খুলনা
কয়রায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে সহস্রাধিক মানুষ
টিকে থাকার লড়াইয়ে ফের খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের ভেঙে যাওয়া রিংবাঁধ নির্মাণে নেমেছেন স্থানীয় প্রায় দুই হাজার মানুষ। কিন্তু বার বারই ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। এর আগে একই স্থানে ১৮ জুলাই (সোমবার) দুই হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে সক্ষম হন।
মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে ফের বাঁধ নির্মাণে স্বেচ্ছায় এই কাজে অংশগ্রহণ করেছেন উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার মানুষ।
এলাকাবাসী জানান, গত ১৭ জুলাই (রবিবার) ভোর রাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ প্লোডারের দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চরামুখা খালের গোড়া এলাকার বেড়িবাঁধের প্রায় ২০০ মিটার ভাটার টানে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরদিন ১৮ জুলাই (সোমবার) স্বেচ্ছাশ্রমে দুই হাজার মানুষ রিংবাঁধ দিয়ে পানি আটকাতে সক্ষম হন। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলে ওই স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কাজ না করায় গত রবিবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে পুনরায় রিংবাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের লোনা পানি বিস্তীর্ণ জনপদে ডুকে পড়ে।
তারা জানান, নদী ভাঙনে ঘর-বাড়ি, জমি-জমা সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১০ গ্রামের অনেক পরিবার। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওই ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। অনেকেই আবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন: পাইকগাছায় ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
বাঁধ নির্মাণে যোগ দেয়া জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার জিএম মাহবুবুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাঁশ ও ব্যাগ স্বল্পতায় কাজে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড যে সরঞ্জামাদি দিয়েছিল সেটা যথেষ্ট ছিল না। যথেষ্ট মানুষ থাকার পরেও বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন করতে পারিনি।
দক্ষিণ বেদকাশী গ্রামের আক্তারুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনের কারণে আমার ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাঁধ না হলে ছেলে মেয়ে নিয়ে কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। সে কারণে বাঁধার কাজে নেমে পড়েছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মাসুদ রানা বলেন, পানিতে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে তিন হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের এবং ডুবে গেছে আমনের বীজতলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৫ হাজার মানুষ। ক্রমাগত ক্ষতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
আরও পড়ুন: কয়রায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম গাফিলতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এই ইউপি সদস্য।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, একই স্থানে বারবার ভাঙা দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এই ভোগান্তি।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ওই এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজটি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত জনমনে স্বস্তি নেই। কারণ বিগত ১০ বছরে জরুরি কাজের নামে কয়রার বেড়ি বাঁধ সংষ্কার ও নির্মাণ বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ১৪২ কোটি ৫৮ লাখ আট হাজার টাকারও বেশি। অথচ সেইসব জোড়াতালিতেও লুটপাট বাঁধ সংস্কারের নামে যেটুকু কাজ হয়, সেখানেও রয়েছে আমলা, কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ঠিকাদার মিলিয়ে সরকারি তথা জনগণের অর্থ লুটপাটের অসাধু চক্র।
এই নাগরিক নেতা বলেন, টেন্ডারে কাজ পেয়ে মূল ঠিকাদার নিজের লাভটা রেখে আরেক জনের কাছে কাজটা বিক্রি করে দেন। এভাবে হাতবদল হলে কাজের মান খারাপ হতে বাধ্য, এতদিন এটাই দেখে এসেছি। তাই এবার আর এমনটি চাই না।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন প্লাবিত
তিনি বলেন, কয়রায় নদী ভাঙনের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তাঘাটে কিংবা পরের জমিতে আশ্রয় নেন। অনেকে আবার সর্বস্ব হারিয়ে ভাসমান কচুরিপানার মতো শহর ও বন্দরে পাড়ি দেন। যাদের প্রকৃত হিসাব সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। শুধু দক্ষিণ বেদকাশী নয়, উপকূলীয় এ উপজেলার প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষকে নদীভাঙনের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয়। একটি টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে এতোদিন কয়রার মানুষ আন্দোলন করে আসছিল। এখন বরাদ্দ হয়েছে, এবার আন্দোলন সচ্ছতার সঙ্গে কাজটি বাস্তবায়নের বিষয়টি বুঝে নেয়ার।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ণের বোর্ডের (বিভাগ-২) উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পুর) মো. মশিউল আবেদিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ভেঙে যাওয়া রিংবাঁধ মেরামতের মাধ্যমে পানি আটকানোর জন্য মানুষ কাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে বস্তা ও বাঁশ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে। পানি আটকানোর পর মূল ক্লোজারে কাজ করা হবে।
পাইকগাছায় ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
বৈরী আবহাওয়ায় খুলনার পাইকগাছায় শিবসার নদীতে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদার ভেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রবিবার বিকালে প্রবল জোয়ারে উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৩নং পোল্ডারের বয়ারঝাঁপা এলাকার ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে প্রায় ৩০ ফুট ওয়াপদার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। এতে কয়েকশত ছোটবড় মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে।
শিগগিরই বাঁধ নির্মাণ না হলে এই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ গ্রাম লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন প্লাবিত
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, তার ইউনিয়নে শিবসা নদীর তীরবর্তী ওয়াপদার দুর্বল ভেড়িবাঁধটি ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাই ভাটার সময় উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে তিনিসহ স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্ত ভেড়িবাঁধটির মেরামতের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজু হাওলাদার জানান, বাঁধ ভাঙার খবরে পেয়ে তিনি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সরবরাহকৃত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি প্রাথমিকভাবে মেরামতের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।
আরও পড়ুন: উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটির সংস্কারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। ভাটার সময় স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধটির সংস্কারে কাজ শুরু করা হবে।
খুলনায় মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ২ জন উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
খুলনা মহানগরীতে অভিযান চালিয়ে ফুলবাড়ীগেট শক্তি ফাউন্ডেশনের সভাপতিসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে খানজাহান আলী থানা পুলিশ। এ সময় তাদের স্বীকারোক্তিতে গিলাতলা দক্ষিণ পাড়ার অপহৃত মো. জিহাদ শেখ ও মো. আলামিন হোসেনকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শনিবার জিহাদ শেখের বাবা মো. আসলাম শেখ বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলা করেছেন।
শুক্রবার ওই দু’জনকে অপহরণ করা হয়। ওই দিনই রাত ৪টার দিকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) পকেট গেটের সামনে থেকে অপহরণকারীদে গ্রেপ্তার এবং অপহৃত দুজনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: নতুন জামার টাকার জন্য শিশুকে অপহরণের পর হত্যা, ২ স্কুলছাত্র গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-শক্তি ফাউন্ডেশনের সভাপতি উজ্জল (২৭), তেলিগাতী সরদার পাড়া এলাকার হান্নান শেখের ছেলে তরিকুল (২০) ও একই এলাকার আবু বক্কারের ছেলে মো. মুন্না হোসেন (২৬)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে গিলাতলা দক্ষিণপাড়ার সামাদ শেখের ছেলে ভ্যানচালক জিহাদ শেখ ভ্যান নিয়ে বের হয়। রাত সোয়া ৮টার দিকে জিহাদের ছোট ভাই জিয়ারুলের মোবাইলে ফোন দিয়ে জিহাদ বলে আমাকে আটকিয়ে রেখেছে, ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আয়, এরপরই ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন করে অপহরণকারীরা জিহাদের ছোট ভাই জিয়ারুলকে একটা বিকাশ নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলে। জিহাদের বাবা বিষয়টি খানজাহান আলী থানার ওসিকে অবহিত করলে খানজাহান আলী থানা পুলিশ তৎক্ষণিকভাবে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়।
জিয়ারুল অপহরণকারীদের ফোনে বলে বিকাশের দোকান বন্ধ সরাসরি ছাড়া টাকা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তখন ফোনে তাদেরকে অপহরণকারীরা কুয়েট পকেট গেটের সামনে যেতে বলে। জিহাদের বাবা আসলাম শুক্রবার রাত ৪টার দিকে কুয়েট পকেট গেটে গেলে উজ্জল,তরিকুল, মো. মুন্না হোসেন সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে পুলিশ তাদেরকে আটক করে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ২ ‘অপহরণকারী’ আটক, ভুক্তভোগী উদ্ধার
অপহরণকারীদের দেয়া তথ্যমতে, তেলিগাতী মধ্যপাড়া ক্লাব মোড়স্থ মৃত শেখ শাহাজানের ভাড়াটিয়া মো. জামিরুল ইসলামের ভাড়া বাসা থেকে অপহরণকারীদের হেফাজতে থাকা মো. জিহাদ শেখ ও মো. আলামিন হোসেনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
খানজাহান আলী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন খান জানান, আটক আসামিদের শনিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেলহাজতে পাঠায়।
খুলনায় বাস-ট্রাকের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল ট্রাকচালক ও ৯ গরুর
খুলনার ডুমুরিয়ার কাঞ্চনপুর ঈদগাহ মোড়ে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক ও ৯টি গরুর প্রাণহানি হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ট্রাকচালক শাহিনুর মোড়ল (৪৫) যশোরের কেশবপুর উপজেলার হাড়িয়াঘোপ এলাকার হায়দার আলি মোড়লের ছেলে।
আরও পড়ুন: পাবনায় ট্রাকচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
চুকনগর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান জানান, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস সাতক্ষীরা দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা গরুবাহী একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকচালক শাহিনুরসহ তিন জন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে শাহিনুর মারা যান।
এছাড়া ট্রাকে থাকা ৯টি গরুর প্রাণহানি হয়েছে বলে জানান ওসি।
চালককে হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাইয়ের চেষ্টা, খুলনায় আটক ২
খুলনায় চালক হত্যার পর ইজিবাইক ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় দুজনকে আটক করা হলেও তদন্তের সার্থে তাদের নাম ওপরিচয় জানায়নি পুলিশ।
শুক্রবার রাতের কোনো এক সময় হত্যার এই ঘটনা ঘটে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে খুলনা মহানগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের আলী ক্লাবের উল্টো দিকের দারুস সালাম মসজিদের পাশে কচুরিপানার ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: নাটোরে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই
নিহত নয়ন (১৭) খুলনার বাটিয়াঘাটা উপজেলার বাসিন্দা।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, বটিয়াঘাটার ইজিবাইক চালক নয়নকে হত্যা পর ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল দুর্বৃত্তরা। পথে আমাদের টহল পুলিশ ইজিবাইকসহ দুজনকে আটক করে। আরও তথ্য বের করার জন্য আটক ব্যক্তিদের নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
খুলনায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
খুলনায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক নিহত এবং আরও একজন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরীর হরিণটানা থানাধীন গাজীর মার্কেটের সামনে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত মেজবাহ উদ্দীন (২২) সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা উপজেলার নজরুল ইসলামের ছেলে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কিশোর নিহত
স্থানীয়রা জানান, রাত পৌনে ৮ টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে জয়বাংলা মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। মোটরসাইকেলটি ওই এলাকার গাজী মার্কেটের নিকট পৌঁছালে পেছন থেকে একটি ট্রাক তাদের ধাক্কা দেয়। এতে দুজন ছিটকে পড়ে গেলে ট্রাকের একটি চাকা মোটরসাইকেল চালক মেজবাহর শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায় এবং ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন। এই সময় মাসুম বিল্লাহ নামে অপর মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১
হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমদাদুল হক জানান, দুর্ঘটনায় হতাহতরা বৃহস্পতিবার সকালে খুলনায় কাজে এসেছিলেন। কাজ শেষ করে রাতে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় শিকার হন। তবে এই ঘটনায় ট্রাক বা চালক কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
খুলনায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা!
খুলনায় চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে এক ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জোড়াগেট বিশ্বাসপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এমদাদুল হক (৫০) খুলনা মহানগরীর বানরগাতী এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে এবং পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী।
খুলনা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মো. খবির আহমেদ বলেন, খুলনা রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া রাজশাহীগামী সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মেহেদী আত্মহত্যা করেছেন। ট্রেনে কাটা পড়ে তার শরীর চার টুকরো হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কানে হেডফোন, ট্রেনের ধাক্কায় যুবক নিহত
নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে রেলওয়ে থানার উপপরির্শক (এসআই) মো. ইদ্রিস বলেন, মেহেদী ঋণগ্রস্ত ছিলেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে গেলেন যুবক
সুন্দরবনের খালে গোসল করতে নেমে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে গেলেন কলেজ পড়ুয়া এক যুবক। সম্প্রতি সুন্দরবনের ঢাংমারী খালে গোসল করতে নামলে একটি কুমির আক্রমণ করে ওই যুবককে।
ওই যুবকের নাম রাজু হাওলাদার (২৪)। তিনি খুলনার দাকোপ উপজেলার পূর্ব ঢাংমারী এলাকার খ্রিষ্টান পাড়ার বাসিন্দা নজির হাওলাদারের ছেলে।
কুমিরের আক্রমণ থেকে ফিরে এসে লোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে তিনি নিজ বাড়ি লাগোয়া সুন্দরবনের ঢাংমারী খালে গোসল করতে নামেন। এক পর্যায়ে কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে মাথায় শ্যাম্পু মাখছিলেন তিনি। এই সময় হঠাৎ করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে একটি কুমির তাকে আক্রমণ করে। কুমিরটি রাজুর ডান পায়ের হাঁটুর ওপরের দিকে কামড়ে ধরে প্রায় ১৫-১৬ হাত পানির গভীরে টেনে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কুমিরের চোখে ঘুষি মেরে প্রাণে বাঁচল কিশোর
রাজু কুমিরটির সঙ্গে ধস্তাধস্তি করার একপর্যায়ে কুমিরের চোখে আঙুল ঢুকিয়ে দেয়। কুমিরের চোখে আঘাত করলে কুমিরটি রাজুর পায়ের কামড় ছেড়ে দেয়। তখন রাজু দ্রুত উপড়ে উঠে আসে। তখন তিনি দ্রুত নদী থেকে উঠে মা-বাবা বলে চিৎকার করেন। তাৎক্ষণিক তার মা-বাবা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
কুমিরের কামড়ে রাজুর পায়ের ক্ষত জায়গায় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তিনি এখন অনেকটা সুস্থ হয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেন।
রাজুর বাবা নজরুল হাওলাদার, মা মরিয়ম বেগম এবং বড় ভাই মনির হাওলাদার ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে জানান, তারাসহ গ্রামের অধিকাংশ লোকজন ঢাংমারী খালে নেমে মাছ ধরা ও গোছলসহ বিভিন্ন কাজে করে থাকেন। কিন্তু কুমির কখনও কাউকে আক্রমণ করেনি। তবে হাঁস-মুরগি ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু রাজুকে এভাবে আক্রমণ করবে এটা কেউ ভাবতে পারেননি।
তবে তারা রাজু বেঁচে ফেরায় সন্তোষ প্রকাশ করলেও তার চিকিৎসার অর্থ যোগান নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বাড়ির একটি ছাগল বিক্রি করে তার চিকিৎসা চলছে। কিন্তু বন বিভাগের পক্ষ থেকে বা কোনো জনপ্রতিনিধি তাদের সহায়তায় এগেয়ি আসেনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সুন্দরবনে ৩টি কুমির অবমুক্ত
এ বিষয়ে দরিদ্র এ পরিবারের পক্ষে সহায়তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তারা।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. সাইফুল বারী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাংমারী খালে প্রায় সময়ই বড় বড় দুইটি কুমির দেখা যায়। তাই বনবিভাগের পক্ষ থেকে খালের পাড়ের আশপাশের মানুষদের খালে নামতে প্রতিনিয়ত নিষেধ করা হচ্ছে। তারপরও তারা তা না শুনে খালে গোসল ও মাছ ধরতে নামেন। ফলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
খুলনায় ধর্ষণ মামলায় আসামির যাবজ্জীবন
খুলনায় ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত এক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারদাণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম করাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার আসামির উপস্থিতিতে খুলনা নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আ. ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মাসুদ গাজী (৪৫) খানজাহান আলী থানার মাত্তমডাঙ্গা পূর্বপাড়া এলাকার আব্দুর রহমান গাজীর ছেলে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে শিশু ধর্ষণের দায়ে ৩ জনের যাবজ্জীবন
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী কিশোরীর মা নেই। বাবা রাজমিস্ত্রির সহকারী এবং তিনি বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে কাজ করেন। সেই সুবাদে তার ১৬ বছর বয়সী মেয়ে ও আট বছর বয়সী ছেলেকে বাড়িতে একা থাকতে হয়।
২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর আসামি কিশোরীকে বাসায় ডেকে নিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে আসামি ওই কিশোরীকে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করে এবং কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। এতে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বাবা বাড়ি আসলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। তিনি মাসুদের স্ত্রীকে বিষয়টি জানালে উল্টা তাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: রংপুরে ধর্ষণের দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন
পরে স্থানীয়দের পরামর্শে কিশোরীর বাবা ২০১৬ সালের ২০ জুন বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা করেন। খানজাহান আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রোকনুজ্জামান একই বছরের ১১ ডিসেম্বর মাসুদকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
খুলনায় চলছে ২৪ ঘণ্টার ট্যাংকলরি ধর্মঘট, তেল উত্তোলন-বিপণন বন্ধ
কমিশন বৃদ্ধি ও ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি (ধর্মঘট) পালন করছেন জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। রবিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৮ টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেলের পাম্প মালিক সমিতি, খুলনা বিভাগ কোন ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন না করে ২৪ ঘণ্টার এ ঘর্মঘট পালন করছেন।
ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিকরা পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল ডিপোর তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রেখে এ কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে খুলনাসহ ১৫ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ থাকলেও এ সময়ে ফিলিং স্টেশন (পাম্প) থেকে তেল (নিজ নিজ পাম্পে মজুদকৃত) সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ধর্মঘটের ফলে অতিরিক্ত ট্রাক-লরির চাপে ফিলিং স্টেশন ও ট্রাক-লরি স্ট্যান্ডে জায়গা না হওয়ায় ট্রাক-লরিগুলোকে সড়ক-মহাসড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের মূল্যের (পূর্ব মূল্য) ২.৭১ টাকা কমিশন দেয়া হয়। অতীতে তারা (ট্যাংকলরি মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেলের পাম্প মালিক সমিতি) কমিশন বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে (বিপিসি, জ্বালানি মন্ত্রণালয়) একাধিকবার আবেদন করেও কোন ফলাফল পায়নি।
জ্বালানি তেলের মূল্য বর্তমানে অনেক গুনে বৃদ্ধি পেলেও কমিশনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে ট্যাংকলরি মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেলের পাম্প মালিক সমিতি তাদের কমিশন প্রতি লিটার জ্বালানি তেলের বর্তমান মূল্যের ৭.৫ শতাংশ হারে প্রদানের দাবিতে আগামী ২৪ ঘণ্টা খুলনা বিভাগের কোন ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন করছে না। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে আরও কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান জ্বালানি ব্যবসায়ীরা।
পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: রাজধানীতে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ