শ্রমিক
নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ক্রোনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারীরা।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে কারখানার সামনে তারা এই বিক্ষোভ করেন।
আরও পড়ুন: ভারতে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা রোধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
আন্দোলনরতদের মধ্যে শ্রমিকদের ২ মাস এবং স্টাফদের ৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।
এদিকে বিক্ষোভে ক্রোনী অ্যাপারেলস কারখানার প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক ও স্টাফরা কর্মবিরতি পালন করেন।
এ সময় প্রায় ৩ ঘণ্টা কারখানার সামনে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (ইনটেলিজেন্স) সেলিম বাদশা জানান, স্টাফদের বেতন পরিশোধের দাবিতে তারা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছিল। তবে সড়ক অবরোধ করেনি।
তিনি আরও জানান, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আগেই তাদের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মালিকপক্ষ জানিয়েছে চলতি সপ্তাহেই তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে।
আরও পড়ুন: ফাইরুজের আত্মহত্যার ঘটনায় জবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী সাময়িক বরখাস্ত
সাঁওতাল হত্যার প্রতিবাদ: ৭ দফা দাবি আদায়ে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ
২০ ঘণ্টা পর মিলল ভৈরব নদে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকের লাশ
যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভৈরব নদে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিক কাইয়ুম হোসেনের লাশ ২০ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দিকে ভৈরব নদের মহাকাল এলাকায় ঘাটে ভিড়ানো একটি কার্গো জাহাজের পাশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে কৃষি ব্যাংকের ছাদ থেকে নৈশপ্রহরীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার
নিহতের শ্যালক ইয়াসিন মোল্যা জানান, রবিবার সন্ধ্যার সময় তার দুলাভাই জাহাজ থেকে সার নামানোর সময় সিঁড়ির উপর পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়।
রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়। সোমবার দুপুরের পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের কর্মীরা নিখোঁজ হওয়া শ্রমিক কাইয়ুমের লাশ উদ্ধার করে।
নওয়াপাড়া হ্যান্ডলিং শ্রমিক নেতা ফালগুন মন্ডল জানান, তার ইউনিয়নের শ্রমিক, শুভরাড়া গ্রামের শরিয়ত উল্লার ছেলে কাইয়ুম হোসেন জাহাজ থেকে সার নামাতে গিয়ে ভৈরব নদে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ২০ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করা হয়।
অভয়নগর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ২ দিন পর পুকুরে ভেসে উঠে শিশুর লাশ
বুড়িগঙ্গায় নৌকাডুবি: আরও একজনের লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামে ট্রাকচাপায় শ্রমিক নিহত
জেলার মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট-করেরহাট সড়কে ট্রাকচাপায় জয়ন্ত দাস নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি)দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার হিঙ্গুলি ব্রিজের পাশে ট্রাক চাপায় গুরুতর আহত হয় জয়ন্ত দাস।
মৃত শ্রমিক জয়ন্ত নীলফামারী সদর থানার সুখধন এলাকার নিবারণ সন্তোষ দাসের ছেলে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ট্রাকচাপায় কিশোর নিহত
পুলিশ জানায়, সকালে বারইয়ারহাট-করেরহাট সড়কের চারলেন প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করছিলেন ওই শ্রমিক। এ সময় একটি ট্রাক চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, সকালে উপজেলার হিঙ্গুলী এলাকায় ট্রাকচাপায় এক শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
গাইবান্ধায় ট্রাকচাপায় কিশোরের মৃত্যু
গাছের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেল শ্রমিকের
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে গাছ কাটতে গিয়ে গাছের নিচে চাপা পড়ে সাইদুর রহমান নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দিকে উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কছে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইদুর রহমান উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপাড়ার মৃত মুনতাজের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল অটোচালকের, আহত ৩
উপজেলার কেডিকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্বাস উদ্দিন জানান, রবিবার সকালে গাছকাটার একপর্যায়ে সাইদুর অর্ধেক কাটা হেলানো শিশু গাছের নিচে বসেছিলেন। এসময় হঠাৎ গাছটি ভেঙে তার শরীরের উপরে পড়ে। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। স্থানীয়রা ও শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ইয়াসির আরাফাত জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. এম জাবীদ হাসান বলেন, গাছকাটার সময় গাছের নিচে চাপা পড়ে সাইদুর রহমান নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ছুটির দিনে প্রাণবন্ত বইমেলার শিশুচত্বর
দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরার পথেই প্রাণ গেল মা ও ছেলের
চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
চট্টগ্রাম মহানগরীতে নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে পড়ে নুর মোহাম্মদ নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ২টার দিকে খুলশীতে নাসিরাবাদ এলাকার চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের বিপরীতে ৯ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ৪২ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু নেই
নিহত নুর মোহাম্মদ ভোলার আব্দুল রহমানের ছেলে।
খুলশী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল বলেন, শ্রমিক নুর মোহাম্মদ দুপুরে ভবনের দ্বিতীয় তলার বাইরে দেয়ালে পাইপের সাহায্যে পানি দিচ্ছিলেন। অসতর্ক অবস্থায় নিচে ইটের স্তূপে পড়ে গেলে গুরুতর আহত হন।
পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২০ জন, মৃত্যু নেই
জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র হত্যা মামলায় ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটে কর্মবিরতিতে চা বাগানের শ্রমিকরা
দুই সপ্তাহ ধরে বেতন না পাওয়া, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বকেয়ার তৃতীয় কিস্তি না পাওয়াসহ ৭ দফা দাবিতে সিলেটের তারাপুর চা বাগানে কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন তারা।
দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন না হলে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি অবস্থান, বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারাপুর চা বাগান শ্রমিক ও পঞ্চায়েত কমিটি।
চা বাগান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে শুকনো মৌসুমের কলম বন্ধ থাকায় উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঘরে ঘরে অভাব, হাহাকার দেখা দিয়েছে। স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করাতে পারছেন না শ্রমিকরা।
তারাপুর চা বাগানের শ্রমিক মমতা রায় বলেন, ‘চা বাগানই আমাদের জীবন। আমরা চা বাগান বন্ধ থাকুক এটা চাই না। ২ সপ্তাহ ধরে কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। ঘরে ঘরে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে আন্দোলন শুরু করেছি।’
আরও পড়ুন: সিলেট ওসমানী হাসপাতালে আত্মসাতের ৬ লাখ টাকাসহ দুই ‘ব্রাদার’ আটক
অপর শ্রমিক গীতা হালদার বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে কোনো বেতন ভাতা নাই। সন্তানদের স্কুলে ভর্তি যেমন করাতে পারিনি, তেমনি নতুন ক্লাসের বইও কিনে দিতে পারছি না। আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনাটা চাই।’
পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল মোদী জানান, ‘কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে বার বার বেতন আটকে যাচ্ছে। এতে শ্রমিক পরিবারে নানান সংকট বাড়ছে। বেতন না পাওয়ার কারণে সংক্রান্তি উৎসব পানসে হয়ে গেছে। আমরা অচলাবস্থার অবসান চাই। বার বার বাগান বন্ধ থাকাটা আমরাও চাই না। বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় আন্দোলন করছি।’
পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চৈতন্য মোদী জানান, ‘গত ২ সপ্তাহ ধরে বাগান শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছেন না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বকেয়া বেতনের তৃতীয় কিস্তিও আমরা পাচ্ছি না। অধিকার হারিয়ে, অধিকার পাবার দাবিতে ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল থেকে কঠোর আন্দোলন শুরু করবে।’
আরও পড়ুন: তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্ক কর বৃদ্ধির কারণে পাথর আমদানি বন্ধ
রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
রাজধানীর বাড্ডায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার(১০ জানুয়ারি) সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
কয়েকজন সহকর্মী বায়েজিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধের মৃত্যু
নিহত বায়েজিদ (২০) লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার মমিনপুর জোংরা গ্রামের বাসিন্দা।
নিহতের ভাই শাহীন জানান, বায়েজিদ একটি নির্মাণাধীন ভবনের সপ্তম তলা থেকে পড়ে যান।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ট্রেনে কাটা পড়ে কৃষকের মৃত্যু
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, লাশ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে এবং বাড্ডা থানায় খবর দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবি অধ্যাপক আব্দুল কাফির মৃত্যু, বগুড়ায় দাফন
চট্টগ্রাম ইপিজেডে শ্রমিক বিক্ষোভ
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেড এবং জে জে মিলস প্রাইভেট লিমিটেড নামের দুটি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুই কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন। পরে মালিক পক্ষ এসে বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস দেওয়ায় শ্রমিকরা কাজে ফিরে গেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বাসে আগুন, প্রতিবাদে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি, সরকার নির্ধারিত বেতনের চেয়ে ও অন্যান্য কারখানার তুলনায় তাদের বেতন কম বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন সাড়ে ১২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা বেতন নির্ধারণ করে নূন্যতম মজুরির খসড়া সুপারিশ প্রকাশ করেছে সরকার। যেখানে পাঁচটি গ্রেড রাখা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একজন কামাল উদ্দিন বলেন, তাদের কারখানায় নতুন বেতন কাঠামো পাচ্ছেন নতুন যোগ দেওয়া শ্রমিকরা। কিন্তু পুরনো শ্রমিকরা এই নতুন বেতন কাঠামোর আওতাভুক্ত হচ্ছেন না। ফলে পুরোনোদের বেতন এবং নতুন যোগদানকারীদের বেতনের পার্থক্য হচ্ছে হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে নির্বাচন বর্জনের প্রচারণায় ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও লিফলেট বিতরণ
শ্রমিকদের পাওনা না দিলে ‘নোবেল জয়ী’ বলে কি মামলা হবে না: তথ্যমন্ত্রী
নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হয়েছে তার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের পাওনা কিংবা অধিকার বুঝিয়ে না দেওয়ায় একজন নোবেল জয়ীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম অধিকার বিষয়ে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন তিনি।
সোমবার (১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘শরণার্থীর জবানবন্দী ১৯৭১’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মত িবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার রায় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে অনেক নোবেলজয়ী ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। অনেকে জেলও খেটেছেন। ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাচ্ছি, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে না-দেওয়ার জন্য। তিনি শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে দেননি, বহু বছর ধরে।
তিনি বলেন, ‘এরপর যখন শ্রমিকরা আদালতে গেছেন, তখন আদালতের বাইরে দুজন শ্রমিক নেতাকে ৩ কোটি করে ৬ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দুজন শ্রমিক নেতা টাকা পেলে তো হবে না, কারণ সাধারণ শ্রমিকরা তো কোনো টাকা পাননি। সে কারণে সাধারণ শ্রমিকরা মামলা করেছেন। সেই মামলার রায় হচ্ছে। এখন শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে নানা কথা হয়। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও অনেক কথা বলেন।’
নোবেলজয়ী যদি শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে না দেন, তাহলে কি তার বিরুদ্ধে মামলা হবে না- এমন প্রশ্নও তোলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আশা করি, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও এ নিয়ে কথা বলবেন। শ্রমিকের অধিকার ও পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে মামলা হয়েছে।
হাছান বলেন, ‘মালালা ইউসুফজায়ী ১২ বা ১৪ বছর বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। কখন আট বছরের ছেলেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়, সেটির আশঙ্কাও লোকজন করছেন।’
আরও পড়ুন: তিন কাঠা জমি থাকলেই কোটিপতি: তথ্যমন্ত্রী
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বক্তব্যে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা মোটেও বিরক্ত হই না। মানবাধিকার নিয়ে কথা বললে, সেগুলো আমরা দেখি, পর্যবেক্ষণ করি, অনেক ক্ষেত্রে সত্য ঘটনা হলে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, তারা পেট্রোলবোমা সন্ত্রাস নিয়ে কোনো কথা বলে না কেন? তারা ফিলিস্তিনের হাজার অসহায় নারী-শিশুকে যেভাবে ইসরাইলি বাহিনী হত্যা করছে, তা নিয়ে কথা বলেন না কেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি ঘরানার কয়েকজন লোকের মানবাধিকার নাকি দেশের প্রতিটি মানুষের মানবাধিকারের কথা তারা বলছেন? মানবাধিকার নিয়ে কথা বললে সারা দেশের প্রেক্ষাপটে বলতে হবে। আজ যে মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যহত করা হচ্ছে, সেটাও মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ উন্নয়ন করে, বিএনপি মানুষ পোড়ায়: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে তারা কথা বলে না কেন! সেটি নিয়ে কথা যখন বলেন না, তখন আমরা বিরক্ত হই। কিন্তু মানবাধিকার নিয়ে কেউ কথা বললে আমরা বিরক্ত হই না।’
‘প্রার্থীদের ওপর বিএনপি হামলা চালাতে পারে’ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা জানি, তারা প্রার্থীদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছেন, যাতে ভোটটা বন্ধ হয়ে যায়। প্রার্থীদের ওপর হামলা করবে, হত্যা করবে, যাতে ভোট বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘কোনো একটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কোনো প্রার্থী মারা যান, তাহলে সেই নির্বাচনটা বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে বিএনপি এমন পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু তাতে লাভ হবে না। তাদের সব পরিকল্পনা সন্ত্রাসীমূলক। এখন তারা প্রার্থীদের ওপর হামলা পরিকল্পনা করেছে। জঘন্য সন্ত্রাসী সংগঠন ছাড়া কেউ সেটা করে না।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী জোয়ারে বিএনপির নেতা-কর্মী সমর্থকরাও শামিল হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে: ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অভিবাসী কর্মীরা আমাদের সোনার সন্তান। অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৈদেশিক আয়ের ক্ষেত্রে অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স সরাসরি রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। প্রবাসী আয়ে অন্যান্য রপ্তানি খাতের মতো ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নেই। প্রবাসীরা বঞ্চনা, হয়রানি, অপমান এমনকি অপমৃত্যুরও শিকার হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ইতালীয় উপকূলে অভিবাসী নৌকা বিধ্বস্তে নিহত ৬০
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঢাকার এফডিসিতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অভিবাসী কর্মীদের মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত অভিবাসী কর্মীদের ন্যায্য অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা হয়নি। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। নারী শ্রমিকদের প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধে দূতাবাসগুলোকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরও পড়ুন: অভিবাসী কর্মীদের শ্রমশক্তিতে পুনঃএকত্রীকরণে বাংলাদেশ ও আইএলও’র চুক্তি সই
তিনি আরও বলেন, প্রবাসে কারাগারে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তির বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করছেন। সৌদি আরবে দুইজন অভিবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও মানবাধিকার কমিশনের প্রচেষ্টায় রক্তপণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, কাজ হারিয়ে যেসব অভিবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছে তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও রি—ইন্টিগ্রেশনের উপর আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মীর প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পরিবার পরিজন, আত্মীয়—স্বজন, বন্ধুবান্ধব ছেড়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্যের আমাদের অভিবাসী কর্মীরা তাদের শ্রমে ঘামে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, যে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা চলতি বছর ২৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন, তাদের সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি এখনো আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। সরকারের নীতি কৌশল, প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানো প্রক্রিয়া সহজ করা হলে প্রতি বছর প্রবাসী আয় থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার দেশগুলো অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ নিয়ে প্রায়ই নীরব থাকে: শাহরিয়ার
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমাদের জিডিপিতে প্রবাসী আয়ের অবদান ৫ দশমিক ২ শতাংশ অথচ নেপালের জিডিপিতে প্রবাসী আয় ২৭ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করছে। শোভন কর্মপরিবেশের অভাব, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া, অদক্ষতা, অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় নিরাপদ অভিবাসনের বড় অন্তরায়। বিদেশ থেকে পাসপোর্ট বিহীন আউট পাস নিয়ে বিপুল সংখ্যক কর্মীরা দেশে আসার বিষয়টি উদ্বেগ তৈরি করেছে। কেন এসব কর্মীরা বিনা পাসপোর্টে আউট পাস নিয়ে দেশে ফিরে আসলো তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খতিয়ে দেখা উচিৎ।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরাতে এসওপি হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী