বনভূমি
৩ বছরে ২৪৩২২ একর দখল করা বনভূমি পুনরুদ্ধার করেছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ২০২০ সালের অক্টোবর ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত ২৪ হাজার ৩২২ একর জবরদখল করা বনভূমি পুনরুদ্ধার করে বনায়ন করেছে বর্তমান সরকার।
তিনি বলেন, অবৈধ বনভূমি পুনরুদ্ধারে সফলতার এ ধারা চলমান। যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বনের জমি দখলে রাখবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনা অনুসরণে দেশে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে: পরিবেশমন্ত্রী
শনিবার (৭ অক্টোবর) ইকোট্যুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর জাতীয় উদ্যানের দোখলা রেঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নবনির্মিত ম্যুরাল উন্মোচনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ বনভূমি আছে। এটি ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে অবৈধ দখল কমে যাবে এবং মানুষ বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ হবে। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল ৮ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. জোয়াহেরুল ইসলাম, উপপ্রধান বন সংরক্ষক গোবিন্দ রায় এবং কেন্দ্রীয় সার্কেলের বন সংরক্ষক হোসাইন মুহম্মদ নিশাদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
বনভূমি রক্ষায় ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
দেশের বনভূমি রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার লক্ষ্যে বনভূমি সম্পর্কে সর্বশেষ অবস্থা জানতে দ্রুত ডিজিটাল জরিপ পরিচালনা করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদের এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
মন্ত্রিপরিষদের এ সভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয় থেকে যুক্ত হন।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সমন্বয় করে দেশের সব বনভূমির ওপর দ্রুত ডিজিটাল জরিপ পরিচালনা করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: জাতীয় প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নয়নে বিভিন্নমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে: মন্ত্রী
দেশের পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রকল্প ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে দখলকৃত সরকারি বনভূমি পুনরুদ্ধার, পাহাড় ও টিলা কর্তন রোধ, অবৈধ ইটভাটা এবং নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছে সরকার। স্থানীয় প্রশাসন ও সকলের সহযোগিতায় দেশের পরিবেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।’
বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় কমিশনারদের সাথে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ভার্চুয়াল সমন্বয় সভায় ঢাকাস্থ সরকারি বাসভবন হতে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকারি নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে ২০২৫ সালের মধ্যে ১০০ ভাগ ব্লক ইট ব্যবহার অর্জনের বিষয়টি মনিটরিং এবং যানবাহনের সৃষ্ট দূষণ নিয়ন্ত্রণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা জোরদারকরণ এবং প্রয়োজন অনুসারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণে নিষিদ্ধ ঘোষিত অবৈধ পলিথিন-প্লাস্টিক ব্যাগের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, উপকূলীয় এলাকায় এক বছরের মধ্যে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ এবং একই সময়ে সারাদেশের হোটেল, রেস্টুরেন্টে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জলাধার ও নদী ভরাট এবং নদী দূষণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শিল্প-কারখানা, নৌযান ও মনুষ্য-সৃষ্ট বর্জ্য সরাসরি নদীতে নিঃসরণ প্রতিরোধে নজরদারি জোরদারসহ প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব পর্যালোচনা ও বিসিসিটি’র বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহ নিয়মিত পরিদর্শনসহ এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকার দেশের গ্রামগুলোকে শহরে পরিণত করছে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, সংরক্ষিত বন ব্যতীত অন্যান্য বনভূমি (রক্ষিত বনভূমি, অর্পিত বনভূমি) এলাকায় খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন এবং প্রয়োজনে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বনভূমি জবরদখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে চলমান ক্র্যাশ প্রোগ্রামে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: জলবায়ু-সহিষ্ণু উন্নয়ন করেছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
অবৈধভাবে বন্দোবস্তকৃত বনভূমি উদ্ধারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বনভূমি যথাযথভাবে রেকর্ডভুক্তি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও বিভাগীয় কমিশনারদের প্রতি আহবান জানানো হয়।
সভায় বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের মালিকানাধীন আনুমানিক ২৫-৩০ একর রাবার বাগান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) কর্তৃপক্ষের অবৈধ দখল থেকে উদ্ধারের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপস্থিত চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের প্রতি আহবান জানানো হয়।
বিভাগীয় কমিশনাররা তাদের বক্তব্যে এ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কাজ পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমেই করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। ভবিষ্যতে আরও নিবিড়ভাবে দেশের পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবরা, অধীন দপ্তর-সংস্থা প্রধানরা এবং বিভাগীয় কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।
যেকোনো মূল্যেই বনভূমি দখলমুক্ত করা হবে: মন্ত্রী
যেকোনো মূল্যেই দেশের বনভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
ক্যালিফোর্নিয়ায় ৭,৮৬০ দাবানলে এ বছর পুড়েছে ৩৪ লাখ একর বনভূমি
চলতি বছর মার্কিন যুক্তরষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ৭ হাজার ৮৬০টি দাবানলে ৩৪ লাখ একরের বেশি (প্রায় ১৩ হাজার ৭৫৯ বর্গ কিলোমিটার) বনভূমি পুড়ে গেছে।