউলের মর্মান্তিক সংবাদে তার ‘হৃদয় ভেঙে গিয়েছে’।
বেয়ারবক বলেছেন,‘তারা একটি আনন্দময় হ্যালোইন উৎসবের রাত কাটাতে চেয়েছিল, কিন্তু পরিবর্তে ভয়াবহতা ও মৃত্যুর শিকার হতে হলো।’
সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট হালিমাহ ইয়াকব প্রাণহানির ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন যে ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবার, প্রিয়জন ও বন্ধুদের ট্রমা এবং শোকের অভিজ্ঞতা ‘কল্পনা করা কঠিন’।
তিনি বলেন,‘এই কঠিন সময়ে আমার সমবেদনা ও প্রার্থনা দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণের সঙ্গে রয়েছে। যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত এবং পূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি’।
আরও পড়ুন: বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঢাকা-সিউলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরির সুযোগ বাড়িয়েছে: রাষ্ট্রদূত
উন্নত ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-সিউল
সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় সড়কে ৪ জনের প্রাণহানি
কিছুতেই থামছে না সিলেটের সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে বিভাগের তিনটি সড়কে প্রাণ গেলো চার জনের।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের মাধবপুর উপজেলার রতনপুর নামক স্থানে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
মাধবপুর থানার উপপরিদর্শক(এসআই) রঞ্জন ভৌমিক বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই দিন বিকালে অজ্ঞাত নামা বৃদ্ধা মহাসড়ক পারাপারের সময় দ্রুতগামী ট্রাক চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৪০৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জনের প্রাণহানি: আরএসএফ
তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটের জকিগঞ্জে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী দুই তরুণের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে।
জকিগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক সড়কের জকিগঞ্জ মানিকপুর ইউপির কলাকুটা বাংলাবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন- জকিগঞ্জ উপজেলা সদর ইউপির সেনাপতিরচক গ্রামের ফয়জুল ইসলামের ছেলে ইমন আহমদ (২৪) এবং মানিকপুর ইউপির দেওয়ানচক গ্রামের আবদুল মানিকের ছেলে মুক্তার হোসেন (২৪)।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোরে ট্রাকসহ চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইমন ও মুক্তার মোটরসাইকেলযোগে মানিকপুরের দেওয়ানচকের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মানিকপুরের বাংলাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
এ সময় ট্রাকটি দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পরে ঘটনাস্থল থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় পুলিশ জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে ট্রাকের সন্ধান করতে থাকে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে সড়কে ৩৭৬ জনের প্রাণহানি: আরএসএফ
একপর্যায়ে জকিগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজার এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ ট্রাকসহ এর চালক ও সহকারীকে আটক করে।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের সুন্দ্রগাঁও পয়েন্টে কোম্পানীগঞ্জগামী একটি মাইক্রোবাস গাড়ির ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু হয়।
নিহত আজির উদ্দিন (৬৫) গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের সুন্দ্রগাঁও গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় সড়ক পার হচ্ছিলেন আজির উদ্দিন। এসময় বেপরোয়া একটি মাইক্রোবাস এসে তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
এতে ঘটনাস্থলেই আজিরের মৃত্যু হয়।
সিলেট অঞ্চলে ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনার ব্যাপারে ভুক্তভোগী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, সড়কে বিপজ্জনক বাঁক, রোড মার্কিংয়ের অভাব, ফিডার রোড (পার্শ্ব রাস্তা) এবং সড়কে সিএনজি অটোরিকশার দাপটে মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ার মূল কারণ।
এ চারটির পাশাপাশি ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে গাড়ি চালানো, অতিদ্রুত বা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, গতিসীমা অনুসরণ না করা, মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বা মালামাল বহন করা, রোড সাইন, মার্কিং ও ট্রাফিক সিগন্যাল সম্পর্কে ধারণা না থাকা বা ধারণা থাকলেও তা মেনে না চলা, ওভারটেক, সামনের গাড়ির সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় না রাখা, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চালানো, চালকের পরিবর্তে হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে গাড়ি চালানো, প্রয়োজনীয় বিশ্রাম না নিয়ে অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় একটানা গাড়ি চালানো, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, শিক্ষার স্বল্পতা, অপর্যাপ্ত ট্রেনিং ও অনভিজ্ঞতাও দুর্ঘটনার কারণ।
আরও পড়ুন: মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৯ জনের প্রাণহানি
ডেঙ্গু: একদিনে ৬ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৭৩৪
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৮৯ জন প্রাণ হারালেন।
এছাড়া এ সময়ে ৭৩৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে ৪৬৮ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ২৬৬ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: ৩১০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৮৮৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার ৯৯২ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৮৯৭ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৪ হাজার ৩২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৭ হাজার ৯২৪ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ছয় হাজার ৪০২ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ২১ হাজার ৩৪৮ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৫ হাজার ৮৮১ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি পাঁচ হাজার ৪৬৬ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ ৮ জনের মৃত্যু
ডেঙ্গু সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
ডেঙ্গুতে একদিনে ৪ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৬৭৭
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৪ জন প্রাণ হারালেন। এছাড়া এসময়ে ৬৭৭জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই হাজার ৪৯৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যেএক হাজার ৮২৬ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৬৬৭ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: আরও ৬৪ রোগী হাসপাতালে
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১১ অক্টোবর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২১ হাজার ৮৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১৬ হাজার ৩৪৭ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫২৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ১৯ হাজার ৩০৩ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১৪ হাজার ৪৮০ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি চার হাজার ৮২৩ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৮৫
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৯১