নারী
ডেঙ্গুতে আরও ১৮ জন আক্রান্ত
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। তবে এই সময়ের মধ্যে আক্রান্ত হয়ে আরও ১৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩ জন রোগী।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এদের মধ্যে পুরুষ ১১ জন ও নারী ১১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৮০৭ জন।
এদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ১৩৮ জন ও নারী ৬৬৯ জন।
মৌলভীবাজারে আগুনে পুড়ে এক নারীর মৃত্যু
মৌলভীবাজারে বসতঘরে আগুন লেগে নূরজাহান বেগম নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছেন। এ সময় দুইটি গরু ও একটি ছাগল পুড়ে মারা যায়।
সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে রাজনগরে প্রবাসী মিন্টু মিয়ার বাড়ির কেয়ারটেকার ময়না মিয়ার বসত ঘরে ঘটনাটি ঘটে গতকাল
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই
নিহত নারী নূরজাহান বেগম ৬ সদস্যদের পরিবার নিয়ে প্রবাসীর বাড়িতে একটি টিনশেডের ঘরে থাকতেন।
স্থানীয়রা জানায়, ময়না মিয়ার পরিবারের সবাই সেহেরি খেয়ে ঘুমানোর পর বসতঘরে আগুন লাগে। এসময় প্রাণে বাঁচতে পরিবারের ছয় সদস্যের মধ্যে পাঁচজন বের হতে পারলেও নূরজাহান বের হতে পারেননি। তিনি ঘরের ভেতরেই দগ্ধ হয়ে মারা যান।
খবর পেয়ে রাজনগর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নূরজাহানের লাশ উদ্ধার করে। তবে কী কারণে আগুন লেগেছে তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস ছালেক বলেন, আগুন লাগার কারণ বের করতে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন: সৌদি থেকে ফিরে পরিবারের খোঁজে সরোয়ার
ঝিনাইদহে ইটভাটার ট্রাক্টর চাপায় কলেজশিক্ষক নিহত
নরসিংদীতে নিজ ঘর থেকে নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
নরসিংদীর পলাশে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার চরনগরদী এলাকায় নিজ ঘরের একটি খাটের উপর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত দেলোয়ারা বেগম মৃত মালেক দেওয়ানের স্ত্রী।
আরও পড়ুন: পাবনায় ২ ট্রেনের সংঘর্ষ, ৭ ঘণ্টা পর চলাচল শুরু
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার তার শোবার ঘরের বিছানায় গলাকাটা লাশ দেখতে পান প্রতিবেশীরা। পরে পুলিশে খবর দিলে পলাশ থানা পুলিশ এবং পিআইবি পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহতের সন্তানদের অভিযোগ, প্রতিবেশী হাবিল মিয়ার পরিবারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে তাদের। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলাও রয়েছে। তারাই এই ঘটনা ঘটনা ঘটাতে পারে।
পশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে নিজ ঘর থেকে নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
ভারত থেকে ৪ চালানে ১০০০ মেট্রিক টন আলু আমদানি
কক্সবাজারে নিজ ঘর থেকে নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
কক্সবাজার শহরে নিজ ঘর থেকে রিনা আক্তার নামে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: সিলেটে স্কুল শিক্ষিকা, গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার নিয়ে রহস্য!
রিনা আক্তার কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়া এলাকার আবু নাছের ওসমানির স্ত্রী।
যে বাড়িতে খুন হয়েছে সেটি তাদের নিজস্ব ভবন। তিনতলা বিশিষ্ট এই ভবনের দুইতলায় থাকেন তারা।
নিহতের স্বামী বলেন, তিনি তারাবি নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে ছিলেন। পরে বাড়িতে এসে দেখেন স্ত্রীর গলাকাটা লাশ খাটের উপর পড়ে রয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু বলেন, তারা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন বাড়ি লুট করার পর ওই নারীকে জবাই করে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
তিনি পুলিশকে প্রকৃত ঘটনা বের করার দাবী জানান।
এদিকে এই ঘটনায় নিহতের স্বামী আবু নাছের ওসমানিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
এছাড়াও বাড়ির কেয়ারটেকার এবং দুই তলার আরেকটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকা এক রোহিঙ্গা নারীকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, যে দা দিয়ে জবাই করা হয়েছে সেটি জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার করল পিবিআই
তুরস্কে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করল বাংলাদেশ সম্মিলিত দল
নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
একটি সুস্থ জীবনের জন্য দৈহিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই যত্নশীল হওয়া জরুরি। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আশেপাশের মানুষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা নারী ও পুরুষ দুজনের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই বিপজ্জনক। প্রচন্ড হতাশায় এমনকি আত্মহত্যা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে এই সমস্যা। ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই পরিস্থিতির নিত্যতার পাল্লা পুরুষদের দিকেই বেশি ভারী। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার আধিক্য থাকলেও নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি। এই সমস্যার শিকড় কোথায়, চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বজুড়ে নারী ও পুরুষের আত্মহত্যা
নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকলেও, সেটি পুরুষদের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায়। জেন্ডার প্যারাডক্স হিসেবে পরিচিত এই অসঙ্গতির জন্য বিশ্বজুড়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা নারীদের তুলনায় বেশি।
২০০৮ সালে আত্মাহুতির মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা ছিল নারীদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। ৭ বছর পর ২০১৫ সালেও আনুপাতিক হারটা প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল, যা ১ দশমিক ৭। পশ্চিমা দেশগুলোতে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুতে নারীদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা হরহামেশাই তিন থেকে চার গুণ বেশি থাকে। এই বৃহৎ পরিসরটি পরিলক্ষিত হয় ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
১৯৫০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের আত্মহত্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ২০১৯ সালে পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার নারীদের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি ছিল। ২০২১ সালে এই আনুপাতিক হার বেড়ে ৩ দশমিক ৯০- এ দাঁড়িয়েছে। মার্কিন জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশই পুরুষ, আর এই হিসাবে আত্মহত্যা জনিত কারণে পুরুষের মৃত্যুর হার দাঁড়ায় প্রায় ৮০ শতাংশ।
কিশোর এবং তরুণদের আত্মাহুতির হার অন্যান্য বয়সের তুলনায় কম। তবে আত্মঘাতী বিষয়টি এখনও মার্কিন তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
অন্যদিকে, আত্মহত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটে নারীদের মধ্যে বেশি, যা পুরুষদের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ। পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৩৩ গুণেরও বেশি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা। শিক্ষার্থীদের মাঝেও এমন প্রবণতা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ১ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
আশঙ্কাজনক আত্মহত্যার হারে পশ্চিম ইউরোপের একমাত্র দেশ হলো বেলজিয়াম। সেখানে প্রতি ১ লাখে আত্মহত্যা করে ১৮ দশমিক ৩ জন, যার মধ্যে প্রতি লাখে ২৪ দশমিক ৯ জন পুরুষ এবং ১১ দশমিক ৮ জন নারী।
২০১৯ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার ছিল আফ্রিকার দেশ লেসোথোতে। সেখানে প্রতি লাখে আত্মাহুতির রেকর্ড ছিল ৭২ দশমিক ৪ জনের, যাদের মধ্যে প্রতি লাখে পুরুষ সংখ্যা ১১৬ জন এবং নারী ৩০ দশমিক ১ জন।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০০০ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যায় পুরুষের মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। নারী-পুরুষ উভরে ক্ষেত্রে এই হার ২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত কমতে থাকে। অতঃপর ২০১৬ সাল পর্যন্ত কিছুটা ওঠা-নামার পর আবার বাড়তে শুরু করে। ২০১৯ সালে পুরুষ মৃত্যুহার ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা নারীদের ক্ষেত্রে ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক-এর অপপ্রয়োগ: কেন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না?
নাটোরে ট্রাকচাপায় নারীসহ নিহত ৩
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় ট্রাকচাপায় নারী ও অটোভ্যানের চালকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুকাশ ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
নিহতার হলেন- হুসনে আরা, ভ্যানচালক এমরান ও আব্দুল মোমিন। তাদের সবার বাড়ি একই উপজেলার বনকুড়াইল গ্রামে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, অটোভ্যানটি শুকাশ ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়কে ফিড কোম্পানির একটি ট্রাক পেছন থেকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে এক নারী ও অটোভ্যানের চালকসহ তিনজন নিহত হন।
ওসি আরও জানান, এ সময় স্থানীয়রা ট্রাকটি জব্দ করে ভাঙচুর করেন এবং একই প্রতিষ্ঠানের আরও তিনটি ট্রাক আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে লাশগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন আহত
লক্ষ্মীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত, আহত ২
নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার: সিমিন হোসেন
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি) বলেছেন, নারীদের দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে গতানুগতিক কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শনিবার (৯ মার্চ) সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
‘সাপোর্টিভ ইকোসিস্টেম ফর উইমেন এন্ট্রারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড প্রফেশনালস’ শীর্ষক সেমিনারটির আয়োজন করে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারীদের পেছনে ফেলে একটি দেশে সমউন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নারীদের প্রযুক্তিগত ও কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নে জোর দিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই ধারাবাহিকতায়, অপ্রচলিত খাত সমূহে নারীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাস ও উদ্যোক্তা তৈরিতে নারীদের কারিগরি, প্রযুক্তিগত এবং প্রশাসনিক দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দেন সেমিনারে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী নেতারা।
তারা বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে রাজধানীর পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই।
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, একজন নারীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পরিবারের উৎসাহ ও সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষদের অনুরোধ করি আপনার কন্যা, স্ত্রী কিংবা বোনকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে সহযোগিতা করুন। কারণ, নারীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের দিক থেকে বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম বলেও জানানো হয় সেমিনারে। তবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান যথাক্রমে ১২২, ১২৬ ও ১৩৯ তম।
এমন পরিস্থিতিতে, রাজনীতির পাশাপাশি অন্যান্য সূচকে নারীর অংশগ্রহণ ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে এফবিসিসিআই তার সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বস্ত করেন সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী।
সেমিনারে অংশ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) -এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আয়ের দিক থেকে নারী পুরুষের মধ্যে এখনও একটা বড় বৈষম্য রয়ে গেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে বিবেচনায় রেখে নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তিনি।
ব্যাংকিং খাতে প্রাথমিক স্তরে নারী নিয়োগ দ্বিগুণ হলেও পরিচালনায় এখনও পিছিয়ে
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকিং খাতে নারীদের কর্মসংস্থান বেড়েছে ১ হাজার ৪০৭টি।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে নারীদের কর্মসংস্থানের হার ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যেখানে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের মাত্র ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ সদস্য নারী।
লিঙ্গ সমতা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ৬১টি ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৩৪৬ জন, যা ব্যাংকগুলোর মোট কর্মীর ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালে তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৪৩টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ২২ হাজার ২৪৮ জন, যা মোট কর্মীর ১৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে নারী কর্মকর্তার অনুপাত সবচেয়ে বেশি। যা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বোর্ড সদস্য হিসেবে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এর মধ্যে বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বোর্ডে নারীদের অংশগ্রহণের হার ১৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিকভাবে মুক্তির মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে আলোচিত সময়ে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নারী সদস্য নেই।
২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে ব্যাংকগুলোর জমা দেওয়া প্রতিবেদন অনুসারে, নারী কর্মীদের অংশগ্রহণের হার চাকরির প্রাথমিক পর্যায়ে ১৭ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং মাঝারি পর্যায়ে ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ, উচ্চ পর্যায়ে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশের তুলনায় বেশি।
প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংকিং খাতে নারীর অংশগ্রহণ বেশি।
একই সঙ্গে ৩০ বছরের কম বয়সী নারী কর্মীদের অংশগ্রহণের হার ২০ দশমিক ৯৯ শতাংশ; যা তফসিলি ব্যাংকের তুলনায় এ হার দ্বিগুণেরও বেশি। তফসিলি ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশের বেশি।
২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থান ১২ ধাপ এগিয়েছে।
আরও পড়ুন: নারী দিবসে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সমাবেশ বানচালের অভিযোগ
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য বিবেচনায় ২০২২ সালের ৭১তম স্থান থেকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ৫৯তম।
সিডিপির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সাধারণত নারীর কর্মসংস্থান বাড়ছে এবং নারীর কর্মসংস্থানের অনুপাত কমার সঙ্গে সেই হিসাবের মিল নেই।
ব্যাংকিং খাতে নারীর কর্মসংস্থানের অনুপাত কেন কমছে তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যাংকিং খাতে নারীর কর্মসংস্থান বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রেই নারীদের অগ্রাধিকার দেয়। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সম্পৃক্ত নারীদের উৎসাহিত করে ঋণ বিতরণ ও সুদ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কাজ করে যাচ্ছে। নারী কর্মীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ ও ডে কেয়ারের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি সেক্টরে নারীদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করতে আগ্রহী: নসরুল হামিদ
অর্থনৈতিকভাবে মুক্তির মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
অর্থনৈতিকভাবে মুক্তির মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের মূল শক্তি তারা নিজেরাই।
শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে সাপাহার উপজেলা অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: অবৈধ মজুতদাররা দেশের শত্রু: খাদ্যমন্ত্রী
নারীদের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের মন্ত্রিপরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজন নারী রয়েছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে নয়জন নারী সচিব দায়িত্ব পালন করছেন। সংসদে স্পিকারের দায়িত্বও পালন করছেন একজন নারী।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের দেশে নারীর সংখ্যা অর্ধেক নয় বরং অর্ধেকেরও বেশি। ভোটার তালিকা দেখলে সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়।
তিনি বলেন, নারীরা তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে নারীদের অগ্রযাত্রার পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু কিছু অশুভ শক্তি নারীদের পিছিয়ে দিতে চায়।
অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শামিল হতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী।
সাপাহারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন- সাপাহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহজাহান হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামসুল আলম শাহ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রেজা সারোয়ার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশিদ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস সরকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আমেনা বেগম।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে কৃষকদের ওপর প্রভাব পড়বে না: খাদ্যমন্ত্রী
রমজানে ৫০ লাখ পরিবারকে দেড় লাখ টন চাল দেওয়া হবে: খাদ্যমন্ত্রী
কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নয়: জবি ভিসি
কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদা বাড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন সাদেকা হালিম।
জবি উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে নারীদের কথা বলার জায়গাটা তৈরি করে দিতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গাগুলোতে নারীদের নিয়ে আসতে হবে।’
জেন্ডার ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নারী পরিচয়ের আগে আমার বড় পরিচয় হলো আমি একজন মানুষ। নারী-পুরুষের মধ্যে যে ভেদাভেদ তৈরি, নারীকে হেয় করা, শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষের থেকে দুর্বল মনে করা হচ্ছে এবং এ কারণে নারীকে অধস্তন করে রাখতে হবে, এটা সম্পূর্ণ অমূলক।’
আরও পড়ুন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি অধ্যাপক সাদেকা হালিম
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের মূল্যায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এমন হয়েছে, যে সমাজে নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা হয়। যদিও বাংলাদেশের সংবিধানের নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু বাস্তবে কোনো দেশই খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে নারীকে পুরুষের সমান ভাবা হয়।’
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, ‘সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রেই নারীত্ব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সেটা পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন, ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্র, এমনকি ধর্মীয়ভাবেও। পৃথিবীতে এমন কোনো ধর্ম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীকে সমান অধিকার দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি নারীর সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয় নিয়েও রাজনীতি করা হয়। সন্তান জন্মের পর পরই সন্তানের অধিকার কীভাবে হবে সেটা আমরা ধর্মীয়ভাবে নির্ধারণ করি। বাবা ও মায়ের অধিকার কতটুকু, আমাদের সিভিল ল’তে কতটুকু, শরিয়া ল’তে কতটুকু, এসব বিষয় অনেকটাই পুরুষকেন্দ্রিক। পুরুষকে সব সময় প্রাধান্য দেওয়া হয়। পুরুষরাই এ সমাজের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে।’
এ উপমহাদেশে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে ড. সাদেকা উল্লেখ করেন, ‘ভারত উপমহাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন যে এখন হয়েছে, তা নয়। অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশে নারীরা কিন্তু ইউরোপের নারীদের আগেই ভোটাধিকার পেয়েছিল। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় নারীরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছে, রানি হয়েছে, ট্যাক্স সংগ্রহ করেছে। আধুনিক রাষ্ট্রে পুঁজিবাদের বিস্তার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নারীদের কাজের পরিধি বেড়েছে, কিন্তু নারীদের পণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার কাজ কে কাজ হিসেবে আমরা দেখিনি। নারীরা স্ত্রী, মা বা মেয়ে হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে সেটিকেও অবমূল্যায়ন করা হয়।’
আরও পড়ুন: রাইড-শেয়ারিংয়ে বাড়ছে ঢাকার কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো নারী চাকরি করলেও তাকে আমরা প্রশ্ন করি তার স্বামী কী করে। সে যদি স্বামীর থেকে বেশি বেতন পায়, তাহলে পুরুষও হীনমন্যতায় ভুগে।’
সমাজের সাধারণ নারীদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তো নারীদের অনেকেরই হয়েছে। গার্মেন্টস সেক্টর, চিংড়ি মাছের ঘের, কল-কারখানায় নারীরা কাজ করছে। এটি ভারত বা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু নারীর সামাজিক মর্যাদা কি বেড়েছে? এটা খুবই জটিল একটা বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চরম দারিদ্র্যের শিকার নারীরা কোনো কিছু ভাবে না। তারা জানে তাদেরই কাজ করতে হবে, ক্ষুধা মেটাতে হবে, তারাই শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। সাধারণ নারীরা অনেক পরিশ্রমী, সামাজিক সমালোচনা গ্রাহ্য না করে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।’
নারীর সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নারীর নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে পারিনি। বাংলাদেশে বা প্রবাসে যে পরিমাণ নারী কাজ করে সেখানেও আমরা দেখি যে নারীরা নিরাপদ না। খুব নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার হয়।’
তবে নারী সমাজের পরিবর্তনের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, এবং এবারকার কেবিনেটে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নারী মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়ে আসছেন। এটা ইতিবাচক দিক। সংখ্যার দিক থেকে নারীর অংশ গ্রহণ অনেক বেশি, কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন বা সামাজিক মর্যাদার জায়গায় গুণগত মানের দিক থেকে কতটা বদলেছে সেটি বড় বিষয়। যখন নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে আসবে, নেতৃত্ব দেবে, সমাজ কিন্তু তখনই বদলাবে।’
আরও পড়ুন: দুর্যোগের সময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদ বোধ করেন না প্রায় ৬৭ শতাংশ নারী