বরগুনা
বরগুনায় ইলিশ শিকারে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন যুবক
বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারে গিয়ে গভীর রাতে ট্রলার থেকে পড়ে নিখোঁজ হন সুজন মল্লিক নামে এক জেলে। ঘটনার তিন দিন পর ওই জেলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের গোড়া পদ্মা এলাকায় লাশটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়িতে অটোচালকের লাশ উদ্ধার
নিহত সুজন বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামের আক্কাস মিয়ার ছেলে।
বরগুনা সদর থানার স্থানীয় বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার রাতে ‘এমভি মা’ নামের ট্রলারে ১৫ জন জেলে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারে রওনা দেন। কিন্তু পথে ওই ট্রলার থেকে পড়ে সুজন নামের এক জেলে ওই রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন। এঘটনার তিন দিন পর সোমবার রাতে নলটোনা ইউনিয়নের গোড়া পদ্মা এলাকায় তাকে ভাসতে দেখা যায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, স্থানীয়রা লাশ ভাসতে দেখে ৯৯৯-এ ফোন করে দিয়ে জানালে পুলিশ গিয়ে ওই জেলের লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিখোঁজের ৩দিন পর যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার, আটক ১
মাগুরায় নিজ ঘর থেকে শিক্ষকের লাশ উদ্ধার
জামিন চেয়ে হাইকোর্টে মিন্নির আবেদন
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। রবিবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
খালাস পেয়েছিলেন- মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
আরও পড়ুন: রিফাত হত্যা: মিন্নিসহ ২ জনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ
আদালতে আবেদনের পক্ষে আইনজীবী রয়েছেন জেড আই খান পান্না ও জামিউল হক ফয়সাল প্রমুখ।
মিন্নির আইনজীবী ফয়সাল বলেন, মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মিন্নির আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন। বিচারাধীন আপিলে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। এখন যে কোন দিন শুনানি হবে।
এর আগে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর এ মামলায় খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন মিন্নি।
২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। বাকি চারজনকে দেয়া হয় খালাস।
পরে নিয়ম অনুসারে একই বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে। পাশাপাশি ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করেন।
অপরদিকে বিচার শেষে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান। রায়ে ছয়জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, চারজনকে পাঁচ বছর এবং একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। বাকি তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।
আরও পড়ুন: রিফাত শরীফ হত্যা: খালাস চেয়ে মিন্নির হাইকোর্টে আপিল
রিফাত হত্যাকাণ্ড: স্ত্রী মিন্নিসহ ৬ জনের ফাঁসি
বরগুনায় ১০ মণ হাঙর জব্দ
বরগুনার পাথরঘাটায় থেকে ১০ মণ (৪০০ কেজি) হাঙর মাছ জব্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ড থেকে হাঙরগুলো জব্দ করে কোস্টগার্ড।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোতে পর্যটকবাহী নৌকায় হাঙরের ধাক্কা, আহত ৬
বুধবার কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার বিএন খন্দকার মুনিফ তকি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: সাদা হাঙ্গরের জিন রহস্য উন্মোচন, ক্যান্সার প্রতিরোধী সক্ষমতা চিহ্নিত
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাথরঘাটার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি অটোরিকশা থেকে এই হাঙরগুলো জব্দ করা হয়। তবে এই সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার করা হাঙরগুলো বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মাটিচাপা দেয়া হয়।
বরগুনায় পরিবহন শ্রমিকের ধর্মঘট প্রত্যাহার
বরগুনায় বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে জেলা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন পরিচালনা কমিটি। মঙ্গলবার রাতে পরিবহন শ্রমিকরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।
বুধবার সকাল থেকে বরগুনা জেলায় বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সভাপতি কিসলু বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমরা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং তারা আমাদের সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: বরগুনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ জনের মৃত্যু
ইউনিয়ন নেতাদের মতে, জেলা প্রশাসন তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে সংক্ষুব্ধ পরিবহন শ্রমিকরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে।
বরগুনার পরিবহন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে আজাদ বাবলু বলেন, সোমবার সকাল থেকে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলাম। এ তথ্য জানার পর জেলা প্রসাশক আমাদের বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সভায় ডাকেন।
তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় টানা তিন ঘণ্টার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বুধবার থেকে বাস চলাচল করবে। এছাড়াও বরিশাল বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনিও সম্মতি দিয়েছেন, তাই আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক দিয়ে ঢাকা-বরগুনা রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বরিশাল রুপাতলী বাস মালিক সমিতি। ফলে বাসগুলো পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ এবং বরগুনার আমতলী ফেরি পার হয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়া-আসা শুরু করে।
আরও পড়ুন: বরগুনায় ছাত্রলীগের ওপর লাঠিচার্জ: ১৩ পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ
বরগুনায় ছাত্রলীগকে লাঠিপেটা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী প্রত্যাহার
বরগুনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ জনের মৃত্যু
বরগুনা সদর উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।
শনিবার পুরাতন ঘর ভাঙা শুরু করলে বেলা ২টার দিকে ওই পুরাতন ঘরে থাকা মিটার সংযোগের তার ছুটে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- একই এলাকার শাহজান পহলানের ছেলে বেলায়েত পহলান (২৫), হারুন হাজীর ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. হেলাল (৩৫) এবং জলিল মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম (১৪)। গুরুতর আহত অন্যজন হলেন, একই এলাকার নিজাম খানের ছেলে আরিফ (২০)।
পরিবারের স্বজনরা জানান, দীর্ঘ আট বছর পর হেলাল প্রবাস জীবন শেষে বাড়িতে আসলে পুরাতন টিনের ঘর ভেঙে সেখানে ভবন নির্মাণের কাজ করতে চায়। পুরাতন ঘর ভাঙা শুরু করলে বেলা ২টার দিকে ওই পুরাতন ঘরে থাকা মিটার সংযোগের তার ছুটে তার শরীরে ও ঘরের টিনে লাগে। তখন হেলালকে কাজের সহযোগিতা করার সময় মামাতো ভাই বেলায়েত, প্রতিবেশী অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া রবিউল ও আরিফসহ মোট চারজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।
আরও পড়ুন: আখাউড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু
স্থানীয়রা আহত অবস্থায় সকলকে বরগুনা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং একজন গুরুতর আহত থাকায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ বরগুনা জোনাল অফিসের ডিজিএম আরব আলী জানান, পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্তর্গত, বরগুনা জোনাল অফিসের আওতায় রায়ভোগ অভিযোগ কেন্দ্রের অধীনে কদমতলী গ্রামে বিলাত হোসেন (৩৯৫/২৫০০) নামে এক গ্রাহক অফিসকে অবহিত না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে নিজেরা নিজেরা ঘর মেরামত করতে গেলে মেরামত কাজে নিয়োজিত চারজন মিস্ত্রির মধ্যে একজনের হাত থেকে টিন নিচে পড়ে গেলে মিটারটি ভেঙে যায় মিটার ভেঙে যাওয়ার ফলে টিন বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে ফলে সঙ্গে সঙ্গে চারজনের মধ্যে তিন জনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল করেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বজনদের দাবি এটি একটি দুর্ঘটনা, তাই যেন লাশ ময়নাতদন্ত না হয়।
আরও পড়ুন: মাগুরায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ভ্যানচালকের মৃত্যু
রাজশাহীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারীর মৃত্যু
বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে দুই জেলের মৃত্যু
বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে এমভি ভাই ভাই নামে একটি ট্রলারডুবির ঘটনায় দুই জেলের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ওই ট্রলারের মালিক ও বরগুনার সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা রতন মোল্লা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ১৮ আগস্ট রাতে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।
মৃত জেলেরা হলেন-ঢলুয়া ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ছগির হোসেন এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা মো. রফিক। ওই ট্রলারে থাকা অন্য ১৭ জেলে নিরাপদে ভারতের কাকদ্বীপে পৌঁছেছেন। ট্রলার মাঝির সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলে এসব তথ্য জানিয়েছেন রতন মোল্লা।
রতন মোল্লা বলেন, ১৬ আগস্ট ১৯ জেলেকে নিয়ে তাঁর ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের মাছ ধরতে যায়। তবে ১৮ আগস্ট সাগর উত্তাল হতে শুরু করলে তাঁরা ট্রলারটি নোঙর করে রাখেন। একপর্যায়ে সাগরের ঢেউয়ে ট্রলারের তলা ফেটে যায়। এরপর ট্রলারটি আস্তে আস্তে সাগরে ডুবে যেতে শুরু করলে সেখানে থাকা ১৯ জেলে লাইফ জ্যাকেট পড়ে সাগরে ঝাঁপ দেন। একপর্যায়ে ছগির হোসেন ও রফিক ডুবে যান। তবে অন্য ১৭ জেলে ভাসতে ভাসতে ভারত সীমান্তে চলে যান।
মাঝির বরাত দিয়ে রতন মোল্লা বলেন, ট্রলারে মাঝি জানিয়েছেন তাঁরা এখন ভারতের কাকদ্বীপে আছেন। আটকে পড়া জেলেদের কোনো আইনি বাধা ছাড়াই দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁদের স্বজনেরা সরকারের সহায়তা কামনা করছেন।
মারা যাওয়া জেলে ছগির হোসেনের বড় ভাই সোহরাব বলেন, ‘আমার ভাই আর ফিরে আসবে না। সাগর তাঁকে নিয়ে গেছে। আর কোনোদিন ফিরে আসবে না। ছোট দুইটা ছেলে আছে, ওদের এখন কী হবে!’
ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আল আমিন হোসাইন আরিফ মৃধা বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে ঢলুয়া ইউনিয়নের ভাই ভাই নামে একটি ট্রলার ডুবে গিয়েছিল। এতে ওই ট্রলারের দুই জেলে মারা গেছেন। বাকিরা ভারতের উপকূলে আটকা পড়েছেন। আটকে পড়া জেলেদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
বরগুনায় ছাত্রলীগের ওপর লাঠিচার্জ: ১৩ পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ
বরগুনায় ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আলোচিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মহরম আলীসহ ১৩ পুলিশের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি। রবিবার বরিশালের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আক্তারুজ্জামান জানান, ১৫ আগস্ট বরগুনা শিল্পকলা একাডেমিতে শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্রলীগের সঙ্গে পুলিশের যে ঘটনা সেটি তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি রবিবার সন্ধ্যায় তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে জনগণের সঙ্গে ব্যবহারে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীসহ একজন ইন্সপেক্টর, দুজন সাব ইন্সপেক্টরসহ ওই স্থানে কর্তব্যরত ১৩ জন পুলিশ সদস্যের আচরণগত ত্রুটির প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বরিশাল রেঞ্জ অফিস থেকে ইতোমধ্যে ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা কার্যকর করতে বরগুনা পুলিশ সুপারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:বরগুনায় ছাত্রলীগকে লাঠিপেটা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী প্রত্যাহার
তিনি আরও জানান, এর আগে মহরম আলীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়। এছাড়া বরগুনার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। ওই ঘটনায় পুলিশের পেশাদারত্ব কতটা ছিল, ঘটনাস্থলে কী কী হয়েছে, তার সব কিছুই তদন্ত করা হবে।
গত ১৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যান বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজা ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরান। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
আরও পড়ুন:শিক্ষক লাঞ্ছিত: নড়াইল থানার ওসি প্রত্যাহার
সাংবাদিক হেনস্তা: চট্টগ্রামে হাইওয়ে পুলিশের এএসআইসহ ৫ পুলিশ প্রত্যাহার
বরগুনায় ছাত্রলীগকে লাঠিপেটা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলী প্রত্যাহার
বরগুনায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ করা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে ও তদন্তের স্বার্থে মহরম আলীকে বরিশালে আমার কার্যালয়ে নিযুক্ত করা হয়েছে।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, বরগুনার ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। ওই ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব কতটা ছিল, ঘটনাস্থলে কি কি হয়েছে সব কিছুই তদন্ত করা হবে। ছাত্রলীগের দুটি ধারার এক পক্ষ পুলিশের প্রশংসা করেছে, আরেক পক্ষ সমালোচনা করছে। তবে পুলিশ তার নিরপেক্ষ অবস্থান থেকেই সবকিছুর তদন্ত করবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এসময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ নিয়ে বরগুনা সদর আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্রদেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহরম আলীর কথা কাটাকাটি হয়। সাংসদের সামনেই মারধর ও লাঠিপেটা করা হয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
আরও পড়ুন: শিক্ষক লাঞ্ছিত: নড়াইল থানার ওসি প্রত্যাহার
সাংবাদিক হেনস্তা: চট্টগ্রামে হাইওয়ে পুলিশের এএসআইসহ ৫ পুলিশ প্রত্যাহার
মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
সরকারের নিষেধাজ্ঞা পর দীর্ঘদিন ৬৫ দিন পর সমুদ্রে মাছ শিকারে নেমেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলের জেলেরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রবিবার দিবাগত রাত ১২টার পর ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারে নেমে প্রথম দিনেই জেলেদের জালে প্রচুর পরিমানে মাছ ধরা পড়েছে। জাল ভর্তি ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে হাসি মুখে ফিরেছেন জেলেরা।
এদিকে, দীর্ঘদিন পর ট্রলারভর্তি মাছ নিয়ে বিএফডিসি ঘাটে পৌঁছানোর ট্রলার মালিক, আড়তদার ও জেলেদের উল্লাস দেখা যায়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ ধরা শুরু
জেলে জব্বার মিয়া বলেন, একটা খেও দিছি যা পাইছি তাড়াতাড়ি করে ভালো দামের জন্য তাই নিয়াই প্রথম বাজার ধরলাম।
সরেজমিনে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দেখা গেছে, মৎস্য ঘাটে প্রায় ২৫টি মাছ ধরার ট্রলার নোঙর করে আছে। ওই ট্রলার থেকে ঘাট শ্রমিকরা মাছ উঠাচ্ছেন। অপরদিকে টল সেটে হাঁক ডাকে মাছ বিক্রি হচ্ছে।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, প্রথম দিনে অন্তত ২৫টি মাছ ধরা ট্রলার ঘাটে এসেছে। জেলেরা বলছে ভালোই মাছ পাচ্ছে। দামও ভালো মিলছে।
আরও পড়ুন: তিন মাস বন্ধের পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু
বিএফডিসির মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, প্রথম দিনে বিএফডিসি মৎস্য বাজারে মোট ১১ হাজার ৮৬৯ কেজি মাছ বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৭৮০ কেজি ইলিশই বিক্রি হয়েছে। আর অন্যান্য চার হাজার ৮৯ কেজি মাছ বিক্রি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৮৪ হাজার ৪৬০ টাকা।
পায়রার বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বরগুনার ৮ গ্রাম, ক্ষতিগ্রস্ত মাছের ঘের
বরগুনার তালতলীতে পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে জয়ালভাংগা, নলবুনিয়া ও তেঁতুল বাড়িয়া এলাকার আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতে জোয়ারের প্রবল তোড়ে বাঁধ ভেঙে যায়। এতে পুকুরসহ ৫০টির মতো মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্লাবিত গ্রামগুলোর চুলায় পানি উঠায় অনেকেই দুপুরে রান্না করতে পারবে না। গবাদি পশুগুলোকে উঁচু স্থানে নেয়া হয়েছে।এছাড়াও বিষখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বরইতলা ফেরি ঘাটটি পানির মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ মেরামতের গাফলতির কারণে এই ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। নদীতে জমিজমা, বসতভিটা বিলিন হয়ে গেছে। অথচ টেঁকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: ফের প্লাবিত কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল, আতঙ্কে চরবাসী
পনি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম সোহাগ জানান, বিকল্প বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে এখানে সিআইপি প্রকল্পের ফেস-২ এর সার্ভে কাজ চলমান আছে। দ্রুত স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
তালতলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম সাদিক তানভীর জানান, পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দ্রুত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য পনি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে নামছে বন্যার পানি