প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
‘জীবনেও ভাবি নাই, পাক্কা ঘরে থাকবার পামু’
জীবনেও ভাবি নাই, পাক্কা ঘরে থাকবার পামু। আর আইজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘরও পাইলাম, তার সাথে কথাও কইলাম। এই আনন্দ কয়ে বোঝানো যাইবো না।
জমিসহ নতুন ঘর পাওয়ার পর ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে পেরে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন শেরপুরের তাসলিমা খাতুন (৩০)।
রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানে শেরপুরে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদিগ্রাম গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এলাকার সাথে সরাসরি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপকারভোগীদের সাথে কথা বলতে চাইলে তার সাথে কথা বলেন তাসলিমা খাতুন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমি স্বামী পরিত্যক্তা। আমার কোন ঘর-বাড়ি আছিল না। বাপের বাড়িতেই আছিলাম। এহন আমারে আপনি একটা ঘর উপহার দিছেন। সেই ঘর পাইয়া অনেক ধন্য হইছি। জমি দিছেন। ঘরে বিদ্যুৎ পাইছি। আরও অনেক সুবিধা পাইছি। তার জন্য অনেক খুশি’।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলো শেরপুরে ১৬৭ গৃহহীন পরিবার
তাসলিমা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এরকম ঘরে থাকতে পারমু কহনো ভাবতে পারি নাই। মাথার ওপর ছাদ ছিলো না। এখন নিজের জমি হইছে, নিজের ঘরে শান্তিতে থাকতে পারমু। আল্লার কাছে দোয়া করি, যেন আল্লায় আপনারে ভালো করে’। এ সময় তাছলিমা প্রধানমন্ত্রীকে হলদিগ্রাম গুচ্ছগ্রামে বেড়াতে আসার আমন্ত্রণ জানান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে গৃহহীনের অভাব ঘুচবে ১৫৭২ পরিবারের
জমি সহ ঘর পেয়ে দারুণ উচ্ছসিত হলদিগ্রাম গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা। উচ্ছাস যেন কমছে না ষাটোর্ধ্ব দিনমজুর লাল মিয়া ও তার স্ত্রী রেজিয়া খাতুনের। লাল মিয়া জানান, জন্মের কয়েক বছর পরেই বাবা-মা হারান। অন্যের বাড়িতে থেকে বড় হয়েছেন। বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন দীর্ঘ দিন। পরে শ্যালকের (বউয়ের ছোট ভাই) অত্যাচারে সেই বাড়ি ছেড়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পাখির মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন। বুড়ো বয়সে এসে নিজের নামে তিনিই কিনা পেলেন জমির দলিল ও ঘরের কাগজ। শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার শালচূড়া গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া ও তার স্ত্রী রেজিয়া খাতুন নতুন পাওয়া ঘর ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে জানালেন, আধা পাকা ঘরটি তাদের খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে রান্নাঘর। টয়লেটের ব্যবস্থাও ভালো। বিদ্যুৎ আছে। পানি আছে। পরিবার নিয়ে এখন খুব ভালোভাবে থাকতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার গৃহহীনদের জন্য ঘর
ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের হলদীগ্রাম আশ্রয়কেন্দ্রে ২৫টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়া হয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি উপকারভোগীদের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেন। পরে হলদীগ্রাম আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে প্রকল্প সম্পর্কে অবহিত করেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ। এসময় উপস্থিত ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ, জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, পুলিশ সুপার মো. হাসান নাহিদ চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক এটিএম জিয়াউল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধীবৃন্দ।
হলদীগ্রাম আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ৩ একর ১৩ শতক আয়তনের এ জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ১৫টি পরিবার আছে। নতুন করে যুক্ত হলো আরও ২৫টি পরিবার। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘর প্রদান উপলক্ষে সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নতুন নির্মিত ঘরগুলোর উদ্বোধন উপলক্ষে ঘরের দরজার সামনে লাগানো হয়েছে নামফলক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকারভোগীদের দেওয়া হয়েছে নতুন জামা-কাপড়। সবমিলিয়ে নিজের নামে জমির দলিল ও জমির ওপর সেমি পাকা ঘর পেয়ে ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের বন্যা।
জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে শেরপুর জেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৬৭টি গৃহহীন পরিবারকে জমি সহ ঘর দেওয়া হয়েছে। তন্মধ্যে সদর উপজেলায় ৩০টি, নকলায় ৪২টি, নালিতাবাড়ীতে ৫০টি, শ্রীবরদীতে ২০টি ও ঝিনাইগাতীতে ২৫টি ঘর রয়েছে। এগুলো প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, রিকশাচালক, দিনমজুর, বিধবা, কাজের মহিলাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। ঘর নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
এয়ার মার্শালের র্যাংক ব্যাজে সজ্জিত বিমান বাহিনী প্রধান
নবনিযুক্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান শেখ আবদুল হান্নানকে রবিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এয়ার মার্শালের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হয়েছে।
র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং সহকারী চিফ অব নেভাল স্টাফ (অপারেশন) রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ।
আরও পড়ুন: টিকা আনতে চীন যাচ্ছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২ বিমান
এসময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নবনিযুক্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ হওয়া সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তার সরকারি কার্যক্রম শুরু করেন।
বিমান বাহিনীর সদর দপ্তরে পৌঁছালে বিমান বাহিনীর প্রধানকে বিএএফ কন্টিনজেন্ট দ্বারা গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে পথ হারানো ৪ তরুণকে উদ্ধার করল বিমান বাহিনী
তিনি গার্ড পরিদর্শন করেন এবং সালাম নেন। পরে তিনি সদর দপ্তরের চত্বরে একটি চারা রোপণ করেন।
এয়ার মার্শাল শেখ হান্নান ১২ জুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিবের বন্ধু: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গরিবের বন্ধু উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তিনি এ বছর সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন যা বাজেটের প্রায় ১৭.৪ শতাংশ।
গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বেচ্ছাধীন তহবিল হতে তার নির্বাচনী এলাকা সিলেটে উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
এসময় ১০ হাজার টাকা করে ৩৫ জনের মাঝে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। ইতোপূর্বে এ বছর ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, গত ২ বছরে ২০ লাখ টাকা এ তহবিল থেকে বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল সম্পর্কে বাংলাদেশের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, সিলেটে জমিহীন, গৃহহীনদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। যারা এখনও পাননি তাদেরকে পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং ভিজিএফ কার্ডের সুবিধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় শুরু হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ৫ হাজার টাকা দিয়ে শুরু হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখন প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে প্রতি মাসে ২০ হাজার করে টাকা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: টিকা পেতে কয়েকটি দেশের সাথে আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. মোমেন বলেন, করোনার মধ্যেও আমাদের স্থানীয় বাজার যথেষ্ট চাঙ্গা রয়েছে। প্রতিবেশী দেশের তুলনায় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এভাবে এগিয়ে গেলে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’, - একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে ৫ মিলিয়ন টিকা কিনতে আগ্রহী বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারকে তৃতীয় বার নির্বাচিত করায় আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে পেরেছি। এছাড়া উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি।
কোভিড-১৯: প্রতি মাসে ২৫ লাখ লোককে টিকা দেবে সরকার
দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সরকার প্রতি মাসে ২৫ লাখ লোককে টিকা দেবে।
বৃহস্পতিবার সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের সময় তিনি এই ঘোষণা দেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে ৮০ শতাংশ লোককে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের টিকা দেয়া হবে এবং প্রতি মাসে ২৫ লাখ টিকা দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী
সরকার সবার জন্য বিনামূল্যে টিকা দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রসঙ্গে কামাল বলেন, ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয় ডোজ সংগ্রহের জন্য যা ব্যয় হবে সেই তহবিল বরাদ্দ করব। বাজেটে এই লক্ষ্যে আমরা পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখব।
তিনি বলেন, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) এবং কমিউনিকেশন ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করা হচ্ছে।
কামাল বলেন, কোভিড-১৯ থেকে মানুষের জীবন রক্ষার জন্য ইপিআইয়ের আওতায় জাতীয় স্থাপনা ও টিকাদান পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়ার সরকার, আমেরিকা থেকে ফাইজার কোম্পানি, ফ্রান্স থেকে সানোফি এবং বেলজিয়াম থেকে জিএসকে ভ্যাকসিন ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। চীন থেকে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন এবং রাশিয়া থেকে স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশেই এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করা হবে।
এদিকে, অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশে পৌঁছেছে। ভারত ও চীন সরকার উপহার হিসাবে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের যথাক্রমে ৩২ লাখ ডোজ এবং ৫ লাখ ডোজ দিয়েছে বাংলাদেশকে।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা পেতে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং টিকা প্রদান কার্যক্রম সহায়তার জন্য ১৪.৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য এডিবি'র সাথে ৯৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। পাশাপাশি, ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক এবং এআইআইবির কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সাহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যকে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে চায় ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু সমস্যা ও ঝুঁকি মোকাবিলায় যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ। পুরো বিশ্বজুড়ে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর চাহিদা ও প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য বিশেষ অবদান রাখবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
সিওপি২৬ প্রধান অলোক শর্মা বুধবার ঢাকা পৌঁছে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তাদের বৈঠকের ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
তিনি জানান, তারা বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তন, এর বৈশ্বিক প্রভাব, জলবায়ু সমস্যা নিরসন, কোভিড-১৯ সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরিমিত কার্বন নির্গমনসহ নানা কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
তিনি জানান, জ্বালানির চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করছে এবং দেশে বর্তমানে ৫৮ লাখ সোলার পাওয়ারের গ্রাহক রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিওপি২৬ সভাপতি অলোক শর্মা ২ দিনের সফরে ঢাকায়
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত: জাতিসংঘ
এছাড়া সরকারের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে।
এসময় সিওপি২৬ সভাপতি অলোক শর্মা আগামী নভেম্বরে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সিওপি-২৬ গ্লাসগো সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান।
জলবায়ু সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ বেশ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আশাব্যক্ত করেন সিওপি২৬ সভাপতি।
স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন দিতে পারবে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
কোনো এলাকায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতি হলে জেলা প্রশাসন লকডাউন দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, চেয়ারম্যান ও মেয়রদের ইতোমধ্যে বলা হয়েছে যে তারা যদি মনে করেন যে কোন এলাকার করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে বা যেতে পারে সেক্ষেত্রে তারা সেই এলাকায় লকডাউন দিতে পারবে।
আরও পড়ুন:এবার ৬ জুন পর্যন্ত বাড়ল লকডাউন
তিনি বলেন, মাঠ প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা অন্যান্য জেলা প্রশাসনকেও জানিয়ে দিয়েছি যে তারা যদি প্রয়োজন মনে করেন তবে তারা তাদের এলাকায় লকডাউন দিতে পারবেন। এমনকি পুরো জেলাতে লকডাউন না দিয়ে শুধুমাত্র সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে লকডাউন দিতে পারবে তারা।
আরও পড়ুন: এবার ‘লকডাউন’ বাড়লো ৩০ মে পর্যন্ত
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেনারেলের পরামর্শে সাতটি সীমান্তবর্তী জেলাকে লকডাউনের আওতায় আনার প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল ইসলাম এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭ দিনের লকডাউন শুরু
বাংলাদেশ সচিবালয়ের অন্যান্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের সাথে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলন: সবুজ ভবিষ্যত গড়তে ঐক্যের আহ্বান শেখ হাসিনার
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আরও সবুজ ভবিষ্যত বিনির্মাণে গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড গ্লোবাল গোলস ২০৩০ (পিফোরজি) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতাদের ঐক্য বাড়িয়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার বিকালে পিফোরজির সিউল সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় এ বিষয়ে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
২০২১ পিফোরজির সিউল সম্মেলনে রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, পিফোরজির মনোযোগের পাঁচটি ক্ষেত্রে (খাদ্য, পানি, জ্বালানি, নগর, চক্রাকার অর্থনীতি) বিনিয়োগকারী, নীতি নির্ধারক ও সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা এবং এসব ক্ষেত্রে সর্বোত্তম অনুশীলন বিনিময় করে কর্মমুখী আবেদনের ভিত্তিতে আরও প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর ‘ডাক ভবন’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এই দশককে আরও উন্নত ও সবুজতর গড়ার লক্ষ্যে 'ইনক্লুসিভ গ্রিন রিকভারি টুওয়ার্ডস কার্বন নিউট্রালিটি' প্রতিপাদ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিফোরজির দু দিনব্যাপী এ সম্মেলন।
প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে সবুজ প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্বের লক্ষ্য ২০৩০ অর্জনের পাশাপাশি পুরো-সমাজ-পদ্ধতির আবেদনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সমস্যা নিরসনে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতাদের তথা আমাদের, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সবুজ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করা দরকার।’
বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে নিজেদের সম্পদ দিয়ে জয়বায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। বাংলাদেশ পিফোরজি এর সদস্য হিসেবে কম কার্বন নিঃসরণের পথ অনুসরণ করে।
পিফোরজি এর কাজের ক্ষেত্রে পানি বাংলাদেশের অন্যতম মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ নামে একটি ১০০ বছরের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি যা পানির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণের উপর জোর দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তরুণদের মাছ চাষের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রতি বছর আমরা জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমন ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করি, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সোলার এনার্জি অ্যাকশন প্ল্যান ২০২১-২০৪১-এর আওতায় ৪০ গিগা ওয়াট পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্বেও সবুজ পুনরুদ্ধার এবং সবুজ বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের আরও ভালো করে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০১৭ সালে পিফোরজি নামে এই বৈশ্বিক উদ্যোগ শুরু হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খছিয়াং, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডেন, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শওকত মির্জা ওয়েব এবং চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ানসহ বিশ্বের অন্যান্য নেতারা সম্মেলনের ভার্চুয়াল লিডারস অধিবেশনে বক্তব্য দেন।
দেশের উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল: সজীব ওয়াজেদ
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীর অপরিসীম শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নকে বেগবান করেছে তা জাতিসংঘে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে চলমান পঞ্চম এলডিসি সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কমিটির সভার দ্বিতীয় দিনে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জন এবং বহুমাত্রিক বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো’ শীর্ষক এক থিমেটিক আলোচনায় মূল বক্তা হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্যে এসকল কথা তুলে ধরেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকার গৃহীত দূরদর্শী পদক্ষেপ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’- এর সাফল্য তুলে ধরে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ বলেন, ‘উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ বা রোল মডেল।’ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের জিডিপি শুধু ভারত বা পাকিস্তানকেই নয়, চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে কোভিড-১৯ মহামারির লকডাউনকালীন বাংলাদেশ দ্রুতই অনলাইন সরকার ব্যবস্থাপনা, অনলাইন শিক্ষা ও অনলাইন কর্মপরিবেশে নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে কি করবেন?
একযুগ পূর্বের উদাহরণ টেনে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘সেসময় বাংলাদেশে ব্রডব্যান্ডের ব্যবহার ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ০.৩ ভাগ। আজ ১২ বছর পরে দেশের ১১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ সুলভ ব্রডব্যান্ডের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে যা দেশের জনসংখ্যার ৭০ভাগ।
এই খাতে সাফল্যের পিছনে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ব্যাপক বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বিনিয়োগ কাজ করেছে মর্মে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “সরকার তথ্য-প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনির্মাণে বিগত কয়েক বছরে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব-ভিত্তিক বিনিয়োগের মাধ্যমে ৩০ হাজার কিলোমিটার ফাইবার অপটিক ক্যাবল সারাদেশে স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ৯০ভাগ এলাকা ফোর-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে; আমরা ফাইভ-জি চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছি”। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ স্থাপন করেছে মর্মে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরফলে দেশের দূর্গম এলাকাসমূহ ও দীপাঞ্চল নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে।
তিনি দেশব্যাপী ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন, ডিজিটাল সেন্টার পরিচালনায় নারী সহ ব্যাপক উদ্যোক্তা সৃষ্টি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয় পত্রে প্রণয়নের মাধ্যমে ব্যাপক তথ্য-ব্যাংক সৃষ্টি, মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাতা পরিশোধ, ই-সরকার, ই-নথি, ই-জুডিশিয়ারি, টেলি ও অনলাইন স্বাস্থ্য সেবা, সরকারি দপ্তরসমূহের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা, জাতীয় হটলাইন স্থাপনসহ বাংলাদেশে নাগরিক জীবনধারার প্রতিটি স্তরে তথ্য-প্রযুক্তি সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২: মোস্তাফা জব্বার
অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলাদেশের জনগণের সহজলভ্য প্রবেশাধিকারসহ এখাতে দেশের সামগ্রিক অর্জন ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্য আইসিটি উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। সমৃদ্ধ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ ও দেশের অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতে ইন্টারনেট সংযোগ, ই-গভর্ণনেন্স, ই-বিজিনেজ এর ব্যাপক প্রসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন।
জাতিসংঘ পঞ্চম এলডিসি সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কমিটির সভা গত ২৪ মে শুরু হয়েছে যা আগামী ২৮ মে শেষ হবে।
নান্দনিক ডাক ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
ডাক অধিদপ্তরের নবনির্মিত সদর দপ্তর নান্দনিক ডাক ভবন টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ভবনটি উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার আগারগাঁওয়ে ডাক ভবন প্রান্তে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল সম্পর্কে বাংলাদেশের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর অধীন দপ্তর ও সংস্থা সমূহের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য বিধি মেনে আগারগাঁও প্রান্ত থেকে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে সতর্ক থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ৯১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিন্দন এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ২টি বেইজমেন্টসহ ১৪ তলা ভবন নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের সদরদপ্তর শীর্ষক প্রকল্পটি গত ২০ মার্চ ২০১৮ একনেকে অনুমোদিত হয়।
আরও পড়ুন: উন্নয়নশীল বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী বললেন, সংগ্রামের মাধ্যমে এই সম্মান এসেছে
নবনির্মিত ডাক ভবনটিতে সুসজ্জিত ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আধুনিক পোস্টাল মিউজিয়াম, সুপরিসর অডিটরিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, মেডিকেল সুবিধা, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এবং সার্বক্ষণিক ওয়াইফাইসহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তিগত সুবিধা রাখা হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার এ বিষয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর তারিখে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তৎকালীন ঢাকা জিপিও ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে ডাক অধিদপ্তরের যাত্রা শুরু হয়। তীব্র স্থান সংকটের মধ্যে স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি ঢাকার গুলিস্তানে অবস্থিত ঢাকা জিপিও ভবন এর তৃতীয় তলায় ডাক অধিদপ্তরের প্রশাসনিক সদর দপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ঢাকা জিপিও প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো হয়ে যাওয়ায় ভবনটির উর্ধমুখী সম্প্রসারণ সম্ভব নয়। ফলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় দাপ্তরিক কর্মপরিবেশ ও গতিশীলতা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছিল। এ অবস্থায় ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর হিসেবে একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ও নান্দনিক স্বতন্ত্র ডাক ভবন স্থাপন করা ছিল একান্ত জরুরী।
তিনি আরও বলেন, এ সংকট নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর অসামান্য আন্তরিকতায় বর্তমান সরকার তার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় উন্নত কর্মপরিবেশ ও প্রশাসনিক কাজে উদ্যম ও গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর হিসেবে একটি স্বতন্ত্র ভবন স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
তিনি এই অনন্য ভবনটি নির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ডাক ভবন উদ্বোধনে ডাক অধিদপ্তরের জন্য ঐতিকহাসিক এই ক্ষণটি স্মরণীয় রাখতে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহ্স্পতিবার স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে সতর্ক থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন ‘আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আসছে, এটি এখন বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।’
রবিবার সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২২৫টি স্থাপনার উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইতিহাস নিয়ে নতুন প্রজন্মের আগ্রহে প্রধানমন্ত্রীর সন্তুষ্টি প্রকাশ
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়নশীল বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী বললেন, সংগ্রামের মাধ্যমে এই সম্মান এসেছে
এ সময় তিনি দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম-কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র ও পাঁচটি মুজিব কিল্লার উদ্বোধন করেন।
একইসাথে সারাদেশে ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের এই দুর্যোগ প্রশমন করতে আমরা ইতোমধ্যে যথেষ্ট সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইনশাল্লাহ আমরা সতর্ক থাকব এবং ঝুঁকি হ্রাস করতে পারব।’
আরও পড়ুন: সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ বিশ্বে প্রশংসিত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তর আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্যে নিম্নচাপটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরের সবচেয়ে কাছে রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ঝড়টি সম্ভবত উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলে পৌঁছাবে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশে আঘাত হানলে উপকূলীয় মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য ও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য যা প্রয়োজন তার চেয়ে তিনগুণ বেশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। তাছাড়া, বাংলাদেশে মাঝে মাঝে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগও আসে। সব মোকাবিলা করেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা এগিয়ে যাব।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রতিটি দুর্যোগের সময় বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করতে অসংখ্য পদক্ষেপ নিয়েছে এবং যে কোনও সম্ভাব্য প্রাণহানি রোধে জোর দিয়েছে।
বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় মানুষ তাদের বাড়ির কাছে খেজুর গাছ লাগাত যা তাদেরকে প্রাকৃতিকভাবে বজ্রপাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করত। এখনকার মানুষ তা ভুলে গিয়েছে। এখন আবার তাল গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তা ফিরে এসেছে।’
তিনি বলেন, সরকার যে কোনও দুর্যোগ থেকে মানুষকে বাঁচাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে।
ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ থেকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ গ্রহণ করেছে সরকার।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের একটি ভিডিও প্রদর্শিত হয়েছিল।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মহসিন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য দেন।