বাংলাদেশ
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য বৃদ্ধিতে পণ্য বহুমুখীকরণের উপর গুরুত্বারোপ
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে পণ্য বহুমুখীকরণের উপর জোর দিয়েছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া।
এই উদ্দেশ্যে ১১ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ অস্ট্রেলিয়া সফর করেন।
এ সময় সিনিয়র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগবিষয়ক কমিশনের উপনির্বাহী প্রধান ফিলিপ্পা কিং দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে পণ্য বহুমুখীকরণের উপর জোর দেন।
এসময় তপন কান্তি ঘোষ তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শিক্ষার বিষয় উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: আফ্রিকায় বাণিজ্যের বিরাট সম্ভাবনা দেখছে এফবিসিসিআই
অস্ট্রেলিয়ার উপনির্বাহী প্রধান উচ্চশিক্ষার বিকল্প মডেল হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্বদ্যিালয়ের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উপর জোর দেন।
বৈঠকে উচ্চশিক্ষা ছাড়াও কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রমে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা চাওয়া হয়। দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ যৌথভাবে বিনিয়োগসংক্রান্ত সেমিনার আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হয়।
সিনিয়র সচিব তার সফরে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রথম সহকারী সচিব গ্যারি কাওয়ান, অস্ট্রেলিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বাণিজ্যবিষয়ক প্রধান ক্রিস বার্নস এবং স্থানীয় বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া চেম্বারের সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
তপন কান্তি ঘোষ অস্ট্রেলিয়ার গ্যারি কাওয়ানের সঙ্গে বৈঠককালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরবর্তী সময়ে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা বাংলাদেশকে অব্যাহত রাখার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থন কামনা করেন।
এ সময় অস্ট্রেলিয়ার বাজারে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার আশ্বাসের প্রশংসা করেন বাণিজ্য সচিব।
আরও পড়ুন: রোজার আগেই ভারত থেকে আসতে পারে পেঁয়াজ-চিনি: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
এছাড়া আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় সভায় ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্টেকে পরবর্তী ধাপে উন্নয়নের জন্য করণীয় সম্পর্কিত আলোচনা হয়।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের আয়োজনে সিডনিতে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র সচিব।
সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া বক্তারা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
বর্তমানে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চার বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের অধিক। গত দশকে দু’দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ১১ শতাংশ।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিশীল এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: রমজানে সরবরাহ-দাম নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করার প্রস্তুতি চলছে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ শুরু
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) দেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে দেশে-বিদেশে হাইলাইট করার উদ্যোগ নিয়েছে। সে লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’- এর আয়োজন করেছে বিজিএমইএ।
বিজিএমইএর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সমৃদ্ধময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উদযাপন করার অভিপ্রায় নিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’ এর আয়োজন করা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের সংস্কৃতির ভান্ডার সংরক্ষণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে এগুলো তুলে ধরে দেশকে ব্র্যান্ডিং করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের সমৃদ্ধময় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে আমরা নিজেদের ব্র্যান্ডিং করতে পারি এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ফ্যাশনের সঙ্গে যুক্ত করে পোশাক রপ্তানির সুযোগ তৈরি করতে পারি, এভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারি। ঐতিহ্যবাহী পণ্য যেমন জামদানি, খাদি এবং বিভিন্ন তাঁতবস্ত্রকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফারুক হাসান সবাইকে দেশীয় পণ্য ব্যবহার করে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উদযাপনের আহবান জানান।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাকের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে এনবিআরকে অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ
তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গৌরবময় অবস্থানে উন্নীত করতে অবদান রাখি।
এর আগে একই দিনে, বিজিএমইএ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে, যেখানে ফারুক হাসান বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর বিভিন্ন দিকগুলো এবং উদ্দেশ্যসহ সাংস্কৃতিক উৎসবের একটি সার্বিক বর্ণনা দেন।
বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতি ও শত শত বছরের ঐতিহ্য, যেমন জামদানি, খাদি, মসলিন, গামছা, মনিপুরি তাঁতবস্ত্র, মৃৎশিল্প, (টেপা পুতুল, শখের হাড়ি, পোড়ামাটির পণ্য) হস্তশিল্প, নকশি কাঁথা, পাটজাত পণ্য, বেত, শীতলপাটি এবং ৬ষ্ঠ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কর্তৃক স্বীকৃত রিকশা পেন্টিং এবং আরও অনেক দেশীয় পণ্য তুলে ধরা।
এই ইভেন্টের বিশেষ দিগুলো হলো ফ্যাশন শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী এবং শিল্প ও কারুকাজ উপস্থাপন, যা বাংলাদেশকে অনন্য করে তুলেছে। পুরো উৎসব জুড়ে, দর্শকরা বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগ পাবেন।
উৎসবের একটি প্রধান আকর্ষণ হলো বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের নিচতলায় বিখ্যাত শিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে একটি চিত্র প্রদর্শনী, যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও অপার সৌন্দর্যকে তুলে ধরছে। উৎসবে মোট ৪০টি স্টল অংশগ্রহণ করছে, যেখানে বাংলাদেশের সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্যময় পণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে।
ইভেন্টে জামদানি, মসলিন, খাদি এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী কাপড় থেকে তৈরি উচ্চমানের পোশাকগুলো নিয়ে একটি মন্ত্রমুগ্ধ ফ্যাশন শোও রয়েছে। উৎসবে বাংলাদেশের লোকজ সঙ্গীত পরিবেশনাও থাকছে।
উৎসবে প্রথম দিনে নৃত্য পরিবেশন করেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ ও তার দল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি, বাংলাদেশে স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি অ্যাসিস বেনিতেস সালাস, প্রখ্যাত শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস এবং গুলশান হোসেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজিএমইএ এর পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক ব্যারিস্টার ভিদিয়া অমৃত খান এবং পরিচালক নীলা হোসনে আরা।
আরও পড়ুন: শীতে দরিদ্রদের দুর্ভোগ কমাতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির
বিজিএমইএ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্মিলিত পরিষদের উদ্যোগে পোশাক শিল্পের নারী উদ্যোক্তাদের ‘ওমেন'স নাইট’ অনুষ্ঠিত
চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে আগ্রহী ব্রিটিশ সরকার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা করতে আগ্রহ জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে ব্রিটিশ হাই কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) ম্যাট ক্যানেল এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকালে ব্রিটিশ হাই কমিশনার বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রসংশা করেন।
আরও পড়ুন: দেশে ওষুধের চাহিদার ৯৮ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এছাড়া করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশ থেকে ভালো করেছে বলে জানান তিনি।
ম্যাট ক্যানেল বলেন, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে সাত লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। এদিকে অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে মেডিকেলে পড়ালেখা করতেও যাচ্ছে।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট ক্যানেলের উদ্দেশে বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতেও ব্যাপক উন্নতি শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালেও বাংলাদেশে হাজার হাজার চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম স্থান এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বাংলাদেশে এখন দরকার চিকিৎসক, নার্সদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিটিশ হাই কমিশনারের কাছে চিকিৎসক ও নার্সদের উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের অনুরোধ জানান। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে তার সরকার বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার।
উভয় দেশের চিকিৎসক ও নার্সদের বেশি করে অঅিজ্ঞতা বিনিময়ের উপর জোর দেন তিনি। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স পাঠানোর কথাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভয়ভীতি মুক্ত ও নিরপেক্ষ থেকে মানুষের সেবায় কাজ করে যাব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে আরও প্রযুক্তিগত সহায়তা বৃদ্ধি ও কারিগরি প্রশিক্ষণের বিষয়েও তাদের আলোচনা হয়।
বাংলাদেশে যেখানে সেখানে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমানো নিয়ে আরও কাজ করতে হবে বলে জানান ব্রিটিশ হাই কমিশনার।
এ সময় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার কমাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ বাংলাদেশ হাতে নিয়েছে বলে ব্রিটিশ হাই কমিশনারকে আশ্বস্ত করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আগামী ১০ বছরে বিশ্বে কোভিডের মতো আবারও কোনো মহামারি চলে আসতে পারে উল্লেখ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গবেষণা আরও বাড়ানো যায় কি না সে ব্যাপারে ভাবার পরামর্শ দেন ব্রিটিশ হাই কমিশনার ম্যাট ক্যানেল।
উভয় দেশে ভ্যাকসিন সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানো, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ বিনিময় করা নিয়েও কথা বলেন তারা।
এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়া।
আরও পড়ুন: বাঙালির ঐতিহ্য-সংস্কৃতি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সিলিকন সিটি হচ্ছে চট্টগ্রাম: পলক
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের সিলিকন সিটি।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামে ‘পঞ্চম চট্টগ্রাম আইটি ফেয়ার ২০২৪’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই সময়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় যে সকল সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চান। বিনিয়োগের অর্ধেকই চট্টগ্রাম থেকে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধীরা ‘কর্মক্ষেত্রে বেশি মনোযোগী ও দায়িত্বশীল’: পলক
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইপিজেড, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, হাই টেক পার্কে যদি কোন ফ্রিল্যান্সার উদ্যোক্তা হতে পারে, তাহলে তারা অন্যদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে স্টার্ট আপ বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডেরে পক্ষ থেকে ৫ লাখ থেকে ৫ কোটি পর্যন্ত ইক্যুয়িটি ইনভেস্টমেন্টের সুযোগ থাকবে। এর সবকিছুই নির্ভর করছে রাইট সিলেকশন, রাইট মনিটরিং, রাইট সুপারভিশন ও ইনকিউবেশনের উপর।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কোন মেধাবী, উদ্ভাবনী তরুণ-তরুণী যদি উদ্যোক্তা হতে চায়, তাদের যত ধরনের সুযোগ লাগবে সেটা সরকার, একাডেমিক ও ইন্ডাস্ট্রি একসঙ্গে মিলে তৈরি করবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের আইসিটি খাত থেকে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হচ্ছে এবং ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
এ খাতে আগামী পাঁচ বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় এবং আরও নতুন ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ১৭ বছর সময় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: পলক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে তিনটি উপহার দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রথমত ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চুয়েটে ‘শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর’ সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ১০টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ও ২৫টি স্টার্ট আপ কোম্পানিকে ফ্রি স্পেস প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকল্পটি হলো চান্দগাও- এ শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার (৮ আইটি প্রকল্প) এবং তৃতীয়টি চান্দগাও এ নলেজ পার্ক (১২ আইটি প্রকল্প)।
এই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী পলক চান্দগাও এ শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার এর ৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা স্টার্ট-আপদের জন্য দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, যে সকল স্টার্ট-আপ জায়গা বরাদ্দ পাবে, তারা প্রথম ৬ মাস ফ্রিতে কাজ করার সুযোগ পাবে। পরে পারফরমেন্স মনিটরিং কমিটির মাধ্যমে যাচাইপূর্বক আরও ৬ মাস ফ্রিতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করে ডেনমার্ক-সৌদি আরব: নৌ প্রতিমন্ত্রী
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা নিরাপদ মনে করে পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করতে চায় ডেনমার্ক ও সৌদি আরব।
তিনি বলেন, দেশ বিক্রি করার চুক্তি আমরা কারও সঙ্গে করিনি, করবও না। ডিজিটাল সিস্টেমে মানুষের বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ব আমরা।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম বন্দরের সিপিএআর এবং ৪ নম্বর গেটে বসানো স্ক্যানার উদ্বোধন ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী দিনে নৌবাণিজ্যে মোংলা বন্দর নেতৃত্ব দিবে:নৌ প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী সব বন্দরে স্ক্যানার বসাতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার আন্তরিকতায় অনেক স্ক্যানার বসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বন্দরের সঙ্গে কাস্টমসের বোঝাপড়ার অভাব ছিল। কয়েক বছরের অনেক সমস্যা তিন চার বছরেই সমাধান হয়েছে-এটা বড় প্রাপ্তি। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে দুইটি ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার এটি।
তিনি বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা সীমিত সময়ে মুনাফা লাভের চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর হয়ে গেলে মেরিটাইম সেক্টরে আমরা অন্যরকম উচ্চতায় চলে যাব। বে-টার্মিনালে ১২ মিটার ড্রাফটের জাহজ আসবে। ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। এর জন্য অবকাঠামো দরকার। প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর করেছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর করেছেন। মেরিটাইম সেক্টরে আমরা সি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপান্তরিত বাংলাদেশের মহানায়কের নাম শেখ হাসিনা: নৌ প্রতিমন্ত্রী
গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চালুর চেষ্টা থাকবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী
কোকা-কোলা বাংলাদেশকে কিনে নিল তুরস্কের কোকা-কোলা আইসেক
দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে উপস্থিতি জোরদারে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যে কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস লিমিটেডকে (সিসিবিবি) অধিগ্রহণের চুক্তি সই করেছে তুরস্কের কোকা-কোলা ইসেক (সিসিআই)।
সিসিআইয়ের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সহায়ক সংস্থা সিসিআই ইন্টারন্যাশনাল হল্যান্ড বিভি (সিসিআইএইচবিভি) এবং কোকা-কোলা কোম্পানির (টিসিসিসি) একটি সহায়ক সংস্থার মধ্যে শেয়ার ক্রয় চুক্তি (এসপিএ) সই হয়।
আরও পড়ুন: সেমস-গ্লোবালের আয়োজনে ৩ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী চলছে
চুক্তিটি সিসিবিবির শতভাগ শেয়ার অধিগ্রহণের রূপরেখা দেয়, সিসিআইএইচবিভি প্রাথমিক সরাসরি শেয়ারহোল্ডার হিসাবে আবির্ভূত হয়।
সিসিবিবি বাংলাদেশে কোকা-কোলা কোম্পানির অধীনে ঝকঝকে এবং স্টিল উভয় ব্র্যান্ডের উৎপাদন, বিক্রয় এবং বিপণনের অন্যতম প্রধান পরিচালনাকারী হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চুক্তির শর্তানুযায়ী, সিসিআই ১৩০ মিলিয়ন ডলারের এন্টারপ্রাইজ মূল্য থেকে সমাপ্তির তারিখ হিসাবে সিসিবিবির আনুমানিক নিট আর্থিক ঋণ বিয়োগ করে নির্ধারিত ইক্যুইটি ভ্যালুতে (ইক্যুইটি ভ্যালু) সিসিবিবির সম্পূর্ণ শেয়ারহোল্ডিং অর্জন করতে চলেছে।
সমাপ্তির তারিখ হিসাবে সিসিবিবির সুনির্দিষ্ট নেট আর্থিক ঋণের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য একটি বিস্তৃত সমাপনী নিরীক্ষণের পরে একটি পরবর্তী সমাপনী মূল্য সমন্বয় প্রক্রিয়া কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: টানা তৃতীয় বারের মতো দেশের সর্বপ্রিয় ই-কমার্স ব্র্যান্ড খেতাব জিতল দারাজ
অধিগ্রহণটি সিসিআইএইচবিভির বিদ্যমান নগদ সংস্থানগুলোর মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এটি সিসিআইয়ের নেট লিভারেজের উপর একটি পরিমিত প্রভাব ফেলবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কেবল সিসিআইয়ের বিশ্বব্যাপী প্রভাবকে প্রসারিত করে না বরং উদীয়মান বাজারগুলোতে বৃদ্ধির সুযোগগুলোকে পুঁজি করার প্রতিশ্রুতিকেও জোরালো করে। অধিগ্রহণটি নিয়ন্ত্রক অনুমোদন এবং প্রথাগত বন্ধের শর্ত সাপেক্ষে এবং ভারতীয় উপমহাদেশের পানীয় শিল্পে একটি প্রধান পরিচালনাকারী হিসাবে সিসিআইয়ের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সিসিআইয়ের সিইও করিম ইয়াহি বলেন,‘আমরা সিসিবিবি অধিগ্রহণের জন্য শেয়ার ক্রয় চুক্তি সই করতে পেরে খুবই আনন্দিত, যা আমরা ভবিষ্যতের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনার সঙ্গে বাজারে প্রবেশের একটি দুর্দান্ত সুযোগ হিসাবে দেখি। এর মাধ্যমে সিসিআইয়ের মূল ক্ষমতা স্থাপন করে বৃদ্ধি এবং মান উৎপন্ন করা যেতে পারে। এই অধিগ্রহণটি সিসিআইয়ের জন্য আরও বৈচিত্র্যময় ভৌগলিক গুরুত্ব তৈরি করে এবং টিসিসিসির সঙ্গে এর প্রান্তিককরণকে দৃঢ় করে।
আরও পড়ুন: কোকাকোলা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নয়: হাইকোর্ট
বাংলাদেশ ধূমপানমুক্ত দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করুক: রেলপথমন্ত্রী
রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেছেন, বাংলাদেশ ধূমপানমুক্ত দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করুক।
তিনি বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে যে পরিমাণ কাজ করা হয়েছে এই কাজের ফসল হিসেবে ট্রেনে এখন ধূমপান কম হয়। ধূমপান আরও কমানো দরকার। আমাদের সুযোগ আছে এক্ষেত্রে কাজ করার।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রেল ভবনের সভা কক্ষে ধুমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে সম্মাননা পদক-২০২৩ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পুরো দেশ রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে: রেলপথমন্ত্রী
তিনি বলেন, ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ালে ট্রেনে ধূমপানের পরিমাণ কমে যাবে। রেলে বিপুল পরিমাণ যাত্রী যাতায়াত করে। এখানে অল্প জায়গায় অনেক লোক ভ্রমণ করে। ভ্রমণের সময় ধূমপান করলে জনগণের মধ্যে এর ক্ষতির প্রভাবটা বৃদ্ধি পাবে। তাই ট্রেনকে ধূমপান মুক্ত রাখা জরুরি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, এই ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
রেলমন্ত্রী বলেন, সাধারণ জনগণ এখন অনেক সচেতন। মানুষের মধ্যে ধূমপানের পরিমাণ কমে গেছে বলে আমার মনে হয়। এখন ধূমপানে ঝুঁকে পড়ছে শিক্ষিত লেখাপড়া জানা যুবকরা। তাদের সচেতন করা জরুরি।
আরও পড়ুন: রেলের উন্নয়নে আরব আমিরাতের সহযোগিতা চান রেলপথমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, প্রকল্পটি যথাযথভাবে হয়েছে বলে আমি মনে করি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে সচেতন করতে পারলে মানুষ যদি আন্তরিক হয়, তাহলে ক্ষতি কমবে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের মধ্যে যদি এর ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে প্রচার করে তাদেরকে সচেতন করা যায় তাহলে সাধারণ মানুষ অনেক জটিল রোগ থেকে বেঁচে যাবে, বিশেষ করে ক্যান্সার ও যক্ষ্মা সহ বিভিন্ন ধরণের রোগ।
আরও পড়ুন: রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করব: রেলপথমন্ত্রী
আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ৩৩০ জনকে ফেরত পাঠাল বাংলাদেশ
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যসহ ৩৩০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে জাহাজে তোলা সম্পন্ন শেষে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা দেয় তাদের জাহাজ।
এর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপির সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুইজন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার জবাবদিহি নিশ্চিত করুন: ফরটিফাই রাইটস
এদিকে, বৃহস্পতিবার হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ করে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনী জেটিঘাট থেকে তাদের জাহাজে তোলা শুরু করে। জেটি ঘাট থেকে প্রথমে বাংলাদেশের জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেসে তোলা হয়। সেই জাহাজে করে গভীর সমুদ্রে অবস্থানকারী মিয়ানমারের জাহাজে তোলা হয়। তার আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তায় বান্দরবান ঘুমধুম সীমান্ত ও কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তে আশ্রয়ে থাকা ৩৩০ জনকে ৬টি বাসে করে ইনানীস্থ নৌ বাহিনীর জেটিঘাটে আনা হয়।
হস্তান্তর শেষে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিককালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যসহ ৩৩০ জন মিয়ানমারের নাগরিককে বিজিপির কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। বাংলাদেশ মানবিক সেটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। অতিসম্প্রতি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এই সংঘর্ষের প্রভাব বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তেও এসে পড়ে।
সীমান্তে বিজিবির টহল ও জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান বিজিবি মহাপরিচালক।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা বাহিনীকে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল
তিনি আরও বলেন, সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে বিজিবি সীমান্তের পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি যাই হোক, সীমান্ত দিয়ে আর একজন মিয়ানমারের নাগরিককেও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
সীমান্তে স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে।
বাংলাদেশের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
বিজিপি সদস্যদের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম।
মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুলিশ কর্নেল মায়ো থুরা নাউংয়ের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিজিপি প্রতিনিধিদল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের ৩৩০ সদস্যের হস্তান্তর প্রক্রিয়া চলছে
আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে চায় বলে একটি বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে 'বাংলাদেশে জ্বালানি রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: একটি নাগরিক ইশতেহার' শীর্ষক সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি আমদানিতে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বাংলাদেশের: সিপিডি
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঘোষিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা কমানোর বিষয়টি রাখা হয়নি।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান, বিদ্যমান জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক জ্বালানি ব্যবস্থার অতি আধিপত্যের অবসান, জ্বালানি মিশ্রণ ও বহুমুখীকরণ এবং বিদ্যুৎ আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তা অনুপস্থিত।
সেমিনারে বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বুয়েটের কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন এবং প্রধান উপদেষ্টার সাবেক বিশেষ সহকারী ড. এম তামিম; সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী; কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের (ক্লিন)প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী ; অ্যাকশনএইডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ; ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ)লিড এনার্জি অ্যানালিস্ট শফিকুল আলম।
বক্তারা বলেন, সরকারকে অবশ্যই বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। অন্যথায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অব্যাহত লোকসান থেকে মুক্তি পাবে না।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল বলেন, দেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য অর্জনই আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
তিনি বলেন, ‘জনগণের দাবি বিদ্যুৎ পাওয়া। তারা আর বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা করতে চায় না এবং উৎপাদন খরচ দেখতে চায় না।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা নয়, সবার জন্য সামাজিক বিমা চালু করতে হবে: সিপিডি
তিনি আরও বলেন, কিছু ভুল থাকতে পারে, তবে আমরা সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে প্রধান বাধা হচ্ছে দেশে জমির স্বল্পতা।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে সামগ্রিক দৃষ্টিতে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার রাতারাতি বিদ্যুৎ রূপান্তরের জন্য তার পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারে না।
ড. তামিম বলেন, সরকার দিনের বেলা সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে সহজেই তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে পারে, তবে এ জাতীয় কোনও পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিকল্পনার আওতায় আগামী ২০ বছর ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু থাকবে।
শফিকুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানির ফলে দেশে ডলারের ঘাটতি বাড়ছে। আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে আমাদের দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে বলেও জানান তিনি।
অ্যাকশনএইডের আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বেসরকারি উৎপাদকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ৫২ হাজার কোটি টাকা, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু মালয়েশিয়া: পলক
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ভ্রাতৃপ্রতীম দুইটি দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক তুলে ধরে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের এক অকৃত্রিম বন্ধু।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় ডাকভবনের দপ্তরে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার হাজনা মো. হাসিম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: চবি সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাইয়ের বার্ষিক পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মতবিনিময় করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার কৃষ্টি, সংস্কৃতি প্রায় অভিন্ন হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ বৈদেশিক কর্মক্ষেত্র হিসেবে মালয়েশিয়ায় অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের দিকনির্দেশনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত লাভজনক জায়গা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বের কথাও তুলে ধরেন পলক।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৫তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতির এই সুযোগ কাজে লাগাতে মালয়েশিয়া ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কের জন্য মালয়েশিয়া অত্যন্ত গর্বিত।
এর আগে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ডাকভবনে ডাক অধিদপ্তরে ডাকঘরের স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট স্থাপন বিষয়ক আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্মার্ট ডাকঘর নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন।
পরে প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তর ও মধুমতি ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধীরা ‘কর্মক্ষেত্রে বেশি মনোযোগী ও দায়িত্বশীল’: পলক