খুলনা
খুলনায় ৫ টাকায় রোজার বাজার
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সুবিধাবঞ্চিত ও স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে মাত্র ৫ টাকায় রমজান মাসের বাজার নিয়ে এসেছে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই আর বাংলাদেশ’ (ওয়াব)।
শনিবার (১৬ মার্চ) এই বাজারের উদ্বোধন করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।
আরও পড়ুন: বাজার কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মাত্র ৫ টাকায় ৩ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি চিনি, ৫০০ গ্রাম খেজুর, ১ কেজি মুড়ি, পেয়াজ ১ কেজি ও ৫০০ গ্রাম তেল কিনতে পারবে একটি পরিবার।
পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উই আর বাংলাদেশ’ (ওয়াব) এর প্রতিষ্ঠাতা আমাদের অত্যন্ত প্রিয় সহকর্মী কনস্টেবল এস.এম আকবর। পুলিশের চাকরি করার পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে যে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় সেটি তিনি ‘উই আর বাংলাদেশ’ সংগঠনের মাধ্যমে করে যাচ্ছেন। এটা মানবিক পুলিশিং কর্মকাণ্ডের অংশ, এখানে শুধু পুলিশ সদস্যরাই নয়, সমাজের অন্য শ্রেণি পেশার মানুষও এই মানবিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন।
তিনি হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ‘ওয়াব’ এর ‘৫ টাকায় রমজানের বাজার’ শিরোনামে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, এটি কোনো দান-সদকা নয়, এটি মানুষের দাঁড়ানোর জন্য ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। ভোগ্য পণ্য বৃদ্ধির কারণে যারা ঠিকমতো বাজার করতে পারছেন না তারা ৫ টাকার বিনিময়ে ‘ওয়াব’ এর পক্ষ থেকে তারা ৯টি নিত্যপ্রয়োজনীয় আইটেম পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমেই পরমাত্মাকে তথা স্রষ্টাকে পাওয়া যায়। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোও একটি ইবাদত। পুলিশ কমিশনার পবিত্র রমজান মাসে এবং উৎসবের আগে সমাজের বিত্তবান মানুষদের সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ওয়াব’র মতো দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকার ইফতার বাজার: ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বনাম ‘সব বাপের পোলায় খায়’
বোনকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হলো না ভাইয়ের
খুলনায় মোটরসাইকেলে বোনকে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকচাপায় মান্নান মন্ডল নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলে থাকা তার বোন ইতি রাণী।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বাগডোব ডিমজাওন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: নাটোরে ট্রাকচাপায় নারীসহ নিহত ৩
মান্নান মন্ডল নিয়ামতপুর উপজেলার জিনপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে এবং খুলনার একটি এনজিওতে ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন।
নওগাঁর মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন জানান, মান্নান মন্ডল মোটরসাইকেল করে বোন ইতিকে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাকচাপায় মান্নানের মৃত্যূ হয়।
অপরদিকে বোন ইতি রাণী সামান্য আহত হন। আর ভাইয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না ইতি রানী।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর পরই ট্রাক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ট্রাকটি ও চালক-সহযোগীকে আটক করতে পুলিশের টিম কাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মান্নান মন্ডলের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে, পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের জন্য মান্নান মন্ডলের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ট্রাকচাপায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় শিশুর মৃত্যু
খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা মোটরসাইকেল চালক নিহত
খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মো. আবির মোল্লা নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৩ মার্চ) সকাল ১১ টায় রূপসা উপজেলায় কাজদিয়া বাজার মালিবাগ মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ইজতেমায় ডিউটিতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় এএসআই নিহত
নিহত যুবক মো. আবির মোল্লা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বরফা গ্রামের কিসমত আলী মোল্লার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, খুলনাগামী মোটরসাইকেলটি মালিবাগ মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে ফকিরহাটের উদ্দেশ্যে যাওয়া ট্রলি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় মোটরসাইকেল চালককে রুপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবীর জানান, টলির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক আবির মোল্লা নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনা যুবক নিহত
ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ইঞ্জিনিয়ার নিহত
জীবনধারণে লড়ছেন জয়িতা পুরস্কার জয়ী খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া
এবার নারী দিবসে জাতীয়ভাবে জয়িতা পুরস্কার পেয়েছেন খুলনার একজন পাখি দত্ত হিজড়া। বয়স ৩২ বছর বয়সী পাখি দত্ত হিজড়া রবিবার সকালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙার খোকন সড়কে নিজ বাসায় ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে জানান তার সুখ-দুঃখের কথা।
এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী, খুলনার মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, কোনো কাজ না পেলে তাকে হয়তো জীবন ধারনের জন্য হিজড়া পেশায় ফিরে যেতে হবে। যেটা তার কাম্য নয়।
পাখি জানান, তাদের আদি বাড়ি বগুড়া জেলার জামালগঞ্জে। কাজের আশায় তার বাবা তার মাকে আশির দশকে খুলনার ডুমুরিয়ার মিকসিমিলে চলে আসেন। তারপরে তার বাবা খুললার দৌলতপুর একটা বেসরকারি ফার্মে চাকরি নেন। এখানেই ১৯৯২ সালের ২৭ ফেব্রয়ারি পাখি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মংগল দত্ত এবং মা রীনা রানি দত্ত। প্রথম দিকে ভালোই চলছিল তার জীবন। কিন্তু বয়স যখন ১১-১২ বছর। বয়ঃসন্ধিকাল তখন তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। বুঝতে পারে সে অন্য সাধারণ মেয়ের চেয়ে আলাদা। এরপর থেকে শিক্ষকরা তার স্কুলে ভর্তি করা নিয়ে গড়িমসি করলেও পরবর্তীতে সে স্কুলে ভর্তি হয়। কিন্তু কোন ছেলে বা মেয়ে তার সঙ্গে মিশতো না। তাকে এড়িয়ে চলতো সকলেই।
আরও পড়ুন: ভোলায় জেলা পর্যায়ে জয়িতা সম্মাননা পেলেন ৫ নারী
এরপর প্রচার হয়ে যায় সে হিজড়া। তখন তার বাবা-মা সমাজের প্রতিহিংসার শিকার হন।
তাদের পরিবারকে একঘড়ে করা হয়। তখন সে বাধ্য হয়ে পিতা মাতার সংসার ছেড়ে খুলনার টুটপাড়া এক হিজড়া গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দেয়।
এখানে তার কাজ ছিল অন্য হিজড়াদের সঙ্গে দলবেঁধে শিশুদের নাচানো, বাজার থেকে তরকারি, মাছ সংগ্রহ করা। এভাবে কেটে যায় কয়েক বছর। এই সময় পাখি হিজড়া গোষ্ঠীর প্রধানের দৈহিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। এই কাজে তার মন বসছিল না। তাই একদিন সে আরও দুই জনকে নিয়ে পালিয়ে আসে। কিন্তু কি করবে চোখে অন্ধকার দেখতে থাকে। বাধ্য হয়ে সে ট্রেনে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করে।
এর মধ্যে বাবা মারা গেলে তাদের সংসারে নেমে আসে কালো মেঘ। এই সময় একজন এনজিও পরিচালকের সঙ্গে তার কথা হয় এবং তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। পরিচয় হতে থাকে সমাজসেবা ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এনজিওতে কাজ করার পাশাপাশি তিনিসহ আরও তিনজন ঢাকা থেকে পাইকারি দামে শাড়ী, থ্রীপিছ খুলনায় এনে বিক্রি শুরু করেন। মোটামুটি লাভের মুখ দেখা যায়।
এরপর ২০১৮ সালে নক্ষত্র যুব মানব কল্যাণ সংস্থা গঠন করে খুলনা যুব উন্নয়য় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে সমাজসেবা, নারী-শিশু ও বয়স্কদের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন পাখি দত্ত।
আরও পড়ুন: ফেনীর পরশুরামে বেগম রোকেয়া দিবসে জয়িতাদের সংবর্ধনা
এর মধ্যে ২০২০ সালে দেশে করোনা শুরু হলে পাখি ও তার দল করোনা রোগীদের সেবা, খাবার সংগ্রহ বহুমুখী কাজ করে। লকডাউনে ঘরে বসে না থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে যায় করোনা রোগীদের পাশে। তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তিনি তার কাজের জন্য খুলনা মহানগরী, জেলা ও বিভাগে ২০২২ ও ২০২৩ সালে সেরা জয়িতা মনোনীত হয়। আর এবছর নারী দিবসে পেল রাষ্ট্রীয় সেরা জয়িতা পুরস্কার।
তবে অসহায়ভাবে পাখী দত্ত হিজড়া জানালো তার বৃদ্ধ অসুস্থ মা এবং সপ্তম শ্রেণীতে পড়া একমাত্র বোনকে নিয়ে তাদের দারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটানোর কথা। তার এখন দরকার একটা চাকরি।
আর না হলে তাকে আগের পেশায় ফিরে যেতে হবে। যা সে চায় না।
আরও পড়ুন: ‘সফল জননী’ হিসেবে শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পেলেন চা শ্রমিক কমলি রবিদাস
২ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনে কাঁকড়া সংগ্রহে ফিরছেন জেলেরা
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞ শেষে আবারও শুরু হয়েছে কাঁকড়া আহরণের জন্য বন বিভাগ থেকে ‘পাস-পারমিট’ প্রদান। তাই দীর্ঘ সময় অলস বসে থাকার পর সুন্দরবনে নদী ও খালে কাঁকড়া আহরণের জন্য সরঞ্জম নিয়ে ছুটছেন জেলেরা।
শুক্রবার থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ শুরু হলেও আহরণের নৌকা ও মালামাল সংগ্রহ করতে ও প্রস্তুতি নিতে দেরি হওয়ায় আজ রবিবার (৩ মার্চ) সকালে ভাটিতে বনের গহীনে প্রবেশ করতে শুরু করেছে মোংলা, রামপাল, দাকোপসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা।
পূর্ব সুন্দরবন চাঁদপাই রেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার। যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। জলভাগে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫০টি নদ-নদী ও খাল আছে। এসব খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়াও ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৫৯ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরার অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় নিষেধাজ্ঞা
করমজল বন্যপ্রাণী ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, সুন্দরবনের মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষিত ৩০টি খাল এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে সারা বছরই কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ থাকে। বাকি অংশের নদী ও খালে বন বিভাগের বৈধ পাস-পারমিটধারী প্রায় ১৫ হাজার জেলে শুধু কাঁকড়া আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
১৯৯৮ সালে কাঁকড়া রপ্তানি নীতিমালা প্রণয়নের পর থেকেই প্রতিবছর দুই মাস কাঁকড়া ধরার পাস-পারমিট বন্ধ রাখা হয় বলে জানান তিনি।
কাঁকড়া আহরণকারী মোংলার জয়মনি এলাকার আনিছুর রহমান জানান, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল কোনো লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। যারা যান, তারা প্রায় সবাই দরিদ্র। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দরিদ্র জেলেদের চরম দুর্দিন গেছে। বন্ধের দিনগুলোয় সরকারি কোনো ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের। শুক্রবার সকালে কাঁকড়া ধরার অনুমতি পেয়ে তারা আশার আলো দেখছেন।
একই এলাকার ছগির মোল্লা জানান, ‘সংসারে সাতজন সদস্য। সুন্দরবনে একদিন না গেলে তার চুলা জ্বলে না। দুই মাসের কাঁকড়া আহরণ বন্ধে দিনমজুরি করে কোনোমতে সংসার চালিয়েছি। মহাজনের কাছ থেকেও ধার নিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’
আরও পড়ুন: বন্যায় ভেসে গেছে ৮ কোটি টাকার মাছ-চিংড়ি-কাঁকড়া
জেলেদের অভিযোগ, বনবিভাগ যে উদ্দেশ্যে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তা সফল হয়নি। কারণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও গোপনে অসাধু লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে কাঁকড়া আহরণ করা হয়েছে এর বহু প্রমাণ রয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, কাঁকড়ার বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুন্দরবনে বিভিন্ন নদী-খালে দুই মাস জেলেদের কাঁকড়া আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। ২ মার্চ থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা প্রবেশ নিষিদ্ধ অভয়াশ্রম ছাড়া অন্য নদী-খালে কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন। তবে কেউ যাতে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার অনুমতি নিয়ে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারে, সেজন্য বনরক্ষীদের স্মার্ট পেট্রোলিং টহল ও অন্যান্য কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ইঞ্জিনচালিত কোনো নৌকা বা ট্রলার কাঁকড়া পরিবহনের ক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
শুধু পরিবহন করতে পারবে যে নৌকায় কাঁকড়া আহরণ করে সেই নৌকায়। আর এ ব্যতিত ট্রলার যোগে পরিবহন করছে যদি এ রকম কাউকে পাওয়া বা এর সঙ্গে বন রক্ষীদের কেউ জড়িত থাকে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান বন বিভাগের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় কাঁকড়া ধরায় ২৪ জেলে আটক
বসন্তের শুরুতেই খুলনা এখন পিঠার নগরী
বসন্তের শুরুতেই বাংলাদেশের অন্যতম বিভাগীয় নগরী খুলনায় সবত্র শুরু হয়েছে খেজুরের রসের বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী বানানো, পিঠা উৎসব এবং অতিথি আপ্যায়নের ধুম।
খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা খেজুরের রসের জন্য বিখ্যাত। বিভাগের এই দুই জেলায় খেজুরের রস দিয়ে বাড়ি বাড়ি তৈরি হচ্ছে রসের পায়েস, গুড়, পাটালি।
আবদুর রব নামে একজন গাছী জানান, তিনি এই বছর প্রায় দুই শতাধিক খেজুরের গাছ কেটেছেন। সপ্তাহে একদিন বিরতিতে গাছ কাটা হয়। দৈনিক ২০ থেকে ২৫টি ঠিলা (ভাড়) রস হয়।
যশোর খাজুরা গ্রামের রহমান গাছী জানান, দৈনিক তার ৩০ ঠিলা রস হয়। ৫ লিটার রসের দাম ৩০০ টাকা।
আরও পড়ুন: পিঠা-পুলি বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের অংশ: খাদ্যমন্ত্রী
খুলনার পিঠা বাজারের আকলিমা জানান, এখন যেহেতু বসন্তকাল এবং হালকা শীত আছে তাই পিঠার মৌসুম চলছে। আর এই কারণে রসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য দামও বেশি।
খুলনায় প্রায় ১০টি জায়গায় এখন চলছে পিঠা মেলা ও বসন্ত উৎসব। এর মধ্যে রয়েছে খুলনা প্রেসক্লাব, আহসানউল্লাহ কলেজ, মহেশ্বরপাশা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, এস ও এস শিশু পল্লীসহ খুলনা নগরীর বিভিন্ন উন্মুক্ত জায়গায়।
তবে সবচেয়ে ব্যতিক্রম হলো খুলনা সাউথ সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত সরকারি শিশু সদনে এতিম ও গরীব শিশুদের নিয়ে পিঠা উৎসব ও বসন্তবরণ পালিত হয়েছে। কিছু সময়ের জন্য হলেও এতিম ও গরীব শিশুরা আনন্দে হারিয়ে গিয়েছিল।
বাংলার আবহমান কাল ধরে চলে আসা পিঠা উৎসবে চিতই পিঠা, পাকান পিঠা, জামাই পিঠা, রসপিঠা, রসের পায়েসসহ হরেক রকমের পিঠার মেলা বসায় খুলনা এখন পিঠার নগরী।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে অনন্যা পিঠা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
খুলনার আবু নাসের হাসপাতালে জনবল সংকট, সেবা দিতে হিমশিম
জনবল সংকট সমস্যার সমাধান যেন নেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের।
২০১০ সালে ৩০ মার্চ মাত্র ৩০টি শয্যা নিয়ে শুরু হয় এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। বর্তমানে ২৫০শয্যায় উন্নীত হলেও রয়েছে জনবল সংকট।
এতো বড় হাসপাতালে মাত্র ১ জন ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। তাছাড়া চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসার সংকটতো রয়েছেই। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দ্বারা কাজ চালানো হচ্ছে।
এছাড়া গেল কয়েক মাস আগে পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন কয়েকজন সিনিয়র কনসালটেন্ট। আর সেই সঙ্গে আরও কয়েকজন চিকিৎসক বদলি হওয়ার আদেশের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ১০ টাকার টিকিট কেটে সেবা নিচ্ছেন। যেখানে রয়েছে কার্ডিওলজি বিভাগ সিসিইউ, পোস্ট সিসিইউ, গাইনি, নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, অর্থপেডিক্স মেডিসিন, ডায়াবেটিস, নিউরো মেডিসিন, মেডিসিন, ফিজিওথ্যারাপি, নিউরো সার্জারি, হোমো ডায়ালাইসিস, দন্ত বিভাগ, বার্ন এন্ড প্লাস্টিক ইউনিটসহ ইনটেনসিভ কেয়ার আইসিইউ সাপোর্টের ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৭০ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে লাইসেন্স আছে ৯৮টির
এক সময় যা গরীব অসহায় মানুষের জন্য এ সব ব্যয়বহুল চিকিৎসা ছিল শুধুই স্বপ্ন। পাশাপাশি মুমূর্ষু রোগীদের জন্য কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য মনিটর, আলট্রাসনো, সিটিস্কান, এমআরআই, ইকো, ইটিটি, ইসিজি, ইটিটি, ডক শর্ট দেওয়ার ব্যবস্থাসহ কার্ডিয়াক মনিটর, লাইফ সাপোর্ট ভেন্টিলেটার ও স্বল্প খরচে প্যাথলজি পরীক্ষার সুবিধা রয়েছে।
হাসপাতালটিতে গরীব অসহায় রোগী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয় না। এ ছাড়া স্বল্প খরচে এমআরআই, এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইকোসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা রয়েছে। তবে এত সব থাকলেও নেই চাহিদামতো জনবল। বিশেষ করে ৪র্থ শ্রেণীর চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।
এখানে প্রতিনিয়ত বহির্বিভাগের সামনে রোগীদের চিৎকার, চেঁচামেচি শোনা যায়। তবে, এর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। একজন মাত্র টেবিল বয়কে রোগীর টিকিট জমা নিতে দেখা গেছে।
ভুক্তভোগী রোগী শেখ রহিমা বলেন, ‘আমি কার্ডিওলজি বিভাগে ১১২নং কক্ষে টিকিট জমা দিতে পারিনি। কারণ হলো অতিরিক্ত রোগীর চাপ, আর দায়িত্বে আছে মাত্র একজন টেবিল বয়। আমি এতো ভিড়ের মধ্যে টিকিট জমা দিতে পারিনি। এখন বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এর থেকে ভালো হবে টাকা কিছু খরচ করে ডাক্তারের ব্যক্তিগত চেম্বারে গিয়ে নিরিবিলি সেবা নেওয়া।’
আরও পড়ুন: পরিবেশগত ছাড়পত্রের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ, খুলনায় তবুও চলছে ইটভাটা
নাম না প্রকাশ করার শর্তে চুক্তিভিত্তিক এক কর্মচারী বলেন, ‘প্রতিদিন হাজার, হাজার রোগী বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসেন। আমাদের উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। তারপরও চাকরি করতে হয়। এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে কী করব!’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে তিন শিফট ডিউটি করতে হয়। আমাদের ১৩৩ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে চালক, মালীসহ অন্যান্য কর্মচারী আছেন। যারা রোগীর সেবার কাজে নিয়োজিত নেই। অন্যান্য হাসপাতালে সরকারিভাবে ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী থাকলেও আমাদের নেই। প্রতি বছর শোনা যায় জনবল বৃদ্ধি হবে, কষ্ট কম হবে। তবে এখনও আগের মত অবস্থানে আছে।’
এ ব্যাপারে হাপাতালের পরিচালক ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, জনবল সংকট আছে। এছাড়া আরও কিছু শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কারণে আরও জনবল সংকট হয়ে গেছে। বিশেষ করে ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল অফিসার ও আনসার সদস্য, চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালে জনবল ঘাটতি থাকলেও সেবা বন্ধ করা যাবে না। হয়তো একটু বেশি পরিশ্রম করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক জনবল সংকট আছে, বৃদ্ধিকরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স কাউন্টার!
খুলনায় ২৭০ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে লাইসেন্স আছে ৯৮টির
খুলনা মহানগরীতে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ১০টি। এছাড়া অনলাইনে শুধু আবেদনের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এমন সংখ্যা ১৪।
লাইসেন্স পেলেও বছরের পর বছর নবায়ন না করেই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে এমন সংখ্যাও কম নয়। স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশ এবং সঠিক তদারকি না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ব্যাপারে ছাড় না দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এসব অননুমোদিত ও লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হবে।’
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খুলনা শহরে ২৭০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে। এর মধ্যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন রয়েছে ৯৮ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের। এছাড়া নবায়ন হয়নি এমন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৫৭। এর মধ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ১০২টি ও ক্লিনিক ৫৫টি। এগুলোর মধ্যে ৪ বছর ধরে নবায়ন হয়নি এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরের অভয়নগরে ৩টি ক্লিনিককে ১.৫৫ লাখ টাকা জরিমানা
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র মতে, নগরীতে কোনো আবেদন ছাড়াই এমন লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে ১০টি। এর মধ্যে রয়েছে খুলনা শিশু হাসপাতাল (ক্লিনিক), খুলনা শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডায়াগনস্টিক), খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতাল, ডায়াবেটিক সমিতি খুলনা (ডায়াগনস্টিক), সূর্যের হাসি নেটওয়ার্ক-১ (ডায়াগনস্টিক), সূর্যের হাসি নেটওয়ার্ক-২ (ডায়াগনস্টিক), জাপান মেডিকেল সেন্টার (খুলনা শাখা-১) এবং নিউ পথ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র।
এছাড়া নগরীতে শুধু অনলাইনে আবেদন করেই বছরের পর বছর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা করছে কিন্তু লাইসেন্স নেই এমন অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৪। এর মধ্যে রয়েছে- বয়রা সেন্ট্রাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বয়ো ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, নূরজাহান ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, কালিয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কালিয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পাল্প ডেন্টাল সেন্টার, স্বাস্থ্য সেবা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টার, স্বাস্থ্য সেবা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগণস্টিক সেন্টার, মাই মেডিকেল ল্যাব ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, জেনারেল ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড রির্সোস সেন্টার, বেস্ট কেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার-১, বেস্ট কেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার-২, রহিমা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার এবং শাবাব ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার।
আরও পড়ুন: খুলনায় নিবন্ধনহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা করছে সিভিল সার্জন অফিস
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৮২ সালের মেডিক্যাল অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালানোর সুযোগ নেই। এসব বৈধ-অবৈধ অনেক হাসপাতালে প্রায়ই ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে।
ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে জড়িত এমন একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্লিনিকের জন্য লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা এবং ভ্যাট দিতে হয় ৭ হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলে নবায়নে খরচ পড়ে ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা।
এছাড়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন করতে খরচ পড়ে ২৫ হাজার টাকা। যার ভ্যাট হয় ৩ হাজার ৭৫০ টাকা। এর বাইরে ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশগত ছাড়পত্র, নারকোটিক পারমিট, কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট এবং ফায়ার সার্ভিসের ক্ষেত্রে নবায়নে আলাদা টাকা খরচ করতে হয়। সেই হিসাবে ওই দুইটি নবায়নের জন্য খরচ ধরলে এক বছরে ১৫৭ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মোট সরকার রাজস্ব আয় হবে ৫৭ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
খুলনা সিভিল সার্জন ডা. মো. সবিজুর রহমান বলেন, ‘খুলনা জেলায় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম পাওয়ায় এ পর্যন্ত ৫-৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৪টি
লাইসেন্সবিহীন ও অবৈধ ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারেরর বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি যাদের লাইসেন্স আছে কিন্তু শর্ত অনুযায়ী পরিচালনা করছেন না তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, খুলনা জেলায় অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কতগুলো আছে সে বিষয়ে খোঁজ নিতে একটি টিম মাঠে কাজ করছে।
খুলনা জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘খুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, অনুমোদনহীন ল্যাব পরিচালনা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অপারেশন পরিচালনার নগরীতে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও লাইসেন্সের কাগজপত্রে ত্রুটি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানা যায়, একটি হাসপাতাল পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বৈধ সনদ, নিয়মিত নবায়ন, নারকোটিক পারমিট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), পরিবেশগত ছাড়পত্র, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (ক্ষতিকর ও অক্ষতিকর) সংক্রান্ত ছাড়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সত্যায়িত কপি সংরক্ষণ করতে হয়।
বিশেষ সেবার ক্ষেত্রে প্রতিটির শয্যা সংখ্যা, সেবা প্রদানকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের নাম-ঠিকানা, ছবি, বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন, বিশেষজ্ঞ সনদ, নিয়োগ ও যোগদান বা সম্মতিপত্রের প্রয়োজন হবে।
এছাড়া, চিকিৎসা সাহায্যকারীদের তালিকা, যন্ত্রপাতির তালিকা, বর্তমানে যেসব অস্ত্রোপচার ও এ সম্পর্কিত যন্ত্রপাতির তালিকা হাসপাতাল প্রধানের সইসহ সংরক্ষণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
খুলনায় নিবন্ধনহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা করছে সিভিল সার্জন অফিস
খুলনা জেলার ৯টি উপজেলায় ব্যক্তিমালিকানাধীন ৮০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ৫৬টি ক্লিনিকের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলোর নেই। এছাড়া এসব নিবন্ধনহীন ব্যক্তিমালিকানাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদারকি না করার অভিযোগ রয়েছে। তবে তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে খুলনা সিভিল সার্জন অফিস।
ইতোমধ্যে খুলনা জেলার ৫টি উপজেলার তালিকা করা হয়েছে। বাকি আরও ৪টি উপজেলায় কতটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নেই তার তালিকা তৈরি হচ্ছে। এমনকি প্রতিটি স্বাস্থ্য উপজেলা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ের (ইউএইচএফপিও) মাধ্যমে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অধিকাংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স থাকলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা। প্রায় শতকরা ৯৮ শতাংশ এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো নীতিমালা উপেক্ষা করছে। আমরা এসব বিষয় অবগত থাকলেও প্রাথমিক অবস্থায় কিছু করতে পারছি না। আমাদের নেই প্রশাসনিক ক্ষমতা বা পর্যাপ্ত জনবল।’
আরও পড়ুন: খুলনায় শীত উপেক্ষা করে ঝিনুক কুড়িয়ে বাড়তি আয়ে খুশি এলাকাবাসী
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন, প্রভাবশালী মহলদের ছাড়াও রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। পাশাপাশি আমাদের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে অনেকটা সময়ে আমাদের নিরব থাকতে হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনায় আবারও কাজের গতি ফিরছে। আমরা এবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি।’
সচেতন নাগরিক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘এর আগেও গেল দুই বছর দেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর খুলনায় অভিযান চালিয়ে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মহানগরীতে লাইসেন্সবিহীন ৩৯ ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা দেয়। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে বন্ধ করে দেয়। তবে আবারও সবগুলো প্রতিষ্ঠান ব্যবসা পরিচালনা করছে আগের মতো। বন্ধ হয়ে গেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সকল অভিযান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবারও শুনছি অবৈধ এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ধরনের কাজকে অবশ্যই আমি সাধুবাদ জানাই। স্বাস্থ্য মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। এই মৌলিক চাহিদা ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। সরকার সাধারণ মানুষের জন্য সরকারিভাবে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি ওষুধ পর্যন্ত বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও কেন এসব অবৈধ ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দৌরাত্ম্য থামছে না। আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে।’
এছাড়া দেখা যায় প্রায় সময়ে প্রশাসনের হাতে ভুয়া ডাক্তার আটক হচ্ছে। এছাড়া ভুয়া মনগড়া পরীক্ষার রিপোর্ট দিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ বলেও জানান মো. খালিদ হোসেন।
এ ব্যাপারে খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিচ্ছি কতজন ব্যক্তির স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান আছে। অবৈধ এসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।’
আরও পড়ুন: গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
সরকারি বিএল কলেজে আবাসন-পরিবহন সংকট চরমে
খুলনার সরকারি ব্রজলাল কলেজ (বিএল কলেজ) প্রতিষ্ঠার ১২১ বছর পার হলেও শিক্ষার্থীদের আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। বছরের পর বছর এ দুই সংকটে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে শিক্ষার্থীদের।
খুলনা মহানগরী থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে দৌলতপুরের ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত এ কলেজে ১৯০২ সালের ২৭ জুলাই থেকে পাঠদান শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪৯ জন ছাত্র নিয়ে এফএ (ফার্স্ট আর্টস) ক্লাস শুরু হয়। আবাসিক কলেজ হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল এবং এটি ছিল অবিভক্ত বঙ্গদেশের প্রথম আবাসিক কলেজ।
কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিক, সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিকসহ ২১টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং ২২ বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে ২৫ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটির একাডেমিক ভবনসহ অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়ন হয়নি শুধু আবাসিক হলের। নির্মিত হয়নি নতুন কোনো ছাত্রাবাস। ২৫ সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আটটি আবাসিক হলে আবাসন সুবিধার রয়েছে মাত্র সাড়ে সাতশ’ ছাত্র-ছাত্রীর। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রাবাসে ৪৩১ জন ছাত্র এবং তিনটি ছাত্রীনিবাসে ৩১৯ জন আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য।
আরও পড়ুন: গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের পাঁচটি ছাত্রাবাসের বেহাল অবস্থা। কক্ষের বিভিন্ন স্থানে ফাটল। পলেস্তারা খসে পড়েছে অনেক স্থানে। গ্রিলগুলো বাঁকা হয়ে গেছে। পিলারের ঢালাই খুলে রড বেরিয়ে আছে। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রাবাসে থাকছেন শিক্ষার্থীরা।
শহীদ তিতুমীর, ড. জোহা এবং হাজী মহসীন হলের প্রায় তিনশ’ ছাত্র জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হলে থেকে পড়াশোনা করছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং সুবোধ চন্দ্র হলের ছাত্ররা টিনের চালের ঘরের হলে থাকেন। ২০২২ সালে সর্বশেষ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামে একটি ছাত্রীনিবাস তৈরি করা হয়।
২৫ হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী পরিবহনের জন্য কলেজটিতে বাস রয়েছে মাত্র ছয়টি। প্রতিদিন নওয়াপাড়া থেকে ডুমুরিয়া পর্যন্ত ছয়টি রুট থেকে ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেওয়া করা হয়। প্রতিটি ৭০ সিটের বাসে ১৩০ থেকে ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী আনা-নেওয়া করা হয়।
কলেজের শিক্ষার্থী হাসান উজ জামান বলেন, ‘বিএল কলেজে পাঁচটি ছাত্রাবাস রয়েছে। যেগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শহীদ তিতুমীর, ড. জোহা এবং হাজী মহসীন হলে প্রায় তিনশ’ ছাত্র থাকে। অধিকাংশরা ঝুঁকি নিয়ে হলে থেকে পড়াশোনা করে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম এবং সুবোধ চন্দ্র হলে ছাদ না থাকায় গরমের দিনে অনেক গরম সহ্য করা লাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ২৫ হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য আটটি আবাসিক হলে আবাসন সুবিধা রয়েছে মোটে এক হাজারের মতো। এজন্য সবদিক বিবেচনা করে আমাদের আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
আরও পড়ুন: উদ্বোধনের দুই মাস পরও চালু হয়নি খুলনা-মোংলা রেললাইন
হাজী মুহাম্মদ মহাসীন হলের ছাত্র মো. আলিম হোসেন জানান, হলে খাওয়ায় অনেক সমস্যা। ঠিকমতো মিল চললেও খাবারের মান অনেক নিম্নমানের। পাশাপাশি আলোর একটু স্বল্পতা রয়েছে। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য বিদ্যুতের ওয়ারিং ব্যবস্থা নতুন করে করতে হবে।
মন্নুজান হলের ছাত্রী সুতপা বসু বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আমাদের হলটা সংস্কারের অভাবে পড়ে আছে। বাধ্য হয়ে আমাদের অন্য হলে গিয়ে থাকতে হয়। এজন্য দ্রুতই মন্নুজান হলটা সংস্কার করা হলে মেয়েদের আবাসন সংকট অনেকটা কমবে।’
দৌলতপুরের একটি মেসে থাকেন এম এম মিলন নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘কলেজে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজারের বেশি। কিন্তু সে তুলনায় হলগুলোতে সিটের সংখ্যা অনেক কম। এজন্য চাইলেও আমরা হলে থাকতে পারি না। নতুন করে আরও দু-একটি হলের ব্যবস্থা হলে আমাদের সবার জন্য সুবিধা হতো।’
পরিবহন সংকট প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা বলে বাসের দুটি ট্রিপ থেকে একটি ট্রিপ বন্ধ করে দেয়। ফলে বিভিন্ন রুটের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। বাসে সিটের অপ্রতুলতায় দাঁড়িয়ে পর্যন্ত যাওয়ার জায়গা হচ্ছে না। ফলে বাড়তি টাকা খরচ করে কলেজে যাওয়া-আসা করা লাগছে।
পরিবহন ও আবাসন সংকট সম্পর্কে জানতে চাইলে সরকারি বিএল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শরীফ আতিকুজ্জামান বলেন, ‘আবাসন সমস্যা দীর্ঘদিনের। সরকারের এ নিয়ে আপাতত কোনো পলিসি নেই। ছাত্রী হল তৈরি হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রদের কোনো হল তৈরি হয় না। কোনো কোনো জায়গায় ছাত্রদের হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখানে যে ছাত্র হলগুলো আছে সেগুলো আমরা সংস্কারের ব্যবস্থা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাড়িতো ছাত্রদের অর্থায়নে কেনা ও তত্ত্বাবধায়ন করা হয়। এ খাতে সরকারের কোনো বরাদ্দ থাকে না।’
আরও পড়ুন: খুলনায় সরিষার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা