খুলনা
রমজান উপলক্ষে খুলনায় সুলভ মুল্যে দুধ ও ডিম বিক্রি শুরু
রমজান উপলক্ষে শুক্রবার (২৯ মার্চ) থেকে খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সুলভ মূল্যে দুধ ও ডিম বিক্রি শুরু করেছে।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিজস্ব কার্যালয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রি শুরু
মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, প্রতিদিন ৬০ টাকা কেজি দরে দুধ ও প্রতিটি ডিম ১০ টাকায় বিক্রি কার্যক্রম চলবে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি পণ্যের পাশাপাশি ডিম, দুধসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্য সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
মেয়র বলেন, উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা যদি স্বল্প মুনাফায় ব্যবসা করে তাহলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির সুযোগ থাকে না।
খালেক আরও বলেছেন, দেশের কৃষি ও প্রাণিজ সম্পদের অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে। কৃষিপণ্যের মূল্য এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
মেয়র সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রণিসম্পদ অধিদপ্তরের এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এ কর্মসূচি দীর্ঘায়িত করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন যেসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
বুকের দুধের বিকল্পগুলোর বাজারজাতকরণের মান নির্ধারণে মঙ্গলবার জেনেভায় বসবে গ্লোবাল কংগ্রেস
খুলনায় ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি
রমজান মাসকে সামনে রেখে ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খুলনা ব্লাড ব্যাংক।
শুক্রবার (২১ মার্চ) খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি এলাকায় এই মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রথম দিনে ৫০০ জন ক্রেতার মধ্যে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে এই মাংস বিক্রি করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খুলনা ব্লাড ব্যাংক।
আরও পড়ুন: রমজানে ঢাকায় ন্যায্য মূল্যে ট্রাকে করে মাংস ও ডিম বিক্রি হবে
শুক্রবার সকাল ১০টায় এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।
এ সময় কেএমপি কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি সালেহ উদ্দিন সবুজ জানান, রমজান মাসে নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে ৬০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, কেসিসি ও মেট্রোপলিটন পুলিশ এই কাজে সহযোগিতা করেছে। আপাতত প্রতি শুক্রবার ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে।
উল্লেখ্য খুলনার বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস ৭২৫-৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি প্রতি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মাংস-মুরগি-ডিমের দাম বাড়লেও কমেছে সবজি-পেঁয়াজের দাম
সাশ্রয়ী মূল্যে রাজধানীর ৩০ পয়েন্টে বিক্রি হবে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
খুলনায় পোস্ট অফিসের স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট উদ্বোধন করেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত
খুলনার কয়রায় পোস্ট অফিসের স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট উদ্বোধন করেছেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত হিসেবে বাংলাদেশ সফররত সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) খুলনার কয়রা এলাকা পরিদর্শনের সময় তিনি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের ডিজিটাল পরিষেবার উপকারভোগীসহ সরকার ও ইউএনডিপির একাধিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উলরিকা মোদের এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক সুইডিশ মন্ত্রী জোহান ফরসেল, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
বাংলাদেশকে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘ডিজিটাল সেন্টার সরকারি পরিষেবাগুলোকে তৃণমূল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে, প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোকে সহজলভ্য করে তুলছে।’
আরও পড়ুন: খুলনার কয়রায় সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘স্মার্ট সার্ভিস পয়েন্ট এমন একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ, যার লক্ষ্য হচ্ছে ডাক পরিষেবাগুলোতে প্রতিটি নাগরিকের অভিগম্যতা এবং দক্ষতা উন্নত করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা।’
খুলনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বউ-শাশুড়ির মৃত্যু
খুলনার দাকোপে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বউ ও শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার হরিণটানা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ছেলের বউ টুম্পা গাইন ও শাশুড়ি চপলা গাইন। চপলা লাউডোব ইউনিয়নের হরিণটানা গ্রামের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন গাইনের স্ত্রী।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে সাইনবোর্ড লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু, আহত-২
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে চপলা ধানখেতের আইলে সবজি তুলতে গেলে ধানখেতে ইঁদুর মারার জন্য বৈদ্যুতিক ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ সময় তার চিৎকার শুনে তাকে রক্ষার জন্য পুত্রবধূ টুম্পা এগিয়ে এলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এতে ঘটনাস্থলে দুইজনের মৃত্যু হয়।
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল হক জানান, তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল শ্রমিকের
নাটোরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারীর মৃত্যু
খুলনায় ৫ টাকায় রোজার বাজার
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সুবিধাবঞ্চিত ও স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে মাত্র ৫ টাকায় রমজান মাসের বাজার নিয়ে এসেছে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই আর বাংলাদেশ’ (ওয়াব)।
শনিবার (১৬ মার্চ) এই বাজারের উদ্বোধন করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।
আরও পড়ুন: বাজার কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মাত্র ৫ টাকায় ৩ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি চিনি, ৫০০ গ্রাম খেজুর, ১ কেজি মুড়ি, পেয়াজ ১ কেজি ও ৫০০ গ্রাম তেল কিনতে পারবে একটি পরিবার।
পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই আর বাংলাদেশ’ (ওয়াব) এর প্রতিষ্ঠাতা আমাদের অত্যন্ত প্রিয় সহকর্মী কনস্টেবল এস.এম আকবর। পুলিশের চাকরি করার পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে যে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় সেটি তিনি ‘উই আর বাংলাদেশ’ সংগঠনের মাধ্যমে করে যাচ্ছেন। এটা মানবিক পুলিশিং কর্মকাণ্ডের অংশ, এখানে শুধু পুলিশ সদস্যরাই নয়, সমাজের অন্য শ্রেণি পেশার মানুষও এই মানবিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন।
তিনি হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ‘ওয়াব’ এর ‘৫ টাকায় রমজানের বাজার’ শিরোনামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, এটি কোনো দান-সদকা নয়, এটি মানুষের দাঁড়ানোর জন্য ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। ভোগ্য পণ্য বৃদ্ধির কারণে যারা ঠিকমতো বাজার করতে পারছেন না তারা ৫ টাকার বিনিময়ে ‘ওয়াব’ এর পক্ষ থেকে তারা ৯টি নিত্যপ্রয়োজনীয় আইটেম পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমেই পরমাত্মাকে তথা স্রষ্টাকে পাওয়া যায়। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোও একটি ইবাদত। পুলিশ কমিশনার পবিত্র রমজান মাসে এবং উৎসবের আগে সমাজের বিত্তবান মানুষদের সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ওয়াব’র মতো দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকার ইফতার বাজার: ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বনাম ‘সব বাপের পোলায় খায়’
বোনকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হলো না ভাইয়ের
খুলনায় মোটরসাইকেলে বোনকে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকচাপায় মান্নান মন্ডল নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলে থাকা তার বোন ইতি রাণী।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বাগডোব ডিমজাওন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: নাটোরে ট্রাকচাপায় নারীসহ নিহত ৩
মান্নান মন্ডল নিয়ামতপুর উপজেলার জিনপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে এবং খুলনার একটি এনজিওতে ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন।
নওগাঁর মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন জানান, মান্নান মন্ডল মোটরসাইকেল করে বোন ইতিকে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকচাপায় মান্নানের মৃত্যূ হয়।
অপরদিকে বোন ইতি রাণী সামান্য আহত হন। আর ভাইয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না ইতি রানী।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর পরই ট্রাক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ট্রাকটি ও চালক-সহযোগীকে আটক করতে পুলিশের টিম কাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মান্নান মন্ডলের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের জন্য মান্নান মন্ডলের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ট্রাকচাপায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় শিশুর মৃত্যু
খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা মোটরসাইকেল চালক নিহত
খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মো. আবির মোল্লা নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল ১১ টায় রূপসা উপজেলায় কাজদিয়া বাজার মালিবাগ মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ইজতেমায় ডিউটিতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় এএসআই নিহত
নিহত যুবক মো. আবির মোল্লা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বরফা গ্রামের কিসমত আলী মোল্লার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, খুলনাগামী মোটরসাইকেলটি মালিবাগ মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে ফকিরহাটের উদ্দেশ্যে যাওয়া ট্রলি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় মোটরসাইকেল চালককে রুপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবীর জানান, টলির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক আবির মোল্লা নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনা যুবক নিহত
ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ইঞ্জিনিয়ার নিহত
জীবনধারণে লড়ছেন জয়িতা পুরস্কার জয়ী খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া
এবার নারী দিবসে জাতীয়ভাবে জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন খুলনার একজন পাখি দত্ত হিজড়া। বয়স ৩২ বছর বয়সী পাখি দত্ত হিজড়া রবিবার সকালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙার খোকন সড়কে নিজ বাসায় ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে জানান তার সুখ-দুঃখের কথা।
এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী, খুলনার মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, কোনো কাজ না পেলে তাকে হয়তো জীবন ধারনের জন্য হিজড়া পেশায় ফিরে যেতে হবে। যেটা তার কাম্য নয়।
পাখি জানান, তাদের আদি বাড়ি বগুড়া জেলার জামালগঞ্জে। কাজের আশায় তার বাবা তার মাকে আশির দশকে খুলনার ডুমুরিয়ার মিকসিমিলে চলে আসেন। তারপরে তার বাবা খুললার দৌলতপুর একটা বেসরকারি ফার্মে চাকরি নেন। এখানেই ১৯৯২ সালের ২৭ ফেব্রয়ারি পাখি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মংগল দত্ত এবং মা রীনা রানি দত্ত। প্রথম দিকে ভালোই চলছিল তার জীবন। কিন্তু বয়স যখন ১১-১২ বছর। বয়ঃসন্ধিকাল তখন তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। বুঝতে পারে সে অন্য সাধারণ মেয়ের চেয়ে আলাদা। এরপর থেকে শিক্ষকরা তার স্কুলে ভর্তি করা নিয়ে গড়িমসি করলেও পরবর্তীতে সে স্কুলে ভর্তি হয়। কিন্তু কোন ছেলে বা মেয়ে তার সঙ্গে মিশতো না। তাকে এড়িয়ে চলতো সকলেই।
আরও পড়ুন: ভোলায় জেলা পর্যায়ে জয়িতা সম্মাননা পেলেন ৫ নারী
এরপর প্রচার হয়ে যায় সে হিজড়া। তখন তার বাবা-মা সমাজের প্রতিহিংসার শিকার হন।
তাদের পরিবারকে একঘড়ে করা হয়। তখন সে বাধ্য হয়ে পিতা মাতার সংসার ছেড়ে খুলনার টুটপাড়া এক হিজড়া গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেয়।
এখানে তার কাজ ছিল অন্য হিজড়াদের সঙ্গে দলবেঁধে শিশুদের নাচানো, বাজার থেকে তরকারি, মাছ সংগ্রহ করা। এভাবে কেটে যায় কয়েক বছর। এই সময় পাখি হিজড়া গোষ্ঠীর প্রধানের দৈহিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। এই কাজে তার মন বসছিল না। তাই একদিন সে আরও দুই জনকে নিয়ে পালিয়ে আসে। কিন্তু কি করবে চোখে অন্ধকার দেখতে থাকে। বাধ্য হয়ে সে ট্রেনে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করে।
এর মধ্যে বাবা মারা গেলে তাদের সংসারে নেমে আসে কালো মেঘ। এই সময় একজন এনজিও পরিচালকের সঙ্গে তার কথা হয় এবং তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। পরিচয় হতে থাকে সমাজসেবা ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এনজিওতে কাজ করার পাশাপাশি তিনিসহ আরও তিনজন ঢাকা থেকে পাইকারি দামে শাড়ী, থ্রীপিছ খুলনায় এনে বিক্রি শুরু করেন। মোটামুটি লাভের মুখ দেখা যায়।
এরপর ২০১৮ সালে নক্ষত্র যুব মানব কল্যাণ সংস্থা গঠন করে খুলনা যুব উন্নয়য় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে সমাজসেবা, নারী-শিশু ও বয়স্কদের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন পাখি দত্ত।
আরও পড়ুন: ফেনীর পরশুরামে বেগম রোকেয়া দিবসে জয়িতাদের সংবর্ধনা
এর মধ্যে ২০২০ সালে দেশে করোনা শুরু হলে পাখি ও তার দল করোনা রোগীদের সেবা, খাবার সংগ্রহ বহুমুখী কাজ করে। লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে যায় করোনা রোগীদের পাশে। তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তিনি তার কাজের জন্য খুলনা মহানগরী, জেলা ও বিভাগে ২০২২ ও ২০২৩ সালে সেরা জয়িতা মনোনীত হয়। আর এবছর নারী দিবসে পেল রাষ্ট্রীয় সেরা জয়িতা পুরস্কার।
তবে অসহায়ভাবে পাখী দত্ত হিজড়া জানালো তার বৃদ্ধ অসুস্থ মা এবং সপ্তম শ্রেণীতে পড়া একমাত্র বোনকে নিয়ে তাদের দারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটানোর কথা। তার এখন দরকার একটা চাকরি।
আর না হলে তাকে আগের পেশায় ফিরে যেতে হবে। যা সে চায় না।
আরও পড়ুন: ‘সফল জননী’ হিসেবে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেলেন চা শ্রমিক কমলি রবিদাস
২ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনে কাঁকড়া সংগ্রহে ফিরছেন জেলেরা
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞ শেষে আবারও শুরু হয়েছে কাঁকড়া আহরণের জন্য বন বিভাগ থেকে ‘পাস-পারমিট’ প্রদান। তাই দীর্ঘ সময় অলস বসে থাকার পর সুন্দরবনে নদী ও খালে কাঁকড়া আহরণের জন্য সরঞ্জম নিয়ে ছুটছেন জেলেরা।
শুক্রবার থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ শুরু হলেও আহরণের নৌকা ও মালামাল সংগ্রহ করতে ও প্রস্তুতি নিতে দেরি হওয়ায় আজ রবিবার (৩ মার্চ) সকালে ভাটিতে বনের গহীনে প্রবেশ করতে শুরু করেছে মোংলা, রামপাল, দাকোপসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা।
পূর্ব সুন্দরবন চাঁদপাই রেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার। যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। জলভাগে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল আছে। এসব খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়াও ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৫৯ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরার অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা
করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, সুন্দরবনের মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছরই কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ থাকে। বাকি অংশের নদী ও খালে বন বিভাগের বৈধ পাস-পারমিটধারী প্রায় ১৫ হাজার জেলে শুধু কাঁকড়া আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
১৯৯৮ সালে কাঁকড়া রপ্তানি নীতিমালা প্রণয়নের পর থেকেই প্রতিবছর দুই মাস কাঁকড়া ধরার পাস-পারমিট বন্ধ রাখা হয় বলে জানান তিনি।
কাঁকড়া আহরণকারী মোংলার জয়মনি এলাকার আনিছুর রহমান জানান, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল কোনো লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। যারা যান, তারা প্রায় সবাই দরিদ্র। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দরিদ্র জেলেদের চরম দুর্দিন গেছে। বন্ধের দিনগুলোয় সরকারি কোনো ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের। শুক্রবার সকালে কাঁকড়া ধরার অনুমতি পেয়ে তারা আশার আলো দেখছেন।
একই এলাকার ছগির মোল্লা জানান, ‘সংসারে সাতজন সদস্য। সুন্দরবনে একদিন না গেলে তার চুলা জ্বলে না। দুই মাসের কাঁকড়া আহরণ বন্ধে দিনমজুরি করে কোনোমতে সংসার চালিয়েছি। মহাজনের কাছ থেকেও ধার নিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’
আরও পড়ুন: বন্যায় ভেসে গেছে ৮ কোটি টাকার মাছ-চিংড়ি-কাঁকড়া
জেলেদের অভিযোগ, বনবিভাগ যে উদ্দেশ্যে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তা সফল হয়নি। কারণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও গোপনে অসাধু লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে কাঁকড়া আহরণ করা হয়েছে এর বহু প্রমাণ রয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, কাঁকড়ার বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুন্দরবনে বিভিন্ন নদী-খালে দুই মাস জেলেদের কাঁকড়া আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। ২ মার্চ থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা প্রবেশ নিষিদ্ধ অভয়াশ্রম ছাড়া অন্য নদী-খালে কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন। তবে কেউ যাতে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারে, সেজন্য বনরক্ষীদের স্মার্ট পেট্রোলিং টহল ও অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ইঞ্জিনচালিত কোনো নৌকা বা ট্রলার কাঁকড়া পরিবহনের ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
শুধু পরিবহন করতে পারবে যে নৌকায় কাঁকড়া আহরণ করে সেই নৌকায়। আর এ ব্যতিত ট্রলার যোগে পরিবহন করছে যদি এ রকম কাউকে পাওয়া বা এর সঙ্গে বন রক্ষীদের কেউ জড়িত থাকে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান বন বিভাগের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় কাঁকড়া ধরায় ২৪ জেলে আটক
বসন্তের শুরুতেই খুলনা এখন পিঠার নগরী
বসন্তের শুরুতেই বাংলাদেশের অন্যতম বিভাগীয় নগরী খুলনায় সবত্র শুরু হয়েছে খেজুরের রসের বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী বানানো, পিঠা উৎসব এবং অতিথি আপ্যায়নের ধুম।
খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা খেজুরের রসের জন্য বিখ্যাত। বিভাগের এই দুই জেলায় খেজুরের রস দিয়ে বাড়ি বাড়ি তৈরি হচ্ছে রসের পায়েস, গুড়, পাটালি।
আবদুর রব নামে একজন গাছী জানান, তিনি এই বছর প্রায় দুই শতাধিক খেজুরের গাছ কেটেছেন। সপ্তাহে একদিন বিরতিতে গাছ কাটা হয়। দৈনিক ২০ থেকে ২৫টি ঠিলা (ভাড়) রস হয়।
যশোর খাজুরা গ্রামের রহমান গাছী জানান, দৈনিক তার ৩০ ঠিলা রস হয়। ৫ লিটার রসের দাম ৩০০ টাকা।
আরও পড়ুন: পিঠা-পুলি বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের অংশ: খাদ্যমন্ত্রী
খুলনার পিঠা বাজারের আকলিমা জানান, এখন যেহেতু বসন্তকাল এবং হালকা শীত আছে তাই পিঠার মৌসুম চলছে। আর এই কারণে রসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য দামও বেশি।
খুলনায় প্রায় ১০টি জায়গায় এখন চলছে পিঠা মেলা ও বসন্ত উৎসব। এর মধ্যে রয়েছে খুলনা প্রেসক্লাব, আহসানউল্লাহ কলেজ, মহেশ্বরপাশা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, এস ও এস শিশু পল্লীসহ খুলনা নগরীর বিভিন্ন উন্মুক্ত জায়গায়।
তবে সবচেয়ে ব্যতিক্রম হলো খুলনা সাউথ সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত সরকারি শিশু সদনে এতিম ও গরীব শিশুদের নিয়ে পিঠা উৎসব ও বসন্তবরণ পালিত হয়েছে। কিছু সময়ের জন্য হলেও এতিম ও গরীব শিশুরা আনন্দে হারিয়ে গিয়েছিল।
বাংলার আবহমান কাল ধরে চলে আসা পিঠা উৎসবে চিতই পিঠা, পাকান পিঠা, জামাই পিঠা, রসপিঠা, রসের পায়েসসহ হরেক রকমের পিঠার মেলা বসায় খুলনা এখন পিঠার নগরী।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে অনন্যা পিঠা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত